অন্য রকম এক দ্বিতীয় দিন by আরিফুল ইসলাম
টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষেই ফলাফল সম্পর্কে ধারণা দেওয়া শুধু বোকামিই নয়, রীতিমতো মূর্খামি। এমন নয় যে দ্বিতীয় দিন শেষে কোনো ম্যাচের ফলাফল কখনো বোঝা যায়নি, তবে হাজার দুয়েক টেস্টের ইতিহাসে সংখ্যাটা হাতে গুনে বলা যাবে। কিন্তু দলের নাম যদি হয় বাংলাদেশ আর প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড, তাহলে কিন্তু হিসাব ভিন্ন। দ্বিতীয় দিনেই ফলাফল বুঝে যাওয়ার সাফল্যের হার এখানে শতকরা একশ। মানে টেস্টে বাংলাদেশ যতবার ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছে, দ্বিতীয় দিন শেষেই পরিষ্কার হয়ে গেছে ম্যাচের চিত্র, আরও নির্দিষ্ট করে বললে বাংলাদেশের হার।
কালকের দিনটিই শুধু ছিল ব্যতিক্রম। ম্যাচের গতিবিধি তো বোঝা যাচ্ছেই না, নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে প্রায় সারা দিনই মাঠে কর্তৃত্ব করেছে বাংলাদেশ। আত্মবিশ্বাসটা এখনো পাকাপোক্ত হয়নি বলেই হয়তো ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে শফিউল ইসলামের ‘আমরাই এগিয়ে’ কথাটায় জোর শোনা গেল না। কেভিন পিটারসেন কিন্তু দিনশেষে পরিষ্কারভাবেই এগিয়ে রেখেছেন বাংলাদেশকে। শেষ পর্যন্ত কী হবে বলা মুশকিল, তবে এবার অন্তত দ্বিতীয় দিন শেষে তো বলা যাচ্ছে, এগিয়ে বাংলাদেশ!
একটু পেছন ফিরে দেখা যাক কেমন ছিল বাংলাদেশ-ইংল্যান্ডের আগের পাঁচটি টেস্টের দ্বিতীয় দিন। ১৫ মিনিটের বৃষ্টি খেয়ে নিয়েছিল দু দেশের দ্বৈরথের প্রথম দিনের প্রায় পুরোটাই। ২০০৩ সালে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে প্রথম দিনে ১৫ ওভার খেলে ২ উইকেটে ২৪ রান করা বাংলাদেশ দ্বিতীয় দিনে অলআউট ২০৩ রানে। ৩১ ওভার ব্যাট করতে পেরেছিল ইংল্যান্ড, দুই ওপেনার মার্কাস ট্রেসকোথিক ও মাইকেল ভন অবিচ্ছিন্ন থেকে তুলেছিলেন ১১১ রান। পরে অবশ্য বোলাররা লড়াইয়ে ফিরিয়েছিলেন বাংলাদেশকে, তবে শেষ পর্যন্ত হারতে হয়েছে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানেই।
চট্টগ্রামে পরের টেস্টে আবারও নিজেদের উজাড় করে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। প্রথম দিনে ৯০ ওভার ব্যাটিং করেও ইংল্যান্ড ৪ উইকেট হারিয়ে তুলতে পেরেছিল মাত্র ২৩৭ রান। পরদিন অলআউট ৩২৬ রানেই। কিন্তু বোলারদের সাফল্য উজ্জীবিত করতে পারেনি ব্যাটসম্যানদের। ৫ জন স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান নিয়ে নেমেছিল বাংলাদেশ, দ্বিতীয় দিনে ৩৮ ওভার ব্যাটিং করে আউট এর চারজনই, স্কোরবোর্ডে রান তখন মাত্র ৯৩। ব্যাটিং ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা ধরে রেখে খালেদ মাহমুদের দল হেরেছিল ৩২৯ রানে।
২০০৫ সালের ইংল্যান্ড সফরে টেস্ট সিরিজের কথা যত কম বলা যায় ততই ভালো। দুটো টেস্টেই বাংলাদেশের পারফরম্যান্সে ছিল অদ্ভুত মিল। দু জায়গাতেই প্রথম দিন শেষেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল ম্যাচের ভবিষ্যত্, আর দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশ তো একেবারে হারের কিনারায়। লর্ডস টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের রান ৫ উইকেটে ৯০, এমন তো কতবারই হয়েছে। কিন্তু এ যে দ্বিতীয় ইনিংস! বাংলাদেশকে ১০৮ রানে মুড়ে দিয়ে প্রথম দিনেই ১৮৮ রান তুলেছিল ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের ওই ৫ উইকেটে ৯০ ইংল্যান্ড ৩ উইকেটে ৫২৮ রানে ইনিংস ঘোষণার পর! তৃতীয় দিন লাঞ্চের আগে হার ইনিংস ও ২৬১ রানে। লর্ডস দুঃস্বপ্ন হুবহু ফিরে এল চেস্টার-লি-স্ট্রিটেও। দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ ৮ উইকেটে ২৯৭ এবং এবারও দ্বিতীয় ইনিংসে। প্রথম দিনে বাংলাদেশ ১০৪ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর ইংল্যান্ড প্রথম দিন শেষ করেছিল ৩ উইকেটে ২৬৯ রান তুলে। দ্বিতীয় দিনে ওই ৩ উইকেটে ৪৪৭ রানে ইংল্যান্ডের ইনিংস ঘোষণা, দিন শেষে ২ উইকেট হাতে নিয়ে ইনিংস পরাজয় এড়াতেই বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৪৬ রান। শেষ পর্যন্ত হার ইনিংস ও ২৭ রানে।
এই সিরিজের চট্টগ্রামের স্মৃতি এখনো তরতাজা। ৫ উইকেটে ৫৯৯ রানে ইংল্যান্ড ইনিংস ঘোষণার পর দ্বিতীয় দিনশেষে বাংলাদেশ ইংল্যান্ডের সমান উইকেট হারিয়ে ১৫৪। মিরপুরের দ্বিতীয় দিনটিই শুধু অন্য রকম। ভালো অবস্থা থেকে লেজেগোবরে করে ফেলার ‘দুঃসাধ্য’ কাজটা এর আগে বাংলাদেশ অনেকবারই করেছে, এবারও যে করবে না, সে নিশ্চয়তাও নেই। বাংলাদেশ এবার একটা আশা জাগিয়েছে, যদি তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম দিনেও বলা যায় ‘বাংলাদেশ এগিয়ে’!
কালকের দিনটিই শুধু ছিল ব্যতিক্রম। ম্যাচের গতিবিধি তো বোঝা যাচ্ছেই না, নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে প্রায় সারা দিনই মাঠে কর্তৃত্ব করেছে বাংলাদেশ। আত্মবিশ্বাসটা এখনো পাকাপোক্ত হয়নি বলেই হয়তো ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে শফিউল ইসলামের ‘আমরাই এগিয়ে’ কথাটায় জোর শোনা গেল না। কেভিন পিটারসেন কিন্তু দিনশেষে পরিষ্কারভাবেই এগিয়ে রেখেছেন বাংলাদেশকে। শেষ পর্যন্ত কী হবে বলা মুশকিল, তবে এবার অন্তত দ্বিতীয় দিন শেষে তো বলা যাচ্ছে, এগিয়ে বাংলাদেশ!
একটু পেছন ফিরে দেখা যাক কেমন ছিল বাংলাদেশ-ইংল্যান্ডের আগের পাঁচটি টেস্টের দ্বিতীয় দিন। ১৫ মিনিটের বৃষ্টি খেয়ে নিয়েছিল দু দেশের দ্বৈরথের প্রথম দিনের প্রায় পুরোটাই। ২০০৩ সালে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে প্রথম দিনে ১৫ ওভার খেলে ২ উইকেটে ২৪ রান করা বাংলাদেশ দ্বিতীয় দিনে অলআউট ২০৩ রানে। ৩১ ওভার ব্যাট করতে পেরেছিল ইংল্যান্ড, দুই ওপেনার মার্কাস ট্রেসকোথিক ও মাইকেল ভন অবিচ্ছিন্ন থেকে তুলেছিলেন ১১১ রান। পরে অবশ্য বোলাররা লড়াইয়ে ফিরিয়েছিলেন বাংলাদেশকে, তবে শেষ পর্যন্ত হারতে হয়েছে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানেই।
চট্টগ্রামে পরের টেস্টে আবারও নিজেদের উজাড় করে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। প্রথম দিনে ৯০ ওভার ব্যাটিং করেও ইংল্যান্ড ৪ উইকেট হারিয়ে তুলতে পেরেছিল মাত্র ২৩৭ রান। পরদিন অলআউট ৩২৬ রানেই। কিন্তু বোলারদের সাফল্য উজ্জীবিত করতে পারেনি ব্যাটসম্যানদের। ৫ জন স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান নিয়ে নেমেছিল বাংলাদেশ, দ্বিতীয় দিনে ৩৮ ওভার ব্যাটিং করে আউট এর চারজনই, স্কোরবোর্ডে রান তখন মাত্র ৯৩। ব্যাটিং ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা ধরে রেখে খালেদ মাহমুদের দল হেরেছিল ৩২৯ রানে।
২০০৫ সালের ইংল্যান্ড সফরে টেস্ট সিরিজের কথা যত কম বলা যায় ততই ভালো। দুটো টেস্টেই বাংলাদেশের পারফরম্যান্সে ছিল অদ্ভুত মিল। দু জায়গাতেই প্রথম দিন শেষেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল ম্যাচের ভবিষ্যত্, আর দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশ তো একেবারে হারের কিনারায়। লর্ডস টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের রান ৫ উইকেটে ৯০, এমন তো কতবারই হয়েছে। কিন্তু এ যে দ্বিতীয় ইনিংস! বাংলাদেশকে ১০৮ রানে মুড়ে দিয়ে প্রথম দিনেই ১৮৮ রান তুলেছিল ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের ওই ৫ উইকেটে ৯০ ইংল্যান্ড ৩ উইকেটে ৫২৮ রানে ইনিংস ঘোষণার পর! তৃতীয় দিন লাঞ্চের আগে হার ইনিংস ও ২৬১ রানে। লর্ডস দুঃস্বপ্ন হুবহু ফিরে এল চেস্টার-লি-স্ট্রিটেও। দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ ৮ উইকেটে ২৯৭ এবং এবারও দ্বিতীয় ইনিংসে। প্রথম দিনে বাংলাদেশ ১০৪ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর ইংল্যান্ড প্রথম দিন শেষ করেছিল ৩ উইকেটে ২৬৯ রান তুলে। দ্বিতীয় দিনে ওই ৩ উইকেটে ৪৪৭ রানে ইংল্যান্ডের ইনিংস ঘোষণা, দিন শেষে ২ উইকেট হাতে নিয়ে ইনিংস পরাজয় এড়াতেই বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৪৬ রান। শেষ পর্যন্ত হার ইনিংস ও ২৭ রানে।
এই সিরিজের চট্টগ্রামের স্মৃতি এখনো তরতাজা। ৫ উইকেটে ৫৯৯ রানে ইংল্যান্ড ইনিংস ঘোষণার পর দ্বিতীয় দিনশেষে বাংলাদেশ ইংল্যান্ডের সমান উইকেট হারিয়ে ১৫৪। মিরপুরের দ্বিতীয় দিনটিই শুধু অন্য রকম। ভালো অবস্থা থেকে লেজেগোবরে করে ফেলার ‘দুঃসাধ্য’ কাজটা এর আগে বাংলাদেশ অনেকবারই করেছে, এবারও যে করবে না, সে নিশ্চয়তাও নেই। বাংলাদেশ এবার একটা আশা জাগিয়েছে, যদি তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম দিনেও বলা যায় ‘বাংলাদেশ এগিয়ে’!
No comments