আমার কথা শুনে মমতা হাসলেন- মুনমুন সেন
মুনমুন সেন। এই নামটিই যথেষ্ট। তাকে আর
পরিচয় করিয়ে দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। এক নামেই সবাই তাকে চেনেন। চেনেন তার
পরিবারশুদ্ধ সবাইকে। কারণ, তিনি সুচিত্রা সেনের মেয়ে। রাইমা ও রিয়া সেনের
মা। এসব পরিচয়ের বাইরে এবার তার আরেক পরিচয়- তিনি রাজনীতিতে নেমেছেন।
লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে। সিনেমার
জগতের বাইরে এ এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা।
এ
সম্পর্কে তিনি নিজেই বলেছেন, এক বিকালে জানালার পর্দা কেনার জন্য আমি
দোকানে যাই। এক বন্ধু আমাকে তখন জানালো- তোমাকে অভিনন্দন। বাকুড়ায় তৃণমূল
কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে তোমার নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এ খবরে আমি বিস্মিত
হয়েছিলাম। কেনাকাটা শেষে বাসায় ফিরে এলাম। ফোন করলাম মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বললাম- এটা আপনি কি করেছেন? আমার প্রশ্ন শুনে মমতা শুধু
হাসলেন। অনলাইন রেডিফকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন মুনমুন সেন।
তার বিরুদ্ধে বাকুড়া আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি
(মার্কসিস্ট) বাসুদেব আচার্য্য। লোকসভার এ আসনে টানা নয়বার নির্বাচিত এমপি
তিনি। এসব নিয়ে বিস্তারিত ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন অনেক কথা। তাকে
প্রশ্ন করা হয়েছিল- আপনি মিডিয়াকে বলেছেন, আপনি কখনও রাজনীতিতে যোগ দিতে
চান নি। কিন্তু কিভাবে তা ঘটে গেল? জবাবে মুনমুন সেন বলেন, সত্যি বলেছেন।
মায়ের মৃত্যুর পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ কয়েকবার আমাদের বাড়িতে এসেছেন।
আমরা অনেক সময় কথা বলেছি। এক রাতে তিনি আমাকে বললেন যে, লোকসভা নির্বাচনে
আমাদের পরিবারের একজন সদস্যকে তিনি প্রার্থী বানানোর কথা চিন্তা করছেন।
তিনি আমার স্বামী ভরতের কথাও তুলেছিলেন। কিন্তু আমি তাকে বলি, তার অবস্থা
ভাল নেই। তারপরই আমার নাম উঠে আসে। মুখ্যমন্ত্রীকে বললাম, আপনি বাসায় পৌঁছে
চিন্তা করুন। আমিও চিন্তা করি। এরপর কয়েক দিন কেটে যায়। তারপর পর্দা কিনতে
গিয়ে এক বন্ধুর কাছ থেকে শুনলাম আমাকে প্রার্থী করা হয়েছে।
আপনি রাজনীতিতে যুক্ত হচ্ছেন এ কথা শুনে আপনার মা কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাতেন?
মুনমুন সেন বলেন, আমরা চলচ্চিত্রের ব্যক্তিদের রাজনীতিতে যোগ দেয়া নিয়ে মাঝেমধ্যেই আলোচনা করতাম। রাজনীতির পক্ষে ছিলেন না মা। তিনি সব সময়ই বলতেন, আমাদের জগৎ আলাদা। রাজনীতি থেকে দূরত্ব বজায় রাখা ভাল। তিনি যদি বাকুড়ার মানুষের করুণ পরিণতির কথা জানতেন তাহলে আমাকে হয়তো সমর্থন করতেন। তিনি বলতেন- ওই লোকগুলোর জন্য ভাল কিছু করো। কে বলেছে মা আর নেই? আমি তো প্রতিটি মুহূর্ত মা’র উপস্থিতি টের পাই। যখন আমি প্রচারে যাই তখনই আমি বলি- আমি সুচিত্রা সেনের মেয়ে।
আপনার স্বামী ও মেয়েদের সম্পর্কে কিছু বলুন? আপনি কি রাজনীতির টোপর মাথায় দিয়ে খুশি?
অবশ্যই! আমি রাজনীতিতে যোগ দিই এটা সব সময়ই চেয়েছেন আমার স্বামী। তিনি ইতিহাসের একজন একনিষ্ঠ ভক্ত ও সমসাময়িক বিষয়ে তার রয়েছে দক্ষতা। তিনি আমাকে অনেক বার বলেছেন, রাজনীতি তোমার চোখের জানালা খুলে দেবে। আর আমার কন্যা রাইমা ও রিয়া তো আমার কয়েকটি প্রচারণায় যোগ দিতে চেয়েছে। আমার শক্তির উৎস আমার পরিবার।
আপনাকে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী করা হয়েছে। সমালোচকরা বলছেন, আপনাদের বাড়িতে মমতার সফর ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক?
বিরোধিতাকারী বা সমালোচনাকারীদের কাজ একটিই। তা হলো ভুল ধরা। ওই সময়টি আমাদের কাছে ছিল অন্ধকার সময়ের মতো। তখন মুখ্যমন্ত্রী আমাদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন। এতে আমরা তার স্নেহে সিক্ত হয়েছি। মা যখন মারা যান তখন মমতা তার ব্যস্ত সময় ও সিডিউলের ফাঁকে সব সময় আমাদের খোঁজ নিয়েছেন আমরা কি করছি, কেমন আছি। তার মতো অবস্থানের একজন ব্যক্তির কাছ থেকে এত বড় পাওয়া অনেকেই প্রত্যাশা করতে পারে না।
চলচ্চিত্র থেকে রাজনীতি। কেমন কঠিন হতে পারে এই পরিবর্তন?
এটা আমার জন্য একটি নতুন জগৎ। অনেক কিছুই আমি জানি না। সেগুলো শেখার চেষ্টা করবো। এই ধারার পরিবর্তন আমার জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে। কিন্তু সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণে আমি প্রস্তুত। অনেকেই ভাবেন সিনেমায় যাওয়া একটি অতি সহজ ব্যাপার। একজন অভিনেতা বা অভিনেত্রীর জীবন শুধুই অর্থের জন্য নয়। এর মধ্যে আছে কঠিন লড়াই। এ জন্য অনেককেই জ্বলন্ত সূর্যের নিচে শুটিং করতে হয়। আবার শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচের তাপমাত্রায়ও শুটিং করতে হয়। অভিনেত্রী হিসেবে আমি ছবি ও এর প্রয়োজকদের কথা চিন্তা করবো। আবার একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে নির্বাচনী এলাকার মানুষের কথা চিন্তা করবো।
আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী বাসুদেব আচার্য্য। তিনি বাকুড়া থেকে কমপক্ষে ৯ বার নির্বাচিত এমপি...
এসব কথা আমি জানি। পাশাপাশি আমি এটাও জানি যে, তিনি বাকুড়ার মানুষের জন্য কিছু করেন নি। আমি বিস্মিত হই এই ভেবে যে, তিনি কিভাবে এতবার নির্বাচিত হন। হতে পারে ভোটারদের কাছে তার চেয়ে ভাল কোন বিকল্প প্রার্থী ছিল না। আমি নিশ্চিত যে, বাকুড়ার মানুষ এবার পরিবর্তনের জন্য ভোট দেবেন।
মানুষের এই যে ভালবাসা এটা কি অভিনেত্রী মুনমুন সেনের জন্য নাকি তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী মুনমুন সেনের জন্য?
আমি মনে করি মানুষ আমাকে নতুন রাজনীতিক হিসেবে স্বাগত জানিয়েছে। যদি তাই না হবে তাহলে তারা প্রথম দেখাতেই কেন এত উদ্দীপ্ত হবেন? ওই এলাকায় কোন পানি নেই। রাস্তাঘাটের অবস্থা ভয়াবহ। তারা আমার কাছে আর্জি জানিয়েছেন, দিদি কিছু একটা করেন। এতে কি মনে হয় না যে, তারা একজন রাজনীতিবিদের কাছে এই আর্জি জানাচ্ছেন?
মিডিয়ায় বলাবলি হচ্ছে যে, আপনার অর্থ আছে, গ্লামার আছে। নির্বাচিত হলে আপনি আর এলাকায় যাবেন না...
আমি জানি। আমি মিডিয়াকে বলবো, আমি চোর বা মিথ্যাবাদী নই। আমি এমন এক পরিবারের সন্তান যেখানে প্রতিশ্রুতির রয়েছে সর্বোচ্চ মূল্য। সময়ই বলে দেবে আমি আমার কথা রাখতে পেরেছি কি না।
তৃণমূল কংগ্রেসের যেসব সেলিব্রেটি প্রার্থী রয়েছেন তারা তাদের নির্বাচনী আসনের প্রতি উদাসীন বলে অভিযোগ-
আমি তুলনায় বিশ্বাস করি না। যদি তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী আসনের প্রতি উদাসীন থাকেন তাহলে এর অর্থ এই নয় যে, আমিও তাই করবো।
আপনি রাজনীতিতে যুক্ত হচ্ছেন এ কথা শুনে আপনার মা কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাতেন?
মুনমুন সেন বলেন, আমরা চলচ্চিত্রের ব্যক্তিদের রাজনীতিতে যোগ দেয়া নিয়ে মাঝেমধ্যেই আলোচনা করতাম। রাজনীতির পক্ষে ছিলেন না মা। তিনি সব সময়ই বলতেন, আমাদের জগৎ আলাদা। রাজনীতি থেকে দূরত্ব বজায় রাখা ভাল। তিনি যদি বাকুড়ার মানুষের করুণ পরিণতির কথা জানতেন তাহলে আমাকে হয়তো সমর্থন করতেন। তিনি বলতেন- ওই লোকগুলোর জন্য ভাল কিছু করো। কে বলেছে মা আর নেই? আমি তো প্রতিটি মুহূর্ত মা’র উপস্থিতি টের পাই। যখন আমি প্রচারে যাই তখনই আমি বলি- আমি সুচিত্রা সেনের মেয়ে।
আপনার স্বামী ও মেয়েদের সম্পর্কে কিছু বলুন? আপনি কি রাজনীতির টোপর মাথায় দিয়ে খুশি?
অবশ্যই! আমি রাজনীতিতে যোগ দিই এটা সব সময়ই চেয়েছেন আমার স্বামী। তিনি ইতিহাসের একজন একনিষ্ঠ ভক্ত ও সমসাময়িক বিষয়ে তার রয়েছে দক্ষতা। তিনি আমাকে অনেক বার বলেছেন, রাজনীতি তোমার চোখের জানালা খুলে দেবে। আর আমার কন্যা রাইমা ও রিয়া তো আমার কয়েকটি প্রচারণায় যোগ দিতে চেয়েছে। আমার শক্তির উৎস আমার পরিবার।
আপনাকে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী করা হয়েছে। সমালোচকরা বলছেন, আপনাদের বাড়িতে মমতার সফর ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক?
বিরোধিতাকারী বা সমালোচনাকারীদের কাজ একটিই। তা হলো ভুল ধরা। ওই সময়টি আমাদের কাছে ছিল অন্ধকার সময়ের মতো। তখন মুখ্যমন্ত্রী আমাদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন। এতে আমরা তার স্নেহে সিক্ত হয়েছি। মা যখন মারা যান তখন মমতা তার ব্যস্ত সময় ও সিডিউলের ফাঁকে সব সময় আমাদের খোঁজ নিয়েছেন আমরা কি করছি, কেমন আছি। তার মতো অবস্থানের একজন ব্যক্তির কাছ থেকে এত বড় পাওয়া অনেকেই প্রত্যাশা করতে পারে না।
চলচ্চিত্র থেকে রাজনীতি। কেমন কঠিন হতে পারে এই পরিবর্তন?
এটা আমার জন্য একটি নতুন জগৎ। অনেক কিছুই আমি জানি না। সেগুলো শেখার চেষ্টা করবো। এই ধারার পরিবর্তন আমার জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে। কিন্তু সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণে আমি প্রস্তুত। অনেকেই ভাবেন সিনেমায় যাওয়া একটি অতি সহজ ব্যাপার। একজন অভিনেতা বা অভিনেত্রীর জীবন শুধুই অর্থের জন্য নয়। এর মধ্যে আছে কঠিন লড়াই। এ জন্য অনেককেই জ্বলন্ত সূর্যের নিচে শুটিং করতে হয়। আবার শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচের তাপমাত্রায়ও শুটিং করতে হয়। অভিনেত্রী হিসেবে আমি ছবি ও এর প্রয়োজকদের কথা চিন্তা করবো। আবার একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে নির্বাচনী এলাকার মানুষের কথা চিন্তা করবো।
আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী বাসুদেব আচার্য্য। তিনি বাকুড়া থেকে কমপক্ষে ৯ বার নির্বাচিত এমপি...
এসব কথা আমি জানি। পাশাপাশি আমি এটাও জানি যে, তিনি বাকুড়ার মানুষের জন্য কিছু করেন নি। আমি বিস্মিত হই এই ভেবে যে, তিনি কিভাবে এতবার নির্বাচিত হন। হতে পারে ভোটারদের কাছে তার চেয়ে ভাল কোন বিকল্প প্রার্থী ছিল না। আমি নিশ্চিত যে, বাকুড়ার মানুষ এবার পরিবর্তনের জন্য ভোট দেবেন।
মানুষের এই যে ভালবাসা এটা কি অভিনেত্রী মুনমুন সেনের জন্য নাকি তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী মুনমুন সেনের জন্য?
আমি মনে করি মানুষ আমাকে নতুন রাজনীতিক হিসেবে স্বাগত জানিয়েছে। যদি তাই না হবে তাহলে তারা প্রথম দেখাতেই কেন এত উদ্দীপ্ত হবেন? ওই এলাকায় কোন পানি নেই। রাস্তাঘাটের অবস্থা ভয়াবহ। তারা আমার কাছে আর্জি জানিয়েছেন, দিদি কিছু একটা করেন। এতে কি মনে হয় না যে, তারা একজন রাজনীতিবিদের কাছে এই আর্জি জানাচ্ছেন?
মিডিয়ায় বলাবলি হচ্ছে যে, আপনার অর্থ আছে, গ্লামার আছে। নির্বাচিত হলে আপনি আর এলাকায় যাবেন না...
আমি জানি। আমি মিডিয়াকে বলবো, আমি চোর বা মিথ্যাবাদী নই। আমি এমন এক পরিবারের সন্তান যেখানে প্রতিশ্রুতির রয়েছে সর্বোচ্চ মূল্য। সময়ই বলে দেবে আমি আমার কথা রাখতে পেরেছি কি না।
তৃণমূল কংগ্রেসের যেসব সেলিব্রেটি প্রার্থী রয়েছেন তারা তাদের নির্বাচনী আসনের প্রতি উদাসীন বলে অভিযোগ-
আমি তুলনায় বিশ্বাস করি না। যদি তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী আসনের প্রতি উদাসীন থাকেন তাহলে এর অর্থ এই নয় যে, আমিও তাই করবো।
No comments