ঋণের টাকায় ‘হ-য-ব-র-ল’ করা গুরুতর অপরাধ -লালন শাহ সেতু প্রকল্পে দুর্নীতি
সুকুমার রায় ‘হযবরল’-এ লিখেছিলেন, ‘ছিল একটা রুমাল, হয়ে গেল বেড়াল’। বর্তমানে লালন শাহ সেতু নামে পরিচিত পাকশী সেতু প্রকল্পকে আদর্শ হ-য-ব-র-ল পরিস্থিতি বলাই সংগত। কয়েক দফা সংশোধনী আনার পরও, সব খরচ বাড়িয়ে দেখিয়েও বিপুল অর্থের কোনো হদিস দিতে না পারা গুরুতর দুর্নীতি! এক হাজার সাড়ে ২২ কোটি টাকা খরচের অতিরিক্ত প্রায় ১১৫ কোটি টাকার হদিস না থাকা কর্তাব্যক্তিদের যোগসাজশ ছাড়া হওয়া অসম্ভব!
গত আওয়ামী লীগের সরকারের সময়ে পাকশী সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ পায় একটি চীনা প্রতিষ্ঠান। সেই কাজ সম্পন্ন হয় বিএনপি জোট সরকারের দ্বিতীয় আমলের শেষাশেষি। এর মধ্যে প্রকল্প-ব্যয় কয়েক দফা বাড়ানো হয়। সেই বর্ধিত বরাদ্দ একনেকের অনুমোদনও পায়। কিন্তু ২০০৭ সালের জুন মাসে প্রকল্পটি সমাপ্ত বলে ঘোষণার সময় বিপুল অর্থ অব্যয়িত থাকতে দেখা যায়। পরে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রকল্প সংশোধন করে প্রকল্প-ব্যয় ১১৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা কমিয়ে দেয়। কিন্তু প্রকল্পের অধীনে তোলা এই টাকা সরকারকে ফেরত দেওয়া হয় না। এই বিপুল অর্থের কোনো হদিসই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দিতে পারেননি। ‘সরকারি মাল, দরিয়া মে ঢাল’ বলে যে জনশ্রুতি রয়েছে, সম্প্রতি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) তদন্তে মিলল তারই আলামত।
প্রকল্পটির জন্য ঋণ নেওয়া হয়েছিল জাপানের কাছ থেকে। কাজ পেয়েছে চীনা কোম্পানি এবং দুই সরকারের আমলে তাদের স্থানীয় প্রতিনিধি হয়ে কাজ করেছে দুই মন্ত্রীর দুই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। এবং সেই কাজেরই ফল হলো প্রায় ১১৫ কোটি টাকা লোপাট হওয়া! বিদেশি সাহায্য ও ঋণের উল্লেখযোগ্য একটা অংশ এভাবেই দুর্নীতির সুড়ঙ্গ দিয়ে হারিয়ে যায়। কিন্তু এর চড়াসুদের মাশুল ও খেসারত টানতে হয় জনগণকেই। দুর্নীতি ও বিদেশি সাহায্য অনেক ক্ষেত্রেই পরস্পরের পরিপূরক। ২০০০ সালে প্রকাশিত বাংলাদেশে দুর্নীতিবিষয়ক বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ যদি দুর্নীতি কমিয়ে আনতে পারে, তাহলে জাতীয় উত্পাদন দুই থেকে তিন শতাংশ বেড়ে যাবে। বর্তমানে দুর্নীতিতে লোপাট হওয়া অর্থ এবং বিদেশি সাহায্যের পরিমাণ প্রায় একই। এই পাকশী সেতু প্রকল্পের মতো অজস্র সরকারি প্রকল্প এবং এ-সম্পর্কিত দুর্নীতি এসব ঋণের টাকাতেই হয়ে থাকে। সরকারের ক্ষমতাবান ব্যক্তিরা থেকে শুরু করে দেশি-বিদেশি আমলাতন্ত্র হয় এর সুফলভোগী। তাদের থামাতে সরকারি প্রকল্পগুলোর অর্থব্যয়ে স্বচ্ছতা, কর্তাব্যক্তিদের জবাবদিহি এবং দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করা তাই জাতীয় উন্নয়নেরই জরুরি শর্ত।
কিন্তু কেবল আইনের বলে দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাওয়া রশি দিয়ে পাহাড় বাঁধার অভিলাষের শামিল। প্রয়োজন সর্বব্যাপী জনসচেতনতা, প্রতিটি মন্ত্রণালয়-সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটি ও সরকারি সংস্থাগুলোর নজরদারি। সবকিছুর সঙ্গে আপস করা সম্ভব, কিন্তু দুর্নীতির সঙ্গে নয়। জাতীয় পর্যায়ে দুর্নীতি বরদাশত করা মানে পতনের চোরাবালিতে আরও বেশি করে ডুবতে থাকা।
গত আওয়ামী লীগের সরকারের সময়ে পাকশী সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ পায় একটি চীনা প্রতিষ্ঠান। সেই কাজ সম্পন্ন হয় বিএনপি জোট সরকারের দ্বিতীয় আমলের শেষাশেষি। এর মধ্যে প্রকল্প-ব্যয় কয়েক দফা বাড়ানো হয়। সেই বর্ধিত বরাদ্দ একনেকের অনুমোদনও পায়। কিন্তু ২০০৭ সালের জুন মাসে প্রকল্পটি সমাপ্ত বলে ঘোষণার সময় বিপুল অর্থ অব্যয়িত থাকতে দেখা যায়। পরে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রকল্প সংশোধন করে প্রকল্প-ব্যয় ১১৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা কমিয়ে দেয়। কিন্তু প্রকল্পের অধীনে তোলা এই টাকা সরকারকে ফেরত দেওয়া হয় না। এই বিপুল অর্থের কোনো হদিসই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দিতে পারেননি। ‘সরকারি মাল, দরিয়া মে ঢাল’ বলে যে জনশ্রুতি রয়েছে, সম্প্রতি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) তদন্তে মিলল তারই আলামত।
প্রকল্পটির জন্য ঋণ নেওয়া হয়েছিল জাপানের কাছ থেকে। কাজ পেয়েছে চীনা কোম্পানি এবং দুই সরকারের আমলে তাদের স্থানীয় প্রতিনিধি হয়ে কাজ করেছে দুই মন্ত্রীর দুই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। এবং সেই কাজেরই ফল হলো প্রায় ১১৫ কোটি টাকা লোপাট হওয়া! বিদেশি সাহায্য ও ঋণের উল্লেখযোগ্য একটা অংশ এভাবেই দুর্নীতির সুড়ঙ্গ দিয়ে হারিয়ে যায়। কিন্তু এর চড়াসুদের মাশুল ও খেসারত টানতে হয় জনগণকেই। দুর্নীতি ও বিদেশি সাহায্য অনেক ক্ষেত্রেই পরস্পরের পরিপূরক। ২০০০ সালে প্রকাশিত বাংলাদেশে দুর্নীতিবিষয়ক বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ যদি দুর্নীতি কমিয়ে আনতে পারে, তাহলে জাতীয় উত্পাদন দুই থেকে তিন শতাংশ বেড়ে যাবে। বর্তমানে দুর্নীতিতে লোপাট হওয়া অর্থ এবং বিদেশি সাহায্যের পরিমাণ প্রায় একই। এই পাকশী সেতু প্রকল্পের মতো অজস্র সরকারি প্রকল্প এবং এ-সম্পর্কিত দুর্নীতি এসব ঋণের টাকাতেই হয়ে থাকে। সরকারের ক্ষমতাবান ব্যক্তিরা থেকে শুরু করে দেশি-বিদেশি আমলাতন্ত্র হয় এর সুফলভোগী। তাদের থামাতে সরকারি প্রকল্পগুলোর অর্থব্যয়ে স্বচ্ছতা, কর্তাব্যক্তিদের জবাবদিহি এবং দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করা তাই জাতীয় উন্নয়নেরই জরুরি শর্ত।
কিন্তু কেবল আইনের বলে দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাওয়া রশি দিয়ে পাহাড় বাঁধার অভিলাষের শামিল। প্রয়োজন সর্বব্যাপী জনসচেতনতা, প্রতিটি মন্ত্রণালয়-সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটি ও সরকারি সংস্থাগুলোর নজরদারি। সবকিছুর সঙ্গে আপস করা সম্ভব, কিন্তু দুর্নীতির সঙ্গে নয়। জাতীয় পর্যায়ে দুর্নীতি বরদাশত করা মানে পতনের চোরাবালিতে আরও বেশি করে ডুবতে থাকা।
No comments