গাছ বন্ধু ওয়াহিদ সরদার
যশোর ঝিনাইদহ মহাসড়কের পাশে গাছ থেকে একে একে সাইনবোর্ড পেরেক সরাচ্ছেন এক লোক।
মাথায় কৃষকদের যে মাথাল তাতে বাংলাদেশের পতকার আদলে লাল-সবুজ রঙে রাঙানো। পায়ে পুরোনো এক জোড়া কেডস। নাম ওয়াহিদ সরদার।
২০১৮ সালের জুলাই মাস থেকে গাছের পেরেক অপসারণ শুরু করেন যশোরের ওয়াহিদ সরদার। যশোর, ঝিনাইদহ, খুলনা তিনটি জেলার বিভিন্ন রাস্তার ধারে থাকা গাছ থেকে ব্যানার, পেরেক অপসারণ করে যাচ্ছেন তিনি।
এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০০ কিলোমিটার এলাকার বিভিন্ন রাস্তার গাছ থেকে ১২৭ কেজি পেরেক তুলেছেন ওয়াহিদ সরদার।
কেন তিনি এই কাজ করছেন? বিবিসিকে তিনি বলেন- "গাছকে আমি অনেক ভালোবাসি, গাছ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, গাছ মারা যাচ্ছে তার কাঁটার আঘাতে। বিজ্ঞান বলছে গাছের জীবন আছে, যেহেতু জীবন আছে তার মানে তার যন্ত্রণা, ব্যাথা আছে। এ কারণে আমি এ কাজটি করছি।"
২০০৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত নিজ খরচে এবং বিভিন্ন সংস্থার সহায়তায় প্রায় ৩০ হাজার গাছ লাগিয়েছেন তিনি।
পেশায় রাজমিস্ত্রি, আর্থিক অনটনের কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গন্ডি পেরোতে পারেননি ওয়াহিদ সরদার।
অথচ গাছের জীবন, তাদের বেড়ে ওঠা ও জীবন বৈচিত্র্য নিয়ে তার রয়েছে স্পষ্ট ধারণা।
গাছের গায়ে পেরেক মারা এবং পোষ্টার বিলবোর্ড লাগানোর কারণে তার ক্ষুব্ধ সমাজের শিক্ষিত এবং উচ্চ শ্রেনীর উপর।
ওয়াহিদ সরদারের মতে; "যারা এসব করছে তারা সব শিক্ষিত, পয়সাওয়ালা, যার জন্য পেরেক তুলতে গিয়ে নিরাপত্তার একটা হুমকি ছিলো কারণ তাদের বিভিন্ন প্রচার প্রচারণা আমি সরিয়ে ফেলছি । ভেতরে ভয় কিন্তু মুখে সাহস ছিলো, এটা নিয়ে ওদেরকে বুঝাতে বুঝাতে আমি পেরক তুলে যাচ্ছি। পেরেক তুলতে গিয়ে মানুষের তিরস্কার আর কটু কথার মুখোমুখি হতে হয় ওয়াহিদ সরকারকে।
অনেকে জিজ্ঞেস করে কে অর্ডার করেছে পেরেক তুলতে, বেতন কতো পায়।
যখন শুনে তিনি স্বেচ্ছাসেবক তখন কেউ বিশ্বাস করে না।
বলে এটা অসম্ভব নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো।
ওয়াহিদ সরদার জানান;" অনেকে প্রশ্ন করে পেরেকগুলো কি করি? যদি বলি সংরক্ষণ করি, বলে না বিক্রি করেন এখানে তো অনেক পয়সা আছে। অর্থাৎ তারা আমাকে বিশ্বাস করে না। একটা মানুষ এমন কাজ করতে পারে তা বিশ্বাস করে না। এটা হচ্ছে আপনি ভালো কাজ করলে এমন সমালোচনার ভেতর দিয়ে যেতে হবে। তাই এটার দিকে আমি দৃষ্টি দিই না।"আর্থিক অনটনের কারণে তার এই স্বেচ্ছাসেবী কাজে সম্মতি ছিলো পরিবারের। ওয়াহিদ সরদারের প্রতি পরিবারের সদস্যদের একটা ক্ষোভ ছিলো যে আমাদের ভবিষ্যতটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
যখন দেখলো যে এটা তার নেশা, তখন তারা এ সংকটের ভেতর দিয়ে স্বসম্মানে গড়ে উঠেছে।
বর্তমানে ওয়াহিদের মালয়েশিয়া প্রবাসী ছেলে সংসারের হাল ধরেছে আর তিনি গাছ বাঁচানোর লড়াই করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন; এটা আমি যুদ্ধ ঘোষণা করেছি। যতক্ষণ পর্যন্ত সরকার একটি সু-পরিকল্পনার মাধ্যমে ব্যানারকে জাদুঘরে না নিবে ততক্ষণ আমি এটা চালু রাখবো ততদিন আমি এটা চালিয়ে যাবো।
সূত্রঃ বিবিসি
মাথায় কৃষকদের যে মাথাল তাতে বাংলাদেশের পতকার আদলে লাল-সবুজ রঙে রাঙানো। পায়ে পুরোনো এক জোড়া কেডস। নাম ওয়াহিদ সরদার।
২০১৮ সালের জুলাই মাস থেকে গাছের পেরেক অপসারণ শুরু করেন যশোরের ওয়াহিদ সরদার। যশোর, ঝিনাইদহ, খুলনা তিনটি জেলার বিভিন্ন রাস্তার ধারে থাকা গাছ থেকে ব্যানার, পেরেক অপসারণ করে যাচ্ছেন তিনি।
এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০০ কিলোমিটার এলাকার বিভিন্ন রাস্তার গাছ থেকে ১২৭ কেজি পেরেক তুলেছেন ওয়াহিদ সরদার।
কেন তিনি এই কাজ করছেন? বিবিসিকে তিনি বলেন- "গাছকে আমি অনেক ভালোবাসি, গাছ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, গাছ মারা যাচ্ছে তার কাঁটার আঘাতে। বিজ্ঞান বলছে গাছের জীবন আছে, যেহেতু জীবন আছে তার মানে তার যন্ত্রণা, ব্যাথা আছে। এ কারণে আমি এ কাজটি করছি।"
২০০৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত নিজ খরচে এবং বিভিন্ন সংস্থার সহায়তায় প্রায় ৩০ হাজার গাছ লাগিয়েছেন তিনি।
পেশায় রাজমিস্ত্রি, আর্থিক অনটনের কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গন্ডি পেরোতে পারেননি ওয়াহিদ সরদার।
অথচ গাছের জীবন, তাদের বেড়ে ওঠা ও জীবন বৈচিত্র্য নিয়ে তার রয়েছে স্পষ্ট ধারণা।
গাছের গায়ে পেরেক মারা এবং পোষ্টার বিলবোর্ড লাগানোর কারণে তার ক্ষুব্ধ সমাজের শিক্ষিত এবং উচ্চ শ্রেনীর উপর।
ওয়াহিদ সরদারের মতে; "যারা এসব করছে তারা সব শিক্ষিত, পয়সাওয়ালা, যার জন্য পেরেক তুলতে গিয়ে নিরাপত্তার একটা হুমকি ছিলো কারণ তাদের বিভিন্ন প্রচার প্রচারণা আমি সরিয়ে ফেলছি । ভেতরে ভয় কিন্তু মুখে সাহস ছিলো, এটা নিয়ে ওদেরকে বুঝাতে বুঝাতে আমি পেরক তুলে যাচ্ছি। পেরেক তুলতে গিয়ে মানুষের তিরস্কার আর কটু কথার মুখোমুখি হতে হয় ওয়াহিদ সরকারকে।
অনেকে জিজ্ঞেস করে কে অর্ডার করেছে পেরেক তুলতে, বেতন কতো পায়।
যখন শুনে তিনি স্বেচ্ছাসেবক তখন কেউ বিশ্বাস করে না।
বলে এটা অসম্ভব নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো।
ওয়াহিদ সরদার জানান;" অনেকে প্রশ্ন করে পেরেকগুলো কি করি? যদি বলি সংরক্ষণ করি, বলে না বিক্রি করেন এখানে তো অনেক পয়সা আছে। অর্থাৎ তারা আমাকে বিশ্বাস করে না। একটা মানুষ এমন কাজ করতে পারে তা বিশ্বাস করে না। এটা হচ্ছে আপনি ভালো কাজ করলে এমন সমালোচনার ভেতর দিয়ে যেতে হবে। তাই এটার দিকে আমি দৃষ্টি দিই না।"আর্থিক অনটনের কারণে তার এই স্বেচ্ছাসেবী কাজে সম্মতি ছিলো পরিবারের। ওয়াহিদ সরদারের প্রতি পরিবারের সদস্যদের একটা ক্ষোভ ছিলো যে আমাদের ভবিষ্যতটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
যখন দেখলো যে এটা তার নেশা, তখন তারা এ সংকটের ভেতর দিয়ে স্বসম্মানে গড়ে উঠেছে।
বর্তমানে ওয়াহিদের মালয়েশিয়া প্রবাসী ছেলে সংসারের হাল ধরেছে আর তিনি গাছ বাঁচানোর লড়াই করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন; এটা আমি যুদ্ধ ঘোষণা করেছি। যতক্ষণ পর্যন্ত সরকার একটি সু-পরিকল্পনার মাধ্যমে ব্যানারকে জাদুঘরে না নিবে ততক্ষণ আমি এটা চালু রাখবো ততদিন আমি এটা চালিয়ে যাবো।
সূত্রঃ বিবিসি
No comments