অস্ত্র চুক্তির ব্যাপারে আঞ্চলিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রাখুন
ভারতের সঙ্গে সম্ভাব্য অস্ত্র চুক্তি সম্পাদনের আগে ‘আঞ্চলিক নিরাপত্তার’ বিষয়টি বিবেচনার জন্য আফগানিস্তানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তান। দেশটির পররাষ্ট্রসচিব জলিল আব্বাস জিলানি গত শুক্রবার ইসলামাবাদে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ আহ্বান জানান। আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই চলতি সপ্তাহের শুরুতে ভারত সফরকালে নিজ দেশের সেনাবাহিনীর জন্য অস্ত্র চেয়েছেন—এ মর্মে প্রকাশিত খবরের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছিলেন পাকিস্তানি পররাষ্ট্রসচিব। তিনি বলেন, ‘সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আফগানিস্তান নিজেদের নীতি বাস্তবায়ন করতে পারে। তবে তারা সার্বিক শান্তি ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির বিষয়টি বিবেচনা করবে, এমনটাই প্রত্যাশা।’ ভারতের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারি চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে সামরিক সহায়তা চেয়েছেন কারজাই। তবে তাঁর চাহিদার তালিকায় কী পরিমাণ অস্ত্র রয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। সংবাদমাধ্যম সূত্র জানায়, ভারতের কাছ থেকে কামান, বিমান, সামরিক ট্রাক ইত্যাদি অস্ত্র সরঞ্জাম পেতে চায় আফগানিস্তান। ২০১১ সালে স্বাক্ষরিত ওই চুক্তির আওতায় আফগান সেনাদের ইতিমধ্যে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র সহায়তা দিচ্ছে ভারত। আফগানিস্তানের সঙ্গে অস্ত্র চুক্তির ব্যাপারে প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তান আগ্রহ প্রকাশ করলেও কাবুল সাড়া দেয়নি। এ অবস্থায় ভারতের সঙ্গে একই ধরনের চুক্তির ব্যাপারে আফগানিস্তানের আগ্রহে স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা নাখোশ হয়েছে পাকিস্তান। ভারত ও চীনের মধ্যে সম্পর্কে অগ্রগতির ব্যাপারে কিছুটা নির্বিকার ভাব দেখান পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রসচিব। চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং সম্প্রতি ভারত সফরকালে বিভিন্ন বিরোধ পেছনে ফেলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে অগ্রগতির ঘোষণা দেন। এ ব্যাপারে আব্বাস জিলানি বলেন, ভারত-চীন সম্পর্ক আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। চীনের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই ভালো এবং এটি ভারত-চীন সম্পর্কের সঙ্গে তুলনীয় নয়। কাবুল-ইসলামাবাদ সম্পর্ক সাময়িক উষ্ণতার পর আবার শীতল, এমন এক সময়ে হামিদ কারজাই ভারতের কাছে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের অনুরোধ করলেন। আফগানিস্তান কয়েক মাস ধরে সীমান্তে গুলিবর্ষণ এবং ভূখণ্ড দখলের মতো বিষয় নিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছে। অন্যদিকে, সম্পর্ক স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে আফগানিস্তানের ব্যাপারে সরকারি বিবৃতি প্রদানসহ অন্যান্য বিষয়ে পাকিস্তান সংযত ভূমিকা পালন করছে। তবে আফগানিস্তানে পুনর্গঠনকাজসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতের ব্যাপক উপস্থিতি নিয়ে দেশটি বিভিন্ন কারণে উদ্বিগ্ন।
No comments