ব্যাংকের জন্য করের টাকা অযৌক্তিক
একের
পর এক আর্থিক কেলেঙ্কারি ও ক্রমবর্ধমান খেলাপি ঋণের কারণে বড় ধরনের মূলধন
ঘাটতিতে পড়েছে সরকারি ব্যাংকগুলো। এসব ব্যাংক টিকিয়ে রাখতে ফের সাধারণ
মানুষের করের ২,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়ার কথা বিবেচনা করছে সরকার। আসন্ন
বাজেটে এই বরাদ্দ থাকছে বলে সোমবার সচিবালয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী
আবুল মাল আবদুল মুহিত। এ অবস্থায় জালিয়াতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান না নিয়ে
রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ব্যাংকগুলোকে মূলধন সরবরাহের সরকারি নীতির তীব্র
সমালোচনা করেছেন ব্যাংক খাতের বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদরা। তাদের মতে, এভাবে
অর্থ দিলে ব্যাংকিং খাত নিয়ে গ্রাহকদের অনাস্থা আরো চরম পর্যায়ে পৌঁছাবে। এ
ছাড়া এসব ব্যাংকের উন্নতির পরিবর্তে সরকারের প্রতি নির্ভরতাও বেড়ে যাবে।
আর সেটাই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পাশাপাশি বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর
অনিয়ম-দুর্নীতির বোঝাও এখন সরকারকে বইতে হচ্ছে। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক গবেষণায় বলা হয়, ২০০৮-০৯ থেকে
২০১৫-১৬ পর্যন্ত ক্রমবর্ধমান রাজস্ব আয় থেকে সরকার গড়ে ১০.৮ শতাংশ অর্থ
দিয়েছে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মূলধন জোগানে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি পূরণে বারবার জনগণের টাকা দেয়া মানে হলো লুটপাটকে সমর্থন দেয়া। যেটা অযৌক্তিক। আর এতে দুর্নীতি আরো উৎসাহিত হয়। তিনি বলেন, ব্যাংকের মূল কাজ জনগণ থেকে আমানত নিয়ে উৎপাদনশীল শিল্পে বিতরণ করা। সেটা তারা করছে না। এছাড়া ব্যাংক খাত তদারক ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক সচেতন থাকলে এরকম পরিস্থিতি তৈরি হতো না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে সংসদে অর্থমন্ত্রী জানান, ২০০৫-০৬ অর্থবছর থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছর পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলকে সরকার মূলধন সহায়তা হিসেবে ১০,২৭২ কোটি টাকা দিয়েছে।
জানা গেছে, রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি পূরণের জন্য সরকার ১৫ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। চলতি অর্থবছরে ব্যাংকগুলোকে দেয়ার জন্য দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল, যদিও তা এখনো ছাড় হয়নি। ছাড় হবে ৭ই জুন বাজেট ঘোষণার পর।
গত বাজেট বিবৃতি বিশ্লেষণে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রতি বছর মূলধন বাবদ ব্যাংকগুলোকে টাকা দিতে হয়েছে। ২০০৯-১০ থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছর পর্যন্ত ৮ বছরে দেয়া হয়েছে ১৪ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১১-১২ অর্থবছরে ৩৪১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখলেও তা ছাড় করা হয়নি। পরের অর্থ বছর ১ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখলেও দেয়া হয় ৫৪১ কোটি টাকা। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বাজেটে বরাদ্দ ছিল ৪২০ কোটি টাকা। কিন্তু ওই বছর ব্যাংকগুলোকে দেয়া হয় পাঁচ হাজার কোটি টাকা। পরের ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সরকার নিজেই পাঁচ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখে, কিন্তু ওই টাকায়ও কুলোয়নি। ওই বছর ব্যাংকগুলোকে দিতে হয় ৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। এভাবে বছরের পর বছর অর্থ দেয়ার পরও গত বছরের ডিসেম্বরে ব্যাংকগুলোর মূলধন সংকট দাঁড়ায় প্রায় ২০,০০০ কোটি টাকা। এর এক বছর আগে মূলধন সংকটের পরিমাণ ছিল ১৩,৮১৯ কোটি টাকা। সোমবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানান, ব্যাংকগুলোর জন্য আগামী অর্থবছরেও বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। তবে কত রাখা হয়েছে তা তিনি উল্লেখ করেননি।
উল্লেখ্য, ২০১০ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে সোনালী ব্যাংকে হল-মার্ক কেলেঙ্কারিতে ২,৬০০ কোটি টাকা, বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারিতে ৪,৫০০ কোটি টাকা এবং জনতা ব্যাংকে বিসমিল্লাহ গ্রুপ কেলেঙ্কারিতে ১,২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে।
সিপিডির গবেষণা মতে, সম্পদ ঘাটতির বাংলাদেশে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোকে যেভাবে টাকা দেয়া হচ্ছে, তা দেয়া না হলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য তথা সামাজিক খাতে টাকাগুলো খরচ করা যেত। এতে দেশও অনেক বেশি উপকৃত হতো।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এবি মীর্জ্জা আজিজুল ইসলাম মনে করেন, ব্যাংক খাতে সুশাসনের ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় ঋণ দেয়ায় অনিয়ম হচ্ছে। খেলাপি ঋণ আদায় হচ্ছে না। ব্যাংকগুলো মূলধন ঘাটতিতে পড়ছে। ফলে সরকারি কোষাগার থেকে ব্যাংকগুলোকে প্রতিবছর টাকা দিতে হচ্ছে। সরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপিঋণও অতিমাত্রায় রয়েছে। তিনি বলেন, এভাবে চলতে থাকলে ব্যাংকিং খাতে সাধারণ জনগণের অনাস্থা তৈরি হবে।
জানা গেছে, ব্যাংকগুলোকে অর্থ মন্ত্রণালয় টাকা দেয়ার সময় প্রতিবারই বলে দিচ্ছে যে খেলাপি ঋণ আদায়ে তাদের মনোযোগী হতে হবে। বাস্তবে খেলাপি ঋণ আরো বাড়ছে। এক শ্রেণির প্রভাবশালী ব্যক্তি ব্যাংক থেকে মোটা অঙ্কের ঋণ নিয়ে আর শোধ করছেন না। আর এ বড় ঋণখেলাপির কারণে সামগ্রিকভাবে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পাহাড় জমে গেছে। গত এক দশকে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ চার গুণ বেড়েছে। আর মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে গত মার্চ শেষে খেলাপি ঋণ ১৪ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা বেড়ে হয়েছে ৮৮ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গত ডিসেম্বর পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী, সোনালী, জনতা, রূপালী, বেসিক, কৃষি ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) মূলধন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। অথচ তার আগের তিন মাস আগে অর্থাৎ গত সেপ্টেম্বরেই এই ঘাটতি ছিল ১৫ হাজার ৯০৯ কোটি টাকা। তিন মাসে মূলধন ঘাটতি বেড়েছে ১ হাজার ৫৩১ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় বড় ঋণখেলাপিদের আইনের আওতায় না আনা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের দুর্বল ব্যবস্থাপনার করণে ঋণখেলাপি বেড়েছে। ফলে হলমার্ক, বিসমিল্লাহ, বেসিক ব্যাংকসহ বড় বড় ঋণকেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঋণ আর পরিশোধ না করায় তা খেলাপিতে পরিণত হচ্ছে। আর খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকের বিনিয়োগ সক্ষমতাও কমে যাচ্ছে।
এদিকে সম্প্রতি রিহ্যাব আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ব্যাংকিং খাতের দুরবস্থা নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ জানান, ব্যাংক খাত নিয়ে আমাদের আরো সতর্ক ও যত্নবান হতে হবে। ব্যাংকে টাকা জমা রেখে চেক দিয়ে যদি টাকা তুলতে সমস্যায় পড়তে হয়, তাহলে হবে না। ইসলামী ব্যাংক নামকরা ব্যাংক ছিল। কিন্তু অল্প টাকা আনতে গেলেও কষ্ট হয়। সব ব্যাংক নয়, অল্প কিছু ব্যাংকে সমস্যা। তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাত একটি স্পর্শকাতর জায়গা। এখানে যদি কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে দেশে যতই উন্নয়নের কথা বলি না, আমাদের ক্ষতি হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি পূরণে বারবার জনগণের টাকা দেয়া মানে হলো লুটপাটকে সমর্থন দেয়া। যেটা অযৌক্তিক। আর এতে দুর্নীতি আরো উৎসাহিত হয়। তিনি বলেন, ব্যাংকের মূল কাজ জনগণ থেকে আমানত নিয়ে উৎপাদনশীল শিল্পে বিতরণ করা। সেটা তারা করছে না। এছাড়া ব্যাংক খাত তদারক ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক সচেতন থাকলে এরকম পরিস্থিতি তৈরি হতো না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে সংসদে অর্থমন্ত্রী জানান, ২০০৫-০৬ অর্থবছর থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছর পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলকে সরকার মূলধন সহায়তা হিসেবে ১০,২৭২ কোটি টাকা দিয়েছে।
জানা গেছে, রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি পূরণের জন্য সরকার ১৫ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। চলতি অর্থবছরে ব্যাংকগুলোকে দেয়ার জন্য দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল, যদিও তা এখনো ছাড় হয়নি। ছাড় হবে ৭ই জুন বাজেট ঘোষণার পর।
গত বাজেট বিবৃতি বিশ্লেষণে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রতি বছর মূলধন বাবদ ব্যাংকগুলোকে টাকা দিতে হয়েছে। ২০০৯-১০ থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছর পর্যন্ত ৮ বছরে দেয়া হয়েছে ১৪ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১১-১২ অর্থবছরে ৩৪১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখলেও তা ছাড় করা হয়নি। পরের অর্থ বছর ১ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখলেও দেয়া হয় ৫৪১ কোটি টাকা। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বাজেটে বরাদ্দ ছিল ৪২০ কোটি টাকা। কিন্তু ওই বছর ব্যাংকগুলোকে দেয়া হয় পাঁচ হাজার কোটি টাকা। পরের ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সরকার নিজেই পাঁচ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখে, কিন্তু ওই টাকায়ও কুলোয়নি। ওই বছর ব্যাংকগুলোকে দিতে হয় ৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। এভাবে বছরের পর বছর অর্থ দেয়ার পরও গত বছরের ডিসেম্বরে ব্যাংকগুলোর মূলধন সংকট দাঁড়ায় প্রায় ২০,০০০ কোটি টাকা। এর এক বছর আগে মূলধন সংকটের পরিমাণ ছিল ১৩,৮১৯ কোটি টাকা। সোমবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানান, ব্যাংকগুলোর জন্য আগামী অর্থবছরেও বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। তবে কত রাখা হয়েছে তা তিনি উল্লেখ করেননি।
উল্লেখ্য, ২০১০ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে সোনালী ব্যাংকে হল-মার্ক কেলেঙ্কারিতে ২,৬০০ কোটি টাকা, বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারিতে ৪,৫০০ কোটি টাকা এবং জনতা ব্যাংকে বিসমিল্লাহ গ্রুপ কেলেঙ্কারিতে ১,২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে।
সিপিডির গবেষণা মতে, সম্পদ ঘাটতির বাংলাদেশে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোকে যেভাবে টাকা দেয়া হচ্ছে, তা দেয়া না হলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য তথা সামাজিক খাতে টাকাগুলো খরচ করা যেত। এতে দেশও অনেক বেশি উপকৃত হতো।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এবি মীর্জ্জা আজিজুল ইসলাম মনে করেন, ব্যাংক খাতে সুশাসনের ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় ঋণ দেয়ায় অনিয়ম হচ্ছে। খেলাপি ঋণ আদায় হচ্ছে না। ব্যাংকগুলো মূলধন ঘাটতিতে পড়ছে। ফলে সরকারি কোষাগার থেকে ব্যাংকগুলোকে প্রতিবছর টাকা দিতে হচ্ছে। সরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপিঋণও অতিমাত্রায় রয়েছে। তিনি বলেন, এভাবে চলতে থাকলে ব্যাংকিং খাতে সাধারণ জনগণের অনাস্থা তৈরি হবে।
জানা গেছে, ব্যাংকগুলোকে অর্থ মন্ত্রণালয় টাকা দেয়ার সময় প্রতিবারই বলে দিচ্ছে যে খেলাপি ঋণ আদায়ে তাদের মনোযোগী হতে হবে। বাস্তবে খেলাপি ঋণ আরো বাড়ছে। এক শ্রেণির প্রভাবশালী ব্যক্তি ব্যাংক থেকে মোটা অঙ্কের ঋণ নিয়ে আর শোধ করছেন না। আর এ বড় ঋণখেলাপির কারণে সামগ্রিকভাবে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পাহাড় জমে গেছে। গত এক দশকে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ চার গুণ বেড়েছে। আর মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে গত মার্চ শেষে খেলাপি ঋণ ১৪ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা বেড়ে হয়েছে ৮৮ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গত ডিসেম্বর পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী, সোনালী, জনতা, রূপালী, বেসিক, কৃষি ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) মূলধন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। অথচ তার আগের তিন মাস আগে অর্থাৎ গত সেপ্টেম্বরেই এই ঘাটতি ছিল ১৫ হাজার ৯০৯ কোটি টাকা। তিন মাসে মূলধন ঘাটতি বেড়েছে ১ হাজার ৫৩১ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় বড় ঋণখেলাপিদের আইনের আওতায় না আনা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের দুর্বল ব্যবস্থাপনার করণে ঋণখেলাপি বেড়েছে। ফলে হলমার্ক, বিসমিল্লাহ, বেসিক ব্যাংকসহ বড় বড় ঋণকেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঋণ আর পরিশোধ না করায় তা খেলাপিতে পরিণত হচ্ছে। আর খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকের বিনিয়োগ সক্ষমতাও কমে যাচ্ছে।
এদিকে সম্প্রতি রিহ্যাব আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ব্যাংকিং খাতের দুরবস্থা নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ জানান, ব্যাংক খাত নিয়ে আমাদের আরো সতর্ক ও যত্নবান হতে হবে। ব্যাংকে টাকা জমা রেখে চেক দিয়ে যদি টাকা তুলতে সমস্যায় পড়তে হয়, তাহলে হবে না। ইসলামী ব্যাংক নামকরা ব্যাংক ছিল। কিন্তু অল্প টাকা আনতে গেলেও কষ্ট হয়। সব ব্যাংক নয়, অল্প কিছু ব্যাংকে সমস্যা। তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাত একটি স্পর্শকাতর জায়গা। এখানে যদি কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে দেশে যতই উন্নয়নের কথা বলি না, আমাদের ক্ষতি হবে।
No comments