‘কত আনন্দ করলি রে, রাতে ক্যান চলে গেলি’ by সুজন ঘোষ
ঈদে
তিন সন্তানকে পছন্দমতো কাপড় কিনে দিয়েছিলেন মা। সেগুলো পরে সারা দিন আনন্দ
করেছে তিন ভাইবোন। রাতে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে ছিল তিনজন। আজ রোববার সকালে
হাসপাতালের মর্গ থেকে বের হলো একে একে তিন শিশুর লাশ।
মর্গের সামনে বসে ছিলেন শোকে মুহ্যমান মা পারভীন আক্তার। কখনো কাঁদছিলেন, কখনো বিলাপ করছিলেন। এক সময় বলে উঠলেন, ‘সবাইকে পছন্দ মতো কাপড় কিনে দিয়েছি। ওগুলো পরে সকালে তোরা কত আনন্দ করলি রে! রাতে ক্যান আমারে ছেড়ে চলে গেলি। আমারে ক্যান নিয়ে যাস নাই রে, সোনা মানিক।’
মর্গের সামনে বসে ছিলেন শোকে মুহ্যমান মা পারভীন আক্তার। কখনো কাঁদছিলেন, কখনো বিলাপ করছিলেন। এক সময় বলে উঠলেন, ‘সবাইকে পছন্দ মতো কাপড় কিনে দিয়েছি। ওগুলো পরে সকালে তোরা কত আনন্দ করলি রে! রাতে ক্যান আমারে ছেড়ে চলে গেলি। আমারে ক্যান নিয়ে যাস নাই রে, সোনা মানিক।’
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ মর্গের ভেতরে তিন শিশুর লাশ। বাইরে বসে আহাজারি করছেন মা। গতকাল রাতে পাহাড়ধসে তিন শিশুকে হারিয়েছেন মা। ছবিটি আজ সকাল সাতটায় তোলা। ছবি: সৌরভ দাশ |
গতকাল
শনিবার গভীর রাতে পাহাড়ধসে মাটি চাপায় তিন সন্তানকে হারান মা পারভীন
আক্তার ও বাবা মোহাম্মদ শাহজাহান। তিনি টিউবওয়েলের মিস্ত্রি। মাত্র ১৮ দিন
আগে পাহাড়ের পাদদেশে ওই টিনের ঘরটি ভাড়া নেন এই দম্পতি।
মর্গ থেকে আজ সকাল সাতটার দিকে পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া শুভ আহমেদ (১২), সালমা আক্তার (৫) ও দেড় বছরের শিশু বিবি মরিয়মের লাশ বের করে মা-বাবাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। কাঁদতে কাঁদতে মা বলে ওঠেন, ‘ও সোনা মানিক, তোমরা কই? ও আল্লাহ! আমার সোনা মানিকদের কে নিয়ে গেল রে? আমারে কেন নিল না।’
বায়েজিদ বোস্তামী থানার উপপরিদর্শক আবদুল হালিম প্রথম আলোকে বলেন, মোহাম্মদ শাহজাহান স্ত্রী তিন সন্তান নিয়ে আমিন কলোনির ট্যাঙ্কির পাহাড়ে পাদদেশে নির্মিত টিনের তৈরি ঘরে ভাড়া থাকতেন। শনিবার গভীর রাতে প্রবল বর্ষণের সময় ঘরে পাহাড়ের মাটি ধসে পড়ে। চাপা পড়ে তাঁর তিন শিশু সন্তান ঘটনাস্থলে মারা যায়।
মর্গ থেকে আজ সকাল সাতটার দিকে পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া শুভ আহমেদ (১২), সালমা আক্তার (৫) ও দেড় বছরের শিশু বিবি মরিয়মের লাশ বের করে মা-বাবাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। কাঁদতে কাঁদতে মা বলে ওঠেন, ‘ও সোনা মানিক, তোমরা কই? ও আল্লাহ! আমার সোনা মানিকদের কে নিয়ে গেল রে? আমারে কেন নিল না।’
বায়েজিদ বোস্তামী থানার উপপরিদর্শক আবদুল হালিম প্রথম আলোকে বলেন, মোহাম্মদ শাহজাহান স্ত্রী তিন সন্তান নিয়ে আমিন কলোনির ট্যাঙ্কির পাহাড়ে পাদদেশে নির্মিত টিনের তৈরি ঘরে ভাড়া থাকতেন। শনিবার গভীর রাতে প্রবল বর্ষণের সময় ঘরে পাহাড়ের মাটি ধসে পড়ে। চাপা পড়ে তাঁর তিন শিশু সন্তান ঘটনাস্থলে মারা যায়।
নিহত তিন শিশুর বাবা মোহাম্মদ শাহজাহান। ছবি: সৌরভ দাশ |
আজ
সকালে দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, শত শত নারী-পুরুষ ভিড় করেছে সেখানে।
মাটি চাপা পড়া ঘর থেকে জিনিসপত্র বের করে নিয়ে আসছেন তিন যুবক। তাঁদেরই
একজন ফয়েজউল্লাহ লিটন। তিনি মোহাম্মদ শাহজাহানের অধীনে কাজ করতেন। বললেন,
‘রাত একটার দিকে বাসায় ছুটে আসেন ওস্তাদ শাহজাহান। বলেন, ‘লিটন, তাড়াতাড়ি
আয়, আমার সব শেষ। দৌড়ে এসে দেখি, তিন বাচ্চা মাটির নিচে চাপা পড়ে আছে।’
শাহজাহানের পাশের ঘরে ভাড়া থাকেন মো. নাছির ও আয়েশা বেগম। আয়েশা বেগম বললেন, শাহজাহান স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে ১ জুলাই এই বাসায় ওঠেন। মাত্র ১৮ দিনের মধ্যে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটল। এই শোক কী করে সহ্য করবেন তাঁরা?
শাহজাহানের পাশের ঘরে ভাড়া থাকেন মো. নাছির ও আয়েশা বেগম। আয়েশা বেগম বললেন, শাহজাহান স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে ১ জুলাই এই বাসায় ওঠেন। মাত্র ১৮ দিনের মধ্যে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটল। এই শোক কী করে সহ্য করবেন তাঁরা?
No comments