আইপিএলে অনেক কিছুই অন্য রকম
মাত্র আধা ঘণ্টার মধ্যে সব পাল্টে গেল। এক দিন আগেও আমরা ছিলাম প্রতিপক্ষ। কিন্তু ঢাকা থেকে কলকাতায় এসে নামার পরই হয়ে গেলাম সতীর্থ!
বলছিলাম ব্রেট লি আর ব্র্যাড হাডিনের কথা। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ ওয়ানডের পরদিন আমরা তিনজন একই বিমানে ঢাকা থেকে কলকাতায় আসি কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) হয়ে আইপিএল খেলতে। ঢাকায় বিমানবন্দরেই আমাদের দেখা হয়েছিল। তবে কাকভোরে সবারই রাত জাগার ক্লান্তি ছিল বলে বলতে গেলে কথাই হয়নি। কলকাতায় নামার পরই ওদের সঙ্গে সতীর্থের মতো আলাপচারিতা শুরু হয়ে গেল। আইপিএল ব্যাপারটাই আসলে এ রকম—আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রবল প্রতিপক্ষও এখানে এসে হয়ে যাচ্ছে সতীর্থ, কখনো কখনো বন্ধু।
লি-হাডিনের সঙ্গে তবু তো আমি একই দলে খেলি, আরেক অস্ট্রেলিয়ান শেন ওয়াটসন এখানেও প্রতিপক্ষ। ও খেলছে রাজস্থান রয়্যালসে। কিন্তু এই ওয়াটসনও আইপিএলে এসে দারুণ দিলখোলা! একই ফ্লাইটে জয়পুরে খেলতে গিয়েছিলাম আমরা। বিমানে ওর সঙ্গে আড্ডাটা খুব জমেছিল। যদিও ক্রিকেট নিয়ে কোনো কথাই হয়নি। এমনকি আমাদের বিপক্ষে যে কদিন আগেই ও রকম দানবীয় ব্যাটিং করে গেল, সেসব নিয়েও না। সবই ব্যক্তিগত আলোচনা...খেলার বাইরে কে কী করি, কই থাকি, পরিবারে কে কে আছে এসব। ওয়াটসনের সঙ্গে ভালোই খাতির হয়ে গেছে আমার।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সঙ্গে তো বটেই, আমার ধারণা বিশ্বের অন্যান্য নামী-দামি ঘরোয়া টুর্নামেন্টের সঙ্গেও আইপিএলের বিস্তর ফারাক। আমি ইংলিশ কাউন্টি খেলেছি, সেখানকার পরিবেশের সঙ্গে আইপিএলের দিন-রাত্রি মেলানো যাবে না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বা অন্যান্য ক্লাব ক্রিকেটের মতো এখানে অনুশীলনের চাপ নেই। অনুশীলন মানে এখানে এই নয় যে, সবকিছু দলের সঙ্গে রুটিন মাফিক করতে হবে। অনুশীলনটা আইপিএলে অনেক বেশি ব্যক্তিগত ব্যাপার। যার যেখানে সমস্যা মাঠে গিয়ে সে সেটা নিয়েই কাজ করছে। প্রয়োজনে কোচের সাহায্য নিচ্ছে। তবে বাধ্যবাধকতা না থাকলেও কেউ অনুশীলন না করে বসে থাকে না। এই জায়গায় সবাই সিরিয়াস। যতটুকুই সুযোগ পাওয়া যায়, একবিন্দু ছাড় দেয় না কেউ। তবে হ্যাঁ, অন্য অনেক জায়গার চেয়ে আইপিএলে মানসিক চাপটা বেশি মনে হচ্ছে আমার কাছে। এই কদিনের অভিজ্ঞতায় আরেকটা ব্যাপার আমার কাছে পরিষ্কার, বাংলাদেশের জাতীয় দলের চেয়েও কেকেআরের অনুশীলনে সুযোগ-সুবিধা বেশি।
কেকেআরে আমার খুব পরিচিত একজনকে আবারও কোচ হিসেবে পেয়েছি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমার প্রথম কোচ ডেভ হোয়াটমোর। আমার কেকেআরে আসাতেও মুখ্য ভূমিকা ছিল তাঁর। তবে পেশাদার ক্রিকেটে যা হয় আরকি...আগেও যে আমাদের মধ্যে চেনা-জানা ছিল, সেটা আইপিএলে এসে বোঝার উপায় নেই। এখানে সবকিছুই আইপিএল এবং কেকেআর-কেন্দ্রিক।
নানা জাতের, নানা বর্ণের ক্রিকেটারকে এক করে দিচ্ছে আইপিএল। ভিন্ন একটা দেশ, এই দেশের সংস্কৃতি আর মানুষকেও কাছ থেকে জানার সুযোগ এটা। যখন যেখানে খেলা হয়, হোটেল-মাঠ করে সে জায়গাটা ভালোই চেনা হচ্ছে। তবে খেলা বা অনুশীলনের বাইরে বেশির ভাগ সময়ই আমি হোটেলরুমে টিভি দেখে কাটাই।
একই ড্রেসিংরুমে বসে দেখছি গৌতম গম্ভীর ব্যাটিংয়ে যাওয়ার সময় কী করে বা জ্যাক ক্যালিসের দিনের রুটিনটা কেমন—এই অভিজ্ঞতাগুলোও অসাধারণ। একেক ক্রিকেটারের আচরণ একেক রকম। ক্যালিস যেমন চুপচাপ থাকতেই বেশি পছন্দ করে। কেউ কথা বললে উত্তর দেয়, টুকটাক কিছু বলে। নিজে থেকে কথা বলে কম। আবার হাডিন-মরগান খুবই মজার মানুষ। ইয়ার্কি-ফাজলামির ওস্তাদ বলতে পারেন। সব মিলিয়ে বহুজাতিক ড্রেসিংরুমে সময়টা ভালোই কাটছে। লি-ক্যালিসদের মতো বড় খেলোয়াড়দের কাছ থেকে দেখে অনেক কিছু শেখারও আছে।
বলিউড কিং শাহরুখ খানকে কাছ থেকে দেখাটাও একটা বড় অভিজ্ঞতা। তাঁর মতো ক্রিকেট-পাগল মানুষ বোধহয় কমই আছে। প্রতিটি ম্যাচের আগে-পরে আমাদের সঙ্গে দেখা করেন। জিতলে খুশি হন, অভিনন্দন জানান। হারলে পরের ম্যাচে ভালো খেলার জন্য সাপোর্ট দেন। আমার সঙ্গে সরাসরি খুব বেশি কথা অবশ্য হয়নি শাহরুখের। শুধু রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে পর পর দুই উইকেট পাওয়ার পর ম্যাচ শেষে বলেছিলেন, হ্যাটট্রিকটা পরের ম্যাচে হবে। হ্যাটট্রিক না হলেও পরের ম্যাচেই কিন্তু আমি ৩ উইকেট পেয়েছি!
গেইলের তাণ্ডবের কারণে গত ম্যাচটা একটু খারাপ গেলেও আইপিএলে এখন পর্যন্ত বোলিং ভালোই করছি। যা করতে চাচ্ছি, তাই হচ্ছে। অন্তত আমি এখন পর্যন্ত পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট। ব্যাটিংয়ের সুযোগটা ভালোভাবে পাচ্ছি না, এই যা। একটা ম্যাচেই সুযোগ পেয়েছিলাম, ভালো করতে পারিনি। তবে মনে বিশ্বাস আছে, বোলিংয়ের মতো ব্যাটিংয়েও আমার দিন আসবে।
বলছিলাম ব্রেট লি আর ব্র্যাড হাডিনের কথা। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ ওয়ানডের পরদিন আমরা তিনজন একই বিমানে ঢাকা থেকে কলকাতায় আসি কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) হয়ে আইপিএল খেলতে। ঢাকায় বিমানবন্দরেই আমাদের দেখা হয়েছিল। তবে কাকভোরে সবারই রাত জাগার ক্লান্তি ছিল বলে বলতে গেলে কথাই হয়নি। কলকাতায় নামার পরই ওদের সঙ্গে সতীর্থের মতো আলাপচারিতা শুরু হয়ে গেল। আইপিএল ব্যাপারটাই আসলে এ রকম—আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রবল প্রতিপক্ষও এখানে এসে হয়ে যাচ্ছে সতীর্থ, কখনো কখনো বন্ধু।
লি-হাডিনের সঙ্গে তবু তো আমি একই দলে খেলি, আরেক অস্ট্রেলিয়ান শেন ওয়াটসন এখানেও প্রতিপক্ষ। ও খেলছে রাজস্থান রয়্যালসে। কিন্তু এই ওয়াটসনও আইপিএলে এসে দারুণ দিলখোলা! একই ফ্লাইটে জয়পুরে খেলতে গিয়েছিলাম আমরা। বিমানে ওর সঙ্গে আড্ডাটা খুব জমেছিল। যদিও ক্রিকেট নিয়ে কোনো কথাই হয়নি। এমনকি আমাদের বিপক্ষে যে কদিন আগেই ও রকম দানবীয় ব্যাটিং করে গেল, সেসব নিয়েও না। সবই ব্যক্তিগত আলোচনা...খেলার বাইরে কে কী করি, কই থাকি, পরিবারে কে কে আছে এসব। ওয়াটসনের সঙ্গে ভালোই খাতির হয়ে গেছে আমার।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সঙ্গে তো বটেই, আমার ধারণা বিশ্বের অন্যান্য নামী-দামি ঘরোয়া টুর্নামেন্টের সঙ্গেও আইপিএলের বিস্তর ফারাক। আমি ইংলিশ কাউন্টি খেলেছি, সেখানকার পরিবেশের সঙ্গে আইপিএলের দিন-রাত্রি মেলানো যাবে না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বা অন্যান্য ক্লাব ক্রিকেটের মতো এখানে অনুশীলনের চাপ নেই। অনুশীলন মানে এখানে এই নয় যে, সবকিছু দলের সঙ্গে রুটিন মাফিক করতে হবে। অনুশীলনটা আইপিএলে অনেক বেশি ব্যক্তিগত ব্যাপার। যার যেখানে সমস্যা মাঠে গিয়ে সে সেটা নিয়েই কাজ করছে। প্রয়োজনে কোচের সাহায্য নিচ্ছে। তবে বাধ্যবাধকতা না থাকলেও কেউ অনুশীলন না করে বসে থাকে না। এই জায়গায় সবাই সিরিয়াস। যতটুকুই সুযোগ পাওয়া যায়, একবিন্দু ছাড় দেয় না কেউ। তবে হ্যাঁ, অন্য অনেক জায়গার চেয়ে আইপিএলে মানসিক চাপটা বেশি মনে হচ্ছে আমার কাছে। এই কদিনের অভিজ্ঞতায় আরেকটা ব্যাপার আমার কাছে পরিষ্কার, বাংলাদেশের জাতীয় দলের চেয়েও কেকেআরের অনুশীলনে সুযোগ-সুবিধা বেশি।
কেকেআরে আমার খুব পরিচিত একজনকে আবারও কোচ হিসেবে পেয়েছি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমার প্রথম কোচ ডেভ হোয়াটমোর। আমার কেকেআরে আসাতেও মুখ্য ভূমিকা ছিল তাঁর। তবে পেশাদার ক্রিকেটে যা হয় আরকি...আগেও যে আমাদের মধ্যে চেনা-জানা ছিল, সেটা আইপিএলে এসে বোঝার উপায় নেই। এখানে সবকিছুই আইপিএল এবং কেকেআর-কেন্দ্রিক।
নানা জাতের, নানা বর্ণের ক্রিকেটারকে এক করে দিচ্ছে আইপিএল। ভিন্ন একটা দেশ, এই দেশের সংস্কৃতি আর মানুষকেও কাছ থেকে জানার সুযোগ এটা। যখন যেখানে খেলা হয়, হোটেল-মাঠ করে সে জায়গাটা ভালোই চেনা হচ্ছে। তবে খেলা বা অনুশীলনের বাইরে বেশির ভাগ সময়ই আমি হোটেলরুমে টিভি দেখে কাটাই।
একই ড্রেসিংরুমে বসে দেখছি গৌতম গম্ভীর ব্যাটিংয়ে যাওয়ার সময় কী করে বা জ্যাক ক্যালিসের দিনের রুটিনটা কেমন—এই অভিজ্ঞতাগুলোও অসাধারণ। একেক ক্রিকেটারের আচরণ একেক রকম। ক্যালিস যেমন চুপচাপ থাকতেই বেশি পছন্দ করে। কেউ কথা বললে উত্তর দেয়, টুকটাক কিছু বলে। নিজে থেকে কথা বলে কম। আবার হাডিন-মরগান খুবই মজার মানুষ। ইয়ার্কি-ফাজলামির ওস্তাদ বলতে পারেন। সব মিলিয়ে বহুজাতিক ড্রেসিংরুমে সময়টা ভালোই কাটছে। লি-ক্যালিসদের মতো বড় খেলোয়াড়দের কাছ থেকে দেখে অনেক কিছু শেখারও আছে।
বলিউড কিং শাহরুখ খানকে কাছ থেকে দেখাটাও একটা বড় অভিজ্ঞতা। তাঁর মতো ক্রিকেট-পাগল মানুষ বোধহয় কমই আছে। প্রতিটি ম্যাচের আগে-পরে আমাদের সঙ্গে দেখা করেন। জিতলে খুশি হন, অভিনন্দন জানান। হারলে পরের ম্যাচে ভালো খেলার জন্য সাপোর্ট দেন। আমার সঙ্গে সরাসরি খুব বেশি কথা অবশ্য হয়নি শাহরুখের। শুধু রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে পর পর দুই উইকেট পাওয়ার পর ম্যাচ শেষে বলেছিলেন, হ্যাটট্রিকটা পরের ম্যাচে হবে। হ্যাটট্রিক না হলেও পরের ম্যাচেই কিন্তু আমি ৩ উইকেট পেয়েছি!
গেইলের তাণ্ডবের কারণে গত ম্যাচটা একটু খারাপ গেলেও আইপিএলে এখন পর্যন্ত বোলিং ভালোই করছি। যা করতে চাচ্ছি, তাই হচ্ছে। অন্তত আমি এখন পর্যন্ত পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট। ব্যাটিংয়ের সুযোগটা ভালোভাবে পাচ্ছি না, এই যা। একটা ম্যাচেই সুযোগ পেয়েছিলাম, ভালো করতে পারিনি। তবে মনে বিশ্বাস আছে, বোলিংয়ের মতো ব্যাটিংয়েও আমার দিন আসবে।
No comments