খালেদার দল পুনর্গঠন এখনো ‘বাত কা বাত’? by রিয়াদুল করিম
বিএনপির
চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গত ৯ মে এক মতবিনিময় সভায় বলেছিলেন, তিনি আবার দল
পুনর্গঠন করবেন। মধ্যে আরও কয়েকটি অনুষ্ঠানে একই কথা বলেন। সর্বশেষ গতকাল
ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় শেষেও বললেন একই কথা। অর্থাৎ আড়াই মাস ধরে খালেদা জিয়া
দল গোছানোর কথা বলে চলেছেন। দলীয় সূত্রগুলো বলছে, এই আড়াই মাসে দল
গোছানোর তেমন কোনো কাজই হয়নি। অবশ্য খালেদা জিয়া চাইলে যেকোনো সময়
যেকোনো কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি ঘোষণা করতে পারেন।
অবশ্য সূত্রগুলো এ-ও বলছে যে, দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। এখন দল পুনর্গঠনের কাজ শুরু হবে। তবে তা কখন থেকে শুরু হবে তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না। মির্জা ফখরুলসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা কারাগারে থাকায় এত দিন কাজ শুরু হয়নি। মির্জা ফখরুলের মুক্তিতে এখন অনেকে আশাবাদী। কিন্তু তিনি চিকিৎসার জন্য এ মাসের শেষ সপ্তাহে বিদেশ যাবেন। তাঁর ফিরতে কত দিন লাগবে তা নিশ্চিত নয়। এ ছাড়া জ্যেষ্ঠ নেতাদের অনেকে এখনো পলাতক। পরিস্থিতি আরও ‘স্বাভাবিক’ না হলে দল পুনর্গঠনের কাজ শুরু করা কঠিন হবে। তবে ঈদের ছুটি শেষে যত দ্রুত সম্ভব বিএনপির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের কমিটি পুনর্গঠন শুরু করা হতে পারে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, দল পুনর্গঠনের বিষয়টি এখনো ‘বাত কা বাত’ পর্যায়ে আছে। কোনো কাঠামো দাঁড়ায়নি। পুনর্গঠন নিয়ে কথা হচ্ছে। কিন্তু কীভাবে দল পুনর্গঠন হবে তা নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধোঁয়াশা আছে। তিনি জানান, সর্বশেষ দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে খালেদা জিয়া দল গোছানোর কথা বলেছেন। কিন্তু তাতে খুব একটা গুরুত্ব দেননি। এ নিয়ে বেশি আলোচনাও হয়নি। ওই নেতার মতে, দুই দফায় টানা আন্দোলন সফল না হওয়া আর হামলা-মামলার ঘটনায় নেতা-কর্মীরা চরম হতাশ। এখন আবার আন্দোলনে যাওয়ার মতো পরিস্থিতিও নেই। এ অবস্থায় দল গোছানোর কথা বলে নেতা-কর্মীদের চাঙা রাখা যায়। তবে তিনি মনে করেন, আসলেই দল পুনর্গঠন করা জরুরি এবং বিএনপির চেয়ারপারসন তা শুরু করবেন। তার আগে দলীয় ফোরামে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হওয়া উচিত।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এখন দল গোছানোকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। যোগ্য লোকদের যোগ্য জায়গায় নেওয়া গেলে ভবিষ্যতে আন্দোলন সফল হবে। পুনর্গঠন নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবও মুক্তি পেয়েছেন। দ্রুত কাজ শুরু হবে বলে তিনি আশা করছেন।
এর আগে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহতের আন্দোলনের পর গত বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, দল গুছিয়ে তাঁরা আবার আন্দোলন শুরু করবেন। তাঁর ওই বক্তব্যের দুই মাস পর এপ্রিলে গিয়ে পঞ্চগড়, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, নওগাঁ, সৈয়দপুর, চট্টগ্রাম উত্তর, ময়মনসিংহ উত্তরসহ বেশ কয়েকটি জেলা কমিটি ভেঙে দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। ১৮ জুলাই ঘোষণা করা হয় ঢাকা মহানগর বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটি। এ ছাড়া ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি (আংশিক) ও শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু এক বছরেও এসব কমিটির প্রায় কোনটিই পূর্ণাঙ্গ করা হয়নি। দুমাসের মধ্যে ঢাকা মহানগর বিএনপির সব ওয়ার্ড, থানা কমিটি করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল আহ্বায়ক কমিটিকে। কিন্তু এখন পর্যন্ত একটি ওয়ার্ড কমিটিও ঘোষণা করতে পারেনি তারা।
ওই সময় দল পুনর্গঠন শেষ না করেই চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি থেকে আবার লাগাতার হরতাল-অবরোধের ডাক দেয় বিএনপি। তবে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় থেকে অবরোধ-হরতাল সারা দেশে অনেকটা অকার্যকর হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে টানা তিন মাসের আন্দোলনে ছেদ টেনে হঠাৎ ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিন সিটি নির্বাচনে অংশ নেয় বিএনপি। এখন আবার দল গোছানোর দিকে দলটি মনোযোগ দিচ্ছে। এর আগে আন্দোলনে ব্যর্থতার অভিযোগে ঢাকা মহানগরে খোকা-সালাম কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নতুন কমিটিকেও আন্দোলনে মাঠে দেখা যায়নি। ঢাকায় এবারও বিএনপি কর্মসূচি পালনে ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করেন দলের নেতারা। তাই পুনর্গঠন আসলে কতটুকু কার্যকর তা নিয়ে দলের অনেকের প্রশ্ন আছে।
বিএনপি মনে করছে, এখন সরকারবিরোধী আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া তাদের জন্য কঠিন। কারণ, টানা তিন মাসের আন্দোলনে নেতা-কর্মীরা ক্লান্ত। হাজার হাজার নেতা-কর্মী মামলার আসামি, অনেকে কারাগারে, অনেকে পলাতক। চলছে বর্ষা মৌসুম। সব মিলিয়ে এ সময়টিতে বড় কিছু না হলে বিএনপি রাজপথের আন্দোলনে যেতে চায় না। বরং এ সময় সংগঠনকে কিছুটা গোছানোর চেষ্টা করবে দলটি। দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কিছু খোঁজখবর করছেন। অক্টোবর নাগাদ কেন্দ্রীয় কাউন্সিল করা যায় কি না ভাবা হচ্ছে। এবার দলের কেন্দ্রীয় কমিটির ওপরে আরেকটি কমিটি করা যায় কি না, তা চিন্তাভাবনা চলছে। দলীয় নেতাদের পাশাপাশি সরাসরি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন, কিন্তু বিএনপিমনা ও গ্রহণযোগ্য এমন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে এই কমিটি করার চিন্তা আছে। তবে এমনটি করতে হলে দলের গঠনতন্ত্র সংশোধন করতে হবে। এ ছাড়া ঢাকা মহানগর বিএনপিকে দুই ভাগে ভাগ করারও চিন্তা আছে। তবে এসব বিষয়ে এখন পর্যন্ত দলীয় ফোরামে আনুষ্ঠানিক কোনো আলোচনা হয়নি।
অবশ্য সূত্রগুলো এ-ও বলছে যে, দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। এখন দল পুনর্গঠনের কাজ শুরু হবে। তবে তা কখন থেকে শুরু হবে তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না। মির্জা ফখরুলসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা কারাগারে থাকায় এত দিন কাজ শুরু হয়নি। মির্জা ফখরুলের মুক্তিতে এখন অনেকে আশাবাদী। কিন্তু তিনি চিকিৎসার জন্য এ মাসের শেষ সপ্তাহে বিদেশ যাবেন। তাঁর ফিরতে কত দিন লাগবে তা নিশ্চিত নয়। এ ছাড়া জ্যেষ্ঠ নেতাদের অনেকে এখনো পলাতক। পরিস্থিতি আরও ‘স্বাভাবিক’ না হলে দল পুনর্গঠনের কাজ শুরু করা কঠিন হবে। তবে ঈদের ছুটি শেষে যত দ্রুত সম্ভব বিএনপির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের কমিটি পুনর্গঠন শুরু করা হতে পারে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, দল পুনর্গঠনের বিষয়টি এখনো ‘বাত কা বাত’ পর্যায়ে আছে। কোনো কাঠামো দাঁড়ায়নি। পুনর্গঠন নিয়ে কথা হচ্ছে। কিন্তু কীভাবে দল পুনর্গঠন হবে তা নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধোঁয়াশা আছে। তিনি জানান, সর্বশেষ দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে খালেদা জিয়া দল গোছানোর কথা বলেছেন। কিন্তু তাতে খুব একটা গুরুত্ব দেননি। এ নিয়ে বেশি আলোচনাও হয়নি। ওই নেতার মতে, দুই দফায় টানা আন্দোলন সফল না হওয়া আর হামলা-মামলার ঘটনায় নেতা-কর্মীরা চরম হতাশ। এখন আবার আন্দোলনে যাওয়ার মতো পরিস্থিতিও নেই। এ অবস্থায় দল গোছানোর কথা বলে নেতা-কর্মীদের চাঙা রাখা যায়। তবে তিনি মনে করেন, আসলেই দল পুনর্গঠন করা জরুরি এবং বিএনপির চেয়ারপারসন তা শুরু করবেন। তার আগে দলীয় ফোরামে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হওয়া উচিত।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এখন দল গোছানোকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। যোগ্য লোকদের যোগ্য জায়গায় নেওয়া গেলে ভবিষ্যতে আন্দোলন সফল হবে। পুনর্গঠন নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবও মুক্তি পেয়েছেন। দ্রুত কাজ শুরু হবে বলে তিনি আশা করছেন।
এর আগে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহতের আন্দোলনের পর গত বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, দল গুছিয়ে তাঁরা আবার আন্দোলন শুরু করবেন। তাঁর ওই বক্তব্যের দুই মাস পর এপ্রিলে গিয়ে পঞ্চগড়, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, নওগাঁ, সৈয়দপুর, চট্টগ্রাম উত্তর, ময়মনসিংহ উত্তরসহ বেশ কয়েকটি জেলা কমিটি ভেঙে দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। ১৮ জুলাই ঘোষণা করা হয় ঢাকা মহানগর বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটি। এ ছাড়া ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি (আংশিক) ও শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু এক বছরেও এসব কমিটির প্রায় কোনটিই পূর্ণাঙ্গ করা হয়নি। দুমাসের মধ্যে ঢাকা মহানগর বিএনপির সব ওয়ার্ড, থানা কমিটি করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল আহ্বায়ক কমিটিকে। কিন্তু এখন পর্যন্ত একটি ওয়ার্ড কমিটিও ঘোষণা করতে পারেনি তারা।
ওই সময় দল পুনর্গঠন শেষ না করেই চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি থেকে আবার লাগাতার হরতাল-অবরোধের ডাক দেয় বিএনপি। তবে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় থেকে অবরোধ-হরতাল সারা দেশে অনেকটা অকার্যকর হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে টানা তিন মাসের আন্দোলনে ছেদ টেনে হঠাৎ ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিন সিটি নির্বাচনে অংশ নেয় বিএনপি। এখন আবার দল গোছানোর দিকে দলটি মনোযোগ দিচ্ছে। এর আগে আন্দোলনে ব্যর্থতার অভিযোগে ঢাকা মহানগরে খোকা-সালাম কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নতুন কমিটিকেও আন্দোলনে মাঠে দেখা যায়নি। ঢাকায় এবারও বিএনপি কর্মসূচি পালনে ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করেন দলের নেতারা। তাই পুনর্গঠন আসলে কতটুকু কার্যকর তা নিয়ে দলের অনেকের প্রশ্ন আছে।
বিএনপি মনে করছে, এখন সরকারবিরোধী আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া তাদের জন্য কঠিন। কারণ, টানা তিন মাসের আন্দোলনে নেতা-কর্মীরা ক্লান্ত। হাজার হাজার নেতা-কর্মী মামলার আসামি, অনেকে কারাগারে, অনেকে পলাতক। চলছে বর্ষা মৌসুম। সব মিলিয়ে এ সময়টিতে বড় কিছু না হলে বিএনপি রাজপথের আন্দোলনে যেতে চায় না। বরং এ সময় সংগঠনকে কিছুটা গোছানোর চেষ্টা করবে দলটি। দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কিছু খোঁজখবর করছেন। অক্টোবর নাগাদ কেন্দ্রীয় কাউন্সিল করা যায় কি না ভাবা হচ্ছে। এবার দলের কেন্দ্রীয় কমিটির ওপরে আরেকটি কমিটি করা যায় কি না, তা চিন্তাভাবনা চলছে। দলীয় নেতাদের পাশাপাশি সরাসরি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন, কিন্তু বিএনপিমনা ও গ্রহণযোগ্য এমন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে এই কমিটি করার চিন্তা আছে। তবে এমনটি করতে হলে দলের গঠনতন্ত্র সংশোধন করতে হবে। এ ছাড়া ঢাকা মহানগর বিএনপিকে দুই ভাগে ভাগ করারও চিন্তা আছে। তবে এসব বিষয়ে এখন পর্যন্ত দলীয় ফোরামে আনুষ্ঠানিক কোনো আলোচনা হয়নি।
No comments