সেনাবাহিনী ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়
বাংলাদেশে
এখন যেকোনো নির্বাচনই সেনাবাহিনী ছাড়া সুষ্ঠুভাবে করা অসম্ভব হয়ে
দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় নির্বাচন কিংবা জাতীয় নির্বাচন যেটাই হোক। আসন্ন খুলনা ও
গাজীপুর সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের, সেজন্য যা
যা করণীয় তাই তাদের করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের
সাবেক উপদেষ্টা ও সুজন সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খান। গতকাল জাতীয় প্রেস
ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ওপর নাগরিক ভাবনা
বিষয়ক ‘সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)’ আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব
কথা বলেন।
তিনি বলেন, গাজীপুর ও খুলনা নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত করার ব্যাপারে আমাদের এখানে বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে আমরা আহ্বান জানাই যে করেই হোক জনগণের মাঝ থেকে ভোটভীতি দূর করতে হবে। একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য যা-ই দরকার হবে তাদের তা-ই করতে হবে। আলোচনায় অংশ নিয়ে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ও সুজনের নির্বাহী সদস্য অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, নির্বাচনকালীন প্রশাসনের ওপর নির্বাচন কমিশনের বিশেষ নজরদারির প্রয়োজন। এ সময় তিনি সুজনের পক্ষ থেকে ১২টি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
সেসব প্রস্তাবনায় বলা হয়, যারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করবে না তাদের বিরুদ্ধে সরকারের কাছে লিখিতভাবে প্রতিবেদন এবং যারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করবে তাদের জন্য প্রশংসাপত্র থাকা উচিত। যা তাদের নিজ নিজ চাকরির ব্যক্তিগত নথিপত্রে সংরক্ষিত থাকবে এবং ভবিষ্যতে পদোন্নতি কিংবা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে তা বিবেচনা করা যেতে পারে।
সুজনের পক্ষ থেকে আরো উল্লেখ করা হয়, বর্তমানে নানা কারণে নির্বাচনের প্রতি জনগণের গণ-উদাসীনতা দেখা দিয়েছে, গণ-উদাসীনতার কারণগুলো ব্যাপক এবং বিস্তৃত। যেমন, একতরফা ও জবরদস্তিমূলক ভোট ছিনতাই, সংস্কৃতি, উপযুক্ত প্রার্থীর অভাব, নির্বাচনের পর নির্বাচিতদের গণবিচ্ছিন্নতা, আইনের শাসনের অনুপস্থিতি ইত্যাদি। গণ-উদাসীনতা সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথে একটি বড় বাধা। জনগণকে সক্রিয়ভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করার যতরকম উপায় আছে তা নিতে হবে। ব্যাপকভাবে জনগণ ভোটকেন্দ্রে এসে ভোটের গণজোয়ার সৃষ্টি করলে প্রশাসন বা যারা সূক্ষ্ম বা স্থূল কারচুপি ফাঁদ পাতে তাদের সেই ফাঁদ পাতার কৌশল বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়।
প্রস্তাবনায় বলা হয়, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচন সমাপ্তির অন্তত এক সপ্তাহ পর্যন্ত নির্বাচন সংক্রান্ত নানা ধরনের অভিযোগ গ্রহণ এবং তা প্রতিকারের একটি ব্যবস্থা সৃষ্টি করা উচিত। নির্বাচনী ব্যয় পর্যবেক্ষণের একটি সুষ্ঠু পদ্ধতি চালু করা প্রয়োজন। মনোনয়ন ব্যবস্থাকে স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ও বাণিজ্যমুক্তকরণ এবং দলের স্থানীয় সংগঠনের মতামতকে গণতান্ত্রিকভাবে বিবেচনার যেই সুযোগ আইন করে দিয়েছে তার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা দরকার। ওপর থেকে প্রার্থী চাপানোর প্রবণতা বন্ধ করা হোক।
গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নিয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচন মানে এখন ভিন্ন অর্থ। কেউ আমার কাছে নির্বাচন করার কথা বলতে চাইলে আমি তাদেরকে বলে দিই রাতের আঁধারে বুথ দখল করা আর অর্থ খরচ করতে পারলেই কেবল নির্বাচন করতে পারেন। ইউনিয়ন কাউন্সিল নির্বাচনে সেনাবাহিনীর প্রয়োজনের কথা বলেছিলেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার আবু সাইদ খান। কিন্তু তৎকালীন সরকারও সেনাবাহিনী দেয়নি। সেখানে জাতীয় নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন না করলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে বলে আমি মনে করি না। সাবেক এ নির্বাচন কমিশনার আরো বলেন, স্থানীয় নির্বাচন পরিচালনা করা খুব সহজ যদি নির্বাচন কমিশন করতে চায়। ব্যালট বাক্স নির্বাচনের দিনে দিন যাতে আগের রাতে ব্যালট বাক্স দখল না হয়। এ ছাড়াও এখন দেশের বেশির ভাগ মানুষ মনে করে, আমি ভোট দিলেই কি হবে আর না দিলেই কি হবে। এর থেকে না দেয়াই ভালো। এর কারণ সরকার শুধু একা দায়ী নয়, অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোও দায়ী।
তাছাড়া প্রতি ঘণ্টায় প্রতিটি কেন্দ্রে কতটি ভোট পরে তা প্রিজাইডিং অফিসার হিসাব রাখলে শেষে গণ্ডগোল হবে না। এজন্য সরকারের কাছে যেতে হবে না, আইনও বদলাতে হবে না। কমিশন নিজেরাই এটা করতে পারবে। প্রার্থীদের হলফনামা কিছুটা সংস্কারের প্রয়োজন আছে বলেও মনে করেন এ কমিশনার।
সুজন সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমাদের আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য এ দুটি সিটির নির্বাচন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ এ নির্বাচন কেমন হয় তা থেকে জাতীয় নির্বাচন কেমন হবে তা বিবেচনা করবে। নির্বাচন কমিশনের সব ক্ষমতাই রয়েছে, তারা যদি বলে আমাদের হাত-পা বাঁধা, তাহলে সেটা হবে নির্দিষ্ট দলের ছক বাস্তবায়ন করাই মাত্র।
আলোচনায় আরো অংশ নেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া প্রমুখ।
তিনি বলেন, গাজীপুর ও খুলনা নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত করার ব্যাপারে আমাদের এখানে বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে আমরা আহ্বান জানাই যে করেই হোক জনগণের মাঝ থেকে ভোটভীতি দূর করতে হবে। একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য যা-ই দরকার হবে তাদের তা-ই করতে হবে। আলোচনায় অংশ নিয়ে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ও সুজনের নির্বাহী সদস্য অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, নির্বাচনকালীন প্রশাসনের ওপর নির্বাচন কমিশনের বিশেষ নজরদারির প্রয়োজন। এ সময় তিনি সুজনের পক্ষ থেকে ১২টি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
সেসব প্রস্তাবনায় বলা হয়, যারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করবে না তাদের বিরুদ্ধে সরকারের কাছে লিখিতভাবে প্রতিবেদন এবং যারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করবে তাদের জন্য প্রশংসাপত্র থাকা উচিত। যা তাদের নিজ নিজ চাকরির ব্যক্তিগত নথিপত্রে সংরক্ষিত থাকবে এবং ভবিষ্যতে পদোন্নতি কিংবা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে তা বিবেচনা করা যেতে পারে।
সুজনের পক্ষ থেকে আরো উল্লেখ করা হয়, বর্তমানে নানা কারণে নির্বাচনের প্রতি জনগণের গণ-উদাসীনতা দেখা দিয়েছে, গণ-উদাসীনতার কারণগুলো ব্যাপক এবং বিস্তৃত। যেমন, একতরফা ও জবরদস্তিমূলক ভোট ছিনতাই, সংস্কৃতি, উপযুক্ত প্রার্থীর অভাব, নির্বাচনের পর নির্বাচিতদের গণবিচ্ছিন্নতা, আইনের শাসনের অনুপস্থিতি ইত্যাদি। গণ-উদাসীনতা সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথে একটি বড় বাধা। জনগণকে সক্রিয়ভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করার যতরকম উপায় আছে তা নিতে হবে। ব্যাপকভাবে জনগণ ভোটকেন্দ্রে এসে ভোটের গণজোয়ার সৃষ্টি করলে প্রশাসন বা যারা সূক্ষ্ম বা স্থূল কারচুপি ফাঁদ পাতে তাদের সেই ফাঁদ পাতার কৌশল বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়।
প্রস্তাবনায় বলা হয়, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচন সমাপ্তির অন্তত এক সপ্তাহ পর্যন্ত নির্বাচন সংক্রান্ত নানা ধরনের অভিযোগ গ্রহণ এবং তা প্রতিকারের একটি ব্যবস্থা সৃষ্টি করা উচিত। নির্বাচনী ব্যয় পর্যবেক্ষণের একটি সুষ্ঠু পদ্ধতি চালু করা প্রয়োজন। মনোনয়ন ব্যবস্থাকে স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ও বাণিজ্যমুক্তকরণ এবং দলের স্থানীয় সংগঠনের মতামতকে গণতান্ত্রিকভাবে বিবেচনার যেই সুযোগ আইন করে দিয়েছে তার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা দরকার। ওপর থেকে প্রার্থী চাপানোর প্রবণতা বন্ধ করা হোক।
গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নিয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচন মানে এখন ভিন্ন অর্থ। কেউ আমার কাছে নির্বাচন করার কথা বলতে চাইলে আমি তাদেরকে বলে দিই রাতের আঁধারে বুথ দখল করা আর অর্থ খরচ করতে পারলেই কেবল নির্বাচন করতে পারেন। ইউনিয়ন কাউন্সিল নির্বাচনে সেনাবাহিনীর প্রয়োজনের কথা বলেছিলেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার আবু সাইদ খান। কিন্তু তৎকালীন সরকারও সেনাবাহিনী দেয়নি। সেখানে জাতীয় নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন না করলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে বলে আমি মনে করি না। সাবেক এ নির্বাচন কমিশনার আরো বলেন, স্থানীয় নির্বাচন পরিচালনা করা খুব সহজ যদি নির্বাচন কমিশন করতে চায়। ব্যালট বাক্স নির্বাচনের দিনে দিন যাতে আগের রাতে ব্যালট বাক্স দখল না হয়। এ ছাড়াও এখন দেশের বেশির ভাগ মানুষ মনে করে, আমি ভোট দিলেই কি হবে আর না দিলেই কি হবে। এর থেকে না দেয়াই ভালো। এর কারণ সরকার শুধু একা দায়ী নয়, অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোও দায়ী।
তাছাড়া প্রতি ঘণ্টায় প্রতিটি কেন্দ্রে কতটি ভোট পরে তা প্রিজাইডিং অফিসার হিসাব রাখলে শেষে গণ্ডগোল হবে না। এজন্য সরকারের কাছে যেতে হবে না, আইনও বদলাতে হবে না। কমিশন নিজেরাই এটা করতে পারবে। প্রার্থীদের হলফনামা কিছুটা সংস্কারের প্রয়োজন আছে বলেও মনে করেন এ কমিশনার।
সুজন সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমাদের আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য এ দুটি সিটির নির্বাচন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ এ নির্বাচন কেমন হয় তা থেকে জাতীয় নির্বাচন কেমন হবে তা বিবেচনা করবে। নির্বাচন কমিশনের সব ক্ষমতাই রয়েছে, তারা যদি বলে আমাদের হাত-পা বাঁধা, তাহলে সেটা হবে নির্দিষ্ট দলের ছক বাস্তবায়ন করাই মাত্র।
আলোচনায় আরো অংশ নেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া প্রমুখ।
No comments