ঘাড় গুঁজে সারাক্ষণ মোবাইলে, ‘শিং’ গজাচ্ছে মাথার পেছনে : গবেষণা
দরকারে-অদরকারে
মোবাইলে চোখ, ঘন ঘন সোশ্যাল মিডিয়ায় উঁকি। সারাক্ষণ হয় মাথা ঝুঁকিয়ে আঙুল
চলছে মোবাইলে, নয়তো চোখের কাছে মোবাইল এনে ঘাড় ঝুলিয়ে ভিডিও কিংবা সিনেমা
দেখা। চারপাশে চোখ চালালে এই অভ্যাস আমাদের প্রায় সব সময়ই চোখে পড়ে। আমরাও
ব্যতিক্রম নই। চিকিৎসকরা এই অভ্যাস নিয়ে বহুবার সতর্ক করলেও টনক নড়েনি।
তবে এবার বায়োমেকানিক্সের এক নতুন গবেষণা আবারও শঙ্কিত করছে।
একটি ছোট্ট যন্ত্র আর এতেই মানবদেহের কঙ্কাল বদলে যাচ্ছে অজান্তেই। অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব সানশাইন কোস্টের (ইইউএসসি) গবেষকদের দাবি, ঘাড় ঝুঁকিয়ে সারাক্ষণ মোবাইল স্ক্রিনের ওপর চোখ রাখায় ‘শিং’ গজানোর উপক্রম তৈরি হচ্ছে মাথার পেছনের অংশে।
বিজ্ঞানীদের দাবি, অতিরিক্ত মোবাইলের ব্যবহারে ঘাড় ও মাথা সংলগ্ন অঞ্চলের হাড় উঁচু হয়ে পাখির বাঁকানো ঠোঁট, হুক বা শিংয়ের মতো উঁচু হয়ে যাচ্ছে। তাদের মতে, মাথা ঝুঁকিয়ে মোবাইল স্ক্রিনে নজর রাখতে রাখতে কাঁধের দিক থেকে ওজন সরাসরি মেরুদণ্ডের উপর না পড়ে চলে আসছে ঘাড় ও মাথার পেছনের পেশীতে। ফলে ঘাড় ও মাথার সংযোগস্থলকে বেশি চাপ বহন করতে হচ্ছে ক্রমাগত। সেখানে থাকা টেন্ডন ও লিগামেন্টের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে সেই চাপ। দিনের পর দিন সেই চাপ পেতে পেতে শরীর চাপের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে গিয়ে সেখানকার চামড়া শক্ত করে তৈরি ফেলছে এই গ্রোথ।
বিজ্ঞান সাময়িকী নেচারের এক প্রতিবেদনে গবেষকরা জানিয়েছেন, তরুণ প্রজন্মের ব্যবহারিক জীবনের ওপর প্রযুক্তির এই প্রভাব ভবিষ্যৎকে যে পথে ঠেলে দিচ্ছে, তা বেশ শঙ্কার।
মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টকে দেয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান গবেষক ডেভিড শাহার বলেছেন, হঠাৎ করে এই পরিবর্তন আসে না। বছরের পর বছর একই ভাবে মোবাইল ঘাঁটতে ঘাঁটতে এই সমস্যা তৈরি হয় শরীরে। মূলত ছোটবেলা থেকেই অতিরিক্ত মোবাইল ঘাঁটার ‘অসুখ’ থেকেই এই রোগের জন্ম। সারাক্ষণ মোবাইল হাতে বুঁদ হয়ে থাকা মানুষ, বিশেষত তরুণ প্রজন্মই এর প্রধান শিকার।
অস্ট্রেলিয়ায় এই সমস্যাকে ইতোমধ্যে ‘হেড হর্ন’, ‘ফোন বোনস’বা ‘উইয়ার্ড বাম্পস’ নামে ডাকা হচ্ছে।কিন্তু কীভাবে এমন এক সিদ্ধন্তে এলেন গবেষকরা? ইউএসসির গবেষকরা মোট দু’দফায় এই পরীক্ষা চালিয়েছেন। প্রথম দফায় কেবল লাম্পের হদিশটুকু মিললেও তার বিস্তারিত কারণ বোঝার জন্যই পরের দফার সাহায্য নেন বিজ্ঞানীরা।
প্রথম দফায় বেশি সময় ধরে মোবাইল ব্যবহার করেন এবং ১৮-৩০ বছরের মধ্যে বয়স- এমন ২১৮ জনকে নিয়ে চলে পরীক্ষা। এক্স রে করা হলে প্রায় ৪০ শতাংশের ক্ষেত্রেই উঁচু হয়ে ওঠা অংশের সন্ধান পান বিজ্ঞানীরা। করোটির পেছনে তৈরি হওয়া এই লাম্পের উচ্চতা একেক জনের ক্ষেত্রে একেক রকম। এর গ্রোথ মোটামুটি এক থেকে তিন সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।
প্রথম দফায় পাওয়া ফলের ওপর ভর করে চলে দ্বিতীয় দফার সমীক্ষা। ১৮-৮৬ বছর বয়সী প্রায় ১২০০ জনের ওপর চালানো হয় এই পরীক্ষা। সেখানে ফলাফল তো বদলায়ই না, উল্টো দেখা যায় এবার কয়েক জনের শরীরে এই লাম্বের উচ্চতা আরও বেশি। এর পরই করোটির অস্থি, মাথার পেছনের পেশী ও ঘাড়ের স্নায়ুর ওপর নানা পরীক্ষানিরীক্ষা চালান বিজ্ঞানীরা। আর তাতেই ‘ভিলেন’ হিসেবে উঠে আসে মোবাইল!
স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ সমর চৌধুরী আনন্দবাজারকে বলেন, মোবাইল ব্যবহারের অভ্যাস নতুন নয়। ইদানিং এই প্রজন্মের হাতে সেই অভ্যাসই বদভ্যাসে পরিণত হচ্ছে। যার ফলে এ ধরনের সমস্যা ধেয়ে আসে। টেক্সটিং থাম্ব-ও এমনই এক সমস্যা।
তিনি বলেন, সারাক্ষণ হোয়াটসঅ্যাপ-মেসেঞ্জার কিংবা ফেসবুকে স্ট্যাটাস আপডেট করতে গিয়ে টেক্সট করতে থাকেন মানুষ। এর ফলে আঙুল অবশ হয়ে নানা স্নায়বিক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। ব্যথা তো বটেই, অনেক সময় অস্ত্রোপচারও করতে হয়। আমাদের শরীরে যে সব পরিবর্তনশীল অসুখ রয়েছে, তার মধ্যে এগুলো অন্যতম। এখনও সচেতন না হলে এর চেয়ে আরও বড় বিপদ অপেক্ষা করছে।
মুক্তি মিলবে কীভাবে?
একটি ছোট্ট যন্ত্র আর এতেই মানবদেহের কঙ্কাল বদলে যাচ্ছে অজান্তেই। অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব সানশাইন কোস্টের (ইইউএসসি) গবেষকদের দাবি, ঘাড় ঝুঁকিয়ে সারাক্ষণ মোবাইল স্ক্রিনের ওপর চোখ রাখায় ‘শিং’ গজানোর উপক্রম তৈরি হচ্ছে মাথার পেছনের অংশে।
বিজ্ঞানীদের দাবি, অতিরিক্ত মোবাইলের ব্যবহারে ঘাড় ও মাথা সংলগ্ন অঞ্চলের হাড় উঁচু হয়ে পাখির বাঁকানো ঠোঁট, হুক বা শিংয়ের মতো উঁচু হয়ে যাচ্ছে। তাদের মতে, মাথা ঝুঁকিয়ে মোবাইল স্ক্রিনে নজর রাখতে রাখতে কাঁধের দিক থেকে ওজন সরাসরি মেরুদণ্ডের উপর না পড়ে চলে আসছে ঘাড় ও মাথার পেছনের পেশীতে। ফলে ঘাড় ও মাথার সংযোগস্থলকে বেশি চাপ বহন করতে হচ্ছে ক্রমাগত। সেখানে থাকা টেন্ডন ও লিগামেন্টের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে সেই চাপ। দিনের পর দিন সেই চাপ পেতে পেতে শরীর চাপের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে গিয়ে সেখানকার চামড়া শক্ত করে তৈরি ফেলছে এই গ্রোথ।
বিজ্ঞান সাময়িকী নেচারের এক প্রতিবেদনে গবেষকরা জানিয়েছেন, তরুণ প্রজন্মের ব্যবহারিক জীবনের ওপর প্রযুক্তির এই প্রভাব ভবিষ্যৎকে যে পথে ঠেলে দিচ্ছে, তা বেশ শঙ্কার।
মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টকে দেয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান গবেষক ডেভিড শাহার বলেছেন, হঠাৎ করে এই পরিবর্তন আসে না। বছরের পর বছর একই ভাবে মোবাইল ঘাঁটতে ঘাঁটতে এই সমস্যা তৈরি হয় শরীরে। মূলত ছোটবেলা থেকেই অতিরিক্ত মোবাইল ঘাঁটার ‘অসুখ’ থেকেই এই রোগের জন্ম। সারাক্ষণ মোবাইল হাতে বুঁদ হয়ে থাকা মানুষ, বিশেষত তরুণ প্রজন্মই এর প্রধান শিকার।
অস্ট্রেলিয়ায় এই সমস্যাকে ইতোমধ্যে ‘হেড হর্ন’, ‘ফোন বোনস’বা ‘উইয়ার্ড বাম্পস’ নামে ডাকা হচ্ছে।কিন্তু কীভাবে এমন এক সিদ্ধন্তে এলেন গবেষকরা? ইউএসসির গবেষকরা মোট দু’দফায় এই পরীক্ষা চালিয়েছেন। প্রথম দফায় কেবল লাম্পের হদিশটুকু মিললেও তার বিস্তারিত কারণ বোঝার জন্যই পরের দফার সাহায্য নেন বিজ্ঞানীরা।
প্রথম দফায় বেশি সময় ধরে মোবাইল ব্যবহার করেন এবং ১৮-৩০ বছরের মধ্যে বয়স- এমন ২১৮ জনকে নিয়ে চলে পরীক্ষা। এক্স রে করা হলে প্রায় ৪০ শতাংশের ক্ষেত্রেই উঁচু হয়ে ওঠা অংশের সন্ধান পান বিজ্ঞানীরা। করোটির পেছনে তৈরি হওয়া এই লাম্পের উচ্চতা একেক জনের ক্ষেত্রে একেক রকম। এর গ্রোথ মোটামুটি এক থেকে তিন সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।
প্রথম দফায় পাওয়া ফলের ওপর ভর করে চলে দ্বিতীয় দফার সমীক্ষা। ১৮-৮৬ বছর বয়সী প্রায় ১২০০ জনের ওপর চালানো হয় এই পরীক্ষা। সেখানে ফলাফল তো বদলায়ই না, উল্টো দেখা যায় এবার কয়েক জনের শরীরে এই লাম্বের উচ্চতা আরও বেশি। এর পরই করোটির অস্থি, মাথার পেছনের পেশী ও ঘাড়ের স্নায়ুর ওপর নানা পরীক্ষানিরীক্ষা চালান বিজ্ঞানীরা। আর তাতেই ‘ভিলেন’ হিসেবে উঠে আসে মোবাইল!
স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ সমর চৌধুরী আনন্দবাজারকে বলেন, মোবাইল ব্যবহারের অভ্যাস নতুন নয়। ইদানিং এই প্রজন্মের হাতে সেই অভ্যাসই বদভ্যাসে পরিণত হচ্ছে। যার ফলে এ ধরনের সমস্যা ধেয়ে আসে। টেক্সটিং থাম্ব-ও এমনই এক সমস্যা।
তিনি বলেন, সারাক্ষণ হোয়াটসঅ্যাপ-মেসেঞ্জার কিংবা ফেসবুকে স্ট্যাটাস আপডেট করতে গিয়ে টেক্সট করতে থাকেন মানুষ। এর ফলে আঙুল অবশ হয়ে নানা স্নায়বিক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। ব্যথা তো বটেই, অনেক সময় অস্ত্রোপচারও করতে হয়। আমাদের শরীরে যে সব পরিবর্তনশীল অসুখ রয়েছে, তার মধ্যে এগুলো অন্যতম। এখনও সচেতন না হলে এর চেয়ে আরও বড় বিপদ অপেক্ষা করছে।
মুক্তি মিলবে কীভাবে?
- • মোবাইল ব্যবহার করবেন না; এমন কথা বলার কোনো মানেই হয় না বলে দাবি চিকিৎসকদের। তবে এই ব্যবহারে রাশ টানার পক্ষপাতী তারা। তাদের মতে, কাজের সূত্রে খুব মোবাইল ঘাঁটতে হলে ফিটনেস এক্সপার্ট ও চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো অবসরে কিছু ব্যায়াম করুন। ফিঙ্গার এক্সারসাইজ ও ঘাড়ের কিছু ব্যায়ামে কিছুটা বিপদ মুক্ত হওয়া যায়।
- • কাজের বাইরে মোবাইল ব্যবহারে রাশ টানতে হবে।
- • মোবাইল ব্যবহারের সময় মাথার সোজাসুজি মোবাইল রাখুন, ঘাড় যেন বেশি না ঝোঁকে।
- • উঁচু কিছুর ওপর মোবাইল স্ট্যান্ড রাখুন। এতে ফোন রেখে শুয়ে শুয়ে বা সোজা বসে সিনেমা বা দীর্ঘ ভিডিও দেখুন।
- • প্রতি ১০ মিনিট অন্তর ফোন থেকে চোখ সরিয়ে ঘাড়ের কিছু সহজ ব্যায়াম অভ্যাস করুন। যে সব ভিডিও ল্যাপটপে বা কম্পিউটারেও দেখা সম্ভব, সেগুলো সেভাবেই দেখুন।
- • ল্যাপটপও উঁচু জায়গায় রাখুন।
No comments