৫৪ বছর পর খুলল দূতাবাস
পাঁচ দশক ধরে চলা বৈরী সম্পর্কের অবসান ঘটিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও কিউবা আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক আবার চালু করেছে। রোববার স্থানীয় সময় মধ্যরাতের পর দুই দেশে থাকা পরস্পরের কূটনৈতিক মিশনকে পূর্ণ দূতাবাসে পরিণত করা হয়। এরই মধ্য দিয়ে অর্ধ-শতকের স্নায়ুযুদ্ধ শেষে নতুন এক যাত্রা শুরু করল দেশ দুটি। ৫৪ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্র ও কিউবার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়। গত বছর ১৭ ডিসেম্বর দূতাবাস খোলার ঐতিহাসিক ঘোষণা দিয়েছিলেন দুই দেশের প্রেসিডেন্ট- বারাক ওবামা ও রাহুল ক্যাস্ত্রো। সোমবার কিউবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রোনো রদ্রিগেজ ওয়াশিংটনস্থ দেশটির দূতাবাসের শুভ উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করে আইল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের রান টেলিভিশন। কিউবান কূটনীতিকদের একটি প্রতিনিধি দলও শিল্পীসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রায় ৫০০ ব্যক্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কিউবার পতাকা উত্তোলন করা হয়। তবে আগামী মাসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি কিউবা সফর না করা পর্যন্ত হাভানায় যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা উত্তোলন করা হবে না। এর আগে, হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সমঝোতার ব্যাপারে একটি বিবৃতি দেন ।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, এটি তার মেয়াদ কালের বৈদেশিক নীতির ক্ষেত্রে অন্যতম বড় অর্জন। উল্লেখ্য, ১৯৮২ সালে প্রথম কিউবাকে সন্ত্রাসবাদে মদদদাতা দেশগুলোর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি বিভিন্ন সংগঠনকে সশস্ত্র বিপ্লবে উদ্বুদ্ধ করতে সন্ত্রাসবাদকে ব্যবহার করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, কিউবা অনেকদিন ধরে কলোম্বিয়ার ফার্ক বিদ্রোহী ও লাতিন আমেরিকায় সক্রিয় বিচ্ছিন্নতাবাদী দল ইটিএ’র সদস্যদের নিরাপদ ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি সন্ত্রাসবাদে মদদদাতা দেশগুলোর তালিকায় সিরিয়া, ইরান, সুদানের মতো দেশের নামও রয়েছে। দূতাবাস চালুর পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি কিউবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রদ্রিগেজের সঙ্গে ওয়াশিংটনে আলাপ করেছেন। দুই দেশের জন্যই বিষয়টি ঐতিহাসিক হলেও এখনও অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়ে গেছে। গত বছরের ডিসেম্বরে দুই দেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক চালুর সিদ্ধান্ত নেয়। কিউবায় সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির সম্পর্কের অবনতি হতে শুরু করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর স্নায়ুযুদ্ধকালীন দুদেশের সম্পর্কের চূড়ান্ত অবনতি ঘটে। সেই দীর্ঘ বৈরিতার ইতি টেনে যুক্তরাষ্ট্র ও কিউবা গত জানুয়ারি থেকে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু করে।
No comments