দুর্গতিনাশিনী দুর্গা by বিচারপতি গৌর গোপাল সাহা
বাঙালি
হিন্দুর সর্বপ্রধান এবং সবচেয়ে বর্ণাঢ্য ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক
উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আনন্দময়ী দুর্গতিনাশিনী মা দুর্গার আগমন বার্তায়
গোটা বিশ্ব আজ আনন্দমুখর। মা দুর্গা ব্রহ্ম শক্তি স্বরূপিনী, তিনি বিভাসিতা
মাতৃশক্তি, তিনি জগজ্জননীরূপে সর্বভূতে বিরাজমান। তিনি সব প্রাণীতে
চেতনারূপে, বুদ্ধিরূপে, শক্তিরূপে, শান্তিরূপে, শ্রদ্ধারূপে, দয়ারূপে
ইত্যাদি নানারূপে বিরাজিতা, সব ধরনের অকল্যাণের হাত থেকে তিনি তার
সন্তানদের রক্ষা করে থাকেন। দেবতা ও অসুরদের সংগ্রামে শরণাগত শুভবুদ্ধি ও
কল্যাণকামী দেবতাদের তিনি সব সময় বরাভয় দান করেছেন। বিভিন্ন পুরাণে মায়ের
অপার মহিমা বিশেষভাবে বর্ণিত আছে। আদ্যাশক্তি এ মহামায়াই
ব্রহ্মজ্ঞানদাত্রীরূপে সন্তানদের পরমানন্দ দান করে চলেছেন। এ সর্বভূতময়ী
চৈতন্য সত্তাই মহিষাসুরমর্দিনী জ্যোতির্ময়ী শ্রীদুর্গা। প্রাগৈতিহাসিক যুগ
থেকে সারা অবিভক্ত ভারতে শক্তি পূজার প্রচলন আছে। ইতিহাস থেকে জানা যায়,
রাজা সুরথ রাজ্যহারা হয়ে এবং বৈশ্য সমাধি বিষয় বৈভব থেকে বঞ্চিত হয়ে মনের
দুঃখে বনে-জঙ্গলে শান্তির অন্বেষায় ঘুরে বেড়িয়ে হারানো সৌভাগ্য ফেরত পাওয়ার
আশায় বিভোর। এভাবে ঘুরতে ঘুরতে একদিন তারা দৈবক্রমে ঋষি মেধসের আশ্রমে এসে
হাজির হলেন। তারা ঋষি মেধসের কাছে তাদের দুর্গতির অবসানে হৃত বৈভব ফেরত
প্রাপ্তির প্রার্থনা জানালে ঋষিবর তাদের সর্বদুঃখবিনাশিনী কল্যাণময়ী মা
দুর্গার পূজা করে বর প্রার্থনার পরামর্শ দেন। দয়াপরবশ হয়ে মুনিবর তাদের
শ্রীমায়ের রূপকল্পনা ও পূজাবিধির কথাও বলেন। ঋষি মেধসের পরামর্শমতো রাজা
সুরথ এবং বৈশ্য সমাধি দুর্গাপূজার আয়োজন করেন এবং ভক্তি-শ্রদ্ধা দ্বারা
তারা মা দুর্গাকে সন্তুষ্ট করে শ্রীমার আশীর্বাদে তাদের স্ব স্ব হৃতগৌরব ও
বিষয়-বৈভব পুনঃপ্রাপ্ত হন। এভাবেই এ দেশে দুর্গাপূজার প্রচলন হয়।
দুর্গাপূজায় বহুবিধ দুর্লভ ও মূল্যবান উপাচার প্রয়োজন। ফলে সাধারণ মানুষের পক্ষে এ পূজার অনুষ্ঠান করা খুবই দুঃসাধ্যের ব্যাপার। তাই প্রাচীনকালে রাজা-জমিদার আর ধণাঢ্য বণিক সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যেই এ পূজার প্রচলন লক্ষণীয়। এ যুগের সাধারণত আর্থিকভাবে সচ্ছল ও ধনী ব্যক্তিরাই পারিবারিকভাবে বংশপরম্পরায় দুর্গাপূজা করে আসছেন। তবে হালে সার্বজনীন দুর্গাপূজার আধিক্য, দৃষ্টিনন্দন জৌলুস বিশেষভাবে লক্ষণীয়। এসব সার্বজনীন পূজাতে সমাজের ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের অংশগ্রহণে এক আনন্দমুখর আলোকিত পরিবেশের সৃষ্টি হয় এবং দুর্গাপূজাকে উজ্জ্বল মহিমায় অভিসিঞ্চিত করে।
অনেকদিন আগের কথা। সে সময় দেবতাদের রাজা যেমন ছিলেন ইন্দ্র, তেমনই অসুরদের রাজা ছিলেন মহিষাসুর। দেববরে বলীয়ান বলদর্পী মহিষাসুর একসময় স্বর্গরাজ্য আক্রমণ করে। ফলে এক ভয়ানক যুদ্ধ বেধে যায়, যা চলে একশ’ বছর ধরে। দেবতারা প্রাণপণে যুদ্ধ করলেও মহিষাসুরের প্রবল আসুরিক শক্তির কাছে পরাজিত হন। স্বর্গরাজ্য থেকে বেদতারা বিতাড়িত হলেন, অসুররাজ মহিষাসুর হলেন স্বর্গের অধিপতি। দেবতারা তাদের দুঃখের অবসানে স্বর্গরাজ্য উদ্ধারের জন্য প্রজাপতি ব্রহ্মার শরণাপন্ন হলে ব্রহ্মা তাদের ভগবান বিষ্ণু ও শিবের আশ্রয় নিতে পরামর্শ দেন।
দেবতাদের দুঃখের কথা শুনে ভগবান শিব ও বিষ্ণু অতিশয় ক্রুদ্ধ হলেন। ক্রুদ্ধ বিষ্ণু, ব্রহ্মা ও শিবের বদন থেকে মহাতেজ নির্গত হল। ইন্দ্র প্রভৃতি দেবতার শরীর থেকেও সুবিপুল তেজরাশি নির্গত হল। দেবতাদের এ সম্মিলিত তেজরাশি থেকে সৃষ্টি হল অপরূপা এক নারীমূর্তি। দেবতাদের দেহ নিঃসৃত তেজে সেই নারীমূর্তির অঙ্গগুলো সৃষ্টি হল। ভগবান বিষ্ণুর তেজে উৎপন্ন হল তার বাহুসমূহ- দশভুজ। তিনিই হলেন দশভুজা মহিষমর্দিনী দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গা।
দেবগণ নিজ নিজ দেহ নিঃসৃত তেজ দ্বারা যেমন দেবীর অঙ্গসকল সৃষ্টি করে তাকে পূর্ণরূপ দিয়েছিলেন, তেমনই তারা নিজ নিজ শ্রেষ্ঠ অস্ত্রও তার হাতে তুলে দিয়ে তাকে করেছিলেন রণসাজে সজ্জিতা। দেবতারা দেবী দুর্গার হাতে যেসব অস্ত্রশস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন, সেগুলো হল দেবাদিদেব মহাদেবের ত্রিশূল, কালদেবতার খক্ষ, ভগবান বিষ্ণুর চক্র, পবন দেবতার তীক্ষœ বান, জলদেবতা বরুণের পাশ, পবনদেবের বার্ণপূর্ণ দুটি তূণীর, অগ্নি দেবতার শক্তি, দেবরাজ ইন্দ্রের বজ , মৃত্যুদেবতা যমের কালদণ্ড, বিশ্বকর্মার উজ্জ্বল কুঠার। অসুরদের সঙ্গে যুদ্ধে দেবী দুর্গা এসব অস্ত্রই ব্যবহার করেছিলেন। এ যুদ্ধের ক্রান্তিলগ্নে মহিষাসুরের পতন ঘটে। এভাবেই মা দুর্গার প্রসাদে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন নিশ্চিত হয়।
হিংসায় উন্মত্ত আজকের এ পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন শান্তি ও মৈত্রীর, ঐক্য ও সংহতির। আমরা বিশ্বাস করি, সব ধর্মের মর্মবাণী এক ও অভিন্ন- ঈশ্বর এক ও অদ্বিতীয়, তিনি সর্বশক্তিমান, সর্বত্র বিরাজমান এবং পরম করুণাময়। ধর্ম-দর্শনের এ মৌলিক প্রশ্নে এক ধর্মের সঙ্গে অন্য ধর্মের কোনোই প্রভেদ নেই, তফাৎ যেটুকু তা নেহায়তই ভাষাগত, প্রথাগত ও প্রাতিষ্ঠানিক আচার-আচরণের। হিন্দুর প্রত্যয়ে আছে সর্বভূতে সমদর্শন, বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্য ও সংহতি এবং সব ধর্মসম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে মর্যাদাপূর্ণ ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান। মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, মনুষ্যত্বই মানুষের শ্রেষ্ঠ অলংকার- এ হোক আমাদের বিশ্বাসের ভিত্তিভূমি।
আমরা বিশ্বাস করি, বিশ্বের সব ধর্মই ঈশ্বর প্রেরিত এবং শাশ্বত সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত, কালজয়ী। ঈশ্বরের ইচ্ছাতেই পৃথিবীতে এতসব বৈচিত্র্যের সমাহার। সাদা-কালো, দীর্ঘকায়-খর্বাকায়, তীক্ষ্ণ-নাশা ও চেপ্টা নাক আরও কত বৈচিত্র্যে ভরা বিশ্বসংসার। কিন্তু এ সবেরই নিয়ন্তা এক ও অদ্বিতীয় পরমেশ্বর। আমরা তাকে যে নামে যেভাবেই ডাকি না কেন, তিনি ভক্তের ডাকে সেভাবেই সাড়া দেন। তিনিই সব পথের শেষ ঠিকানা। তাই আমাদের উচিত নিজ নিজ ধর্ম বিশ্বাসে নিষ্ঠাবান ও অবিচল থেকে ধর্মাচরণ করা, কোনোভাবেই যেন আমরা অন্যের মত ও পথকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য না করি। এভাবেই আমরা আন্তঃধর্মীয় সংঘাত-সংঘর্ষ পরিহার করে সব মানুষের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ পৃথিবী গড়ে তুলতে পারি। আর এভাবে এ পৃথিবীতেই স্বর্গরাজ্য প্রতিষ্ঠা সম্ভব। ধর্মবোধে উদারনৈকি চেতনার উন্মেষ ও যথার্থ মানবিক মূল্যবোধের বিকাশই এক অখণ্ড শান্তিময় বিশ্ব বিনির্মাণের মৌলিক উপাদান। ‘বসুধৈব টুকুম্বকম’- গোটা বিশ্বই আমার আত্মীয়- এ হোক আমাদের আলোকিত প্রত্যয়। সত্য সুন্দরের আলোকে, শান্তি ও কল্যাণের সুবাতাসে অভিসিঞ্চিত হোক এ আর্ত বসুন্ধরা।
দুর্গতিনাশিনী মা দুর্গার আশীর্বাদের করুণাধারা সবার ওপর বর্ষিত হোক- দেশ ও জাতি সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধির আলোকছটায় উদ্ভাসিত হোক!
বিচারপতি গৌর গোপাল সাহা : সভাপতি, রামকৃষ্ণ মিশন, ঢাকা
দুর্গাপূজায় বহুবিধ দুর্লভ ও মূল্যবান উপাচার প্রয়োজন। ফলে সাধারণ মানুষের পক্ষে এ পূজার অনুষ্ঠান করা খুবই দুঃসাধ্যের ব্যাপার। তাই প্রাচীনকালে রাজা-জমিদার আর ধণাঢ্য বণিক সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যেই এ পূজার প্রচলন লক্ষণীয়। এ যুগের সাধারণত আর্থিকভাবে সচ্ছল ও ধনী ব্যক্তিরাই পারিবারিকভাবে বংশপরম্পরায় দুর্গাপূজা করে আসছেন। তবে হালে সার্বজনীন দুর্গাপূজার আধিক্য, দৃষ্টিনন্দন জৌলুস বিশেষভাবে লক্ষণীয়। এসব সার্বজনীন পূজাতে সমাজের ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের অংশগ্রহণে এক আনন্দমুখর আলোকিত পরিবেশের সৃষ্টি হয় এবং দুর্গাপূজাকে উজ্জ্বল মহিমায় অভিসিঞ্চিত করে।
অনেকদিন আগের কথা। সে সময় দেবতাদের রাজা যেমন ছিলেন ইন্দ্র, তেমনই অসুরদের রাজা ছিলেন মহিষাসুর। দেববরে বলীয়ান বলদর্পী মহিষাসুর একসময় স্বর্গরাজ্য আক্রমণ করে। ফলে এক ভয়ানক যুদ্ধ বেধে যায়, যা চলে একশ’ বছর ধরে। দেবতারা প্রাণপণে যুদ্ধ করলেও মহিষাসুরের প্রবল আসুরিক শক্তির কাছে পরাজিত হন। স্বর্গরাজ্য থেকে বেদতারা বিতাড়িত হলেন, অসুররাজ মহিষাসুর হলেন স্বর্গের অধিপতি। দেবতারা তাদের দুঃখের অবসানে স্বর্গরাজ্য উদ্ধারের জন্য প্রজাপতি ব্রহ্মার শরণাপন্ন হলে ব্রহ্মা তাদের ভগবান বিষ্ণু ও শিবের আশ্রয় নিতে পরামর্শ দেন।
দেবতাদের দুঃখের কথা শুনে ভগবান শিব ও বিষ্ণু অতিশয় ক্রুদ্ধ হলেন। ক্রুদ্ধ বিষ্ণু, ব্রহ্মা ও শিবের বদন থেকে মহাতেজ নির্গত হল। ইন্দ্র প্রভৃতি দেবতার শরীর থেকেও সুবিপুল তেজরাশি নির্গত হল। দেবতাদের এ সম্মিলিত তেজরাশি থেকে সৃষ্টি হল অপরূপা এক নারীমূর্তি। দেবতাদের দেহ নিঃসৃত তেজে সেই নারীমূর্তির অঙ্গগুলো সৃষ্টি হল। ভগবান বিষ্ণুর তেজে উৎপন্ন হল তার বাহুসমূহ- দশভুজ। তিনিই হলেন দশভুজা মহিষমর্দিনী দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গা।
দেবগণ নিজ নিজ দেহ নিঃসৃত তেজ দ্বারা যেমন দেবীর অঙ্গসকল সৃষ্টি করে তাকে পূর্ণরূপ দিয়েছিলেন, তেমনই তারা নিজ নিজ শ্রেষ্ঠ অস্ত্রও তার হাতে তুলে দিয়ে তাকে করেছিলেন রণসাজে সজ্জিতা। দেবতারা দেবী দুর্গার হাতে যেসব অস্ত্রশস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন, সেগুলো হল দেবাদিদেব মহাদেবের ত্রিশূল, কালদেবতার খক্ষ, ভগবান বিষ্ণুর চক্র, পবন দেবতার তীক্ষœ বান, জলদেবতা বরুণের পাশ, পবনদেবের বার্ণপূর্ণ দুটি তূণীর, অগ্নি দেবতার শক্তি, দেবরাজ ইন্দ্রের বজ , মৃত্যুদেবতা যমের কালদণ্ড, বিশ্বকর্মার উজ্জ্বল কুঠার। অসুরদের সঙ্গে যুদ্ধে দেবী দুর্গা এসব অস্ত্রই ব্যবহার করেছিলেন। এ যুদ্ধের ক্রান্তিলগ্নে মহিষাসুরের পতন ঘটে। এভাবেই মা দুর্গার প্রসাদে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন নিশ্চিত হয়।
হিংসায় উন্মত্ত আজকের এ পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন শান্তি ও মৈত্রীর, ঐক্য ও সংহতির। আমরা বিশ্বাস করি, সব ধর্মের মর্মবাণী এক ও অভিন্ন- ঈশ্বর এক ও অদ্বিতীয়, তিনি সর্বশক্তিমান, সর্বত্র বিরাজমান এবং পরম করুণাময়। ধর্ম-দর্শনের এ মৌলিক প্রশ্নে এক ধর্মের সঙ্গে অন্য ধর্মের কোনোই প্রভেদ নেই, তফাৎ যেটুকু তা নেহায়তই ভাষাগত, প্রথাগত ও প্রাতিষ্ঠানিক আচার-আচরণের। হিন্দুর প্রত্যয়ে আছে সর্বভূতে সমদর্শন, বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্য ও সংহতি এবং সব ধর্মসম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে মর্যাদাপূর্ণ ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান। মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, মনুষ্যত্বই মানুষের শ্রেষ্ঠ অলংকার- এ হোক আমাদের বিশ্বাসের ভিত্তিভূমি।
আমরা বিশ্বাস করি, বিশ্বের সব ধর্মই ঈশ্বর প্রেরিত এবং শাশ্বত সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত, কালজয়ী। ঈশ্বরের ইচ্ছাতেই পৃথিবীতে এতসব বৈচিত্র্যের সমাহার। সাদা-কালো, দীর্ঘকায়-খর্বাকায়, তীক্ষ্ণ-নাশা ও চেপ্টা নাক আরও কত বৈচিত্র্যে ভরা বিশ্বসংসার। কিন্তু এ সবেরই নিয়ন্তা এক ও অদ্বিতীয় পরমেশ্বর। আমরা তাকে যে নামে যেভাবেই ডাকি না কেন, তিনি ভক্তের ডাকে সেভাবেই সাড়া দেন। তিনিই সব পথের শেষ ঠিকানা। তাই আমাদের উচিত নিজ নিজ ধর্ম বিশ্বাসে নিষ্ঠাবান ও অবিচল থেকে ধর্মাচরণ করা, কোনোভাবেই যেন আমরা অন্যের মত ও পথকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য না করি। এভাবেই আমরা আন্তঃধর্মীয় সংঘাত-সংঘর্ষ পরিহার করে সব মানুষের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ পৃথিবী গড়ে তুলতে পারি। আর এভাবে এ পৃথিবীতেই স্বর্গরাজ্য প্রতিষ্ঠা সম্ভব। ধর্মবোধে উদারনৈকি চেতনার উন্মেষ ও যথার্থ মানবিক মূল্যবোধের বিকাশই এক অখণ্ড শান্তিময় বিশ্ব বিনির্মাণের মৌলিক উপাদান। ‘বসুধৈব টুকুম্বকম’- গোটা বিশ্বই আমার আত্মীয়- এ হোক আমাদের আলোকিত প্রত্যয়। সত্য সুন্দরের আলোকে, শান্তি ও কল্যাণের সুবাতাসে অভিসিঞ্চিত হোক এ আর্ত বসুন্ধরা।
দুর্গতিনাশিনী মা দুর্গার আশীর্বাদের করুণাধারা সবার ওপর বর্ষিত হোক- দেশ ও জাতি সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধির আলোকছটায় উদ্ভাসিত হোক!
বিচারপতি গৌর গোপাল সাহা : সভাপতি, রামকৃষ্ণ মিশন, ঢাকা
No comments