আজ আরাফাহ দিবস: আদম (আ.)’র তওবা কবুলের ও মুসলিম ইবনে আকিলের শাহাদাতের বার্ষিকী
পবিত্র মক্কায় হজযাত্রীরা পালন করছেন আরাফাহ দিবস |
আজ
নয়ই জিলহজ বা পবিত্র আরাফাহ দিবস। এই দিনে মানব জাতির আদি পিতা হযরত আদম
(আ.)’র তওবা কবুল করেছিলেন মহান আল্লাহ। একটি নিষিদ্ধ গাছের ফল খাওয়ার
জন্য তাঁকে জান্নাত-সদৃশ বাগান থেকে বের করে দেয়া হয়েছিল।
ইসলামী বর্ণনা অনুযায়ী হযরত আদম (আ.) নিজের বংশধর বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) ও তাঁর পবিত্র আহলে বাইতের ওয়াসিলা দিয়ে আল্লাহর কাছে তওবা করায় মহান আল্লাহ তওবা কবুল করেন।
হযরত ইব্রাহিম (আ.) ইবাদত ও মুনাজাতের এই বিশেষ প্রথা পুনরুজ্জীবিত করেছিলেন মহান আল্লাহর নির্দেশে।পবিত্র মক্কার দক্ষিণপূর্বাঞ্চলে অবস্থিত রহমতের পাহাড় বা ‘জাবাল আর রাহমাত’ নামক পাহাড়ের পাশে অবস্থান করে প্রার্থনার ওই রীতি আবারও ফিরিয়ে আনেন তিনি।
বলা হয় আরাফাহ দিবস শবে কদরের মতোই দোয়া কবুলের ও পূণ্য অর্জনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পবিত্র এ দিবসে আন্তরিক চিত্তে তওবা করলে ছোট-বড় সব পাপ ক্ষমা করা হয়। এমন কোনো পাপ নেই যা এ দিনে ক্ষমা করা হয় না। এ দিনের দান-খয়রাত ও ইবাদতের রয়েছে অশেষ সাওয়াব।
নবী-রাসূলরা এই মহান দিনের তাৎপর্য বা বিশেষ গুরুত্ব সম্পর্কে নিজ নিজ উম্মতকে অবহিত করে গেছেন। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) বিদায় হজ্বে এই পাহাড়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দিয়েছিলেন। ওই ভাষণে তিনি বলেছিলেন, মুসলমানরা যদি বিভ্রান্ত হতে না চায় তাহলে তারা যেন পবিত্র কুরআন ও তাঁর পবিত্র বংশধর বা আহলে বাইতের অনুসরণ করে। এই হাদিসটি হাদিসে সাকালাইন নামে খ্যাত। (সহীহ মুসলিম, ৪র্থ খণ্ড, পৃ.১৮০৩ এবং সুনানে তিরমিযি, ৫ম খণ্ড, পৃ. ৬৬৩ দ্রষ্টব্য)
আরাফাহ দিবসে হজযাত্রীরা আরাফাত ময়দানে বিশেষ ইবাদত-বন্দেগী করে থাকেন। এই ময়দানে অবস্থান করে হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) আল্লাহর পরিচিতি, দয়া ও কৃতজ্ঞতার উল্লেখ এবং অপূর্ব আধ্যাত্মিক ঔজ্জ্বল্যে সমৃদ্ধ একটি দোয়া উপহার দিয়ে গেছেন মুসলমানদের জন্য। হজযাত্রীসহ বিশ্বের মুসলমানদের অনেকেই এই দিনে দোয়ায়ে আরাফাহ নামে খ্যাত ওই দোয়া পড়ে থাকেন।
১৩৭৯ অথবা ১৩৮০ চন্দ্র-বছর আগে ৯ জিলহজ কুফায় শাহাদত বরণ করেন আমিরুল মুমিনিন হযরত আলী (আ.)’র ভাতিজা ও ইমাম হোসাইন (আ.)’র চাচাতো ভাই হযরত মুসলিম ইবনে আকিল (রা.)। ইমাম হোসাইন (আ.) তাঁকে রাসূল (সা.)’র আহলে বাইতের প্রতি কুফাবাসীদের আনুগত্য ও শ্রদ্ধার মাত্রা কতটুকু তা যাচাই করতে সেখানে পাঠিয়েছিলেন। এর কারণ, কুফাবাসীরা শত শত বা কয়েক হাজার চিঠি পাঠিয়ে ইমামকে বলেছিল তারা ইসলামী বিধানের আলোকে জালিম ইয়াজিদ ইবনে মুয়াবিয়ার অবৈধ শাসনকে স্বীকৃতি দেয়া থেকে বিরত রয়েছেন এবং তারা একজন ন্যায়পরায়ণ ও ধার্মিক নেতার পথনির্দেশনা কামনা করছেন।
প্রথমদিকে কুফার লোকেরা মুসলিম ইবনে আকিলকে স্বাগত জানায়। কিন্তু ইয়াজিদ যখন নির্দয় স্বভাবের ওবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদকে কুফার গভর্নর করে পাঠান তখন কুফার বেশির ভাগ মানুষই ইবনে জিয়াদের মিথ্যা প্রলোভনে প্রতারিত হয়ে অথবা জীবন ও ধন-সম্পদ রক্ষার আশায় ইমামের প্রতিনিধিকে ত্যাগ করেন। বীরত্বপূর্ণ এক যুদ্ধের পর প্রতারিত হন মুসলিম ইবনে আকিল। তাঁকে নেয়া হয় ইবনে জিয়াদের কাছে। জিয়াদ তাঁকে নির্মমভাবে শহীদ করে।
কুফার বড় মসজিদের পাশে হযরত মুসলিম ইবনে আকিল (রা.)’র মাজার রয়েছে। সোনালী গম্বুজের এই মাজারের পাশেই রয়েছে তাঁর সঙ্গে শহীদ হওয়া কয়েকজনের মধ্যে বিশিষ্ট সহযোগী হানি ইবনে ওরওয়া’র কবর।
উল্লেখ্য, কুফার জনগণ ইয়াজিদের প্রতি ইমাম হুসাইন (আ.)'র আনুগত্য প্রকাশ না করার কথা শুনে তাঁর প্রতি সমর্থন জানিয়েছিল। এই শহরের জনগণ প্রকৃত ইসলামী খেলাফতের নেতৃত্ব দেয়ার জন্য ও তাঁদেরকে মুক্ত করার জন্য ইমামের প্রতি আকুল আবেদন জানিয়ে অন্তত ১৮ হাজার চিঠি পাঠিয়েছিল। প্রতিটি চিঠিতে অন্তত ১০০ জনের স্বাক্ষর ছিল। কিন্তু তাঁরা প্রয়োজনের সময় ইমামের সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। এমনকি কুফার প্রকৃত অবস্থা যাচাই করার জন্য যখন চাচাত ভাই মুসলিম ইবনে আকিল (রা.)-কে কুফায় পাঠান এই মহান ইমাম তখনও তারা ইমামের এই দূতকে সাহায্য করতে ব্যর্থ হয় এবং তিনি নৃশংসভাবে শহীদ হয়েছিলেন।
কিন্তু আকিল (রা.)'র শাহাদতের পরও ইমাম হুসাইন (আ.) যদি দোদুল-মনা কুফাবাসীদের আহ্বানে সাড়া না দিতেন , তাহলে ইতিহাসে এই ইমামকে কাপুরুষ বলে উল্লেখ করা হত এবং বলা হত লাখো মানুষের মুক্তির আহ্বানকে উপেক্ষা করে ইমাম হুসাইন (আ.) নিজের জীবন বাঁচানোর জন্য ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেছিলেন।
কুফার পথে যাওয়ার সময় আকিল (রা.)'র শাহাদতের খবর শুনে কেঁদে ফেলেন ইমাম হুসাইন (আ.)। কিন্তু তবুও তিনি বিপ্লব চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন। এ সময় ইমাম আবৃত্তি করেছিলেন পবিত্র কুরআনের একটি আয়াত যেখানে বলা হয়েছে:
"মুমিনদের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছে। তাদের কেউ কেউ মৃত্যুবরণ করেছে এবং কেউ কেউ (শাহাদতের জন্য) প্রতীক্ষা করছে। তারা তাদের সংকল্প মোটেই পরিবর্তন করেনি।"(সুরা আহজাব, ২৩)
ইসলামী বর্ণনা অনুযায়ী হযরত আদম (আ.) নিজের বংশধর বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) ও তাঁর পবিত্র আহলে বাইতের ওয়াসিলা দিয়ে আল্লাহর কাছে তওবা করায় মহান আল্লাহ তওবা কবুল করেন।
হযরত ইব্রাহিম (আ.) ইবাদত ও মুনাজাতের এই বিশেষ প্রথা পুনরুজ্জীবিত করেছিলেন মহান আল্লাহর নির্দেশে।পবিত্র মক্কার দক্ষিণপূর্বাঞ্চলে অবস্থিত রহমতের পাহাড় বা ‘জাবাল আর রাহমাত’ নামক পাহাড়ের পাশে অবস্থান করে প্রার্থনার ওই রীতি আবারও ফিরিয়ে আনেন তিনি।
বলা হয় আরাফাহ দিবস শবে কদরের মতোই দোয়া কবুলের ও পূণ্য অর্জনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পবিত্র এ দিবসে আন্তরিক চিত্তে তওবা করলে ছোট-বড় সব পাপ ক্ষমা করা হয়। এমন কোনো পাপ নেই যা এ দিনে ক্ষমা করা হয় না। এ দিনের দান-খয়রাত ও ইবাদতের রয়েছে অশেষ সাওয়াব।
নবী-রাসূলরা এই মহান দিনের তাৎপর্য বা বিশেষ গুরুত্ব সম্পর্কে নিজ নিজ উম্মতকে অবহিত করে গেছেন। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) বিদায় হজ্বে এই পাহাড়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দিয়েছিলেন। ওই ভাষণে তিনি বলেছিলেন, মুসলমানরা যদি বিভ্রান্ত হতে না চায় তাহলে তারা যেন পবিত্র কুরআন ও তাঁর পবিত্র বংশধর বা আহলে বাইতের অনুসরণ করে। এই হাদিসটি হাদিসে সাকালাইন নামে খ্যাত। (সহীহ মুসলিম, ৪র্থ খণ্ড, পৃ.১৮০৩ এবং সুনানে তিরমিযি, ৫ম খণ্ড, পৃ. ৬৬৩ দ্রষ্টব্য)
আরাফাহ দিবসে হজযাত্রীরা আরাফাত ময়দানে বিশেষ ইবাদত-বন্দেগী করে থাকেন। এই ময়দানে অবস্থান করে হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) আল্লাহর পরিচিতি, দয়া ও কৃতজ্ঞতার উল্লেখ এবং অপূর্ব আধ্যাত্মিক ঔজ্জ্বল্যে সমৃদ্ধ একটি দোয়া উপহার দিয়ে গেছেন মুসলমানদের জন্য। হজযাত্রীসহ বিশ্বের মুসলমানদের অনেকেই এই দিনে দোয়ায়ে আরাফাহ নামে খ্যাত ওই দোয়া পড়ে থাকেন।
১৩৭৯ অথবা ১৩৮০ চন্দ্র-বছর আগে ৯ জিলহজ কুফায় শাহাদত বরণ করেন আমিরুল মুমিনিন হযরত আলী (আ.)’র ভাতিজা ও ইমাম হোসাইন (আ.)’র চাচাতো ভাই হযরত মুসলিম ইবনে আকিল (রা.)। ইমাম হোসাইন (আ.) তাঁকে রাসূল (সা.)’র আহলে বাইতের প্রতি কুফাবাসীদের আনুগত্য ও শ্রদ্ধার মাত্রা কতটুকু তা যাচাই করতে সেখানে পাঠিয়েছিলেন। এর কারণ, কুফাবাসীরা শত শত বা কয়েক হাজার চিঠি পাঠিয়ে ইমামকে বলেছিল তারা ইসলামী বিধানের আলোকে জালিম ইয়াজিদ ইবনে মুয়াবিয়ার অবৈধ শাসনকে স্বীকৃতি দেয়া থেকে বিরত রয়েছেন এবং তারা একজন ন্যায়পরায়ণ ও ধার্মিক নেতার পথনির্দেশনা কামনা করছেন।
প্রথমদিকে কুফার লোকেরা মুসলিম ইবনে আকিলকে স্বাগত জানায়। কিন্তু ইয়াজিদ যখন নির্দয় স্বভাবের ওবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদকে কুফার গভর্নর করে পাঠান তখন কুফার বেশির ভাগ মানুষই ইবনে জিয়াদের মিথ্যা প্রলোভনে প্রতারিত হয়ে অথবা জীবন ও ধন-সম্পদ রক্ষার আশায় ইমামের প্রতিনিধিকে ত্যাগ করেন। বীরত্বপূর্ণ এক যুদ্ধের পর প্রতারিত হন মুসলিম ইবনে আকিল। তাঁকে নেয়া হয় ইবনে জিয়াদের কাছে। জিয়াদ তাঁকে নির্মমভাবে শহীদ করে।
কুফার বড় মসজিদের পাশে হযরত মুসলিম ইবনে আকিল (রা.)’র মাজার রয়েছে। সোনালী গম্বুজের এই মাজারের পাশেই রয়েছে তাঁর সঙ্গে শহীদ হওয়া কয়েকজনের মধ্যে বিশিষ্ট সহযোগী হানি ইবনে ওরওয়া’র কবর।
উল্লেখ্য, কুফার জনগণ ইয়াজিদের প্রতি ইমাম হুসাইন (আ.)'র আনুগত্য প্রকাশ না করার কথা শুনে তাঁর প্রতি সমর্থন জানিয়েছিল। এই শহরের জনগণ প্রকৃত ইসলামী খেলাফতের নেতৃত্ব দেয়ার জন্য ও তাঁদেরকে মুক্ত করার জন্য ইমামের প্রতি আকুল আবেদন জানিয়ে অন্তত ১৮ হাজার চিঠি পাঠিয়েছিল। প্রতিটি চিঠিতে অন্তত ১০০ জনের স্বাক্ষর ছিল। কিন্তু তাঁরা প্রয়োজনের সময় ইমামের সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। এমনকি কুফার প্রকৃত অবস্থা যাচাই করার জন্য যখন চাচাত ভাই মুসলিম ইবনে আকিল (রা.)-কে কুফায় পাঠান এই মহান ইমাম তখনও তারা ইমামের এই দূতকে সাহায্য করতে ব্যর্থ হয় এবং তিনি নৃশংসভাবে শহীদ হয়েছিলেন।
কিন্তু আকিল (রা.)'র শাহাদতের পরও ইমাম হুসাইন (আ.) যদি দোদুল-মনা কুফাবাসীদের আহ্বানে সাড়া না দিতেন , তাহলে ইতিহাসে এই ইমামকে কাপুরুষ বলে উল্লেখ করা হত এবং বলা হত লাখো মানুষের মুক্তির আহ্বানকে উপেক্ষা করে ইমাম হুসাইন (আ.) নিজের জীবন বাঁচানোর জন্য ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেছিলেন।
কুফার পথে যাওয়ার সময় আকিল (রা.)'র শাহাদতের খবর শুনে কেঁদে ফেলেন ইমাম হুসাইন (আ.)। কিন্তু তবুও তিনি বিপ্লব চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন। এ সময় ইমাম আবৃত্তি করেছিলেন পবিত্র কুরআনের একটি আয়াত যেখানে বলা হয়েছে:
"মুমিনদের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছে। তাদের কেউ কেউ মৃত্যুবরণ করেছে এবং কেউ কেউ (শাহাদতের জন্য) প্রতীক্ষা করছে। তারা তাদের সংকল্প মোটেই পরিবর্তন করেনি।"(সুরা আহজাব, ২৩)
No comments