পশ্চিমা দুনিয়ার তুলনায় স্বল্প আয়ের দেশগুলোতে রোগজনিত মৃত্যুর প্রকোপ বেশি by অদিতি খান্না
পশ্চিমা
দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের মতো স্বল্প আয়ের দেশগুলোতে স্ট্রোকজনিত
মৃত্যুর হার অনেক বেশি। নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য। ‘ন্যাচার’
নামে একটি জার্নালে অসংক্রমক রোগের ওপর করা ওই গবেষণা প্রতিবেদন নিয়ে
আলোকপাত করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, ধনী দেশগুলোর তুলনায় উন্নয়নশীল
দেশগুলোতে ক্যান্সার, হার্টের রোগ ও স্ট্রোকে বেশি প্রাণহানি ঘটে।
অসংক্রামক রোগ বলতে এসব সব রোগকে বুঝায় যা মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায় না। এসবের মধ্যে রয়েছে ক্যান্সার, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, কিডনি ও লিভারের সমস্যা, স্মৃতিভ্রমের মতো স্নায়বিক অবস্থা ও মানসিক অসুস্থতা।
লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজের জনস্বাস্থ্য বিভাগের অধ্যাপক মাজিদ ইজ্জাতি এবং ডা. জেমস বেনেট এই গবেষণায় দেখান যে, স্বল্প ও মাঝারি আয়ের দেশগুলোতে অসংক্রামক রোগে মৃত্যুহার পশ্চিমা দুনিয়ার চেয়ে বেশি।
অধ্যাপক ইজ্জাতি বলেন, সাধারণ ধারণা হলো গরিব দেশগুলোতে সাধারণত সংক্রমণ ও ছোঁয়াচে রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। আর হৃদরোগ বা ক্যান্সারের মতো রোগগুলো ধনী দেশগুলোতে বেশি হয়। কিন্তু এটা ঠিক নয়। ধনী দেশগুলোর তুলনায় স্বল্প আয়ের দেশগুলোর মানুষ দুরারোগ্য রোগে বেশি ভুগে থাকে।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, স্বল্প ও মাঝারি আয়ের দেশগুলোতে প্রতি লাখে ৯০ জন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। আর উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে এই হার ৬১ জন। স্ট্রোকের কারণে মৃত্যুর হারও প্রতি লাখে গরিব দেশে ৪৯ জন আর উন্নত দেশে ২২ জন।
গলা, পেট ও লিভার বা যকৃত ক্যান্সারের হারও ধনী দেশের তুলনায় গরিব দেশে বেশি। গবেষকরা বলছেন, এসব ক্যান্সারের অনেকগুলোই ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, গলার ক্যান্সারের অন্যতম কারণ হলো হিউম্যান পাপিলোমা ভাইরাস বা শরীরের আচিল।
ডায়াবেটিসের কারণে মৃত্যুর হার স্বল্প ও মাঝারি আয়ের দেশে প্রতি লাখে ৩২ জন। যেখানে উচ্চ আয়ের দেশে এই সংখ্যা প্রতি লাখে ১১ জন।
গবেষকরা পশ্চিমা দেশগুলোর মৃত্যু সংক্রান্ত তথ্যাদির সঙ্গে স্বল্প ও মধ্যম আয়ের ক্রান্তীয় দেশগুলোর মৃত্যুর সংক্রান্ত তথ্যের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করেছেন। যেসব দেশের অর্ধেক বা তার বেশি কর্কটক্রান্তি রেখা ও মকরক্রান্তি রেখার মধ্যে পড়েছে সেসব দেশকেই ক্রান্তীয় দেশের মধ্যে ধরা হয়েছে। সেই হিসাবে আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের প্রায় ৮০টি দেশ এই তালিকায় রয়েছে। বিভিন্ন দেশের মধ্যে বয়সের পার্থক্য বিবেচনায় নিয়ে মৃত্যুহার সমন্বয় করা হয়েছে।
গবেষকরা দেখেছেন, ২০১৬ সালের এই ক্রান্তীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে ২ কোটি ৫৩ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এসব মানুষের প্রায় ৩৪ শতাংশেরই মৃত্যুর কারণ বিভিন্ন সংক্রামক ও জীবাণুঘটিত রোগ, গর্ভাবস্থা ও জন্মদান সংক্রান্ত এবং অপুষ্টিজনিত রোগ। ৫৫ শতাংশ রোগের কারণ ক্যান্সার, হৃদরোগ ও কিডনি সমস্যার মতো অসংক্রমক রোগ।
স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে দুরারোগ্য ব্যাধিতে মৃত্যুর হার বেশি হওয়ার অন্যতম কারণ হলো দেরিতে রোগ ধরা পড়া, বেশি মারাত্মক পর্যায়ে ধরা পড়ার পরও কম কার্যকর চিকিৎসা। কারণ পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনায় এসব দেশে দূরারোগ্য রোগের চিকিৎসা দুর্লভ।
হৃদরোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাসকুলার রোগ স্বল্প ও মাঝারি আয়ের দেশগুলোতে সবচেয়ে বেশি রোগজনিত মৃত্যুর কারণ। আক্রান্ত প্রতি চারজনের অন্তত একজন এই রোগে মৃত্যুবরণ করেন। এসব কার্ডিওভাসকুলার রোগের অন্যতম বড় ঝুঁকি হলো উচ্চ রক্তচাপ। গবেষণায় বলা হয়েছে, পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনায় স্বল্প আয়ের দেশগুলোতে উচ্চ রক্তচাপের হার বেশি। আর সবচেয়ে বেশি উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে সাব-সাহারান আফ্রিকা বা আফ্রিকার সাহারা মরুভূমির দেশগুলোতে।
গবেষকরা স্বীকার করেছেন যে, তাদের বিশ্লেষণে কিছু দেশের তথ্য অনেক শক্তিশালী। তবে সামগ্রিক চিত্র প্রায় একই।
অধ্যাপক ইজ্জাতি বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ধারাবাহিকভাবে ক্যান্সার ও হৃদরোগের এমন উচ্চহারের অন্যতম কারণ হলো এসব দেশে ধূমপান ও অ্যালকোহল ব্যবহারের মাত্রা বাড়ছে। এই বিষয়টি নিশ্চিতভাবেই একটি ভূমিকা রাখে। তবে চূড়ান্তভাবে এর মূল কারণ দারিদ্রতা, বাসস্থান ও পুষ্টির অভাব, অপ্রতুল স্বাস্থ্যসেবা। এসব কারণে হৃদরোগের মতো অসুখগুলোর চিকিৎসাই শুরু হয় দেরিতে। এছাড়া ওই সময়ে তাদের দেওয়া চিকিৎসাও থাকে অপর্যাপ্ত।
গবেষকরা স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে অসংক্রামক রোগে মৃত্যুর হার কমানোর জন্য ২৫টি সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো অ্যালকোহল ও তামাকের ব্যবহার কমানো, ভালো আবাসন ব্যবস্থা এবং প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণের যোগান দেওয়া।
অসংক্রামক রোগ বলতে এসব সব রোগকে বুঝায় যা মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায় না। এসবের মধ্যে রয়েছে ক্যান্সার, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, কিডনি ও লিভারের সমস্যা, স্মৃতিভ্রমের মতো স্নায়বিক অবস্থা ও মানসিক অসুস্থতা।
লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজের জনস্বাস্থ্য বিভাগের অধ্যাপক মাজিদ ইজ্জাতি এবং ডা. জেমস বেনেট এই গবেষণায় দেখান যে, স্বল্প ও মাঝারি আয়ের দেশগুলোতে অসংক্রামক রোগে মৃত্যুহার পশ্চিমা দুনিয়ার চেয়ে বেশি।
অধ্যাপক ইজ্জাতি বলেন, সাধারণ ধারণা হলো গরিব দেশগুলোতে সাধারণত সংক্রমণ ও ছোঁয়াচে রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। আর হৃদরোগ বা ক্যান্সারের মতো রোগগুলো ধনী দেশগুলোতে বেশি হয়। কিন্তু এটা ঠিক নয়। ধনী দেশগুলোর তুলনায় স্বল্প আয়ের দেশগুলোর মানুষ দুরারোগ্য রোগে বেশি ভুগে থাকে।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, স্বল্প ও মাঝারি আয়ের দেশগুলোতে প্রতি লাখে ৯০ জন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। আর উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে এই হার ৬১ জন। স্ট্রোকের কারণে মৃত্যুর হারও প্রতি লাখে গরিব দেশে ৪৯ জন আর উন্নত দেশে ২২ জন।
গলা, পেট ও লিভার বা যকৃত ক্যান্সারের হারও ধনী দেশের তুলনায় গরিব দেশে বেশি। গবেষকরা বলছেন, এসব ক্যান্সারের অনেকগুলোই ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, গলার ক্যান্সারের অন্যতম কারণ হলো হিউম্যান পাপিলোমা ভাইরাস বা শরীরের আচিল।
ডায়াবেটিসের কারণে মৃত্যুর হার স্বল্প ও মাঝারি আয়ের দেশে প্রতি লাখে ৩২ জন। যেখানে উচ্চ আয়ের দেশে এই সংখ্যা প্রতি লাখে ১১ জন।
গবেষকরা পশ্চিমা দেশগুলোর মৃত্যু সংক্রান্ত তথ্যাদির সঙ্গে স্বল্প ও মধ্যম আয়ের ক্রান্তীয় দেশগুলোর মৃত্যুর সংক্রান্ত তথ্যের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করেছেন। যেসব দেশের অর্ধেক বা তার বেশি কর্কটক্রান্তি রেখা ও মকরক্রান্তি রেখার মধ্যে পড়েছে সেসব দেশকেই ক্রান্তীয় দেশের মধ্যে ধরা হয়েছে। সেই হিসাবে আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের প্রায় ৮০টি দেশ এই তালিকায় রয়েছে। বিভিন্ন দেশের মধ্যে বয়সের পার্থক্য বিবেচনায় নিয়ে মৃত্যুহার সমন্বয় করা হয়েছে।
গবেষকরা দেখেছেন, ২০১৬ সালের এই ক্রান্তীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে ২ কোটি ৫৩ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এসব মানুষের প্রায় ৩৪ শতাংশেরই মৃত্যুর কারণ বিভিন্ন সংক্রামক ও জীবাণুঘটিত রোগ, গর্ভাবস্থা ও জন্মদান সংক্রান্ত এবং অপুষ্টিজনিত রোগ। ৫৫ শতাংশ রোগের কারণ ক্যান্সার, হৃদরোগ ও কিডনি সমস্যার মতো অসংক্রমক রোগ।
স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে দুরারোগ্য ব্যাধিতে মৃত্যুর হার বেশি হওয়ার অন্যতম কারণ হলো দেরিতে রোগ ধরা পড়া, বেশি মারাত্মক পর্যায়ে ধরা পড়ার পরও কম কার্যকর চিকিৎসা। কারণ পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনায় এসব দেশে দূরারোগ্য রোগের চিকিৎসা দুর্লভ।
হৃদরোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাসকুলার রোগ স্বল্প ও মাঝারি আয়ের দেশগুলোতে সবচেয়ে বেশি রোগজনিত মৃত্যুর কারণ। আক্রান্ত প্রতি চারজনের অন্তত একজন এই রোগে মৃত্যুবরণ করেন। এসব কার্ডিওভাসকুলার রোগের অন্যতম বড় ঝুঁকি হলো উচ্চ রক্তচাপ। গবেষণায় বলা হয়েছে, পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনায় স্বল্প আয়ের দেশগুলোতে উচ্চ রক্তচাপের হার বেশি। আর সবচেয়ে বেশি উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে সাব-সাহারান আফ্রিকা বা আফ্রিকার সাহারা মরুভূমির দেশগুলোতে।
গবেষকরা স্বীকার করেছেন যে, তাদের বিশ্লেষণে কিছু দেশের তথ্য অনেক শক্তিশালী। তবে সামগ্রিক চিত্র প্রায় একই।
অধ্যাপক ইজ্জাতি বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ধারাবাহিকভাবে ক্যান্সার ও হৃদরোগের এমন উচ্চহারের অন্যতম কারণ হলো এসব দেশে ধূমপান ও অ্যালকোহল ব্যবহারের মাত্রা বাড়ছে। এই বিষয়টি নিশ্চিতভাবেই একটি ভূমিকা রাখে। তবে চূড়ান্তভাবে এর মূল কারণ দারিদ্রতা, বাসস্থান ও পুষ্টির অভাব, অপ্রতুল স্বাস্থ্যসেবা। এসব কারণে হৃদরোগের মতো অসুখগুলোর চিকিৎসাই শুরু হয় দেরিতে। এছাড়া ওই সময়ে তাদের দেওয়া চিকিৎসাও থাকে অপর্যাপ্ত।
গবেষকরা স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে অসংক্রামক রোগে মৃত্যুর হার কমানোর জন্য ২৫টি সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো অ্যালকোহল ও তামাকের ব্যবহার কমানো, ভালো আবাসন ব্যবস্থা এবং প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণের যোগান দেওয়া।
No comments