আমি আমার সরলতা হারিয়েছি: আহমেদ
আমি আমার সরলতা হারিয়েছি। পৃথিবীকে
একইভাবে আমি আর কখনও দেখতে পারবো না। আমি বিজ্ঞান ভালোবাসি। কিন্তু, আমার
বাদামি বর্ণের কারণে আমাকে হুমকি বলে
মনে হয়। এ কথাগুলো বলছিল যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের আরভিংয়ের
বাসিন্দা কিশোর আহমেদ মোহাম্মদ। বিজ্ঞানের প্রতি প্রবল ঝোঁক আহমেদের। ঘড়ি
বানানোর জন্য তার উদ্যোগ ও সে অনুযায়ী কাজ করা প্রশংসার যোগ্য। কিন্তু,
বাড়িতে প্রবল আগ্রহ নিয়ে তৈরি করা ঘড়িটি আহমেদকে পুরস্কারের পরিবর্তে
হাতকড়া এনে দিলো। আটক রাখা হলো কিশোরদের জন্য নির্ধারিত জুভেনাইল ডিটেনশন
সেন্টারে। স্কুল থেকে এখনও সাময়িকভাবে বহিষ্কৃত রয়েছে সে। শিশুটির
বিজ্ঞানের নেশা আর গায়ের রঙের কারণে তাকে ভুল বুঝলেন শিক্ষকরা। ৯১১ নম্বরে
ফোন করা হলো। পুলিশ শিশুটিকে আটক করলো। হাতকড়া পরালো। পুলিশ শিশুটিকে বললো,
তাকে ভুয়া বিস্ফোরক ডিভাইস তৈরি করে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য অভিযুক্ত করা হতে
পারে। আহমেদ বলছিল, আরভিংয়ের ম্যাকআরথার হাই স্কুলের প্রকৌশল বিষয়ক
শিক্ষককে ঘড়িটি দেখানোর পর তাকে বলা হয়েছিল এটি আর কাউকে না দেখাতে। তিনি
আমাকে বলেছিলেন, এটা বোমার মতো দেখতে। কিন্তু, ওই শিক্ষকের সতর্কবাণী
উপেক্ষা করে আরেক শিক্ষককে ঘড়িটি দেখালো সে। সেটাই তার জন্য কাল হলো। ওই
শিক্ষক বললেন, এটা বোমার মতো দেখতে এবং পুলিশ ডাকলেন। আহমেদ বলছিল, তাকে
হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আহমেদের বর্ণনায়, আমার পিতামাতাকে ছাড়াই
সেখানে নিয়ে গিয়েছিল। তারা আমাকে নিজেকে অপরাধী মনে করাতে লাগলো। আমার
শিক্ষককে খুশি করতেই ঘড়িটি তৈরি করেছিলাম। কিন্তু, আমি যখন এটি তাকে
দেখালাম, তিনি মনে করলেন এটা তার জন্য হুমকি। ঘড়িটির ব্যাপারে তিনি ভুল
ধারণা নেয়ার বিষয়টি সত্যিই দুঃখজনক। আহমেদের পিতা মোহাম্মদ আল হাসান
মোহাম্মদ বলছিলেন, আরভিং এলাকার পুলিশ তাকে ফোন করার পর তিনি ঘটনাটি জানতে
পারেন। তিনি বলেন, ফোনে পুলিশ তাকে জানায়, বোমা তৈরির জন্য আমার পুত্রকে
গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শিশুটির পিতার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, মুসলমান না
হলে, ঘড়ির জন্য তার পুত্রকে আটক রাখা হতো কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি
বলেন, ‘না’। আমার মনে হয়, এটা ইসলামোফোবিয়া বা ইসলাম আতঙ্ক এবং ৯১১ এর
প্রভাবের কারণে।
No comments