নারায়ণগঞ্জে বাসমালিকদের ঘোষণা- শামীম ওসমানের শ্যালকের ‘চাঁদাবাজি’ বন্ধ হলে ভাড়া কমানো হবে
নসিব পরিবহন থেকে শামীম ওসমানের শ্যালক
এহসানুল হাসান ওরফে নিপুর ‘চাঁদাবাজি’ বন্ধ হলে বাসভাড়া দুই টাকা কমানোর
ঘোষণা দিয়েছেন মালিকেরা।
বাসমালিকদের অভিযোগ, শামীম
ওসমানের ছত্রচ্ছায়ায় তাঁর শ্যালক নিপু এ পরিবহন থেকে গত সাড়ে চার বছরে
অন্তত ছয় কোটি টাকা চাঁদা নিয়েছেন। গতকাল শুক্রবার নারায়ণগঞ্জ
কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে নসিব পরিবহনের কার্যালয়ে বেলা ১১টায় শুরু
হওয়া এক সংবাদ সমেঞ্চলনে এ অভিযোগ করা হয়।
সংবাদ সমেঞ্চলন শেষ হওয়ার প্রায় আধঘণ্টা পর র্যাব-১১-এর সদস্যরা নিপুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং নসিব পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দাবিদার সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া ও তাঁর সহযোগী ফরহাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করেন। র্যাব-১১-এর নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্পের কমান্ডিং অফিসার লে. কমান্ডার মাসুদ রানা প্রথম আলোকে জানান, নসিব পরিবহনে চাঁদা দাবি ও চাঁদা না পেয়ে বাস চলাচলে বাধা দেওয়ার অভিযোগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাইফুল ও ফরহাদকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সংবাদ সমেঞ্চলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নসিব পরিবহনের চেয়ারম্যান সৈয়দ আশরাফুল আউয়াল। এতে বক্তব্য দেন নসিব পরিবহনের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহামঞ্চদ আল-আমিন, পরিচালক মোহামঞ্চদ আসলাম, তোফাজ্জল হোসেন প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড হয়ে নসিব পরিবহনের ২৪টি বাস সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড় পর্যন্ত চলাচল করে। এ জন্য মাথাপিছু ভাড়া নেওয়া হয় ১৮ টাকা। ২০০৫ সালে পরিবহন কোম্পানির যাত্রা শুরুর পর থেকে কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি নিপু এ পরিবহন থেকে প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। তখন সাবেক সাংসদ এ কে এম শামীম ওসমানকে জানালে বিষয়টি তিনি সমাধানের আশ্বাস দেন। সেই সঙ্গে এ নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার হুঁশিয়ারি দেন। পরবর্তী সময়ে তাঁর কাছে বহুবার গিয়েও কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। পরে আমরা বুঝতে পারি, শামীম ওসমানের নির্দেশেই নিপু চাঁদা আদায় করে আসছিলেন।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বাসমালিকেরা তৎকালীন জেলা প্রশাসক শামসুর রহমানকে মৌখিক ও লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়েও কোনো সমাধান পাননি। পরবর্তী সময়ে নিপু ও তাঁর সহযোগী সাইফুলসহ অন্যদের সব অন্যায় নীরবে সহ্য করেন। নিপু নিজ উদ্যোগে ২০০৯ সালের ৭ জানুয়ারি নসিব পরিবহনের একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করেন। পরে ভয়ভীতি দেখিয়ে মালিকদের স্বাক্ষর নিয়ে নিজে কোম্পানির চেয়ারম্যান ও সাইফুলকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক করেন। ২০০৯ থেকে ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিপুর নেতৃত্বাধীন ‘চাঁদাবাজ চক্র’ দৈনিক ১০ হাজার টাকা নিত। চেয়ারম্যানের পদ দখলের পর থেকে কোম্পানি থেকে প্রতি মাসে অন্তত ১৫ লাখ টাকা নেন। এভাবে গত জুলাই পর্যন্ত নিপু নসিব পরিবহন থেকে অন্তত ছয় কোটি টাকা হাতিয়ে দেন।’
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, কোম্পানির আয়ের হিসাব খাতা মালিকদের দেখতে দেননি নিপু। এসবের প্রতিবাদ করলেই নিপু মালিকদের মারধর করতেন এবং মামলার হুমকি দিতেন। কোনো বাসমালিক প্রতিবাদ করলে তাঁর বাস ওই যাত্রাপথে চলতে দিতেন না। একপর্যায়ে চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) পদ দখলের প্রতিবাদ করায় কোম্পানির বৈধ এমডি মোহামঞ্চদ আল-আমিনের বাস চলাচল করতে দেননি নিপু। সর্বশেষ ২১ আগস্ট মোহামঞ্চদ আসলামের দুটি বাসের চলাচলও বন্ধ করে দেন তিনি। পরে সংরক্ষিত যাত্রার (রিজার্ভ ট্রিপ) মাধ্যমে আসলাম যে ভাড়া পেয়েছিলেন, তা থেকে চাঁদা চাওয়ার প্রতিবাদ করায় তাঁর বাসের চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বাসমালিকেরা তাঁদের পরিবহনের নতুন কমিটি করেছেন। সেখানে নিপু-সাইফুলসহ কোনো ‘বহিরাগত’ নেই। নতুন কমিটি নসিব পরিবহনের ‘চাঁদাবাজদের’ রুখে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার করেছে। চাঁদা দিতে না হলে আগামী এক মাসের মধ্যে নসিব পরিবহনের ভাড়া দুই টাকা পর্যন্ত কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। চাঁদাবাজি বন্ধে প্রশাসন, সাংবাদিক, সুধী সমাজসহ সাধারণ মানুষের সহযোগিতা কামনা করা হয়।
নসিব পরিবহনের মালিকেরা সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করেন, সংবাদ সমেঞ্চলনে না আসার জন্য গত বৃহস্পতিবার রাতে শামীম ওসমান ও তাঁর শ্যালক নিপু টেলিফোনে মালিকদের হুমকি দেন। তাঁদের হুমকির কারণে ২৪ জন মালিকের মধ্যে সাতজন সংবাদ সমেঞ্চলনে উপস্থিত থাকতে পারেননি।
গতকাল বিকেলে শামীম ওসমান ও নিপুর মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও বন্ধ পাওয়া যায়।
পুলিশি বাধার অভিযোগ: সংবাদ সমেঞ্চলন শুরু হলে সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শহীদুল ইসলাম নসিব পরিবহনের কার্যালয়ে ঢুকে তা বন্ধ করার জন্য আয়োজকদের হুমকি দেন। এ সময় গণমাধ্যমকর্মীরা এর প্রতিবাদ জানালে পুলিশ সমেঞ্চলনস্থল ত্যাগ করে। পরে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে এসআই শহীদুল প্রথম আলোকে বলেন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) নির্দেশে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। ওসি এস এম মঞ্জুর কাদের মুঠোফোনে বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হতে পারে—এমন খবরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠান তিনি।
যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম: যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি বলেন, ওসমান পরিবারের তিন ভাই নাসিম, সেলিম ও শামীম ওসমান এবং তাঁদের দুই ছেলে আজমেরী ও অয়ন ওসমান তাঁদের সহযোগীদের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের পরিবহন খাত থেকে শত শত কোটি টাকা লুট করে নিচ্ছেন। বেশির ভাগ পরিবহন মালিক বাসভাড়া কমানোর পক্ষে। কিন্তু ওসমান পরিবারের চাঁদাবাজির কারণে মালিকেরা বাসভাড়া কমাতে পারছেন না।
সংবাদ সমেঞ্চলন শেষ হওয়ার প্রায় আধঘণ্টা পর র্যাব-১১-এর সদস্যরা নিপুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং নসিব পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দাবিদার সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া ও তাঁর সহযোগী ফরহাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করেন। র্যাব-১১-এর নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্পের কমান্ডিং অফিসার লে. কমান্ডার মাসুদ রানা প্রথম আলোকে জানান, নসিব পরিবহনে চাঁদা দাবি ও চাঁদা না পেয়ে বাস চলাচলে বাধা দেওয়ার অভিযোগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাইফুল ও ফরহাদকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সংবাদ সমেঞ্চলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নসিব পরিবহনের চেয়ারম্যান সৈয়দ আশরাফুল আউয়াল। এতে বক্তব্য দেন নসিব পরিবহনের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহামঞ্চদ আল-আমিন, পরিচালক মোহামঞ্চদ আসলাম, তোফাজ্জল হোসেন প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড হয়ে নসিব পরিবহনের ২৪টি বাস সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড় পর্যন্ত চলাচল করে। এ জন্য মাথাপিছু ভাড়া নেওয়া হয় ১৮ টাকা। ২০০৫ সালে পরিবহন কোম্পানির যাত্রা শুরুর পর থেকে কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি নিপু এ পরিবহন থেকে প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। তখন সাবেক সাংসদ এ কে এম শামীম ওসমানকে জানালে বিষয়টি তিনি সমাধানের আশ্বাস দেন। সেই সঙ্গে এ নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার হুঁশিয়ারি দেন। পরবর্তী সময়ে তাঁর কাছে বহুবার গিয়েও কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। পরে আমরা বুঝতে পারি, শামীম ওসমানের নির্দেশেই নিপু চাঁদা আদায় করে আসছিলেন।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বাসমালিকেরা তৎকালীন জেলা প্রশাসক শামসুর রহমানকে মৌখিক ও লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়েও কোনো সমাধান পাননি। পরবর্তী সময়ে নিপু ও তাঁর সহযোগী সাইফুলসহ অন্যদের সব অন্যায় নীরবে সহ্য করেন। নিপু নিজ উদ্যোগে ২০০৯ সালের ৭ জানুয়ারি নসিব পরিবহনের একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করেন। পরে ভয়ভীতি দেখিয়ে মালিকদের স্বাক্ষর নিয়ে নিজে কোম্পানির চেয়ারম্যান ও সাইফুলকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক করেন। ২০০৯ থেকে ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিপুর নেতৃত্বাধীন ‘চাঁদাবাজ চক্র’ দৈনিক ১০ হাজার টাকা নিত। চেয়ারম্যানের পদ দখলের পর থেকে কোম্পানি থেকে প্রতি মাসে অন্তত ১৫ লাখ টাকা নেন। এভাবে গত জুলাই পর্যন্ত নিপু নসিব পরিবহন থেকে অন্তত ছয় কোটি টাকা হাতিয়ে দেন।’
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, কোম্পানির আয়ের হিসাব খাতা মালিকদের দেখতে দেননি নিপু। এসবের প্রতিবাদ করলেই নিপু মালিকদের মারধর করতেন এবং মামলার হুমকি দিতেন। কোনো বাসমালিক প্রতিবাদ করলে তাঁর বাস ওই যাত্রাপথে চলতে দিতেন না। একপর্যায়ে চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) পদ দখলের প্রতিবাদ করায় কোম্পানির বৈধ এমডি মোহামঞ্চদ আল-আমিনের বাস চলাচল করতে দেননি নিপু। সর্বশেষ ২১ আগস্ট মোহামঞ্চদ আসলামের দুটি বাসের চলাচলও বন্ধ করে দেন তিনি। পরে সংরক্ষিত যাত্রার (রিজার্ভ ট্রিপ) মাধ্যমে আসলাম যে ভাড়া পেয়েছিলেন, তা থেকে চাঁদা চাওয়ার প্রতিবাদ করায় তাঁর বাসের চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বাসমালিকেরা তাঁদের পরিবহনের নতুন কমিটি করেছেন। সেখানে নিপু-সাইফুলসহ কোনো ‘বহিরাগত’ নেই। নতুন কমিটি নসিব পরিবহনের ‘চাঁদাবাজদের’ রুখে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার করেছে। চাঁদা দিতে না হলে আগামী এক মাসের মধ্যে নসিব পরিবহনের ভাড়া দুই টাকা পর্যন্ত কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। চাঁদাবাজি বন্ধে প্রশাসন, সাংবাদিক, সুধী সমাজসহ সাধারণ মানুষের সহযোগিতা কামনা করা হয়।
নসিব পরিবহনের মালিকেরা সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করেন, সংবাদ সমেঞ্চলনে না আসার জন্য গত বৃহস্পতিবার রাতে শামীম ওসমান ও তাঁর শ্যালক নিপু টেলিফোনে মালিকদের হুমকি দেন। তাঁদের হুমকির কারণে ২৪ জন মালিকের মধ্যে সাতজন সংবাদ সমেঞ্চলনে উপস্থিত থাকতে পারেননি।
গতকাল বিকেলে শামীম ওসমান ও নিপুর মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও বন্ধ পাওয়া যায়।
পুলিশি বাধার অভিযোগ: সংবাদ সমেঞ্চলন শুরু হলে সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শহীদুল ইসলাম নসিব পরিবহনের কার্যালয়ে ঢুকে তা বন্ধ করার জন্য আয়োজকদের হুমকি দেন। এ সময় গণমাধ্যমকর্মীরা এর প্রতিবাদ জানালে পুলিশ সমেঞ্চলনস্থল ত্যাগ করে। পরে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে এসআই শহীদুল প্রথম আলোকে বলেন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) নির্দেশে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। ওসি এস এম মঞ্জুর কাদের মুঠোফোনে বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হতে পারে—এমন খবরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠান তিনি।
যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম: যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি বলেন, ওসমান পরিবারের তিন ভাই নাসিম, সেলিম ও শামীম ওসমান এবং তাঁদের দুই ছেলে আজমেরী ও অয়ন ওসমান তাঁদের সহযোগীদের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের পরিবহন খাত থেকে শত শত কোটি টাকা লুট করে নিচ্ছেন। বেশির ভাগ পরিবহন মালিক বাসভাড়া কমানোর পক্ষে। কিন্তু ওসমান পরিবারের চাঁদাবাজির কারণে মালিকেরা বাসভাড়া কমাতে পারছেন না।
No comments