বাসযোগ্য ঢাকার খোঁজে by ইদ ইজাসজ ভাস্কেজ ও ডেভিড ম্যাসন
ঢাকা
মহানগর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কেন্দ্রস্থল। দেশের অর্থনৈতিক
অগ্রগতি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির চালিকাশক্তি এই এলাকা। বাণিজ্যিক
প্রাণকেন্দ্র হিসেবে ঢাকার অবস্থানের কারণে শহরটিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ঘটেছে
ব্যাপক হারে। ৪০ বছরে মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ১০ গুন! ২০১৫ সালের হিসাব
অনুযায়ী ঢাকায় ১.৮ কোটি মানুষের বসবাস। এভাবেই দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে
দ্রুতগতিতে নগরায়ন ঘটেছে বাংলাদেশে।
বর্তমানে বাংলাদেশের শহুরে জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি বাস করেন ঢাকায়। ঢাকায় প্রতি হেক্টরে ৪৪০ জন মানুষ বাস করেন। ফলে এটি বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতি সম্পন্ন শহরগুলোর একটি। মুম্বই, হংকং ও করাচির চেয়েও ঢাকার জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি।
পাশাপাশি, ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে বাস-অযোগ্য শহরগুলোর একটি।
১৪০টি শহরের বাসযোগ্যতার জরিপে ঢাকার অবস্থান ১৩৭ তম। ঢাকার এই পরিস্থিতিতে বেশি সমস্যায় পড়েন দরিদ্র, নারী ও বয়স্কদের মতো ঝুঁকিতে থাকা মানুষরা।
ঢাকার বস্তিতে বসবাসের পরিস্থিতি প্রত্যন্ত অঞ্চলের চেয়েও খারাপ, যদিও এখানে থাকলে কর্মসংস্থানের সুযোগ বেশি। শহরের মাত্র দুই-তৃতীয়াংশ এলাকায় পাইপের পানি উপলভ্য। মাত্র ৩-৪ শতাংশ বর্জ্য জল নিষ্কাশন করা হয়। পুরো শহরের বর্জ্যের মাত্র ৬০ শতাংশ সংগ্রহ করা হয়।
ঢাকায় ট্রাফিক জ্যামের অবস্থা ভয়াবহ। জনসংখ্যা অনুপাতে অপর্যাপ্ত অবকাঠামো ও জনপরিবহণ সুবিধা এজন্য দায়ী। ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের একটি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দিষ্ট করা মাত্রারও ৮ গুণ বেশি এখানকার দূষণের মাত্রা। পাবলিক স্পেস ইতিমধ্যে বেশ সীমিত। কিন্তু ভূমি ব্যবহার আরও বাড়ছে, ফলে এ ধরণের স্থান ক্রমেই আরও সঙ্কুচিত হচ্ছে।
এই ইস্যু সমাধানে, মেট্রো ঢাকা প্ল্যাটফর্ম নামে বিশ্বব্যাংকের একটি নগর উন্নয়ন প্রোগ্রাম রয়েছে। এই প্ল্যাটফর্মের অধীনে, আমরা ঢাকার অতীত, চলমান ও ভবিষ্যৎ বিশ্লেষণ ও বিনিয়োগ কর্মকান্ড পদ্ধতিগতভাবে পর্যালোচনা করেছি। কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও সাম্প্রতিক গবেষণা বিশ্লেষণ করে আমরা মহানগর এলাকায় মানুষের চলাচল ও কর্মসংস্থান সম্পর্কিত ‘ট্রেন্ড’ নথিবদ্ধ করতে পেরেছি।
এসবের মধ্যে রয়েছে, উত্তরাঞ্চলীয় মহানগর এলাকায় কারখানা ও তৈরি পোশাক খাতের বিস্তার। শহরের ঐতিহাসিক কেন্দ্রস্থলে সেবাখাতের দিকে সরে যাওয়া। পূর্ব ঢাকার নতুন বাণিজ্যিক ব্যবসায়িক প্রাণকেন্দ্র হওয়ার সম্ভাবনা।
এই বিশ্লেষণ থেকে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ পরিকল্পনা করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে বিভিন্ন প্রবৃদ্ধি প্রবণতা অনুযায়ী প্রয়োজন মেটানো সম্ভব হবে।
পাশাপাশি, আসন্ন ঢাকা সিটি নেইবারহুড আপগ্রেডিং প্রজেক্ট-এ আমরা নগর বাসযোগ্যতা উন্নয়নের দিকে নজর দিচ্ছি। বিশেষ করে বুড়িগঙ্গা নদীর পাশ ঘেঁষা পুরোনো ঢাকার দিকে পাবলিক স্পেস সৃষ্টি করার মাধ্যমে।
এই প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রাপ্ত উপাত্ত ব্যবহার করে আমরা শহরের বিভিন্ন এলাকায় পাবলিক স্পেস বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা নির্ণয় ও অগ্রাধিকার দিতে পারছি।
আমরা এই তালিকা সীমিত করে এনেছি। স্থপতি নিয়োগ দিয়েছি নগর নকশা প্রকল্পের কাজ করতে। এছাড়া স্থানীয় কম্যুনিটি গ্রুপ ও স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বার বার পরামর্শ করতে বসেছি। তাদের ইনপুটের মাধ্যমে এমন ধরণের পাবলিক স্পেসের কথা উঠে এসেছে, যা মধ্য ঢাকাকে আরও প্রাণবন্ত, অংশগ্রহণমূলক ও বাসযোগ্য করতে সাহায্য করবে।
(বিশ্বব্যাংক ব্লগে প্রকাশিত লেখার অনুবাদ)
বর্তমানে বাংলাদেশের শহুরে জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি বাস করেন ঢাকায়। ঢাকায় প্রতি হেক্টরে ৪৪০ জন মানুষ বাস করেন। ফলে এটি বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতি সম্পন্ন শহরগুলোর একটি। মুম্বই, হংকং ও করাচির চেয়েও ঢাকার জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি।
পাশাপাশি, ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে বাস-অযোগ্য শহরগুলোর একটি।
১৪০টি শহরের বাসযোগ্যতার জরিপে ঢাকার অবস্থান ১৩৭ তম। ঢাকার এই পরিস্থিতিতে বেশি সমস্যায় পড়েন দরিদ্র, নারী ও বয়স্কদের মতো ঝুঁকিতে থাকা মানুষরা।
ঢাকার বস্তিতে বসবাসের পরিস্থিতি প্রত্যন্ত অঞ্চলের চেয়েও খারাপ, যদিও এখানে থাকলে কর্মসংস্থানের সুযোগ বেশি। শহরের মাত্র দুই-তৃতীয়াংশ এলাকায় পাইপের পানি উপলভ্য। মাত্র ৩-৪ শতাংশ বর্জ্য জল নিষ্কাশন করা হয়। পুরো শহরের বর্জ্যের মাত্র ৬০ শতাংশ সংগ্রহ করা হয়।
ঢাকায় ট্রাফিক জ্যামের অবস্থা ভয়াবহ। জনসংখ্যা অনুপাতে অপর্যাপ্ত অবকাঠামো ও জনপরিবহণ সুবিধা এজন্য দায়ী। ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের একটি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দিষ্ট করা মাত্রারও ৮ গুণ বেশি এখানকার দূষণের মাত্রা। পাবলিক স্পেস ইতিমধ্যে বেশ সীমিত। কিন্তু ভূমি ব্যবহার আরও বাড়ছে, ফলে এ ধরণের স্থান ক্রমেই আরও সঙ্কুচিত হচ্ছে।
এই ইস্যু সমাধানে, মেট্রো ঢাকা প্ল্যাটফর্ম নামে বিশ্বব্যাংকের একটি নগর উন্নয়ন প্রোগ্রাম রয়েছে। এই প্ল্যাটফর্মের অধীনে, আমরা ঢাকার অতীত, চলমান ও ভবিষ্যৎ বিশ্লেষণ ও বিনিয়োগ কর্মকান্ড পদ্ধতিগতভাবে পর্যালোচনা করেছি। কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও সাম্প্রতিক গবেষণা বিশ্লেষণ করে আমরা মহানগর এলাকায় মানুষের চলাচল ও কর্মসংস্থান সম্পর্কিত ‘ট্রেন্ড’ নথিবদ্ধ করতে পেরেছি।
এসবের মধ্যে রয়েছে, উত্তরাঞ্চলীয় মহানগর এলাকায় কারখানা ও তৈরি পোশাক খাতের বিস্তার। শহরের ঐতিহাসিক কেন্দ্রস্থলে সেবাখাতের দিকে সরে যাওয়া। পূর্ব ঢাকার নতুন বাণিজ্যিক ব্যবসায়িক প্রাণকেন্দ্র হওয়ার সম্ভাবনা।
এই বিশ্লেষণ থেকে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ পরিকল্পনা করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে বিভিন্ন প্রবৃদ্ধি প্রবণতা অনুযায়ী প্রয়োজন মেটানো সম্ভব হবে।
পাশাপাশি, আসন্ন ঢাকা সিটি নেইবারহুড আপগ্রেডিং প্রজেক্ট-এ আমরা নগর বাসযোগ্যতা উন্নয়নের দিকে নজর দিচ্ছি। বিশেষ করে বুড়িগঙ্গা নদীর পাশ ঘেঁষা পুরোনো ঢাকার দিকে পাবলিক স্পেস সৃষ্টি করার মাধ্যমে।
এই প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রাপ্ত উপাত্ত ব্যবহার করে আমরা শহরের বিভিন্ন এলাকায় পাবলিক স্পেস বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা নির্ণয় ও অগ্রাধিকার দিতে পারছি।
আমরা এই তালিকা সীমিত করে এনেছি। স্থপতি নিয়োগ দিয়েছি নগর নকশা প্রকল্পের কাজ করতে। এছাড়া স্থানীয় কম্যুনিটি গ্রুপ ও স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বার বার পরামর্শ করতে বসেছি। তাদের ইনপুটের মাধ্যমে এমন ধরণের পাবলিক স্পেসের কথা উঠে এসেছে, যা মধ্য ঢাকাকে আরও প্রাণবন্ত, অংশগ্রহণমূলক ও বাসযোগ্য করতে সাহায্য করবে।
(বিশ্বব্যাংক ব্লগে প্রকাশিত লেখার অনুবাদ)
No comments