বিজেপিতে নেতৃত্বের লড়াই
ভারতের আগামী সাধারণ নির্বাচন আর বছর খানেক পরেই। ওই নির্বাচন সামনে রেখে দেশটির প্রধান বিরোধী জোট জাতীয় গণতান্ত্রিক মোর্চা বা এনডিএর নেতৃত্বাধীন দল ভারতীয় জনতা পার্টিতে (বিজেপি) শুরু হয়েছে নেতৃত্বের লড়াই। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আগামী নির্বাচনে বিজেপির নেতৃত্ব দিতে পারেন—এমন আলোচনা চলছে বেশ কয়েক বছর ধরেই। কিছুদিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। এর আগে দলের সভাপতি রাজনাথ সিংকে এক চিঠি লিখে দলের শীর্ষ প্রভাবশালী নেতা এল কে আদভানি জানিয়েছেন, নির্বাচনে নেতৃত্বের দায়িত্ব নীতিন গড়কারিকেই দেওয়ার পক্ষে তিনি। তবে বিজেপির আদর্শিক সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) নরেন্দ্র মোদিকে ওই দায়িত্বে দেখতে চায়। নীতিন গড়কারি দ্বিতীয় মেয়াদে বিজেপির সভাপতি হন—এটা যারা চাননি, আদভানি তাঁদের অন্যতম। তখন তাঁর যুক্তি ছিল, অনেক দুর্নীতির সঙ্গে নাম জড়িয়ে পড়া গড়কারিকে নেতৃত্বে বহাল রাখলে তা দলের জন্য ভালো হবে না। দলের নতুন সভাপতি হন রাজনাথ সিং। কিন্তু গত কয়েক মাসে অবস্থান আমূল পাল্টে ফেলে আদভানি। এখন বলছেন, রাজ্যের নির্বাচনগুলোতে জিততে হলে দলের নেতৃত্বে গড়কারির মতো লোককেই দরকার। নরেন্দ্র মোদিকে সম্প্রতি বিজেপির শীর্ষ নেতাদের প্যানেল সংসদীয় বোর্ডের সদস্য করা হয়। একই সঙ্গে দলের নির্বাচনী কমিটিতেও রাখা হয় তাঁকে। অনেকের ধারণা, মোদি যে আগামী লোকসভা নির্বাচনে দলের নেতৃত্ব পেতে যাচ্ছেন, এগুলো তারই প্রাথমিক পদক্ষেপ। তবে বিজেপির অনেক নেতা বারবার জোর দিয়ে বলছেন, নির্বাচনে দলের নেতৃত্ব নির্ধারণের প্রতিযোগিতা এখনো শুরুই হয়নি। সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী ৮৫ বছর বয়স্ক আদভানিকেও এখনো ওই পদে জোর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ধরা হচ্ছে। তালিকায় আছেন লোকসভায় বিরোধীদলীয় নেত্রী সুষমা স্বরাজও। চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে সুষমা স্বরাজ জানিয়েছেন, আগামী নির্বাচনে দলের নেতৃত্ব কে দেবেন, তা নির্ধারণ করা হবে এনডিএ জোটের শরিকদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে। এনডিএ জোটের শরিক জনতা দল (ইউনাইটেড) জোটের নেতা হিসেবে মোদিকে মেনে নেবে না। এই দলটি মনে করে, ২০০২ সালে গুজরাটের দাঙ্গা মোদির সাম্প্রদায়িক অবস্থানকে বিতর্কিত করেছে। মোদিকে নিয়ে আপত্তি নেই জোটের অপর শরিক শিবসেনার। তবে জোটের নেতৃত্বে তাদের সবচেয়ে পছন্দ সুষমা স্বরাজ।
No comments