কে শোনে কার কথা...
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বললেন, ‘যেও না,
একটু দাঁড়াও।’ বক্তব্য দিতে দিতে প্রধানমন্ত্রী আবারও একই কথা বললেন।
কিন্তু কে শোনে কার কথা! শিশুটি নিজের মনে প্রধানমন্ত্রীর পাশ থেকে সরে
গেল। মঞ্চের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে হাঁটা শুরু করল। প্রধানমন্ত্রীর
বক্তব্য শেষ হওয়ার আগেই আবার প্রধানমন্ত্রীর পাশে এসে দাঁড়াল।
প্রধানমন্ত্রী নিজের মাইক্রোফোন ছেড়ে দিয়ে দর্শক-শ্রোতাদের উদ্দেশে বললেন,
‘ও একটু কথা বলবে।’ শিশুটি মাইক্রোফোন হাতে নিল। পাশ থেকে প্রধানমন্ত্রী
বলেই যাচ্ছেন, ‘তুমি না বললে কথা বলবে, বলো।’ শিশুটি জানিয়ে দিল, সে তার
নাম ভুলে গেছে। এখন সে আর কথাও বলতে চায় না। অনুষ্ঠানের শুরু থেকেই শিশুটি
প্রধানমন্ত্রীর পাশের চেয়ারে বসে। পুরো অনুষ্ঠানেই ছিল প্রধানমন্ত্রীর
আশপাশে।
বুধবার
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সপ্তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসের
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী সারাক্ষণই ব্যস্ত ছিলেন শিশুদের কথা
মেনে চলার জন্য। এরা সবাই অটিস্টিক শিশু। তারা প্রধানমন্ত্রীর কথাও মেনে
চলার তাগিদ অনুভব করেনি। তারা ব্যস্ত ছিল যে যার মনোজগতে।
উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রতিটি মানুষেরই জন্মগতভাবে আত্মমর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার আছে। অটিস্টিকসহ সমাজের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরাও এ মর্যাদা ভোগের সমান অধিকার রাখে। অটিজম কোনো ব্যাধি না, জন্মগত কিছু অসুবিধা। সমাজের সচেতন ব্যক্তিদের দায়িত্ব ও কর্তব্য এদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া। অবজ্ঞা না করে এদের আপন করে নেওয়া।’
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী যখন বক্তব্য দিচ্ছেন, তখন সম্মেলন কেন্দ্রে উপস্থিত অটিস্টিক শিশু ও ব্যক্তিরা কেউ আপন মনে হেসেই যাচ্ছে। আবার কেউ কেন্দ্রের বিভিন্ন জায়গায় হেঁটে বেড়াচ্ছে। পাশে পাশে দৌড়াচ্ছেন সেই শিশুর মা। আবার কেউ কেউ মুখ দিয়ে বিকট শব্দ করেই চলছে। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাকর্মীরা খানিকটা দ্বিধার মধ্যে থাকলেও বেশি কিছু বলেননি এই শিশুদের। তবে অনুষ্ঠানের পুরুষ ঘোষক একটু পরপর অভিভাবকদের এই শিশুদের শান্তভাবে বসানোর জন্য অনুরোধ জানাচ্ছিলেন।
প্রতিবেদকের পাশে বসা একজন অভিভাবক বলেন, ‘এরা যদি অন্যদের মতো শান্ত হয়েই বসবে, তাহলে তো আর ওরা অটিস্টিক হতো না।’
মঞ্চের সামনের সারিতে যেখানে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বসার জায়গা, সেখানে এক শিশু এসে দাঁড়িয়ে গেল। অনেকক্ষণ হাত নেড়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালানো হলো। তারপর একসময় মঞ্চে উঠে হয়তো কিছু না বুঝেই প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে ধরল। প্রধানমন্ত্রীও কিছুক্ষণ মমতায় আগলে রাখলেন শিশুটিকে।
প্রধানমন্ত্রী বক্তব্যে বলেন, এই শিশুদের মধ্যে অনেক মেধা রয়েছে। তা বিকাশের সুযোগ করে দিতে হবে। অনেক মা-বাবা এই শিশুদের ঘরের মধ্যে লুকিয়ে রাখেন। এ ধরনের আচরণ করা উচিত নয়। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে অটিজম সম্পর্কে সচেতনতা তৈরিতে তাঁর মেয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অটিজমসহ নিউরো-ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কর্মরত মনোবিজ্ঞানী সায়মা হোসেন পুতুলের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘পুতুলের উত্সাহ ও পরামর্শে অটিস্টিক ও নিউরো-ডেভেলপমেন্ট ব্যক্তিদের সম্পর্কে আমি নিজেও ধারণা পাই ও কাজ করতে আগ্রহী হই।’
প্রধানমন্ত্রী বর্তমান সরকারের প্রণীত প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন এবং নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা আইনের কথা উল্লেখ করেন। সরকার এই দুটি আইনের বিধিমালা তৈরি করে আইন বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন। সরকার একটি ট্রাস্ট গঠন করে এই ব্যক্তিদের সারা জীবনের নিরাপত্তা দেবে বলে জানান।
ঈদ, পয়লা বৈশাখসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ছাপানো ২০ থেকে ২৫ হাজার কার্ডে অটিস্টিক শিশুর ছবি থাকে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন থেকে তিনজন করে অটিস্টিক শিশুর ছবি দিয়ে কার্ড তৈরি করা হবে।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকেই প্রধানমন্ত্রী প্রতিবন্ধী উন্নয়ন অধিদপ্তরের উদ্বোধন এবং জাতীয় প্রতিবন্ধী কমপ্লেক্সের ফলক উন্মোচন করেন। এ ছাড়া অটিজম নিয়ে রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী তিনজন শিক্ষার্থীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন। অটিস্টিক শিশুদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পুরোটাই উপভোগ করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে এই শিশুদের সঙ্গে ছবি তোলেন।
প্রধানমন্ত্রী যখন সম্মেলন কেন্দ্রে বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তখন গেটের বাইরে অটিস্টিক শিশুদের অনেকেই ব্যস্ত ছিল ছবি আঁঁকায়। রংতুলিতে তারা মুক্তিযুদ্ধ, ফুল, পাখি লতাসহ বিভিন্ন জিনিস ফুটিয়ে তোলে। পরে প্রধানমন্ত্রী শিশুদের আঁকা ছবি দেখে মুগ্ধ হন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিন। অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব নাছিমা বেগম শুধু সচিব হিসেবেই নন, অটিস্টিক ব্যক্তির (সন্তানের বয়স ২৮ বছর) মা হিসেবেও বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘বলতে দ্বিধা নাই, একসময় অটিস্টিক সন্তানের অভিভাবক বিশেষ করে মায়েরা ভাবতেন, তাঁর মৃত্যুর আগেই যেন তাঁর আদরের সন্তানের মৃত্যু হয়। আমরা এতটাই অসহায় ছিলাম। বর্তমান সরকার এই শিশুদের জন্য অনেক কার্যক্রম হাতে নেওয়ায় আমরা স্বস্তি পাচ্ছি।’
উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রতিটি মানুষেরই জন্মগতভাবে আত্মমর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার আছে। অটিস্টিকসহ সমাজের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরাও এ মর্যাদা ভোগের সমান অধিকার রাখে। অটিজম কোনো ব্যাধি না, জন্মগত কিছু অসুবিধা। সমাজের সচেতন ব্যক্তিদের দায়িত্ব ও কর্তব্য এদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া। অবজ্ঞা না করে এদের আপন করে নেওয়া।’
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী যখন বক্তব্য দিচ্ছেন, তখন সম্মেলন কেন্দ্রে উপস্থিত অটিস্টিক শিশু ও ব্যক্তিরা কেউ আপন মনে হেসেই যাচ্ছে। আবার কেউ কেন্দ্রের বিভিন্ন জায়গায় হেঁটে বেড়াচ্ছে। পাশে পাশে দৌড়াচ্ছেন সেই শিশুর মা। আবার কেউ কেউ মুখ দিয়ে বিকট শব্দ করেই চলছে। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাকর্মীরা খানিকটা দ্বিধার মধ্যে থাকলেও বেশি কিছু বলেননি এই শিশুদের। তবে অনুষ্ঠানের পুরুষ ঘোষক একটু পরপর অভিভাবকদের এই শিশুদের শান্তভাবে বসানোর জন্য অনুরোধ জানাচ্ছিলেন।
প্রতিবেদকের পাশে বসা একজন অভিভাবক বলেন, ‘এরা যদি অন্যদের মতো শান্ত হয়েই বসবে, তাহলে তো আর ওরা অটিস্টিক হতো না।’
মঞ্চের সামনের সারিতে যেখানে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বসার জায়গা, সেখানে এক শিশু এসে দাঁড়িয়ে গেল। অনেকক্ষণ হাত নেড়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালানো হলো। তারপর একসময় মঞ্চে উঠে হয়তো কিছু না বুঝেই প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে ধরল। প্রধানমন্ত্রীও কিছুক্ষণ মমতায় আগলে রাখলেন শিশুটিকে।
প্রধানমন্ত্রী বক্তব্যে বলেন, এই শিশুদের মধ্যে অনেক মেধা রয়েছে। তা বিকাশের সুযোগ করে দিতে হবে। অনেক মা-বাবা এই শিশুদের ঘরের মধ্যে লুকিয়ে রাখেন। এ ধরনের আচরণ করা উচিত নয়। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে অটিজম সম্পর্কে সচেতনতা তৈরিতে তাঁর মেয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অটিজমসহ নিউরো-ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কর্মরত মনোবিজ্ঞানী সায়মা হোসেন পুতুলের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘পুতুলের উত্সাহ ও পরামর্শে অটিস্টিক ও নিউরো-ডেভেলপমেন্ট ব্যক্তিদের সম্পর্কে আমি নিজেও ধারণা পাই ও কাজ করতে আগ্রহী হই।’
প্রধানমন্ত্রী বর্তমান সরকারের প্রণীত প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন এবং নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা আইনের কথা উল্লেখ করেন। সরকার এই দুটি আইনের বিধিমালা তৈরি করে আইন বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন। সরকার একটি ট্রাস্ট গঠন করে এই ব্যক্তিদের সারা জীবনের নিরাপত্তা দেবে বলে জানান।
ঈদ, পয়লা বৈশাখসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ছাপানো ২০ থেকে ২৫ হাজার কার্ডে অটিস্টিক শিশুর ছবি থাকে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন থেকে তিনজন করে অটিস্টিক শিশুর ছবি দিয়ে কার্ড তৈরি করা হবে।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকেই প্রধানমন্ত্রী প্রতিবন্ধী উন্নয়ন অধিদপ্তরের উদ্বোধন এবং জাতীয় প্রতিবন্ধী কমপ্লেক্সের ফলক উন্মোচন করেন। এ ছাড়া অটিজম নিয়ে রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী তিনজন শিক্ষার্থীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন। অটিস্টিক শিশুদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পুরোটাই উপভোগ করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে এই শিশুদের সঙ্গে ছবি তোলেন।
প্রধানমন্ত্রী যখন সম্মেলন কেন্দ্রে বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তখন গেটের বাইরে অটিস্টিক শিশুদের অনেকেই ব্যস্ত ছিল ছবি আঁঁকায়। রংতুলিতে তারা মুক্তিযুদ্ধ, ফুল, পাখি লতাসহ বিভিন্ন জিনিস ফুটিয়ে তোলে। পরে প্রধানমন্ত্রী শিশুদের আঁকা ছবি দেখে মুগ্ধ হন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিন। অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব নাছিমা বেগম শুধু সচিব হিসেবেই নন, অটিস্টিক ব্যক্তির (সন্তানের বয়স ২৮ বছর) মা হিসেবেও বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘বলতে দ্বিধা নাই, একসময় অটিস্টিক সন্তানের অভিভাবক বিশেষ করে মায়েরা ভাবতেন, তাঁর মৃত্যুর আগেই যেন তাঁর আদরের সন্তানের মৃত্যু হয়। আমরা এতটাই অসহায় ছিলাম। বর্তমান সরকার এই শিশুদের জন্য অনেক কার্যক্রম হাতে নেওয়ায় আমরা স্বস্তি পাচ্ছি।’
No comments