বিচার বিভাগ নিয়ে একটি মহল ষড়যন্ত্রে লিপ্ত: প্রধান বিচারপতি
সুরেন্দ্র কুমার সিনহা |
একটি
মহল বিচার বিভাগ নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান
বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। তিনি বলেন, যারা কথায় কথায় ‘বিচার
বিভাগ শেষ হয়ে গেছে, শেষ হয়ে গেছে’ বলে প্রচার চালাচ্ছে তাদের ব্যাপারে
সাবধান থাকতে হবে।
আজ সোমবার নাটোরে আইনজীবীদের দেওয়া এক সংবর্ধনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন। এ ছাড়াও তিনি বিচার নিষ্পত্তির হার বেড়ে যাওয়া, জজ আদালত ডিজিটালাইজেশনসহ নানা দিক নিয়ে কথা বলেন।
আইনজীবীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘কিছু মিডিয়া, কিছু বুদ্ধিজীবী, কথায় কথায় “বিচার বিভাগ চলে গেল, চলে গেল” বলে শোরগোল করেন। একটি মহল বিচার বিভাগ নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। কথায় কথায় “বিচার বিভাগ শেষ হয়ে গেছে, শেষ হয়ে গেছে” বলে প্রচার চালাচ্ছে। তাদের ব্যাপারে সাবধান থাকতে হবে। তারা যেন বিচার ব্যবস্থার পুনর্গঠনকে ব্যাহত করতে না পারে এ জন্য আইনজীবীদের সজাগ থাকতে হবে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রাখতে আইনজীবীদের বিচারকদের পাশে দাঁড়াতে হবে।’
বিচার নিষ্পত্তির হার বেড়েছে
নাটোর আইনজীবী সমিতির সভাপতি রুহুল আমিন তালুকদারের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা সভায় প্রধান বিচারপতি জানান, দেশে ৩০ লাখ মামলা ‘ডেডলক’ হয়েছে বলে একটি মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা অসত্য তথ্য প্রচার করছে। গত ১৭ জানুয়ারি তিনি বিচার বিভাগের দায়িত্ব নেওয়ার পর বিচার বিভাগে প্রাণচাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বিচার নিষ্পত্তির হার বেড়ে চলেছে। আগে মামলা নিষ্পত্তির হার ছিল ২৬ থেকে ৪০ শতাংশ। আগামী ডিসেম্বর নাগাদ তা দাঁড়াবে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশে। বিচার বিভাগ পুনর্গঠনের সব প্রক্রিয়া ঠিকঠাকভাবে চললে আগামী এক বছরে ৫০ ভাগেরও বেশি হারে মামলা নিষ্পত্তি হবে। তিনি এই প্রক্রিয়া সফল করার জন্য আইনজীবীদের সহযোগিতা চান তিনি।
আইনজীবীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, ‘আপনারা যথাসময়ে (সকাল সাড়ে ৯ টা) আদালতে আসবেন। শেষ সময় পর্যন্ত বিচার কাজে সহায়তা করবেন।’ তিনি জানান, দুপুরের খাবারের পর আদালতে না বসা আদালতের প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তিনি তা বাতিল করে বিচারকদের নিয়মিত বিকেল পর্যন্ত এজলাসে বসে কাজ করার প্রথা চালু করেছেন। তিনি আরও জানান, আগে শুধু ফৌজদারি আদালতে জামিন শুনানির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হতো। সাক্ষী নেওয়া হতো না। তাই দুপুরের পর জামিন শুনানির জন্য সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে কিছু প্রবীণ আইনজীবীর শারীরিক সমস্যা হচ্ছে বলে জেনেছেন। তিনি তাঁদের আরও ৬ মাস এভাবে কষ্ট করার অনুরোধ করেছেন। মামলা কমে এলে বিষয়টি আবার বিবেচনা করা হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।
শিগগিরই জজ আদালতে ডিজিটালাইজেশন হবে
প্রধান বিচারপতি বলেন, খুব শিগগিরই জজ আদালতগুলোর ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রম শুরু হবে। ইতিমধ্যে সব জজ আদালতকে অনলাইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। অবকাঠামো বাড়ানোর কাজ চলছে। সহকারী জজদের আর্থিক এখতিয়ার বাড়িয়ে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা করার বিষয়টি বিবেচনাধীন। সাক্ষীদের আদালতে যাতায়াতের খরচ সরবরাহ ও আদালতে তাঁদের বিশ্রামের ব্যবস্থা করার পাইলট কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ই-লাইব্রেরি তৈরির কাজও চলছে বলে তিনি জানান।
মামলা নিষ্পত্তি ও ন্যায়বিচার দেওয়ার ক্ষেত্রে তদন্ত কর্মকর্তা ও চিকিৎসকদের ভূমিকা নিয়েও কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘তদন্ত কর্মকর্তা ও চিকিৎসক যথাযথভাবে প্রতিবেদন না দিলে বিচার প্রার্থীকে ন্যায়বিচার দেওয়া সম্ভব না।’ এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সভা করার কথাও জানান তিনি।
নাটোর জজ আদালতে ও আইনজীবীদের কিছু সুযোগসুবিধা বাড়ানোর আশ্বাস দিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘নাটোরে আসা আমার জন্য একটা স্বপ্ন ছিল। এখানকার গণভবন, রাজবাড়ি ও চলনবিলের মাছ আমাকে আকৃষ্ট করেছে।’ সেখানকার আইনজীবীদের পেশাগত উন্নয়ন দেখে তিনি বিস্মিত হয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এখানকার আদালত পরিদর্শনের সময় আইনজীবীদের শুনানি শুনতে শুনতে তিনি মুগ্ধ হয়েছেন।
সংবর্ধনা সভায় প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার ও প্রধান বিচারপতির একান্ত সচিব, নাটোরের জেলা প্রশাসক মশিউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান বিচারপতি গতকাল রোববার বিকেলে নাটোরে আসেন। তিনি ওই দিন সন্ধ্যায় জজ আদালতের আয়োজনে বিচারিক সম্মেলনে যোগ দেন। এর আগে তিনি এখানকার দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখেন। সোমবার সকাল থেকে তিনি জজ আদালত, বিচারিক হাকিম ও নির্বাহী হাকিমদের আদালত পরিদর্শন করেন এবং পুলিশের একটি ত্রৈমাসিক সভায় যোগ দেন।
আজ সোমবার নাটোরে আইনজীবীদের দেওয়া এক সংবর্ধনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন। এ ছাড়াও তিনি বিচার নিষ্পত্তির হার বেড়ে যাওয়া, জজ আদালত ডিজিটালাইজেশনসহ নানা দিক নিয়ে কথা বলেন।
আইনজীবীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘কিছু মিডিয়া, কিছু বুদ্ধিজীবী, কথায় কথায় “বিচার বিভাগ চলে গেল, চলে গেল” বলে শোরগোল করেন। একটি মহল বিচার বিভাগ নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। কথায় কথায় “বিচার বিভাগ শেষ হয়ে গেছে, শেষ হয়ে গেছে” বলে প্রচার চালাচ্ছে। তাদের ব্যাপারে সাবধান থাকতে হবে। তারা যেন বিচার ব্যবস্থার পুনর্গঠনকে ব্যাহত করতে না পারে এ জন্য আইনজীবীদের সজাগ থাকতে হবে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রাখতে আইনজীবীদের বিচারকদের পাশে দাঁড়াতে হবে।’
বিচার নিষ্পত্তির হার বেড়েছে
নাটোর আইনজীবী সমিতির সভাপতি রুহুল আমিন তালুকদারের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা সভায় প্রধান বিচারপতি জানান, দেশে ৩০ লাখ মামলা ‘ডেডলক’ হয়েছে বলে একটি মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা অসত্য তথ্য প্রচার করছে। গত ১৭ জানুয়ারি তিনি বিচার বিভাগের দায়িত্ব নেওয়ার পর বিচার বিভাগে প্রাণচাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বিচার নিষ্পত্তির হার বেড়ে চলেছে। আগে মামলা নিষ্পত্তির হার ছিল ২৬ থেকে ৪০ শতাংশ। আগামী ডিসেম্বর নাগাদ তা দাঁড়াবে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশে। বিচার বিভাগ পুনর্গঠনের সব প্রক্রিয়া ঠিকঠাকভাবে চললে আগামী এক বছরে ৫০ ভাগেরও বেশি হারে মামলা নিষ্পত্তি হবে। তিনি এই প্রক্রিয়া সফল করার জন্য আইনজীবীদের সহযোগিতা চান তিনি।
আইনজীবীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, ‘আপনারা যথাসময়ে (সকাল সাড়ে ৯ টা) আদালতে আসবেন। শেষ সময় পর্যন্ত বিচার কাজে সহায়তা করবেন।’ তিনি জানান, দুপুরের খাবারের পর আদালতে না বসা আদালতের প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তিনি তা বাতিল করে বিচারকদের নিয়মিত বিকেল পর্যন্ত এজলাসে বসে কাজ করার প্রথা চালু করেছেন। তিনি আরও জানান, আগে শুধু ফৌজদারি আদালতে জামিন শুনানির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হতো। সাক্ষী নেওয়া হতো না। তাই দুপুরের পর জামিন শুনানির জন্য সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে কিছু প্রবীণ আইনজীবীর শারীরিক সমস্যা হচ্ছে বলে জেনেছেন। তিনি তাঁদের আরও ৬ মাস এভাবে কষ্ট করার অনুরোধ করেছেন। মামলা কমে এলে বিষয়টি আবার বিবেচনা করা হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।
শিগগিরই জজ আদালতে ডিজিটালাইজেশন হবে
প্রধান বিচারপতি বলেন, খুব শিগগিরই জজ আদালতগুলোর ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রম শুরু হবে। ইতিমধ্যে সব জজ আদালতকে অনলাইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। অবকাঠামো বাড়ানোর কাজ চলছে। সহকারী জজদের আর্থিক এখতিয়ার বাড়িয়ে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা করার বিষয়টি বিবেচনাধীন। সাক্ষীদের আদালতে যাতায়াতের খরচ সরবরাহ ও আদালতে তাঁদের বিশ্রামের ব্যবস্থা করার পাইলট কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ই-লাইব্রেরি তৈরির কাজও চলছে বলে তিনি জানান।
মামলা নিষ্পত্তি ও ন্যায়বিচার দেওয়ার ক্ষেত্রে তদন্ত কর্মকর্তা ও চিকিৎসকদের ভূমিকা নিয়েও কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘তদন্ত কর্মকর্তা ও চিকিৎসক যথাযথভাবে প্রতিবেদন না দিলে বিচার প্রার্থীকে ন্যায়বিচার দেওয়া সম্ভব না।’ এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সভা করার কথাও জানান তিনি।
নাটোর জজ আদালতে ও আইনজীবীদের কিছু সুযোগসুবিধা বাড়ানোর আশ্বাস দিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘নাটোরে আসা আমার জন্য একটা স্বপ্ন ছিল। এখানকার গণভবন, রাজবাড়ি ও চলনবিলের মাছ আমাকে আকৃষ্ট করেছে।’ সেখানকার আইনজীবীদের পেশাগত উন্নয়ন দেখে তিনি বিস্মিত হয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এখানকার আদালত পরিদর্শনের সময় আইনজীবীদের শুনানি শুনতে শুনতে তিনি মুগ্ধ হয়েছেন।
সংবর্ধনা সভায় প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার ও প্রধান বিচারপতির একান্ত সচিব, নাটোরের জেলা প্রশাসক মশিউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান বিচারপতি গতকাল রোববার বিকেলে নাটোরে আসেন। তিনি ওই দিন সন্ধ্যায় জজ আদালতের আয়োজনে বিচারিক সম্মেলনে যোগ দেন। এর আগে তিনি এখানকার দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখেন। সোমবার সকাল থেকে তিনি জজ আদালত, বিচারিক হাকিম ও নির্বাহী হাকিমদের আদালত পরিদর্শন করেন এবং পুলিশের একটি ত্রৈমাসিক সভায় যোগ দেন।
No comments