পুলিশের নির্যাতনে এবার হাসপাতালে ডিএসসিসি কর্মকর্তা
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গতকাল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র দাসl -প্রথম আলো |
ঢাকা
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২০১ নম্বর ওয়ার্ডের বিছানায় সংজ্ঞাহীন অবস্থায়
শুয়ে আছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) পরিচ্ছন্নতা বিভাগের
পরিদর্শক বিকাশ চন্দ্র দাস (৪০)। মাঝে মাঝে শ্বাসপ্রশ্বাসের গতি বেড়ে বুক
কামারখানার হাপরের মতো ওঠানামা শুরু করলেই ছেলের ওপর ঝুঁকে উদ্বিগ্ন মা
চারুবালা বলে উঠছেন, ‘বিকাশ, ও বিকাশ, কী অইলো তর! উড বাবা।’
গতকাল শুক্রবার ভোরে রাজধানীর মীর হাজিরবাগ এলাকায় কর্তব্যরত অবস্থায় বিকাশকে বেধড়ক পেটায় যাত্রাবাড়ী থানার কয়েকজন পুলিশ। তারপর থেকে হাসপাতালে বিকাশ। সংজ্ঞাহীন বিকাশ যখনই একটু নড়াচড়া বা ঘন ঘন শ্বাস নিচ্ছিলেন, তখনই মা চারুবালা, স্ত্রী সরস্বতী দাস উতলা হয়ে চিকিৎসক, নার্সদের ডাকাডাকি করছিলেন। বিকেলে বিকাশকে ঢাকা মেডিকেল থেকে একটি বেসরকারি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে নেওয়া হয়।
৯ জানুয়ারি রাজধানীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তাকে মারধর ও ক্রসফায়ারে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়েছিল মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ। অভিযুক্ত উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদ শিকদারকে অবশ্য প্রত্যাহার (ক্লোজড) করা হয়েছে। কিন্তু ব্যাংক কর্মকর্তা গোলাম রাব্বী এখনো হাসপাতালে পড়ে আছেন। শারীরিক আঘাত সেরে উঠলেও মানসিক আঘাতে বিপর্যস্ত তিনি। ওই ঘটনার তদন্ত এখনো পুলিশ শেষ করেনি।
এরই মধ্যে বিকাশকে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে পাঠিয়েছে যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশ। তবে ঘটনাটিকে ‘ভুল-বোঝাবুঝি’ বলছে পুলিশ। কর্মকর্তারা বলছেন, ছিনতাইপ্রবণ ওই এলাকায় বিকাশকে ছিনতাইকারী ভেবে সাদাপোশাকে থাকা পুলিশের দলটি ওই ঘটনা ঘটিয়েছে। ঘটনাটি তদন্তের জন্য অতিরিক্ত ডিআইজি (আইসিটি) হারুন-উর-রশীদকে প্রধান করে গতকাল একটি কমিটি করেছে পুলিশ সদর দপ্তর। হারুন-উর-রশীদ ব্যাংক কর্মকর্তা নির্যাতনের ঘটনাও তদন্ত করছেন।
নির্যাতনের শিকার বিকাশের ছোট ভাই লিটন চন্দ্র দাস ও ভগ্নিপতি চন্দন দাস বলেন, গতকাল ভোর পাঁচটার দিকে পরিচ্ছন্নতার কাজ তদারক করতে গিয়েছিলেন বিকাশ। এক জায়গায় তদারক শেষে মীর হাজিরবাগ খাল-সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় কয়েকজন লোক তাঁকে থামতে বলেন। বিকাশ তাঁদেরকে ছিনতাইকারী ভেবে মোটরসাইকেল ঘোরানোর চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁরা বিকাশকে তাড়া করেন। বিকাশ মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গেলে লোকগুলো বিকাশকে ধাওয়া করে ধরে মারধর শুরু করেন। পরে জানা যায়, এঁরা সাদাপোশাকের পুলিশ। এ সময় আশপাশে কর্মরত সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা দৌড়ে এসে বিকাশকে তাঁদের কর্মকর্তা বলে পরিচয় দেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সামনেই তাঁরা বিকাশকে বন্দুকের বাঁট দিয়ে পেটান এবং বুট দিয়ে পা থেঁতলে দেন। একপর্যায়ে আহত বিকাশকে পুলিশি ভ্যানে তোলা হয়। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা পুলিশের ভ্যানটিকে ঘেরাও করেন। পরে পুলিশ বিকাশকে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ওয়্যারলেসে ঘটনা শুনে ভোরে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি, বিকাশকে বসিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি আমাকে হামলার বিষয়ে বলেছেন।’ সিটি করপোরেশনের আরও কয়েকজন কর্মকর্তা এলে এরপর সবাই মিলে বিকাশকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
বিকাশকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, বিকাশের মুখমণ্ডল, ডান কান ও কপালে আঘাত রয়েছে। নাক দিয়ে প্রচুর রক্তপাত হয়েছে। দুই পায়েসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে নীল-ফোলা জখম রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বন্দুকের বাঁট ও বুটের আঘাতের ফলে এসব জখম হয়েছে।
হাসপাতালে বিকাশকে দেখতে এসেছেন সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর সৈয়দা রোকসানা ইসলাম। তিনি বলেন, মেয়রের নির্দেশনা অনুযায়ী বেলা ১১টার মধ্যে সব বর্জ্য সরানোর জন্য পরিচ্ছন্ন বিভাগের পরিদর্শককের রাত তিনটা থেকে কাজে নামতে হয়। সে অনুযায়ী কাজে এসেছেন বিকাশ। কিন্তু তাঁকে এভাবে মারধরের ঘটনা খুবই দুঃখজনক।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, ওটা একটা ভুল-বোঝাবুঝি। তিনি বলেন, রাতের বাসযাত্রীরা যাতে ছিনতাইয়ের শিকার না হন, সে জন্য পুলিশের সাদাপোশাকের একটি দল সেখানে কাজ করছিল। তাদের সংকেত পেয়ে বিকাশ না থামায় পুলিশ তাঁকে ছিনতাইকারী ভেবে ধাওয়া করে আটক করে। ওই সময় পুলিশের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডার পর হাতাহাতি হয়।
উপকমিশনার বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। ঘটনাটি তদন্তের জন্য ওয়ারী বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মাইনুল ইসলামকে প্রধান করে দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে বলা হয়, পুলিশের দায়িত্ব পালনে কোনো গাফিলতি বা অশোভন আচরণের প্রমাণ পেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাদাপোশাকে পুলিশের কার্যক্রম নিয়ে অব্যাহত অভিযোগের মুখে গত বছরের ১৭ জুন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার লিখিতভাবে ‘সিভিল টিম’ পরিচালনা না করার নির্দেশ দেন। এরপরও থানাগুলো সাদাপোশাকে পুলিশের কার্যক্রম চালাতে থাকে। চার দিন পর ২১ জুন আবারও সিভিল টিম না চালানোর জন্য চিঠি দিয়ে থানাগুলোকে সতর্ক করেন ডিএমপির কমিশনার। কিন্তু সাদাপোশাকে অভিযান বন্ধ হয়নি।
গতকালের ঘটনা সম্পর্কে যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অবনী শঙ্কর কর প্রথম আলোকে বলেন, ওই এলাকায় পুলিশের চার সদস্যের একটি দল ছিল। তারা অন্যায়ভাবে যদি মেরে থাকে, তবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত বছরের ১৯ নভেম্বর রাতে রাজধানীর শাহবাগে পুলিশের নিরাপত্তা প্রস্তুতির চিত্র ধারণের সময় বেসরকারি এশিয়ান টিভির প্রতিবেদক নূরে আলম ও ক্যামেরা পারসন দিদার হোসেনকে মারধর করেন ঢাকা জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মশিউর রহমান। ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত মশিউরের কোনো শাস্তি হয়নি। গতকাল সাংবাদিক নূরে আলম প্রথম আলোকে বলেন, ওই ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশ এবং পুলিশ সদর দপ্তর থেকে দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি করা হয়। তিনি তদন্ত কমিটি দুটির কাছে গিয়ে বক্তব্য দিয়ে এসেছেন। এখন তদন্ত কমিটির সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন।
নির্যাতিত ব্যাংক কর্মকর্তা রাব্বী ও সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র দাসকে দেখে এসে বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিচালক নূর খান গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, রাব্বী মানসিকভাবে প্রচণ্ড বিপর্যস্ত। তাঁর আরও উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। নূর খান বলেন, ‘রাব্বী যে ঘটনার শিকার হয়েছেন এবং তাঁর সামনে পুলিশ অন্যদের যেভাবে নির্যাতন করেছেন বলে তাঁর মুখ থেকে শুনেছি, তা খুবই উদ্বেগের। বাহিনীর সদস্যদের শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে সরকার ও পুলিশের ঊর্ধ্বতনদের এখনই জোরেশোরে ভাবতে হবে। আপাতত তাঁদের উচিত দোষীদের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করা।’
গতকাল শুক্রবার ভোরে রাজধানীর মীর হাজিরবাগ এলাকায় কর্তব্যরত অবস্থায় বিকাশকে বেধড়ক পেটায় যাত্রাবাড়ী থানার কয়েকজন পুলিশ। তারপর থেকে হাসপাতালে বিকাশ। সংজ্ঞাহীন বিকাশ যখনই একটু নড়াচড়া বা ঘন ঘন শ্বাস নিচ্ছিলেন, তখনই মা চারুবালা, স্ত্রী সরস্বতী দাস উতলা হয়ে চিকিৎসক, নার্সদের ডাকাডাকি করছিলেন। বিকেলে বিকাশকে ঢাকা মেডিকেল থেকে একটি বেসরকারি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে নেওয়া হয়।
৯ জানুয়ারি রাজধানীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তাকে মারধর ও ক্রসফায়ারে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়েছিল মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ। অভিযুক্ত উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদ শিকদারকে অবশ্য প্রত্যাহার (ক্লোজড) করা হয়েছে। কিন্তু ব্যাংক কর্মকর্তা গোলাম রাব্বী এখনো হাসপাতালে পড়ে আছেন। শারীরিক আঘাত সেরে উঠলেও মানসিক আঘাতে বিপর্যস্ত তিনি। ওই ঘটনার তদন্ত এখনো পুলিশ শেষ করেনি।
এরই মধ্যে বিকাশকে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে পাঠিয়েছে যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশ। তবে ঘটনাটিকে ‘ভুল-বোঝাবুঝি’ বলছে পুলিশ। কর্মকর্তারা বলছেন, ছিনতাইপ্রবণ ওই এলাকায় বিকাশকে ছিনতাইকারী ভেবে সাদাপোশাকে থাকা পুলিশের দলটি ওই ঘটনা ঘটিয়েছে। ঘটনাটি তদন্তের জন্য অতিরিক্ত ডিআইজি (আইসিটি) হারুন-উর-রশীদকে প্রধান করে গতকাল একটি কমিটি করেছে পুলিশ সদর দপ্তর। হারুন-উর-রশীদ ব্যাংক কর্মকর্তা নির্যাতনের ঘটনাও তদন্ত করছেন।
নির্যাতনের শিকার বিকাশের ছোট ভাই লিটন চন্দ্র দাস ও ভগ্নিপতি চন্দন দাস বলেন, গতকাল ভোর পাঁচটার দিকে পরিচ্ছন্নতার কাজ তদারক করতে গিয়েছিলেন বিকাশ। এক জায়গায় তদারক শেষে মীর হাজিরবাগ খাল-সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় কয়েকজন লোক তাঁকে থামতে বলেন। বিকাশ তাঁদেরকে ছিনতাইকারী ভেবে মোটরসাইকেল ঘোরানোর চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁরা বিকাশকে তাড়া করেন। বিকাশ মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গেলে লোকগুলো বিকাশকে ধাওয়া করে ধরে মারধর শুরু করেন। পরে জানা যায়, এঁরা সাদাপোশাকের পুলিশ। এ সময় আশপাশে কর্মরত সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা দৌড়ে এসে বিকাশকে তাঁদের কর্মকর্তা বলে পরিচয় দেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সামনেই তাঁরা বিকাশকে বন্দুকের বাঁট দিয়ে পেটান এবং বুট দিয়ে পা থেঁতলে দেন। একপর্যায়ে আহত বিকাশকে পুলিশি ভ্যানে তোলা হয়। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা পুলিশের ভ্যানটিকে ঘেরাও করেন। পরে পুলিশ বিকাশকে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ওয়্যারলেসে ঘটনা শুনে ভোরে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি, বিকাশকে বসিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি আমাকে হামলার বিষয়ে বলেছেন।’ সিটি করপোরেশনের আরও কয়েকজন কর্মকর্তা এলে এরপর সবাই মিলে বিকাশকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
বিকাশকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, বিকাশের মুখমণ্ডল, ডান কান ও কপালে আঘাত রয়েছে। নাক দিয়ে প্রচুর রক্তপাত হয়েছে। দুই পায়েসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে নীল-ফোলা জখম রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বন্দুকের বাঁট ও বুটের আঘাতের ফলে এসব জখম হয়েছে।
হাসপাতালে বিকাশকে দেখতে এসেছেন সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর সৈয়দা রোকসানা ইসলাম। তিনি বলেন, মেয়রের নির্দেশনা অনুযায়ী বেলা ১১টার মধ্যে সব বর্জ্য সরানোর জন্য পরিচ্ছন্ন বিভাগের পরিদর্শককের রাত তিনটা থেকে কাজে নামতে হয়। সে অনুযায়ী কাজে এসেছেন বিকাশ। কিন্তু তাঁকে এভাবে মারধরের ঘটনা খুবই দুঃখজনক।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, ওটা একটা ভুল-বোঝাবুঝি। তিনি বলেন, রাতের বাসযাত্রীরা যাতে ছিনতাইয়ের শিকার না হন, সে জন্য পুলিশের সাদাপোশাকের একটি দল সেখানে কাজ করছিল। তাদের সংকেত পেয়ে বিকাশ না থামায় পুলিশ তাঁকে ছিনতাইকারী ভেবে ধাওয়া করে আটক করে। ওই সময় পুলিশের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডার পর হাতাহাতি হয়।
উপকমিশনার বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। ঘটনাটি তদন্তের জন্য ওয়ারী বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মাইনুল ইসলামকে প্রধান করে দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে বলা হয়, পুলিশের দায়িত্ব পালনে কোনো গাফিলতি বা অশোভন আচরণের প্রমাণ পেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাদাপোশাকে পুলিশের কার্যক্রম নিয়ে অব্যাহত অভিযোগের মুখে গত বছরের ১৭ জুন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার লিখিতভাবে ‘সিভিল টিম’ পরিচালনা না করার নির্দেশ দেন। এরপরও থানাগুলো সাদাপোশাকে পুলিশের কার্যক্রম চালাতে থাকে। চার দিন পর ২১ জুন আবারও সিভিল টিম না চালানোর জন্য চিঠি দিয়ে থানাগুলোকে সতর্ক করেন ডিএমপির কমিশনার। কিন্তু সাদাপোশাকে অভিযান বন্ধ হয়নি।
গতকালের ঘটনা সম্পর্কে যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অবনী শঙ্কর কর প্রথম আলোকে বলেন, ওই এলাকায় পুলিশের চার সদস্যের একটি দল ছিল। তারা অন্যায়ভাবে যদি মেরে থাকে, তবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত বছরের ১৯ নভেম্বর রাতে রাজধানীর শাহবাগে পুলিশের নিরাপত্তা প্রস্তুতির চিত্র ধারণের সময় বেসরকারি এশিয়ান টিভির প্রতিবেদক নূরে আলম ও ক্যামেরা পারসন দিদার হোসেনকে মারধর করেন ঢাকা জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মশিউর রহমান। ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত মশিউরের কোনো শাস্তি হয়নি। গতকাল সাংবাদিক নূরে আলম প্রথম আলোকে বলেন, ওই ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশ এবং পুলিশ সদর দপ্তর থেকে দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি করা হয়। তিনি তদন্ত কমিটি দুটির কাছে গিয়ে বক্তব্য দিয়ে এসেছেন। এখন তদন্ত কমিটির সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন।
নির্যাতিত ব্যাংক কর্মকর্তা রাব্বী ও সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র দাসকে দেখে এসে বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিচালক নূর খান গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, রাব্বী মানসিকভাবে প্রচণ্ড বিপর্যস্ত। তাঁর আরও উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। নূর খান বলেন, ‘রাব্বী যে ঘটনার শিকার হয়েছেন এবং তাঁর সামনে পুলিশ অন্যদের যেভাবে নির্যাতন করেছেন বলে তাঁর মুখ থেকে শুনেছি, তা খুবই উদ্বেগের। বাহিনীর সদস্যদের শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে সরকার ও পুলিশের ঊর্ধ্বতনদের এখনই জোরেশোরে ভাবতে হবে। আপাতত তাঁদের উচিত দোষীদের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করা।’
No comments