ইরাক একটি নতুন আইন পাস করার দ্বারপ্রান্তে। যার মাধ্যমে পুরুষরা ৯ বছর বয়সী মেয়েদেরও এবার থেকে বিয়ে করতে পারবে। শিয়া রক্ষণশীল অধ্যুষিত ইরাকের পার্লামেন্টে একটি সংশোধনী প্রস্তাব করেছে ‘ব্যক্তিগত মর্যাদা আইন’ বা ‘personal status law’ । যা তালেবানের নীতির মতো নারীর অধিকারে একটি বড় ধাক্কার কারণ হতে পারে। সমালোচকরা যুক্তি দিয়েছিলেন যে এই আইনটি নারীদের সমস্ত সিদ্ধান্ত থেকে বঞ্চিত করবে। রায়া ফাইক, যিনি ইরাকি প্রতিনিধিদের সাথে বিলটিকে চ্যালেঞ্জ করছেন, বলেছেন যে এই আইন অল্পবয়সী মেয়েদের সময়ের আগেই বিয়ে করার অনুমতি দেবে এবং প্রায় সমস্ত পারিবারিক সিদ্ধান্ত ধর্মীয় কর্তৃপক্ষের হাতে হস্তান্তর করার ক্ষমতা দেবে। দ্য গার্ডিয়ানকে রায়া বলেন, ‘এই আইন দেশের মেয়েদের কাছে একটি বিপর্যয়। কয়েক দশকের সাম্প্রদায়িক সংঘাতের ফলে শিয়া মুসলিম ধর্মীয় সংখ্যাগরিষ্ঠদের দ্বারা আধিপত্য একটি সরকার হয়েছে, যা আগে দুবার ব্যক্তিগত মর্যাদা আইন সংশোধন করার চেষ্টা করেছে। বর্তমানে পার্লামেন্টে ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলির শক্তিশালী সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে, ফাইক এবং ২৫ জন নারী প্রতিনিধিরা এই বিলটি রোখার চেষ্টা করছেন।একজন ইরাকি প্রতিনিধি জানাচ্ছেন, দুর্ভাগ্যবশত, পুরুষ এমপিরা এই আইনকে সমর্থন করেছেন। তারা পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন নাবালিকাকে বিয়ে করলে সমস্যা কী?' তাদের চিন্তাভাবনা অত্যন্ত সংকীর্ণ।
একবার আইনটি পাস হলে, নারীদের বিবাহবিচ্ছেদ, সন্তানের হেফাজত এবং উত্তরাধিকারের অধিকার সংক্রান্ত আইনেও বদল আসবে বলে মনে করেন তিনি। শিয়া কোয়ালিশন ক্রমাগত যুক্তি দিয়েছে যে আইনটির লক্ষ্য মেয়েদের ‘অনৈতিক সম্পর্ক’ থেকে রক্ষা করা। আইনের বিরোধীরা এবং মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলি দেশে নারীদের অধিকার ক্ষুণ্ন করার প্রচেষ্টা হিসাবে বিলটির নিন্দা করেছে। তারা যুক্তি দিয়েছেন যে, এই বিলটি অল্পবয়সী মেয়েদের যৌন ও শারীরিক সহিংসতার ঝুঁকির মুখে ফেলবে। তাদের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করবে। যদিও ১৯৫০-এর দশক থেকে বাল্যবিবাহ দীর্ঘদিন ধরে নিষিদ্ধ ছিল, ২০২৩ সালের জাতিসংঘের জরিপে দেখা গেছে যে ইরাকে প্রায় ২৮ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয় ১৮ বছর হওয়ার আগেই।
সূত্র : টাইমস অফ ইন্ডিয়া
No comments