দুই দলকে কেন লন্ডনে যেতে হয়?
ব্রিটিশদের আমরা সমীহ করে চলি। তারা দুই শ বছর শাসন করে ভারত এবং সেই সঙ্গে বাংলাদেশকেও মানুষ করে দিয়ে গেছে। কিন্তু তার পরও বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি, সুশাসন, নির্বাচন নিয়ে তাদের মনের দুশ্চিন্তা কাটে না। তাই তাদের সংসদের নিম্নকক্ষ অর্থাৎ কমনস ও উচ্চকক্ষ লর্ডস সভার এমপিদের যে যৌথ কমিটি রয়েছে, তারা সভা ডাকে। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। এ রকম আরেকটি আলোচনা হলো সোমবার, ৩১ মার্চ। সেখানে ঢাকা থেকে সরকারের প্রতিনিধি ছাড়াও আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা যোগ দিয়েছেন। মানবাধিকার পরিস্থিতির পাশাপাশি আরও কিছু প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষভাবে ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের একতরফা নির্বাচনের পর সংসদ ও রাজনীতিতে যে ‘বিরোধী দলশূন্য’ পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে, তা কীভাবে দূর করা যায়, সে প্রশ্নটি প্রাধান্য পেয়েছে। এ বিষয়ে রোববার সন্ধ্যায় বিবিসি বাংলা রেডিওতে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের একটি সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়। মধ্যবর্তী নির্বাচন হবে কি না, কবে হবে, ইত্যাদি প্রশ্নের উত্তরে তিনি মূলত দুটি কথা বলেছেন। প্রথমত, মধ্যবর্তী নির্বাচন, তাঁর ভাষায়, গণদাবি নয়, তাই তিনি প্রশ্ন তোলেন, এ রকম নির্বাচন হবে কেন?
দ্বিতীয়ত, নির্বাচন পাঁচ বছর পরে হবে, নাকি তার আগে হবে; তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, কীভাবে হবে। সংবিধানের অধীনে নির্বাচন হবে, এটা তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন। পুরোনো কথা। এটা জানানোর জন্য কি লন্ডনে যেতে হয়? বিএনপিও যায়। ওরাও কি সেই পুরোনো কথাবার্তা বলতেই যাচ্ছে? যদি সমঝোতা করতে হয় এবং সেটা করাই উচিত, তাহলে খোলা মনে ঢাকাতেই তো আলোচনা চলতে পারে। কিন্তু ঢাকায় যে দুই পক্ষের মধ্যে আদায়-কাঁচকলায় সম্পর্ক। লন্ডনে তারেক রহমান তাঁর বাবা জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি দাবি করায় সংসদে ঝড় বয়ে গেছে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও একই দাবি করে রাজনীতির মাঠ আরও গরম করেছেন। এর মধ্যে আবার খালেদা জিয়া ৩১ মার্চ উপজেলা নির্বাচন শেষে জোরালো আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। শতকোটি টাকা ব্যয়ে জাতীয় সংগীত করে কোনো লাভ হবে না, এ কথা বলে তিনি রীতিমতো হুমকির সুরে বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যখন এ সরকার বিদায় হবে,...সেটাই আসবে গিনেস বুকে।’ ‘গণ-অভ্যুত্থান’, ‘সরকারের বিদায়’—এসব কথা গত পাঁচ বছর ধরেই শুনে আসছি। শুধু কথায় বিষয়টি মিটে গেলে আপত্তি ছিল না। কিন্তু মুশকিল হলো হরতাল-অবরোধ চলতে থাকে। মানুষের জীবনে নেমে আসে অভিশাপ।
গত কয়েক মাস শান্তিতে আছি। শান্তিতে থাকতে চাই। সরকার ও দেশের প্রধান বিরোধী জোট, যার নেতৃত্বে রয়েছে বিএনপি, তাদের উভয়ের দায়িত্ব মানুষকে বিরক্ত না করা। যারা গণ-অভ্যুত্থানের কথা ভাবছেন, তাঁদের বুঝতে হবে, আগের দিন আর নেই। সরকার যদি মানুষের রুটি-রুজির ওপর হাত চালায়, তাহলে নিশ্চয়ই মানুষই রাস্তায় নামবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত মুদ্রাস্ফীতির হার নিচের দিকেই আছে। আর মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে অনেক কথা থাকলেও এবং গুম, ‘বন্দুকযুদ্ধে নিহত’ প্রভৃতি থেমে থেমে চলতে থাকলেও, যতক্ষণ পর্যন্ত না সাধারণ মানুষের জীবনের ওপর আঘাত না আসছে, ততক্ষণ মানুষ ঘরেই থাকতে চাইবে। শুধু বক্তৃতায় ওদের মাঠে নামানো যাবে না। দেশে অনেক সমস্যা আছে। কিন্তু ‘পেটে খেলে পিঠে সয়, এ তো কভু মিছে নয়’ কথাটা যে বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে বেশ খাটে, তা বুঝতে কারও বাকি আছে কি? কিন্তু কত দিন এই সয়ে যাওয়ার মতো ‘পেটে খাওয়া’ জুটবে, সেটাই প্রশ্ন। সরকার ভাবছে, বেশ ভালোই তো চলছে। কিন্তু প্রতিদিন পত্রিকায় যেসব খবর বেরোয়, তা সরকারের জন্য সুখকর নয়। উপজেলা নির্বাচনে প্রাণহানি ঘটেছে। এর চেয়ে ভীতিকর আর কী হতে পারে। আমরা যখন ভাবছিলাম নির্বাচন নিয়ে খুনোখুনি, ভোটের বাক্স ছিনতাই প্রভৃতির দিন শেষ, তখন আবার ভোট নিয়ে হত্যা-আতঙ্কের দিন শুরু হয়ে গেল। এ অবস্থায় সরকার কত দিন মানুষকে শান্তিতে থাকতে দেবে বলে আশা করে?
প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে বাদ দিয়ে একতরফা নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ যেমন গণতন্ত্রের জন্য অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে, তেমনি কোনো না কোনো ফাঁকফোকর বের করে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ গ্রহণ না করে বিএনপিও দেশের জন্য এক সংকটজনক অবস্থা ডেকে এনেছে। বিএনপি যদি নির্বাচন করত, তাহলে পরিস্থিতি অন্য রকম হতে পারত। অন্তত সংসদ নির্বাচনের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীদের বিপুল বিজয় যে অনুকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল, বিএনপি কৌশলে তার সদ্ব্যবহার করতে পারেনি। প্রকৃতপক্ষে রাজনীতির পথটি মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের মতো সরল সড়কের মতো নয়। আঁকাবাঁকা পথে, সময় বুঝে দ্রুত বাঁক নিতে না পারলে খেসারত দিতে হয়। নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থান-উত্তরকালে এখন আমাদের দেশ যে পর্যায়ে এসেছে, তাতে নির্বাচন বর্জন কোনো রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় বহন করে না। গণ-অভ্যুত্থানের চিন্তার চিরবিদায়ের দিন এসেছে। আমাদের পাশের দেশ ভারতে তো কত সমস্যা। দুর্নীতির অভিযোগ তো কম নয়। কত মন্ত্রীর জেল হয়ে গেল শুধু দুর্নীতির অভিযোগে। সম্প্রতি নারী নির্যাতনের ঘটনায় সারা দেশে ঝড় বয়ে গেছে। তেলেঙ্গানায় পৃথক রাজ্য গঠনের বিল নিয়ে ভারতের লোকসভায় একজন সাংসদ মরিচের গুঁড়া পর্যন্ত ছিটিয়ে দিয়ে নতুন রেকর্ড করলেন। কিন্তু সেখানে কি কেউ আসন্ন লোকসভা নির্বাচন বর্জনের কথা ভাবতে পারে?
নির্বাচন বর্জন একুশ শতকের এই আধুনিক যুগের সঙ্গে বেমানান রাজনীতি। বিএনপি নিজেকে আধুনিক দল বলে দাবি করে, কিন্তু রাজনীতি করে সেকেলে। একদিকে বলছে মধ্যবর্তী নির্বাচন দিতে হবে, অন্যদিকে গণ-অভ্যুত্থানের হুমকিও দিচ্ছে। আলোচনায় সমাধান করতে হলে তো গণ-অভ্যুত্থান হয় না। একটা গন্ডগোল চাই। সে জন্যই হয়তো এই সময়ে হঠাৎ করে জিয়াউর রহমানকে দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বলে দাবি করা হচ্ছে। অথচ বিএনপির ওয়েবসাইটে এত দিন জিয়াউর রহমানকে দেশের সপ্তম রাষ্ট্রপতি বলে উল্লেখ করা ছিল। কিন্তু আকস্মিকভাবে তাঁকে প্রথম রাষ্ট্রপতি বলে দাবি করার পর থেকে সেই ওয়েবসাইট আর দেখা যাচ্ছে না। ওদিকে জিয়াউর রহমান যে ১৯৭১ সালে রাষ্ট্রপতি ছিলেন না, পরে হয়েছেন, সে কথাটা স্বয়ং তারেক রহমানের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে এখনো পাওয়া যাবে (দেখুন, প্রথম আলো, ৩০ মার্চ)। দেশে আলোচনার মনমানসিকতা বা পরিবেশ কোনোটাই নেই বলেই বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার জন্য দুই প্রধান দলের নেতারা লন্ডনে ছুটেছেন। এ রকম আলোচনা আগেও হয়েছে। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে ও গত বছর মে মাসে একই ফোরামে দুই দলের মধ্যে রাজনৈতিক মীমাংসার জন্য লন্ডনে বৈঠক হয়েছিল। সেখানে দুই পক্ষই অন্তত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছিলেন। তারপর কী হয়েছে আমরা জানি।
গত কয়েক মাস শান্তিতে আছি। শান্তিতে থাকতে চাই। সরকার ও দেশের প্রধান বিরোধী জোট, যার নেতৃত্বে রয়েছে বিএনপি, তাদের উভয়ের দায়িত্ব মানুষকে বিরক্ত না করা। যারা গণ-অভ্যুত্থানের কথা ভাবছেন, তাঁদের বুঝতে হবে, আগের দিন আর নেই। সরকার যদি মানুষের রুটি-রুজির ওপর হাত চালায়, তাহলে নিশ্চয়ই মানুষই রাস্তায় নামবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত মুদ্রাস্ফীতির হার নিচের দিকেই আছে। আর মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে অনেক কথা থাকলেও এবং গুম, ‘বন্দুকযুদ্ধে নিহত’ প্রভৃতি থেমে থেমে চলতে থাকলেও, যতক্ষণ পর্যন্ত না সাধারণ মানুষের জীবনের ওপর আঘাত না আসছে, ততক্ষণ মানুষ ঘরেই থাকতে চাইবে। শুধু বক্তৃতায় ওদের মাঠে নামানো যাবে না। দেশে অনেক সমস্যা আছে। কিন্তু ‘পেটে খেলে পিঠে সয়, এ তো কভু মিছে নয়’ কথাটা যে বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে বেশ খাটে, তা বুঝতে কারও বাকি আছে কি? কিন্তু কত দিন এই সয়ে যাওয়ার মতো ‘পেটে খাওয়া’ জুটবে, সেটাই প্রশ্ন। সরকার ভাবছে, বেশ ভালোই তো চলছে। কিন্তু প্রতিদিন পত্রিকায় যেসব খবর বেরোয়, তা সরকারের জন্য সুখকর নয়। উপজেলা নির্বাচনে প্রাণহানি ঘটেছে। এর চেয়ে ভীতিকর আর কী হতে পারে। আমরা যখন ভাবছিলাম নির্বাচন নিয়ে খুনোখুনি, ভোটের বাক্স ছিনতাই প্রভৃতির দিন শেষ, তখন আবার ভোট নিয়ে হত্যা-আতঙ্কের দিন শুরু হয়ে গেল। এ অবস্থায় সরকার কত দিন মানুষকে শান্তিতে থাকতে দেবে বলে আশা করে?
প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে বাদ দিয়ে একতরফা নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ যেমন গণতন্ত্রের জন্য অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে, তেমনি কোনো না কোনো ফাঁকফোকর বের করে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ গ্রহণ না করে বিএনপিও দেশের জন্য এক সংকটজনক অবস্থা ডেকে এনেছে। বিএনপি যদি নির্বাচন করত, তাহলে পরিস্থিতি অন্য রকম হতে পারত। অন্তত সংসদ নির্বাচনের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীদের বিপুল বিজয় যে অনুকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল, বিএনপি কৌশলে তার সদ্ব্যবহার করতে পারেনি। প্রকৃতপক্ষে রাজনীতির পথটি মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের মতো সরল সড়কের মতো নয়। আঁকাবাঁকা পথে, সময় বুঝে দ্রুত বাঁক নিতে না পারলে খেসারত দিতে হয়। নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থান-উত্তরকালে এখন আমাদের দেশ যে পর্যায়ে এসেছে, তাতে নির্বাচন বর্জন কোনো রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় বহন করে না। গণ-অভ্যুত্থানের চিন্তার চিরবিদায়ের দিন এসেছে। আমাদের পাশের দেশ ভারতে তো কত সমস্যা। দুর্নীতির অভিযোগ তো কম নয়। কত মন্ত্রীর জেল হয়ে গেল শুধু দুর্নীতির অভিযোগে। সম্প্রতি নারী নির্যাতনের ঘটনায় সারা দেশে ঝড় বয়ে গেছে। তেলেঙ্গানায় পৃথক রাজ্য গঠনের বিল নিয়ে ভারতের লোকসভায় একজন সাংসদ মরিচের গুঁড়া পর্যন্ত ছিটিয়ে দিয়ে নতুন রেকর্ড করলেন। কিন্তু সেখানে কি কেউ আসন্ন লোকসভা নির্বাচন বর্জনের কথা ভাবতে পারে?
নির্বাচন বর্জন একুশ শতকের এই আধুনিক যুগের সঙ্গে বেমানান রাজনীতি। বিএনপি নিজেকে আধুনিক দল বলে দাবি করে, কিন্তু রাজনীতি করে সেকেলে। একদিকে বলছে মধ্যবর্তী নির্বাচন দিতে হবে, অন্যদিকে গণ-অভ্যুত্থানের হুমকিও দিচ্ছে। আলোচনায় সমাধান করতে হলে তো গণ-অভ্যুত্থান হয় না। একটা গন্ডগোল চাই। সে জন্যই হয়তো এই সময়ে হঠাৎ করে জিয়াউর রহমানকে দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বলে দাবি করা হচ্ছে। অথচ বিএনপির ওয়েবসাইটে এত দিন জিয়াউর রহমানকে দেশের সপ্তম রাষ্ট্রপতি বলে উল্লেখ করা ছিল। কিন্তু আকস্মিকভাবে তাঁকে প্রথম রাষ্ট্রপতি বলে দাবি করার পর থেকে সেই ওয়েবসাইট আর দেখা যাচ্ছে না। ওদিকে জিয়াউর রহমান যে ১৯৭১ সালে রাষ্ট্রপতি ছিলেন না, পরে হয়েছেন, সে কথাটা স্বয়ং তারেক রহমানের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে এখনো পাওয়া যাবে (দেখুন, প্রথম আলো, ৩০ মার্চ)। দেশে আলোচনার মনমানসিকতা বা পরিবেশ কোনোটাই নেই বলেই বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার জন্য দুই প্রধান দলের নেতারা লন্ডনে ছুটেছেন। এ রকম আলোচনা আগেও হয়েছে। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে ও গত বছর মে মাসে একই ফোরামে দুই দলের মধ্যে রাজনৈতিক মীমাংসার জন্য লন্ডনে বৈঠক হয়েছিল। সেখানে দুই পক্ষই অন্তত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছিলেন। তারপর কী হয়েছে আমরা জানি।
একতরফা নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট অংশ না নিলেও ভোট দেওয়ার ‘অপরাধে’ বিভিন্ন এলাকায় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ মূলত ওদের বিরুদ্ধেই উঠেছে। লন্ডনে দুই দলের নেতারা গেছেন। ব্রিটিশরা তাঁদের মাথায়-পিঠে হাত বুলিয়ে যদি সমঝোতায় আনতে পারে, ভালো। কিন্তু গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতায় বলা যায়, সে রকম সম্ভাবনা খুব কম। আমরা ২০৫০ সালের মধ্যে ইউরোপের অনেক দেশকে ছাড়িয়ে যাব, ২০২১ সালের মধ্যে আমরা মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হব, ইতিমধ্যেই আমরা দারিদ্র্য হ্রাস, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস, স্বাস্থ্য-পুষ্টি, শিক্ষা প্রভৃতি ক্ষেত্রে জাতিসংঘের সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছি বা করতে যাচ্ছি। সবই ঠিক। কিন্তু হায়, রাজনীতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণের জন্য আমাদের লন্ডনে যেতে হয়। ওরা ডাকে, আমরা যাই। কিন্তু ওদের কোনো পরামর্শ কানে নিই না। দেশে ফিরে আবার ‘পতন আন্দোলন’ ও ‘দমন অভিযান’ চলতে থাকে। এই ‘পতন’ ও ‘দমন’ যদি একসঙ্গে বন্ধ হয়, তাহলে হয়তো দুই দলকে আর লন্ডনে দৌড়াতে হবে না। দেশেই মিলেমিশে একটা সমাধান বের করা যাবে।
আব্দুল কাইয়ুম: সাংবাদিক
আব্দুল কাইয়ুম: সাংবাদিক
quayum@gmail.com
No comments