বিচার কত দূর? by শুভ্র দেব
৫
বছর আগে আজকের এই দিনে সকালবেলায় ঘটে যায় মর্মান্তিক ও ভয়াবহ এক দুর্ঘটনা।
সাভার বাসস্ট্যান্ডের কাছে রানা প্লাজা নামের একটি ৮ তলা ভবন ধসে পড়ে।
ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিল পোশাক খাতে কর্মরত ১ হাজার ১৩৬ জন
শ্রমিক। আহত হোন আরো ১ হাজার ১৬৯ জন। কিন্তু যাদের কারণে এত প্রাণ ঝরে গেল,
অগণিত মানুষ পঙ্গু হলো তাদের বিচার এখনো শুরুই হয়নি। খোঁজ নিয়ে ও
সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হত্যা ও ইমারত আইনের মামলায়
অভিযোগ গঠন হলেও এখন পর্যন্ত সাক্ষ্য গ্রহণই শুরু হয়নি। আরো জানা গেছে,
মামলার অনেক সাক্ষীই বর্তমান ঠিকানা ছেড়ে চলে গেছেন অন্যত্র। আর
সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করতে না পারায় ওই ঘটনায় নিহতদের স্বজন ও বেঁচে যাওয়া
শ্রমিকরা হতাশ। ভয়াবহ ওই ঘটনার ৫ বছর অতিক্রান্ত হলেও বিচার শুরু না হওয়ায়
ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীরা। তাদের প্রশ্ন কবে এই মামলার
বিচারকাজ শেষ হবে?
বিশ্ব বিবেককে নাড়া দেয়া ওই ঘটনার পরপরই অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে পুলিশের মামলা, রাজউকের করা ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘনের মামলা এবং নিহত একজন পোশাক শ্রমিকের দায়ের করা খুনের মামলা, দুর্নীতির মাধ্যমে রানা প্লাজা নির্মাণের মামলাসহ মোট ১৪টি মামলা দায়ের করা হয়। এদিকে রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার বিরুদ্ধে দুদকের একটি মামলার রায় হয়েছে গত বছর। দুদকের নোটিশ অনুযায়ী সম্পত্তির হিসাব বিবরণী জমা না দেয়া সংক্রান্ত একটি মামলায় গত বছরের ২৯শে আগস্ট সোহেল রানাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫৯ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। আইনজীবী সূত্রে জানা গেছে, হত্যা ও ইমারত নির্মাণ আইনের দুই মামলায় ২০১৫ সালের ১লা জুন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপার বিজয়কৃষ্ণ কর ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেন। পরে ২০১৬ সালের ১৮ই জুলাই অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর নির্দেশ দেন ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এসএম কুদ্দুস জামান।
হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে সোহেল রানা, তার বাবা আব্দুল খালেক ওরফে কুলু খালেক, মা মর্জিনা বেগম, সাভার পৌরসভার সাবেক মেয়র রেফাত উল্লাহ, স্থানীয় কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী খান, প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান রাসেল, ধসে পড়া ওই ভবনের তিনটি গার্মেন্ট কারখানার মালিক, সাইট ইঞ্জিনিয়ার মো. সারোয়ার কামালসহ ৪১ জনকে আসামি করা হয়। এই মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে ৫৯৪ জনকে। যে ৪১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হয়েছিল তাদের মধ্যে দুজন মারা গেছেন। সাতজন এখনো পলাতক। আর সোহেল রানা ছাড়া আর কেউ জেলে নেই। বাকি সবাই জামিনে আছেন। অভিযুক্ত ৪১ জনের মধ্যে ৩৮ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনা হয়েছিল। অন্যদিকে ইমারত নির্মাণ আইনের মামলায় বিধি না মেনে রানা প্লাজা ভবন নির্মাণের অভিযোগে ১৮ আসামির বিরুদ্ধে ১৯৫২ সালের ইমারত নির্মাণ আইনের ১২ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। এই মামলায় ১৩৫ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
রানা, তার বাবা আব্দুল খালেক ওরফে কুলু খালেক, মা মর্জিনা বেগম, সাভার পৌরসভার সাবেক মেয়র রেফাত উল্লাহ, প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান রাসেল, রানা প্লাজার নিউওয়েব বাটন লিমিটেডের চেয়ারম্যান বজলুস সামাদ আদনান, নিউওয়েব স্টাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদুর রহমান তাপস, ইথার টেক্সটাইলের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান ওরফে আনিসুজ্জামান, সাইট ইঞ্জিনিয়ার মো. সারোয়ার কামালসহ হত্যা মামলার ১৭ জনকে এই মামলায়ও আসামি করা হয়েছে। মাহবুবুল আলম নামক একজন গার্মেন্টস ব্যবসায়ীকে ইমারত নির্মাণ মামলায় আসামি করা হলেও হত্যা মামলায় তাকে আসামি করা হয়নি। ফলে, দুই মামলা মিলিয়ে মোট আসামি ৪২ জন।
রানা প্লাজার ঘটনায় করা হত্যা মামলায় দীর্ঘ দিনেও কেন সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি- এমন প্রশ্নে এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী খোন্দকার আব্দুল মান্নান বলেন, হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের কারণে আমরা সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করতে পারি নাই। আসামি পক্ষের ৮ জনের আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট থেকে ৬ মাস করে দুই বার স্থগিতাদেশ এসেছিল। ইতিমধ্যে স্থগিতাদেশ শেষ হয়েছে। আর ১ জনের স্থগিতাদেশ আগামী ১২ই মে শেষ হবে। আব্দুল মান্নান বলেন, আমরা আশা করছি আইনি আর কোনো জটিলতা না থাকলে আগামী ১৬ই মে থেকে হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে বিচারকাজ শুরু করতে পারবো।
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ইমারত নির্মাণের আইনের মামলাটি চলছে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে। এই মামলায় ২০১৬ সালের ১৪ই জুন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে ওই বছরের ২৩শে আগস্ট সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেন ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. মোস্তাফিজুর রহমান। কিন্তু অভিযোগ গঠনের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রানা প্লাজা ভবনের নিউওয়েব বাটন লিমিটেডের চেয়ারম্যান বজলুস.. সামাদ আদনান, নিউওয়েব স্টাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদুর রহমান তাপস, ইথার টেক্সটাইলের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান ওরফে আনিসুজ্জামানের করা একটি আবেদন জেলা ও দায়রা আদালতে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। যে কারণে সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবি করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আনোয়ারুল কবির মানবজমিনকে বলেন, ইতিমধ্যে হাইকোর্টে করা ৮ জনের আবেদনের মধ্যে ৭ জনের আবেদন আদালত খারিজ করে দিয়েছেন। শুধু আনিসুর রহমান নামে একজনের করা আবেদনের শুনানি আগামী ৭ই মে দেওলিয়া আদালতে হবে। তিনি বলেন, আশা করি আমরা দ্রুত সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করতে পারবো।
বিশ্ব বিবেককে নাড়া দেয়া ওই ঘটনার পরপরই অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে পুলিশের মামলা, রাজউকের করা ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘনের মামলা এবং নিহত একজন পোশাক শ্রমিকের দায়ের করা খুনের মামলা, দুর্নীতির মাধ্যমে রানা প্লাজা নির্মাণের মামলাসহ মোট ১৪টি মামলা দায়ের করা হয়। এদিকে রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার বিরুদ্ধে দুদকের একটি মামলার রায় হয়েছে গত বছর। দুদকের নোটিশ অনুযায়ী সম্পত্তির হিসাব বিবরণী জমা না দেয়া সংক্রান্ত একটি মামলায় গত বছরের ২৯শে আগস্ট সোহেল রানাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫৯ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। আইনজীবী সূত্রে জানা গেছে, হত্যা ও ইমারত নির্মাণ আইনের দুই মামলায় ২০১৫ সালের ১লা জুন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপার বিজয়কৃষ্ণ কর ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেন। পরে ২০১৬ সালের ১৮ই জুলাই অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর নির্দেশ দেন ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এসএম কুদ্দুস জামান।
হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে সোহেল রানা, তার বাবা আব্দুল খালেক ওরফে কুলু খালেক, মা মর্জিনা বেগম, সাভার পৌরসভার সাবেক মেয়র রেফাত উল্লাহ, স্থানীয় কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী খান, প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান রাসেল, ধসে পড়া ওই ভবনের তিনটি গার্মেন্ট কারখানার মালিক, সাইট ইঞ্জিনিয়ার মো. সারোয়ার কামালসহ ৪১ জনকে আসামি করা হয়। এই মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে ৫৯৪ জনকে। যে ৪১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হয়েছিল তাদের মধ্যে দুজন মারা গেছেন। সাতজন এখনো পলাতক। আর সোহেল রানা ছাড়া আর কেউ জেলে নেই। বাকি সবাই জামিনে আছেন। অভিযুক্ত ৪১ জনের মধ্যে ৩৮ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনা হয়েছিল। অন্যদিকে ইমারত নির্মাণ আইনের মামলায় বিধি না মেনে রানা প্লাজা ভবন নির্মাণের অভিযোগে ১৮ আসামির বিরুদ্ধে ১৯৫২ সালের ইমারত নির্মাণ আইনের ১২ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। এই মামলায় ১৩৫ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
রানা, তার বাবা আব্দুল খালেক ওরফে কুলু খালেক, মা মর্জিনা বেগম, সাভার পৌরসভার সাবেক মেয়র রেফাত উল্লাহ, প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান রাসেল, রানা প্লাজার নিউওয়েব বাটন লিমিটেডের চেয়ারম্যান বজলুস সামাদ আদনান, নিউওয়েব স্টাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদুর রহমান তাপস, ইথার টেক্সটাইলের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান ওরফে আনিসুজ্জামান, সাইট ইঞ্জিনিয়ার মো. সারোয়ার কামালসহ হত্যা মামলার ১৭ জনকে এই মামলায়ও আসামি করা হয়েছে। মাহবুবুল আলম নামক একজন গার্মেন্টস ব্যবসায়ীকে ইমারত নির্মাণ মামলায় আসামি করা হলেও হত্যা মামলায় তাকে আসামি করা হয়নি। ফলে, দুই মামলা মিলিয়ে মোট আসামি ৪২ জন।
রানা প্লাজার ঘটনায় করা হত্যা মামলায় দীর্ঘ দিনেও কেন সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি- এমন প্রশ্নে এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী খোন্দকার আব্দুল মান্নান বলেন, হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের কারণে আমরা সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করতে পারি নাই। আসামি পক্ষের ৮ জনের আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট থেকে ৬ মাস করে দুই বার স্থগিতাদেশ এসেছিল। ইতিমধ্যে স্থগিতাদেশ শেষ হয়েছে। আর ১ জনের স্থগিতাদেশ আগামী ১২ই মে শেষ হবে। আব্দুল মান্নান বলেন, আমরা আশা করছি আইনি আর কোনো জটিলতা না থাকলে আগামী ১৬ই মে থেকে হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে বিচারকাজ শুরু করতে পারবো।
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ইমারত নির্মাণের আইনের মামলাটি চলছে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে। এই মামলায় ২০১৬ সালের ১৪ই জুন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে ওই বছরের ২৩শে আগস্ট সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেন ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. মোস্তাফিজুর রহমান। কিন্তু অভিযোগ গঠনের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রানা প্লাজা ভবনের নিউওয়েব বাটন লিমিটেডের চেয়ারম্যান বজলুস.. সামাদ আদনান, নিউওয়েব স্টাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদুর রহমান তাপস, ইথার টেক্সটাইলের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান ওরফে আনিসুজ্জামানের করা একটি আবেদন জেলা ও দায়রা আদালতে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। যে কারণে সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবি করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আনোয়ারুল কবির মানবজমিনকে বলেন, ইতিমধ্যে হাইকোর্টে করা ৮ জনের আবেদনের মধ্যে ৭ জনের আবেদন আদালত খারিজ করে দিয়েছেন। শুধু আনিসুর রহমান নামে একজনের করা আবেদনের শুনানি আগামী ৭ই মে দেওলিয়া আদালতে হবে। তিনি বলেন, আশা করি আমরা দ্রুত সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করতে পারবো।
No comments