লেবুর গ্রাম বালিয়াখোড়া by রিপন আনসারী
যে
গ্রামের প্রতিটি বাড়ির আঙ্গিনা ও তার চারপাশে শোভা পাচ্ছে শুধুই লেবু
বাগান। আর এই বাগানের তরতাজা কাঁচা লেবুর সুগন্ধ বইছে সেখানকার বাতাসে।
লেবু চাষের দ্বারা গ্রামের অনেক পরিবারই অর্থ-বিত্তে হয়েছেন স্বাবলম্বী।
সবুজ শ্যামল ছায়াঘেরা লেবু চাষের জন্য বিখ্যাত গ্রামটি হচ্ছে মানিকগঞ্জের
ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া।
সরজমিন বালিয়াখোড়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, রাস্তার দুই ধারে, বাড়ির আঙ্গিনা ও তার চার পাশে চোখ জুড়ানো লেবু বাগান। এমন কোন বাড়ি নেই যেখানে লেবুগাছ নেই। প্রায় ৩০০ পরিবার এ গ্রামে লেবু চাষ করে আসছে। লেবুর ভরা মওসুমে বাগান থেকে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা লেবু তোলা হচ্ছে। আর এই এখানকার লেবুর বড় চালান যাচ্ছে ঢাকার কাওরান বাজারে। শুধু কাওরান বারই নয় প্রতিদিন পাইকার ব্যবসায়ীরা সেখান থেকে লেবু ক্রয় করে ট্রাক ভর্তি নিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এলাচি, কাগজি ও কলম্বো জাতের লেবু এখানে বেশি উৎপাদন করা হয়। তবে সারা বছরের চাইতে রমজান মাসে এখানকার লেবুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে।
এছাড়া বালিয়াখোড়া গ্রামের লেবু শুধু দেশেই নয় দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সৌদি আরব, কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশেও রপ্তানি করা হয়। চলতি মৌসুমে প্রায় ১৫ টন লেবু রপ্তানি করা হয়েছে বিভিন্ন দেশে। কথা হয় বালিয়াখোড়া গ্রামের বেশ কয়েকজন লেবু চাষির সঙ্গে।
গ্রামের প্রাক্তন স্কুল শিক্ষক নারয়ণ চন্দ্র বলেন, আমাদের গ্রামটি লেবু চাষের জন্য বিখ্যাত। এলাকার এমন কোনো বাসাবাড়ি নেই যেখানে লেবু চাষ হয় না। আমি নিজেই ১৫০ শতাংশ জমির ওপর চারটি লেবুর বাগান করেছি। প্রথম আমার পিতা পার্শ্ববর্তী গ্রামের আলী হোসেনের বাড়ি থেকে ১০টি লেবুর চারা নিয়ে লেবু চাষ শুরু করেন। পিতার মৃত্যুর বাবার সখের লেবু বাগানগুলো পরিচর্যার দায়িত্বে রয়েছি। আমার বাগানগুলোতে এলাচি, কাগজি ও কলম্বো- এই তিন জাতের লেবুর চাষ করছি। লেবু চাষ করে আমার প্রতি বছর লক্ষাধিক টাকা আয় হচ্ছে। বালিয়াখোড়া গ্রামের ব্যাংকার কামরুল হাসান জনি বলেন, আমার বাবা চাচারা প্রায় ২০-২৫ বছর ধরে লেবু চাষ করে আসছেন। এক সময় এ গ্রামের আমরা ৩-৪ পরিবার লেবু বাগান করেছি। তা বেড়ে এখন ২৫০ থেকে ৩০০ পরিবার লেবু চাষ করে আসছে। আমাদের চার বিঘা বাগানে শুধু কলম্ব জাতের লেবু চাষ করেছি। আগে দাম ভালো পাওয়া গেলেও এখন বাজার একটু মন্দা। প্রতি বছর লক্ষাধিক টাকায় বাগান বিক্রি করে দেই। এলাকার যুবক আতাউর রহমান তোহা বলেন, বালিয়াখোড়া গ্রামটিকে আমরা লেবুর গ্রাম হিসেবে চিনি। গ্রামের প্রতিটি বাড়ির আঙ্গিনা, রাস্তার ধার ও তার আশপাশে দেখা যায় শুধু লেবু আর লেবুর বাগান। বাগানের পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে কাঁচা লেবুর গন্ধে ম’ম’ করে। লেবু চাষি মফিজুল ইসলাম দীপন বলেন, আমার বাবা প্রয়াত ৩৫ বছর আগে লেবুর বাগান করেন। বাবার মৃত্যুর পর আমরা ভাইয়েরা মিলে এই লেবুর চাষ করে আসছি। বর্তমানে আমার ২৪০ শতাংশ জমিতে লেবুর চাষ হচ্ছে। লেবু চাষ করেই আজ আমরা মোটামুটি স্বাবলম্বী। আমাদের বাগানের লেবু ঢাকার কাওরান বাজার, শ্যামবাজার, গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার বড় বড় আড়তে পাইকাররা নিয়ে বিক্রি করেন। রমজান মাসের প্রথম দিকে লেবুর দাম অনেক ভালো পেয়েছি। বর্তমানে দাম একটু কম। তারপরও ভালোই লাভ পাচ্ছি।
লেবু চাষি বিলু মিয়া জানান, এখন লেবুর ভরা মওসুম। ঢাকার পাইকাররা আমাদের বাগান থেকে কম দামে লেবু কিনে সেখানে চড়া দামে বিক্রি করেন। শুধু তাই নয়, আমাদের গ্রামের লেবু বিদেশেও রপ্তানি করা হচ্ছে। বর্তমানে ১শ’ লেবু ২৫০-৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রোজার প্রথম দিকে এক হালি লেবু বিক্রি হয়েছে ৩৫-৪০ টাকা পর্যন্ত।
বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল আওয়াল খান বলেন, আমি প্রায় ৪০ বছর ধরে লেবু চাষ করে আসছি। এখন আমার প্রায় ৮ বিঘা জমিতে লেবু আবাদ হচ্ছে। লেবু চাষ অত্যন্ত লাভজনক বলেই সেই বাবার আমল থেকে চাষ করে আসছি। বছরে বেশ ভালোই লাভ পাচ্ছি। আমার গ্রামে ছোট বড় প্রায় ১৫০টি লেবু বাগান রয়েছে। এলাকার প্রত্যেক বাড়িতেই কমবেশি লেবুর বাগান রয়েছে। অনেক পরিবার লেবু চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছে। আবার অনেকেই সারা বছর লেবু চাষ করেই সংসার চালাচ্ছেন। এক কথায় আমার ইউনিয়নটি লেবু চাষের জন্য বিখ্যাত। এখানকার লেবু দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করছে পাইকাররা।
বিদেশে বিভিন্ন সবজিজাত পণ্য রপ্তানিকারক ঢাকার ব্যবসায়ী মো. ফারুক খান বলেন, চলতি মৌসুমে সৌদি আরব, কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশে প্রায় ১৫ টন লেবু রপ্তানি করা হয়েছে। বেশিরভাগ লেবুই তিনি সংগ্রহ করেন মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া গ্রাম থেকে।
ঘিওর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশরাফ উজ্জামান খান জানান, ঘিওরের বালিয়াখোড়া ও সোদঘাটা গ্রামের লেবু চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন অনেক চাষি। এ অঞ্চলের লেবুর কদর রয়েছে সারা দেশে। শুধু তাই নয়, বিদেশেও যাচ্ছে এখানকার লেবু। কৃষি বিভাগ থেকে ওই এলাকার লেবুচাষিদের সব ধরনের সহায়তা দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
সরজমিন বালিয়াখোড়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, রাস্তার দুই ধারে, বাড়ির আঙ্গিনা ও তার চার পাশে চোখ জুড়ানো লেবু বাগান। এমন কোন বাড়ি নেই যেখানে লেবুগাছ নেই। প্রায় ৩০০ পরিবার এ গ্রামে লেবু চাষ করে আসছে। লেবুর ভরা মওসুমে বাগান থেকে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা লেবু তোলা হচ্ছে। আর এই এখানকার লেবুর বড় চালান যাচ্ছে ঢাকার কাওরান বাজারে। শুধু কাওরান বারই নয় প্রতিদিন পাইকার ব্যবসায়ীরা সেখান থেকে লেবু ক্রয় করে ট্রাক ভর্তি নিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এলাচি, কাগজি ও কলম্বো জাতের লেবু এখানে বেশি উৎপাদন করা হয়। তবে সারা বছরের চাইতে রমজান মাসে এখানকার লেবুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে।
এছাড়া বালিয়াখোড়া গ্রামের লেবু শুধু দেশেই নয় দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সৌদি আরব, কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশেও রপ্তানি করা হয়। চলতি মৌসুমে প্রায় ১৫ টন লেবু রপ্তানি করা হয়েছে বিভিন্ন দেশে। কথা হয় বালিয়াখোড়া গ্রামের বেশ কয়েকজন লেবু চাষির সঙ্গে।
গ্রামের প্রাক্তন স্কুল শিক্ষক নারয়ণ চন্দ্র বলেন, আমাদের গ্রামটি লেবু চাষের জন্য বিখ্যাত। এলাকার এমন কোনো বাসাবাড়ি নেই যেখানে লেবু চাষ হয় না। আমি নিজেই ১৫০ শতাংশ জমির ওপর চারটি লেবুর বাগান করেছি। প্রথম আমার পিতা পার্শ্ববর্তী গ্রামের আলী হোসেনের বাড়ি থেকে ১০টি লেবুর চারা নিয়ে লেবু চাষ শুরু করেন। পিতার মৃত্যুর বাবার সখের লেবু বাগানগুলো পরিচর্যার দায়িত্বে রয়েছি। আমার বাগানগুলোতে এলাচি, কাগজি ও কলম্বো- এই তিন জাতের লেবুর চাষ করছি। লেবু চাষ করে আমার প্রতি বছর লক্ষাধিক টাকা আয় হচ্ছে। বালিয়াখোড়া গ্রামের ব্যাংকার কামরুল হাসান জনি বলেন, আমার বাবা চাচারা প্রায় ২০-২৫ বছর ধরে লেবু চাষ করে আসছেন। এক সময় এ গ্রামের আমরা ৩-৪ পরিবার লেবু বাগান করেছি। তা বেড়ে এখন ২৫০ থেকে ৩০০ পরিবার লেবু চাষ করে আসছে। আমাদের চার বিঘা বাগানে শুধু কলম্ব জাতের লেবু চাষ করেছি। আগে দাম ভালো পাওয়া গেলেও এখন বাজার একটু মন্দা। প্রতি বছর লক্ষাধিক টাকায় বাগান বিক্রি করে দেই। এলাকার যুবক আতাউর রহমান তোহা বলেন, বালিয়াখোড়া গ্রামটিকে আমরা লেবুর গ্রাম হিসেবে চিনি। গ্রামের প্রতিটি বাড়ির আঙ্গিনা, রাস্তার ধার ও তার আশপাশে দেখা যায় শুধু লেবু আর লেবুর বাগান। বাগানের পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে কাঁচা লেবুর গন্ধে ম’ম’ করে। লেবু চাষি মফিজুল ইসলাম দীপন বলেন, আমার বাবা প্রয়াত ৩৫ বছর আগে লেবুর বাগান করেন। বাবার মৃত্যুর পর আমরা ভাইয়েরা মিলে এই লেবুর চাষ করে আসছি। বর্তমানে আমার ২৪০ শতাংশ জমিতে লেবুর চাষ হচ্ছে। লেবু চাষ করেই আজ আমরা মোটামুটি স্বাবলম্বী। আমাদের বাগানের লেবু ঢাকার কাওরান বাজার, শ্যামবাজার, গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার বড় বড় আড়তে পাইকাররা নিয়ে বিক্রি করেন। রমজান মাসের প্রথম দিকে লেবুর দাম অনেক ভালো পেয়েছি। বর্তমানে দাম একটু কম। তারপরও ভালোই লাভ পাচ্ছি।
লেবু চাষি বিলু মিয়া জানান, এখন লেবুর ভরা মওসুম। ঢাকার পাইকাররা আমাদের বাগান থেকে কম দামে লেবু কিনে সেখানে চড়া দামে বিক্রি করেন। শুধু তাই নয়, আমাদের গ্রামের লেবু বিদেশেও রপ্তানি করা হচ্ছে। বর্তমানে ১শ’ লেবু ২৫০-৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রোজার প্রথম দিকে এক হালি লেবু বিক্রি হয়েছে ৩৫-৪০ টাকা পর্যন্ত।
বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল আওয়াল খান বলেন, আমি প্রায় ৪০ বছর ধরে লেবু চাষ করে আসছি। এখন আমার প্রায় ৮ বিঘা জমিতে লেবু আবাদ হচ্ছে। লেবু চাষ অত্যন্ত লাভজনক বলেই সেই বাবার আমল থেকে চাষ করে আসছি। বছরে বেশ ভালোই লাভ পাচ্ছি। আমার গ্রামে ছোট বড় প্রায় ১৫০টি লেবু বাগান রয়েছে। এলাকার প্রত্যেক বাড়িতেই কমবেশি লেবুর বাগান রয়েছে। অনেক পরিবার লেবু চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছে। আবার অনেকেই সারা বছর লেবু চাষ করেই সংসার চালাচ্ছেন। এক কথায় আমার ইউনিয়নটি লেবু চাষের জন্য বিখ্যাত। এখানকার লেবু দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করছে পাইকাররা।
বিদেশে বিভিন্ন সবজিজাত পণ্য রপ্তানিকারক ঢাকার ব্যবসায়ী মো. ফারুক খান বলেন, চলতি মৌসুমে সৌদি আরব, কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশে প্রায় ১৫ টন লেবু রপ্তানি করা হয়েছে। বেশিরভাগ লেবুই তিনি সংগ্রহ করেন মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া গ্রাম থেকে।
ঘিওর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশরাফ উজ্জামান খান জানান, ঘিওরের বালিয়াখোড়া ও সোদঘাটা গ্রামের লেবু চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন অনেক চাষি। এ অঞ্চলের লেবুর কদর রয়েছে সারা দেশে। শুধু তাই নয়, বিদেশেও যাচ্ছে এখানকার লেবু। কৃষি বিভাগ থেকে ওই এলাকার লেবুচাষিদের সব ধরনের সহায়তা দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
No comments