মূল্যস্ফীতির চাপ-আয়বৃদ্ধিমূলক কর্মসূচিকে অগ্রাধিকার দিন
গত মঙ্গলবার ‘জাতীয় বাজেট ২০১১-১২’ শীর্ষক প্রস্তাব উপস্থাপন অনুষ্ঠানে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) পক্ষ থেকে যেসব তথ্য, বিশ্লেষণ ও পরামর্শ তুলে ধরা হয়েছে, তা মনোযোগের সঙ্গে লক্ষ করা প্রয়োজন। জাতীয় অর্থনীতির সাম্প্রতিক অবস্থার চিত্র ও সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ গতি-প্রকৃতির কিছু আভাস এ থেকে পাওয়া যাবে।
প্রথমত, খাদ্যদ্রব্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দুই অঙ্কের ঘরে প্রবেশ করেছে। এর প্রভাব সাধারণ মানুষের জীবনে কষ্টদায়কভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে। দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট হচ্ছে বেশি; মধ্যবিত্তের জীবনমানের অধোগতিও বেগবান হয়েছে। প্রধান খাদ্য চালের দাম গত এক বছরে বেড়েছে প্রায় ২৭ শতাংশ। অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের দামও নানা হারে বেড়ে চলেছে। সরকার খাদ্য আমদানি করছে ও মজুদ বাড়াচ্ছে। গরিব মানুষের জন্য কম মূল্যে চাল বিক্রির কর্মসূচি নিয়েছে; ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে হতদরিদ্রদের খাদ্যসাহায্য দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এসব বিকল্প অবশ্যই প্রয়োজনীয়, কিন্তু মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা না বাড়লে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত হয় না। সে জন্য প্রয়োজন নতুন নতুন কর্মসংস্থান ও আয় বাড়ানোর উদ্যোগ। কিন্তু বিনিয়োগ-পরিস্থিতির তেমন উন্নতি নেই। শিল্প খাতে বিনিয়োগ আশানুরূপভাবে বাড়েনি, বাড়ছেও না। অন্যদিকে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও উন্নতি ঘটেনি। বর্তমান অর্থবছরের নয় মাসে এডিপিতে মোট বরাদ্দের মাত্র ৪৫ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে।
খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা, জ্বালানিসংকট দূর করা, দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী, গ্রামীণ অর্থনীতিতে সম্পদপ্রবাহ বাড়ানো, কর সংগ্রহ জোরদার করা, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার, আঞ্চলিক যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত করা এবং রপ্তানি ও অনাবাসী আয় বৃদ্ধি—এগুলো বর্তমান সরকারের অর্থনৈতিক নীতিতে ঘোষিত প্রাধিকার। সন্দেহ নেই, প্রাধিকারগুলো ইতিবাচক ও সময়োপযোগী। কিন্তু এসব বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যথাযথ প্রস্তুতির অভাব, সরকারের ভেতর সমন্বয়ের ঘাটতি, মন্ত্রণালয়গুলোর সক্ষমতার ঘাটতি ও উন্নয়ন প্রশাসনের দুর্বলতা বেশ বড় বাধা।
বিশেষত, জ্বালানিসংকট দূর করার ক্ষেত্রে অগ্রগতি নেই। ২০১০ সালের আগস্টে বিদ্যুতের উৎপাদন ছিল চার হাজার ৩৫০ মেগাওয়াট, আর এ বছরের ১১ এপ্রিল বিদ্যুতের উৎপাদন ছিল চার হাজার ৪১৫ মেগাওয়াট। অর্থাৎ, প্রকৃত বিদ্যুৎপ্রবাহ যা বেড়েছে তা নগণ্য—মাত্র ৬৫ মেগাওয়াট। যদিও প্রায় দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। একদিকে বিদ্যুতের চাহিদা বছরে গড়ে ১০ শতাংশ হারে বাড়ছে, অন্যদিকে পিডিবির পুরোনো বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদনক্ষমতা কমে যাচ্ছে, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রায়ই বন্ধ রাখতে হচ্ছে। কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোও নির্ধারিত সময়ে উৎপাদনে যেতে পারেনি। বিদ্যুৎ খাতে এই সংকট শিল্পে বিনিয়োগ না বাড়ার একটি বড় কারণ। কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও আয় বৃদ্ধি অনেকাংশে নির্ভর করে বিনিয়োগ বৃদ্ধির ওপর। সিপিডির বাজেট প্রস্তাবে তাই কর্মসংস্থান বাড়ানোর ওপরই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। আগামী বাজেটে এটাই হওয়া উচিত প্রধান অগ্রাধিকার।
প্রথমত, খাদ্যদ্রব্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দুই অঙ্কের ঘরে প্রবেশ করেছে। এর প্রভাব সাধারণ মানুষের জীবনে কষ্টদায়কভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে। দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট হচ্ছে বেশি; মধ্যবিত্তের জীবনমানের অধোগতিও বেগবান হয়েছে। প্রধান খাদ্য চালের দাম গত এক বছরে বেড়েছে প্রায় ২৭ শতাংশ। অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের দামও নানা হারে বেড়ে চলেছে। সরকার খাদ্য আমদানি করছে ও মজুদ বাড়াচ্ছে। গরিব মানুষের জন্য কম মূল্যে চাল বিক্রির কর্মসূচি নিয়েছে; ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে হতদরিদ্রদের খাদ্যসাহায্য দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এসব বিকল্প অবশ্যই প্রয়োজনীয়, কিন্তু মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা না বাড়লে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত হয় না। সে জন্য প্রয়োজন নতুন নতুন কর্মসংস্থান ও আয় বাড়ানোর উদ্যোগ। কিন্তু বিনিয়োগ-পরিস্থিতির তেমন উন্নতি নেই। শিল্প খাতে বিনিয়োগ আশানুরূপভাবে বাড়েনি, বাড়ছেও না। অন্যদিকে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও উন্নতি ঘটেনি। বর্তমান অর্থবছরের নয় মাসে এডিপিতে মোট বরাদ্দের মাত্র ৪৫ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে।
খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা, জ্বালানিসংকট দূর করা, দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী, গ্রামীণ অর্থনীতিতে সম্পদপ্রবাহ বাড়ানো, কর সংগ্রহ জোরদার করা, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার, আঞ্চলিক যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত করা এবং রপ্তানি ও অনাবাসী আয় বৃদ্ধি—এগুলো বর্তমান সরকারের অর্থনৈতিক নীতিতে ঘোষিত প্রাধিকার। সন্দেহ নেই, প্রাধিকারগুলো ইতিবাচক ও সময়োপযোগী। কিন্তু এসব বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যথাযথ প্রস্তুতির অভাব, সরকারের ভেতর সমন্বয়ের ঘাটতি, মন্ত্রণালয়গুলোর সক্ষমতার ঘাটতি ও উন্নয়ন প্রশাসনের দুর্বলতা বেশ বড় বাধা।
বিশেষত, জ্বালানিসংকট দূর করার ক্ষেত্রে অগ্রগতি নেই। ২০১০ সালের আগস্টে বিদ্যুতের উৎপাদন ছিল চার হাজার ৩৫০ মেগাওয়াট, আর এ বছরের ১১ এপ্রিল বিদ্যুতের উৎপাদন ছিল চার হাজার ৪১৫ মেগাওয়াট। অর্থাৎ, প্রকৃত বিদ্যুৎপ্রবাহ যা বেড়েছে তা নগণ্য—মাত্র ৬৫ মেগাওয়াট। যদিও প্রায় দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। একদিকে বিদ্যুতের চাহিদা বছরে গড়ে ১০ শতাংশ হারে বাড়ছে, অন্যদিকে পিডিবির পুরোনো বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদনক্ষমতা কমে যাচ্ছে, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রায়ই বন্ধ রাখতে হচ্ছে। কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোও নির্ধারিত সময়ে উৎপাদনে যেতে পারেনি। বিদ্যুৎ খাতে এই সংকট শিল্পে বিনিয়োগ না বাড়ার একটি বড় কারণ। কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও আয় বৃদ্ধি অনেকাংশে নির্ভর করে বিনিয়োগ বৃদ্ধির ওপর। সিপিডির বাজেট প্রস্তাবে তাই কর্মসংস্থান বাড়ানোর ওপরই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। আগামী বাজেটে এটাই হওয়া উচিত প্রধান অগ্রাধিকার।
No comments