দুই বাসের সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬
সিরাজগঞ্জ
সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের মূলিবাড়ি এলাকায় দুটি বাসের মুখোমুখি
সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬ জনে পৌঁছেছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে বাস
দুটির চালকও রয়েছেন। ঈদের পরদিন আজ রোববার ভোর পাঁচটার দিকে বঙ্গবন্ধু
সেতুর পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির সংখ্যা আরও
বাড়তে পারে। দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ৪৫ জন আহত হয়েছেন।
সিরাজগঞ্জে বাস দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজ চালছে। ছবি: এনামুল হক খোকন |
এই
প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নিহতদের মধ্যে পাঁচজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা
হলেন, আজাদ এন্টারপ্রাইজের চালক মিনহাজ উদ্দীন প্রধান, গাইবান্ধার সবুজ,
লিটন আহমদ, রংপুর জেলার বদরগঞ্জের তাহেরা বেগম ও বগুড়ার জিল্লুর রহমান।
আহত ব্যক্তিদের সিরাজগঞ্জের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে
ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে গুরুতর আহত নয়জনকে বগুড়ার শহীদ জিয়া মেডিকেল
কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখার
পরিচালক শামিউল ইসলাম বলেন, বগুড়ায় পাঠানোর পথে এক নারী মারা গেছেন। বাকি
আটজনকে বগুড়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দুর্ঘটনার পর সিরাজগঞ্জে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কে উদ্ধারকাজের প্রস্তুতি। ছবি: এনামুল হক খোকন |
বঙ্গবন্ধু
সেতু পশ্চিমপাড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন জানিয়েছেন
বগুড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজন মারা গেছেন। তাঁর ভাষ্য,
সাব্বির পরিবহন নামের একটি বাস সিলেট থেকে দিনাজপুরের দিকে যাচ্ছিল।
ঠাকুরগাঁও থেকে আজাদ এন্টারপ্রাইজ নামের যাত্রীবাহী আরেকটি বাস ঢাকার দিকে
যাচ্ছিল। মূলিবাড়ি এলাকায় বাস দুটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে দুই
বাসের চালকসহ ১২ জন নিহত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও দুজন মারা যান।
বগুড়ায় নেওয়ার পথে আরও একজন মারা যান। পরে বগুড়ার হাসপাতালে আরও একজন মারা
যান। দুর্ঘটনার পর সেতু বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ উদ্ধারকাজ চালায়।
দুর্ঘটনার সময় বৃষ্টি হচ্ছিল বলে তিনি জানান। সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালের
আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম সকালে বলেন, হাসপাতালে ১৪টি লাশ
এসেছে। দুর্ঘটনায় আহত ২৫ জন সেখানে ভর্তি আছেন।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের মূলিবাড়ি এলাকায় আজ দুর্ঘটনার পর ক্ষতিগ্রস্ত একটি বাস। দুই বাসের সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ১৪ জন। ছবি: এনামুল হক খোকন |
সিরাজগঞ্জের
জেলা প্রশাসক বিল্লাল হোসেন, পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহম্মেদ ও সেতু
বিভাগের ট্রাফিক ম্যানেজার মুজাহিদ উদ্দিন ঘটনাস্থল ও সদর হাসপাতাল
পরিদর্শন করেছেন। জেলা প্রশাসক নিহত ব্যক্তিদের প্রত্যেক পরিবারকে ১০ হাজার
টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি আহতদের প্রত্যেক পরিবারকে পাঁচ হাজার
টাকা করে সরকারি সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দেন। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. কামরুজ্জামানকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের
একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে ওই কমিটিকে
প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
No comments