রাজধানীর রাস্তাঘাট স্মরণকালের করুণ দশা by খালিদ সাইফুল্লাহ
যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা থেকে দক্ষিণ যাত্রাবাড়ী দয়াগঞ্জ সড়ক পুরো এলাকার বেহাল অবস্থা : আবদুল্লাহ আল বাপ্পী |
রাজধানীর
সড়কগুলোর স্মরণকালের ভয়াবহ করুণ দশার সৃষ্টি হয়েছে। এতটা নাজুক অবস্থা
নগরবাসী আগে কখনো দেখেনি। আর এই দশা শিগগিরই কাটছে না। মূল সড়ক থেকে
অলিগলিÑ সর্বত্রই ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দ তৈরি হওয়ায় জনজীবনে নেমে এসেছে
চরম ভোগান্তি।
দুই সিটি করপোরেশন সপ্তাহ দুয়েক আগে ইট-বালু দিয়ে গর্ত সমান করার চেষ্টা করলেও আবার ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় সড়কগুলো আগের অবস্থায় ফিরে গেছে। এর পাশাপাশি ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়ি ভোগান্তির মাত্রা দিয়েছে আরো বাড়িয়ে। ঢাকার মেয়ররা সড়ক উন্নয়নে সরকারের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ পেলেও বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষ করে এ কাজ শুরু হতে কমপক্ষে তিন মাস লেগে যাবে। সে পর্যন্ত নগরবাসীকে দুর্ভোগ সঙ্গী করেই চলাচল করতে হবে।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে রাস্তা রয়েছে প্রায় দুই হাজার ১১৯ দশমিক ৭৪৯ কিলোমিটার। এর মধ্যে ঢাকা উত্তরে রয়েছে এক হাজার ৩৩৭ দশমিক ৯১৩ কিলোমিটার এবং দেিণ ৭৮১ দশমিক ৮৩৬ কিলোমিটার। ঢাকায় বড় বড় যান চলাচল করতে পারে এমন প্রধান সড়ক (প্রাইমারি, সেকেন্ডারি ও সংযোগ) রয়েছে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার। এর মধ্যে ঢাকা দেিণর বড় সড়ক ১৫৮ কিলোমিটার। বাকি প্রায় এক হাজার কিলোমিটার রাস্তা সরু-সঙ্কীর্ণ ও গলি। সিটি করপোরেশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, ঢাকার ২১১৯ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে বর্তমানে হাজার কিলোমিটারের ওপর রাস্তা কম-বেশি খারাপ রয়েছে। তবে সম্প্রতি দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এক জরিপের মাধ্যমে ১৬৫ কিলোমিটার ভাঙাচোরা সড়কের তালিকা তৈরি করেছে। একইভাবে উত্তর সিটি করপোরেশনও তাদের খারাপ সড়কের তালিকা প্রস্তুত করেছে। তাদের মোট সড়কের প্রায় অর্ধেকই ভাঙাচোরা বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
রাজধানীর পল্টন মোড় ঘেঁষে সরকারের মূল কেন্দ্রস্থল সচিবালয় অবস্থিত। এ সচিবালয়ে বসেই মন্ত্রীরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। কিন্তু এ সচিবালয়ের পাশ ঘিরে পল্টন মোড় থেকে হাইকোর্ট মোড়, জিরো পয়েন্ট রোড, দৈনিক বাংলা সড়ক ও বিজয়নগর সড়কের প্রতিটি রাস্তার অবস্থাই শোচনীয়। পল্টন মোড়ের অবস্থা সবচেয়ে করুণ। গুরুত্বপূর্ণ এ মোড়ে অসংখ্য ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সপ্তাহ দুয়েক আগে এ গর্তগুলো ইট-বালু দিয়ে ভরাট করা হলেও ক’দিন না যেতেই আবারো একই রূপ ধারণ করেছে। এখান দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পথচারীরা সমস্যায় পড়ছেন।
দেশের সব উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয় একনেকের সভায়। কিন্তু আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের বিপরীত পাশে অবস্থিত পরিকল্পনা কমিশনের ভবনের চার পাশের সড়কগুলোর চরম অবস্থা। প্রতিটি সড়কেই অসংখ্য বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে।
বাসাবো বৌদ্ধ মন্দির মোড় থেকে কালীবাড়ি সড়ক। স্থানীয় এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ছাড়াও অটোরিকশা, রিকশা, ভ্যান, প্রাইভেট গাড়িসহ বিভিন্ন ধরনের যান চলাচল করে। আর রাত হলেই সড়কটিতে মালবাহী ট্রাকের দাপট বেড়ে যায়। এ কারণে সড়কটির ওয়াসার পানির পাম্পের সামনের অংশ, কদমতলা মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে পিচ উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এবড়ো-খেবড়ো রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে যাত্রীবাহী রিকশা প্রায়ই দুর্ঘটনায় পড়ছে। এ ছাড়া গর্তের কারণে পানি জমে পথচারীদের চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি করছে। কাদা ছিটে পোশাক নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যানজট সৃষ্টির অন্যতম কারণও এ গর্তময় সড়ক। সড়কটির মতোই আহমদবাগ থেকে মুগদা হাসপাতাল সড়কে অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তার মাঝখানে খোলা ম্যানহোলের মধ্যে গাছের ডাল দিয়ে পথচারীদের সতর্ক করা হচ্ছে। শুধু এ দু’টি সড়কই নয়, টানা বর্ষণে রাজধানীর অধিকাংশ সড়কেরই এখন বেহাল দশা। রাজধানীর উত্তরা থেকে সদরঘাট, মিরপুর থেকে বাসাবো প্রায় সব এলাকার রাস্তায় তৈরি হয়েছে বড় বড় খানাখন্দ। কোথাও কোথাও পুরো রাস্তা ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। কোথাও রাস্তার গায়ের ছাল-বাকল উঠে গেছে। পানি জমা অংশগুলোর বিটুমিন-কার্পেটিং উঠে এবড়ো-খেবড়ো হয়ে গেছে সড়ক। ভিআইপি সড়ক থেকে রাজধানীর অলিগলির কোনোটিই বাদ যায়নি সর্বনাশ থেকে। পাড়া-মহল্লার রাস্তাগুলোর অবস্থা আরো শোচনীয়। দুই বছরও হয়নি কুড়িল ফাইওভার উদ্বোধন হয়েছে। এরই মধ্যে এর খিলক্ষেত প্রান্তে ব্রিজের ওপর বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। উত্তরার বিভিন্ন সেক্টরের ভেতরের রাস্তার অবস্থাও করুণ। সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে ৪ নম্বর সেক্টরে। উত্তরার অদূরে আজমপুর থেকে উত্তরখান ও আবদুল্লাহপুর থেকে উত্তরখান পর্যন্ত রাস্তাগুলো এখন যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। রামপুরা রোডের বিভিন্ন স্থানে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
ফাইওভার নির্মাণের কারণে রাজারবাগ, মালিবাগ, মৌচাক থেকে রামপুরা পর্যন্ত সড়কে অসংখ্য বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এক দিকে ফাইওভার নির্মাণজনিত সমস্যা তার ওপর ভাঙাচোরা সড়কের কারণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে। মৌচাক থেকে মগবাজার ওয়্যারলেস রেলগেট সড়কেরও বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে। মালিবাগ মোড় থেকে রাজারবাগ মোড় পর্যন্তও একই অবস্থা। পুরো সড়কই চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপোযোগী হয়ে গেছে।
মগবাজার ওয়্যারলেস মোড় থেকে মধুবাগ সড়কটির অবস্থাও খারাপ। ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত তৈরি হওয়ায় সড়কটি দিয়ে যান ও জনসাধারণের চলাচলে মারাত্মক বিঘœ ঘটছে। বর্তমানে বর্ষাকাল চলায় ভোগান্তির মাত্রা বেড়েছে কয়েক গুণ। পুরো সড়ক কাদাপানিতে একাকার হয়ে গেছে। প্রায়ই দুর্ঘটনায় আহত হচ্ছেন যাত্রীরা। পোস্তগলা ব্রিজ থেকে করিমউল্লাহবাগ পর্যন্ত সড়কটির এতই ভগ্নদশা যে সম্প্রতি এক মহিলা রিকশা থেকে ছিটকে পড়ে ট্রাকের তলায় পিষ্ট হয়ে নিহত হন।
তেজগাঁও শিল্প এলাকার লাভ রোডের আহ্ছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দেখা গেছে, সেখানকার পুরো রাস্তাই ভেঙে তছনছ। স্থানীয়রা জানান, বৃষ্টি হলেই সেখানে ছোট ছোট জলাশয় তৈরি হয়। আহ্ছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র শরিফুল হাসান বলেন, বর্ষা মওসুমের শুরু থেকেই ওখানে এমন অবস্থা চলছে। সিটি করপোরেশন মেরামত না করায় দিন দিন রাস্তা ভাঙনের পরিমাণ বাড়ছে।
মৌচাক মোড়ে অবস্থিত জি ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিপ্লব বিশ্বাস ােভ প্রকাশ করে বলেন, এখানে এমনিতেই সর্বণ যানজট লেগে থাকে। তার ওপর রাস্তার বেহাল অবস্থার কারণে এলাকাটি কুৎসিত রূপ ধারণ করেছে। গুলশান-২ ওয়েস্টিন হোটেলের পেছনের সড়কটি পিচ উঠে এবড়ো-খেবড়ো হয়ে গেছে।
রাস্তা ভাঙাচোরার পাশাপাশি খোঁড়াখুঁড়ি ভোগান্তির মাত্রাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। ওয়াসা একটি প্রকল্পের অধীনে বছরজুড়ে পাইপ বসানোর কাজ করছে। ধানমন্ডি জিগাতলার বিভিন্ন সড়কে ওয়াসার পাইপ বসানোর কাজ চলছে। খনন করার পর ফেলে রাখা মাটি বৃষ্টিতে পুরো রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ায় কাদাপানিতে একাকার হয়ে গেছে। এখানে একসাথে চারটি সড়কে কাজ চলায় এলাকাবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাদের বাসা থেকে বের হওয়ারও উপায় থাকছে না। মিরপুরের পীরেরবাগে তিন মাস আগে কার্পেটিং করা রাস্তা কেটে একাকার করে ফেলেছে ওয়াসা। ফলে এ এলাকা এখন চলাচলের অযোগ্য।
সড়ক উন্নয়নের অংশ হিসেবে সিটি করপোরেশন বনানীর ১২/ই ব্লকের বাজার মার্কেটের পাশ দিয়ে ড্রেন নির্মাণ করছে। এ কারণে ওই সড়কে কাদাপানিতে একাকার হয়ে গেছে। একইভাবে ১৩/ই ব্লকের বিভিন্ন সড়কে দীর্ঘ দিন থেকে খোঁড়াখুঁড়ি করে ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে। এ জন্য ওই এলাকার কয়েকটি সড়ক বন্ধও করে দেয়া হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে এলাকাবাসীকে।
ভাঙা রাস্তার কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। রিকশা থেকে বাস সব ধরনের গাড়িই এর শিকার হচ্ছে। ভাঙা রাস্তার কারণে গাড়ির গতি কমে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। মিরপুর থেকে মতিঝিল চলাচলকারী নিউভিশন গাড়ির এক চালক সহিদুল জানান, ভাঙা রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে গাড়ির মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। টায়ার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে দ্রুত। পাতি ভেঙে যাচ্ছে। এতে গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। গাজীপুর-মতিঝিল-সায়েদাবাদ রুটে চলাচলকারী ছালছাবিল পরিবহনের চালক সাগর তীব্র ােভ প্রকাশ করে বলেন, হয় যানজট, না হলে রাস্তা খারাপ। একটা না একটা সমস্যা লেগেই থাকে। গাড়ি চালাতে গিয়ে মনমেজাজ ভালো থাকে না। যাত্রাবাড়ী-পল্লবী রুটে চলাচলকারী ইটিসি পরিবহনের চালক সোয়েব বলেন, খানাখন্দ ছাড়াও রাস্তার ওপর পড়ে থাকা ইট-পাথরের সুরকির ওপর দিয়ে গাড়ি চালালে টায়ারের বারোটা বেজে যায়। নতুন টায়ারগুলো পাথরের খোয়ায় লেগে কেটে যায়। আর একটা টায়ার নষ্ট হলেই ২০-৩০ হাজার টাকা গচ্চা। ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েতুল্লাহ বলেন, প্রতিদিনই হেলপার-ড্রাইভারদের কাছ থেকে রাস্তার অভিযোগ শুনতে শুনতে আমি হয়রান। এ কথা সিটি করপোরেশন ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। উভয় প্রতিষ্ঠানই আশ্বাস দিয়েছে, শিগগিরই রাস্তাগুলো মেরামত করে দেবে।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সম্প্রতি তাদের ১৬৫ কিলোমিটার ভাঙাচোরা রাস্তার তালিকা তেরি করেছে। এর পাশাপাশি ড্রেন নির্মাণ, নর্দমার উন্নয়নসহ সংশ্লিষ্ট খাতে ‘কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ইম্প্রুভমেন্ট অব রোড অ্যান্ড আদার ইনফ্রাস্টাকচার অব ফাইভ জোন আন্ডার ঢাকা সিটি করপোরেশন’ প্রকল্পের আওতায় সরকারের কাছে ৩০৯ কোটি ১৬ লাখ টাকার দাবি করেছিলেন মেয়র সাঈদ খোকন। কিন্তু সরকার তাদের ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এ কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সব সড়ক মেরামত করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আনছার আলী খান। তিনি বলেন, এ জন্য ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার তালিকা কাটছাঁট করতে হবে।
উত্তর সিটি করপোরেশনে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পরই আনিসুল হককে একনেক থেকে ২০০ কোটি টাকা দেয়া হয়। সড়ক, ড্রেন ও নর্দমা উন্নয়নে এ টাকা ব্যয় করার কথা রয়েছে। তবে টাকা বরাদ্দ করা হলেও এখন বৃষ্টি থাকায় রাস্তার উন্নয়নকাজ শুরু করতে পারছে না দুই সিটি করপোরেশন। কারণ বৃষ্টি বহাল থাকলে আবারো নষ্ট হয়ে যাবে। তা ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত এত বিপুলসংখ্যক সড়কের কাজ করতে দরপত্র আহ্বান ও ওয়ার্ক অর্ডার দিতে এখনো তিন মাস লেগে যাবে বলে দক্ষিণের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারি নাগাদ প্রকল্পের কাজ শুরু করা যেতে পারে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ কুদরত উল্লাহ বলেন, ডিএনসিসির পাঁচটি অঞ্চলের তিগ্রস্ত রাস্তার তালিকা তৈরি করা হয়েছে। আপাতত ভাঙাচোরা রাস্তাগুলোকে ব্যবহার উপযোগী রাখার জন্য ইটের খোয়া দিয়ে ম্যাকাডাম করে দেয়া হয়েছে। বৃষ্টি চলমান থাকায় এখনই কার্পেটিং করা যাচ্ছে না। শুষ্ক মওসুম শুরু হলে তখন রাস্তা মেরামত করা হবে।
তবে নগরবাসীর বক্তব্য শত শত কোটি টাকা যেন পানিতে ধুয়ে না যায়। তারা টেকসই রাস্তাঘাট চান। নতুন দুই মেয়র যাতে চুরি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেন। নই এর দায় তাদের ঘাড়েই এসে পড়বে।
দুই সিটি করপোরেশন সপ্তাহ দুয়েক আগে ইট-বালু দিয়ে গর্ত সমান করার চেষ্টা করলেও আবার ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় সড়কগুলো আগের অবস্থায় ফিরে গেছে। এর পাশাপাশি ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়ি ভোগান্তির মাত্রা দিয়েছে আরো বাড়িয়ে। ঢাকার মেয়ররা সড়ক উন্নয়নে সরকারের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ পেলেও বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষ করে এ কাজ শুরু হতে কমপক্ষে তিন মাস লেগে যাবে। সে পর্যন্ত নগরবাসীকে দুর্ভোগ সঙ্গী করেই চলাচল করতে হবে।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে রাস্তা রয়েছে প্রায় দুই হাজার ১১৯ দশমিক ৭৪৯ কিলোমিটার। এর মধ্যে ঢাকা উত্তরে রয়েছে এক হাজার ৩৩৭ দশমিক ৯১৩ কিলোমিটার এবং দেিণ ৭৮১ দশমিক ৮৩৬ কিলোমিটার। ঢাকায় বড় বড় যান চলাচল করতে পারে এমন প্রধান সড়ক (প্রাইমারি, সেকেন্ডারি ও সংযোগ) রয়েছে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার। এর মধ্যে ঢাকা দেিণর বড় সড়ক ১৫৮ কিলোমিটার। বাকি প্রায় এক হাজার কিলোমিটার রাস্তা সরু-সঙ্কীর্ণ ও গলি। সিটি করপোরেশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, ঢাকার ২১১৯ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে বর্তমানে হাজার কিলোমিটারের ওপর রাস্তা কম-বেশি খারাপ রয়েছে। তবে সম্প্রতি দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এক জরিপের মাধ্যমে ১৬৫ কিলোমিটার ভাঙাচোরা সড়কের তালিকা তৈরি করেছে। একইভাবে উত্তর সিটি করপোরেশনও তাদের খারাপ সড়কের তালিকা প্রস্তুত করেছে। তাদের মোট সড়কের প্রায় অর্ধেকই ভাঙাচোরা বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
রাজধানীর পল্টন মোড় ঘেঁষে সরকারের মূল কেন্দ্রস্থল সচিবালয় অবস্থিত। এ সচিবালয়ে বসেই মন্ত্রীরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। কিন্তু এ সচিবালয়ের পাশ ঘিরে পল্টন মোড় থেকে হাইকোর্ট মোড়, জিরো পয়েন্ট রোড, দৈনিক বাংলা সড়ক ও বিজয়নগর সড়কের প্রতিটি রাস্তার অবস্থাই শোচনীয়। পল্টন মোড়ের অবস্থা সবচেয়ে করুণ। গুরুত্বপূর্ণ এ মোড়ে অসংখ্য ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সপ্তাহ দুয়েক আগে এ গর্তগুলো ইট-বালু দিয়ে ভরাট করা হলেও ক’দিন না যেতেই আবারো একই রূপ ধারণ করেছে। এখান দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পথচারীরা সমস্যায় পড়ছেন।
দেশের সব উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয় একনেকের সভায়। কিন্তু আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের বিপরীত পাশে অবস্থিত পরিকল্পনা কমিশনের ভবনের চার পাশের সড়কগুলোর চরম অবস্থা। প্রতিটি সড়কেই অসংখ্য বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে।
বাসাবো বৌদ্ধ মন্দির মোড় থেকে কালীবাড়ি সড়ক। স্থানীয় এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ছাড়াও অটোরিকশা, রিকশা, ভ্যান, প্রাইভেট গাড়িসহ বিভিন্ন ধরনের যান চলাচল করে। আর রাত হলেই সড়কটিতে মালবাহী ট্রাকের দাপট বেড়ে যায়। এ কারণে সড়কটির ওয়াসার পানির পাম্পের সামনের অংশ, কদমতলা মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে পিচ উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এবড়ো-খেবড়ো রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে যাত্রীবাহী রিকশা প্রায়ই দুর্ঘটনায় পড়ছে। এ ছাড়া গর্তের কারণে পানি জমে পথচারীদের চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি করছে। কাদা ছিটে পোশাক নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যানজট সৃষ্টির অন্যতম কারণও এ গর্তময় সড়ক। সড়কটির মতোই আহমদবাগ থেকে মুগদা হাসপাতাল সড়কে অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তার মাঝখানে খোলা ম্যানহোলের মধ্যে গাছের ডাল দিয়ে পথচারীদের সতর্ক করা হচ্ছে। শুধু এ দু’টি সড়কই নয়, টানা বর্ষণে রাজধানীর অধিকাংশ সড়কেরই এখন বেহাল দশা। রাজধানীর উত্তরা থেকে সদরঘাট, মিরপুর থেকে বাসাবো প্রায় সব এলাকার রাস্তায় তৈরি হয়েছে বড় বড় খানাখন্দ। কোথাও কোথাও পুরো রাস্তা ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। কোথাও রাস্তার গায়ের ছাল-বাকল উঠে গেছে। পানি জমা অংশগুলোর বিটুমিন-কার্পেটিং উঠে এবড়ো-খেবড়ো হয়ে গেছে সড়ক। ভিআইপি সড়ক থেকে রাজধানীর অলিগলির কোনোটিই বাদ যায়নি সর্বনাশ থেকে। পাড়া-মহল্লার রাস্তাগুলোর অবস্থা আরো শোচনীয়। দুই বছরও হয়নি কুড়িল ফাইওভার উদ্বোধন হয়েছে। এরই মধ্যে এর খিলক্ষেত প্রান্তে ব্রিজের ওপর বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। উত্তরার বিভিন্ন সেক্টরের ভেতরের রাস্তার অবস্থাও করুণ। সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে ৪ নম্বর সেক্টরে। উত্তরার অদূরে আজমপুর থেকে উত্তরখান ও আবদুল্লাহপুর থেকে উত্তরখান পর্যন্ত রাস্তাগুলো এখন যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। রামপুরা রোডের বিভিন্ন স্থানে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
ফাইওভার নির্মাণের কারণে রাজারবাগ, মালিবাগ, মৌচাক থেকে রামপুরা পর্যন্ত সড়কে অসংখ্য বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এক দিকে ফাইওভার নির্মাণজনিত সমস্যা তার ওপর ভাঙাচোরা সড়কের কারণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে। মৌচাক থেকে মগবাজার ওয়্যারলেস রেলগেট সড়কেরও বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে। মালিবাগ মোড় থেকে রাজারবাগ মোড় পর্যন্তও একই অবস্থা। পুরো সড়কই চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপোযোগী হয়ে গেছে।
মগবাজার ওয়্যারলেস মোড় থেকে মধুবাগ সড়কটির অবস্থাও খারাপ। ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত তৈরি হওয়ায় সড়কটি দিয়ে যান ও জনসাধারণের চলাচলে মারাত্মক বিঘœ ঘটছে। বর্তমানে বর্ষাকাল চলায় ভোগান্তির মাত্রা বেড়েছে কয়েক গুণ। পুরো সড়ক কাদাপানিতে একাকার হয়ে গেছে। প্রায়ই দুর্ঘটনায় আহত হচ্ছেন যাত্রীরা। পোস্তগলা ব্রিজ থেকে করিমউল্লাহবাগ পর্যন্ত সড়কটির এতই ভগ্নদশা যে সম্প্রতি এক মহিলা রিকশা থেকে ছিটকে পড়ে ট্রাকের তলায় পিষ্ট হয়ে নিহত হন।
তেজগাঁও শিল্প এলাকার লাভ রোডের আহ্ছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দেখা গেছে, সেখানকার পুরো রাস্তাই ভেঙে তছনছ। স্থানীয়রা জানান, বৃষ্টি হলেই সেখানে ছোট ছোট জলাশয় তৈরি হয়। আহ্ছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র শরিফুল হাসান বলেন, বর্ষা মওসুমের শুরু থেকেই ওখানে এমন অবস্থা চলছে। সিটি করপোরেশন মেরামত না করায় দিন দিন রাস্তা ভাঙনের পরিমাণ বাড়ছে।
মৌচাক মোড়ে অবস্থিত জি ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিপ্লব বিশ্বাস ােভ প্রকাশ করে বলেন, এখানে এমনিতেই সর্বণ যানজট লেগে থাকে। তার ওপর রাস্তার বেহাল অবস্থার কারণে এলাকাটি কুৎসিত রূপ ধারণ করেছে। গুলশান-২ ওয়েস্টিন হোটেলের পেছনের সড়কটি পিচ উঠে এবড়ো-খেবড়ো হয়ে গেছে।
রাস্তা ভাঙাচোরার পাশাপাশি খোঁড়াখুঁড়ি ভোগান্তির মাত্রাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। ওয়াসা একটি প্রকল্পের অধীনে বছরজুড়ে পাইপ বসানোর কাজ করছে। ধানমন্ডি জিগাতলার বিভিন্ন সড়কে ওয়াসার পাইপ বসানোর কাজ চলছে। খনন করার পর ফেলে রাখা মাটি বৃষ্টিতে পুরো রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ায় কাদাপানিতে একাকার হয়ে গেছে। এখানে একসাথে চারটি সড়কে কাজ চলায় এলাকাবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাদের বাসা থেকে বের হওয়ারও উপায় থাকছে না। মিরপুরের পীরেরবাগে তিন মাস আগে কার্পেটিং করা রাস্তা কেটে একাকার করে ফেলেছে ওয়াসা। ফলে এ এলাকা এখন চলাচলের অযোগ্য।
সড়ক উন্নয়নের অংশ হিসেবে সিটি করপোরেশন বনানীর ১২/ই ব্লকের বাজার মার্কেটের পাশ দিয়ে ড্রেন নির্মাণ করছে। এ কারণে ওই সড়কে কাদাপানিতে একাকার হয়ে গেছে। একইভাবে ১৩/ই ব্লকের বিভিন্ন সড়কে দীর্ঘ দিন থেকে খোঁড়াখুঁড়ি করে ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে। এ জন্য ওই এলাকার কয়েকটি সড়ক বন্ধও করে দেয়া হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে এলাকাবাসীকে।
ভাঙা রাস্তার কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। রিকশা থেকে বাস সব ধরনের গাড়িই এর শিকার হচ্ছে। ভাঙা রাস্তার কারণে গাড়ির গতি কমে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। মিরপুর থেকে মতিঝিল চলাচলকারী নিউভিশন গাড়ির এক চালক সহিদুল জানান, ভাঙা রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে গাড়ির মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। টায়ার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে দ্রুত। পাতি ভেঙে যাচ্ছে। এতে গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। গাজীপুর-মতিঝিল-সায়েদাবাদ রুটে চলাচলকারী ছালছাবিল পরিবহনের চালক সাগর তীব্র ােভ প্রকাশ করে বলেন, হয় যানজট, না হলে রাস্তা খারাপ। একটা না একটা সমস্যা লেগেই থাকে। গাড়ি চালাতে গিয়ে মনমেজাজ ভালো থাকে না। যাত্রাবাড়ী-পল্লবী রুটে চলাচলকারী ইটিসি পরিবহনের চালক সোয়েব বলেন, খানাখন্দ ছাড়াও রাস্তার ওপর পড়ে থাকা ইট-পাথরের সুরকির ওপর দিয়ে গাড়ি চালালে টায়ারের বারোটা বেজে যায়। নতুন টায়ারগুলো পাথরের খোয়ায় লেগে কেটে যায়। আর একটা টায়ার নষ্ট হলেই ২০-৩০ হাজার টাকা গচ্চা। ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েতুল্লাহ বলেন, প্রতিদিনই হেলপার-ড্রাইভারদের কাছ থেকে রাস্তার অভিযোগ শুনতে শুনতে আমি হয়রান। এ কথা সিটি করপোরেশন ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। উভয় প্রতিষ্ঠানই আশ্বাস দিয়েছে, শিগগিরই রাস্তাগুলো মেরামত করে দেবে।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সম্প্রতি তাদের ১৬৫ কিলোমিটার ভাঙাচোরা রাস্তার তালিকা তেরি করেছে। এর পাশাপাশি ড্রেন নির্মাণ, নর্দমার উন্নয়নসহ সংশ্লিষ্ট খাতে ‘কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ইম্প্রুভমেন্ট অব রোড অ্যান্ড আদার ইনফ্রাস্টাকচার অব ফাইভ জোন আন্ডার ঢাকা সিটি করপোরেশন’ প্রকল্পের আওতায় সরকারের কাছে ৩০৯ কোটি ১৬ লাখ টাকার দাবি করেছিলেন মেয়র সাঈদ খোকন। কিন্তু সরকার তাদের ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এ কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সব সড়ক মেরামত করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আনছার আলী খান। তিনি বলেন, এ জন্য ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার তালিকা কাটছাঁট করতে হবে।
উত্তর সিটি করপোরেশনে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পরই আনিসুল হককে একনেক থেকে ২০০ কোটি টাকা দেয়া হয়। সড়ক, ড্রেন ও নর্দমা উন্নয়নে এ টাকা ব্যয় করার কথা রয়েছে। তবে টাকা বরাদ্দ করা হলেও এখন বৃষ্টি থাকায় রাস্তার উন্নয়নকাজ শুরু করতে পারছে না দুই সিটি করপোরেশন। কারণ বৃষ্টি বহাল থাকলে আবারো নষ্ট হয়ে যাবে। তা ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত এত বিপুলসংখ্যক সড়কের কাজ করতে দরপত্র আহ্বান ও ওয়ার্ক অর্ডার দিতে এখনো তিন মাস লেগে যাবে বলে দক্ষিণের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারি নাগাদ প্রকল্পের কাজ শুরু করা যেতে পারে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ কুদরত উল্লাহ বলেন, ডিএনসিসির পাঁচটি অঞ্চলের তিগ্রস্ত রাস্তার তালিকা তৈরি করা হয়েছে। আপাতত ভাঙাচোরা রাস্তাগুলোকে ব্যবহার উপযোগী রাখার জন্য ইটের খোয়া দিয়ে ম্যাকাডাম করে দেয়া হয়েছে। বৃষ্টি চলমান থাকায় এখনই কার্পেটিং করা যাচ্ছে না। শুষ্ক মওসুম শুরু হলে তখন রাস্তা মেরামত করা হবে।
তবে নগরবাসীর বক্তব্য শত শত কোটি টাকা যেন পানিতে ধুয়ে না যায়। তারা টেকসই রাস্তাঘাট চান। নতুন দুই মেয়র যাতে চুরি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেন। নই এর দায় তাদের ঘাড়েই এসে পড়বে।
No comments