ইউরোপ নিয়ে ভ্যান্সের বিস্ফোরক মন্তব্য

এ বছরের মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন (এমএসসি)তে প্রাথমিকভাবে দু’টি বিষয় আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। একটি হলো- রাশিয়ার কাছে আত্মসমর্পণ না করে ইউক্রেনে কীভাবে যুদ্ধ বন্ধ করা যায়। অপরটি, ইউরোপ কীভাবে প্রতিরক্ষা বিষয়ে নিজেদের খরচ বাড়াতে পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এর কোনোটি নিয়েই কথা বলেননি। উল্টো বৃটেনসহ ওয়াশিংটনের অন্য মিত্রদের নিয়ে আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেন। ওই সময় তাদের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য ছড়ানো, অপপ্রচারের মতো অভিযোগ তোলেন তিনি। এছাড়া  বাক-স্বাধীনতার অধিকার নিয়েও কথা বলেন ভ্যান্স। তবে তার ইউরোপ নিয়ে এমন তীর্যক মন্তব্যে চটেছেন অনেক ইউরোপীয় নেতা। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। ২০ মিনিট ধরে বক্তব্য দেন ভ্যান্স। এতে অদ্ভুত এক পরিবেশ তৈরি হয় সেখানে। তিনি রসিকতা করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র যদি ১০ বছর গ্রেটা থানবার্গের (জলবায়ু প্রচারক) ধমক সহ্য করতে পারে তাহলে আপনারা ইলন মাস্ককে কয়েক মাস সহ্য করে টিকে থাকতে পারবেন। তবে তার ওই রসিকতা সেখানে উপস্থিত কেউ ভালোভাবে নেননি। তিনি ইউরোপের সরকার প্রধানদের বিরুদ্ধে অভিবাসন ও বাক- স্বাধীনতার মতো বিষয়ে জনগণের মতামতকে গুরুত্ব না দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন। ইউরোপ নিয়ে ভ্যান্সের এ মন্তব্য খুব বাজে প্রভাব ফেলে উপস্থিত সকলের মাঝে। প্রশ্ন ওঠে তিনি ঠিক কাকে উদ্দেশ্য করে এমন মন্তব্য করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের এক ভাষ্যকর জানান, ওই সব মন্তব্য আসলে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ভোক্তাদের নিয়ে করা হয়েছিল। উল্লেখ্য, এরপর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জেডি ভ্যান্স। ওই সময় জেলেনস্কি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন ইতিবাচক কথা বলার। তিনি জানান, তাদের মধ্যে একটি ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। তিনি আরও বলেন, যদিও এটি আমাদের প্রথম আলোচনা তবে আমি নিশ্চিত শেষবারের জন্য নয়। ওই সময় জেলেনস্কি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে কীভাবে প্রতিহত করা যায় সেই বিষয়ে ওয়াশিংটন ও কিয়েভের মধ্যে আলোচনার ওপর জোর তাগিদ দেন। তিনি বলেন, আমরা সত্যিই শান্তি চাই। আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চাই। এদিকে পুতিনও শান্তি চান বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তবে পুতিন নির্দিষ্ট কিছু শর্ত দিয়েছেন। ইউক্রেনের যেসব এলাকা রাশিয়া দখল করেছে সেগুলো পুনরায় ইউক্রেনের কাছে হস্তান্তরের বিপক্ষে পুতিন। আর ইউক্রেন চায় রাশিয়া যাতে ওই সব এলাকা ফিরিয়ে দেয়। এদিকে ভ্যান্সের ভাষণ ঠিক তখনই এলো যার কিছুদিন আগে ট্রাম্প তার প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথের মাধ্যমে ইউক্রেনের দখলকৃত এলাকার বিষয়টি আলোচনায় আনেন। তিনি বলেন, ২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেনে প্রথম আক্রমণের পূর্বে যেসব এলাকা ইউক্রেনের অধীনে ছিল তা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়টি ‘অবাস্তব’।

mzamin

No comments

Powered by Blogger.