ইইউরহুমকি
বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পে শ্রম অধিকারের পদ্ধতিগত লঙ্ঘনের অভিযোগে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা বাতিলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন যে হুমকি দিয়েছে, তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া সময়ের দাবি। দুর্ঘটনা ঘটলেই প্রতিশ্রুতির ঝাঁপি খোলা দেখতে আমরা অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছি। তবে এবার মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের বিষয়ে নির্দিষ্টভাবে প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। এই আশঙ্কা অমূলক নয় যে ইউরোপীয় কমিশন তদন্তে নামলে তারা কেবল বিজিএমইএ নয়, শ্রম অধিকারের পদ্ধতিগত লঙ্ঘনে সরকারকেও অভিযুক্ত করতে পারে। তুলনামূলক বিচারে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ইইউর জিএসপি (অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা) সুবিধা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ইইউতে রপ্তানি করা ৫৪ শতাংশ বাংলাদেশি পণ্যের সবটাই জিএসপিভুক্ত। সে কারণে ইইউ পার্লামেন্টের প্রস্তাবকে হালকাভাবে দেখার কোনো সুযোগ নেই।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনির আসন্ন ব্রাসেলস সফরে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সময় বেঁধে দিয়ে সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। বাংলাদেশকে মনে রাখতে হবে ইউরোপীয় কমিশন তার পার্লামেন্টের ম্যান্ডেটের ভিত্তিতে শিগগিরই তৈরি পোশাকশিল্পের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরেজমিন অনুসন্ধান ও তদন্তে আসবে। তাদের এটা ভালোই জানা আছে যে বাংলাদেশের পোশাকমালিক ও সরকারগুলো সংকটে পড়লে দ্রুত অঙ্গীকার উচ্চারণ করে, এরপর তারা দ্রুত বিস্মৃত হয়। অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা, ভবনের নিরাপত্তা, সন্তোষজনক মজুরি ও মানসম্পন্ন কাজের পরিবেশ নিশ্চিতকারী পোশাকশিল্প কারখানার সংখ্যা এখনো উল্লেখযোগ্য নয়। আর এ বিষয়টি প্রধানত নিশ্চিত করার দায়িত্ব বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর। কিন্তু আমরা লক্ষ করি যে এই দুই সংগঠনের প্রভাবশালী সদস্যরা নানাভাবে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ঠেকায় পড়ে নিতান্ত দায়সারাভাবে তাঁরা কার্যত পরের ইচ্ছা মেনে নেওয়ার প্রবণতা দেখান। তাঁদের এই মনোভঙ্গি বদলাতে হবে।
শ্রম আইন সংশোধনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ দীর্ঘদিনের। অথচ বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ রানা প্লাজা ধসের এক মাস অতিক্রান্ত হওয়ার পরও সুনির্দিষ্ট কোনো পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ থাকছে। তবে ধারণা করা যায়, আগে বাংলাদেশ যত সহজে পার পেয়েছে, এবার ততটা ঢিলেঢালাভাবে পার না-ও হতে পারে। গত বৃহস্পতিবার ইইউ পার্লামেন্টের প্লেনারি অধিবেশনের প্রস্তাবে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে যে বাংলাদেশ এখন আর পোশাকশিল্পে নবীন বা উঠতি কোনো দেশ নয়। তারা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারী রাষ্ট্র। চীনের পরই তার স্থান। পাঁচ হাজারের বেশি কারখানায় প্রায় ৪০ লাখ লোক কর্মরত। উপরন্তু বাংলাদেশের রপ্তানির ৭৫ ভাগই পোশাকশিল্পসংক্রান্ত। তারা আরও স্মরণ করেছে যে, রানা প্লাজার বিয়োগান্ত ঘটনার আগে ২০০৫ সাল থেকে প্রায় ৬০০ পোশাকশিল্পকর্মী অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছেন।
এটা লক্ষণীয়, ইইউ পার্লামেন্টের প্রস্তাবে নির্দিষ্টভাবে শ্রম অধিকারের পদ্ধতিগত লঙ্ঘনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে, তারা কেবল রানা প্লাজাই নয়, প্রাণহানির অন্য পর্বগুলোকেও নিছক দুর্ঘটনা হিসেবে দেখতে নারাজ। এটা যে তারা শ্রম অধিকারের পদ্ধতিগত লঙ্ঘনের সঙ্গে একসূত্রে দেখছে, তাতে আর সন্দেহ কী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনির আসন্ন ব্রাসেলস সফরে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সময় বেঁধে দিয়ে সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। বাংলাদেশকে মনে রাখতে হবে ইউরোপীয় কমিশন তার পার্লামেন্টের ম্যান্ডেটের ভিত্তিতে শিগগিরই তৈরি পোশাকশিল্পের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরেজমিন অনুসন্ধান ও তদন্তে আসবে। তাদের এটা ভালোই জানা আছে যে বাংলাদেশের পোশাকমালিক ও সরকারগুলো সংকটে পড়লে দ্রুত অঙ্গীকার উচ্চারণ করে, এরপর তারা দ্রুত বিস্মৃত হয়। অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা, ভবনের নিরাপত্তা, সন্তোষজনক মজুরি ও মানসম্পন্ন কাজের পরিবেশ নিশ্চিতকারী পোশাকশিল্প কারখানার সংখ্যা এখনো উল্লেখযোগ্য নয়। আর এ বিষয়টি প্রধানত নিশ্চিত করার দায়িত্ব বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর। কিন্তু আমরা লক্ষ করি যে এই দুই সংগঠনের প্রভাবশালী সদস্যরা নানাভাবে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ঠেকায় পড়ে নিতান্ত দায়সারাভাবে তাঁরা কার্যত পরের ইচ্ছা মেনে নেওয়ার প্রবণতা দেখান। তাঁদের এই মনোভঙ্গি বদলাতে হবে।
শ্রম আইন সংশোধনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ দীর্ঘদিনের। অথচ বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ রানা প্লাজা ধসের এক মাস অতিক্রান্ত হওয়ার পরও সুনির্দিষ্ট কোনো পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ থাকছে। তবে ধারণা করা যায়, আগে বাংলাদেশ যত সহজে পার পেয়েছে, এবার ততটা ঢিলেঢালাভাবে পার না-ও হতে পারে। গত বৃহস্পতিবার ইইউ পার্লামেন্টের প্লেনারি অধিবেশনের প্রস্তাবে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে যে বাংলাদেশ এখন আর পোশাকশিল্পে নবীন বা উঠতি কোনো দেশ নয়। তারা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারী রাষ্ট্র। চীনের পরই তার স্থান। পাঁচ হাজারের বেশি কারখানায় প্রায় ৪০ লাখ লোক কর্মরত। উপরন্তু বাংলাদেশের রপ্তানির ৭৫ ভাগই পোশাকশিল্পসংক্রান্ত। তারা আরও স্মরণ করেছে যে, রানা প্লাজার বিয়োগান্ত ঘটনার আগে ২০০৫ সাল থেকে প্রায় ৬০০ পোশাকশিল্পকর্মী অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছেন।
এটা লক্ষণীয়, ইইউ পার্লামেন্টের প্রস্তাবে নির্দিষ্টভাবে শ্রম অধিকারের পদ্ধতিগত লঙ্ঘনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে, তারা কেবল রানা প্লাজাই নয়, প্রাণহানির অন্য পর্বগুলোকেও নিছক দুর্ঘটনা হিসেবে দেখতে নারাজ। এটা যে তারা শ্রম অধিকারের পদ্ধতিগত লঙ্ঘনের সঙ্গে একসূত্রে দেখছে, তাতে আর সন্দেহ কী।
No comments