হালিমার শত সন্তান, কালী খালার ক্ষোভ by মরিয়ম চম্পা
দাই
মা। বর্তমান প্রজন্মের কাছে এ শব্দটি অচেনা। এক সময় গ্রামে গ্রামে দাই
মা’দের কদর ছিল। মায়ের মতোই দেখতো তার সন্তানরা। আর এতে দাই মা’রা গর্ব
করতেন। কিন্তু এখন গ্রামেও দাই মা’র সংখ্যা অনেক কমে গেছে। শহরে তো দেখা
ভার। দাই মা’র জায়গা দখল করেছে হাসপাতাল, ক্লিনিকগুলোর ডাক্তার ও নার্সরা।
তারা অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দিয়েই দায় সারেন। কখনোই দাই মা হতে পারেন না। হতে চানও না। রাজধানীর নিম্ন মধ্যবিত্তদের বাসস্থানের এলাকাগুলোতে এখনো দুয়েকজন দাই মা’র দেখা মেলে। তারা অন্তঃসত্ত্বা মায়ের খবর পেলেই ছুটে যান। নিজ থেকেই উপদেশ দেন। পুরো দশ মাস দেখাশুনা করেন। তার হাতেই জন্ম নেয় সন্তান। বিনিময়ে একটি শাড়ি কাপড়, কিছু টাকা পান।
এতেই তারা খুশি। এমনই একজন মিরপুর ভাষানটেকের হালিমা। এ পর্যন্ত তার হাতে জন্ম নিয়েছে শতাধিক সন্তান। কীভাবে দাই মা হয়ে উঠলেন হালিমা? নিজ মুখেই জানান তার কথা। বলেন, মাত্র ১৩ বছর বয়সে একই এলাকার হাসেম হাওলাদারের সঙ্গে বিয়ে হয় আমার। মা মারা যাওয়ার পর সৎ মায়ের অত্যাচার থেকে বাঁচাতে অল্প বয়সেই বিয়ে দেন বাবা। কিন্তু দুঃখ তার পিছু ছাড়েনি। প্রথম সন্তান হানিফার জন্মের সময় প্রসব বেদনা উঠলে কাউকে কাছে পাননি তিনি। অনেক কষ্টে নিজে নিজেই সন্তানের জন্ম দেন হালিমা। এভাবেই তার দাই জীবনের গল্পের শুরু। সুখেই চলছিল তার সংসার। এরই মধ্যে কয়েক বছরের মাথায় স্বামীও মারা যান। হালিমার বাড়ি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জে।
হালিমা বলেন, এই দু’হাতে কতো সন্তানের যে জন্ম দিয়েছি তার কোনো হিসাব নেই। নিজ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের পাশাপাশি আশেপাশের উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে আমার ডাক আসতো। অঙ্গুল গুনে হিসাব করে বলেন, এ পর্যন্ত ১শ’ সন্তানের উপরে জন্ম দানের সাক্ষী হয়েছি আমি। তিনি বলেন, এসব কাজে সময়-অসময় নেই। রাত তিনটা চারটায় দূর-দূরান্তে যেতে হতো। তবে বেশির ভাগ প্রসবই হতো রাতের বেলা। এতে আমি মোটেই বিরক্ত হতাম না। বরং কোনো জটিলতা ছাড়া স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের পর মা ও পরিবারের সদস্যদের আনন্দ দেখে খুশি হয়েছি।
তারা এখন অনেকেই অনেক ভালো অবস্থানে আছেন। এর মধ্যে আছে- ব্যাংকার, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী। অনেকেই আবার কপাল দোষে ভ্যান চালায়। অন্যের খেতে খামারে দিনমজুরের কাজ করে। আবার অনেকেই হয়তো জানে না যে, তাদের জন্মের সাক্ষী আমি। আমার হাতেই তাদের জন্ম। তবে কেউ কেউ তাদের মায়ের কাছে জন্মের গল্প শুনে ঈদ, কোরবানি বা বিয়েতে দাওয়াত করে। নতুন কাপড় দেয়। টাকা দেয়। আজ থেকে ২০/২৫ বছর আগে গ্রামে ওভাবে সিজারের প্রচলন ছিল না। তখন দাই’রা ছিল একমাত্র ভরসা। বাচ্চা কনসিভ থেকে শুরু করে জন্মগ্রহণের আগ পর্যন্ত সপ্তাহ অন্তর কয়েক বার বাড়ি বাড়ি গিয়ে মায়ের স্বাস্থ্যের খবর নিতেন হালিমা। বিভিন্ন পরামর্শ দেয়ার কাজও তিনি করতেন। তখন হাসপাতাল কিংবা ডাক্তার এত ছিল না। যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল খুবই খারাপ। যারা মোটামুটি সচ্ছল ছিল তারা বড় নৌকা বা ট্রলার ভাড়া করে শেষ মুহূর্তে গর্ভবতী মাকে বরিশাল নিয়ে যেতেন। তখন সকাল সাড়ে ৬টা আর বিকাল ৪টা এই দুই বেলা আমাদের ঘাট থেকে বরিশালে লঞ্চ যেত। একসময় মেয়েকে নিয়ে জীবন বাঁচাতে ঢাকায় পাড়ি জমান। মেয়ে বড় হয়। বিয়ে হয়। তার ঘরেও আসে ঘর আলো করে পুত্র সন্তান। নাম রাখা হয় নীরু। এই নীরুর পরিচয়েই এখন পরিচিত ভাষানটেক এলাকায়। কারো প্রসব বেদনা উঠলেই ডাক পড়ে নীরুর দাদির। হালিমাও পরম মমতায় দাই মা’র কাজ করেন। হালিমা বলেন, আমি মনে করি এটি একটি সেবামূলক কাজ।
গ্রামে যখন দাই মা’র কাজ করেছি তখন, বিনিময়ে একটি নতুন কাপড়, একটি সাবান, ২০ বা ৫০ টাকা আর একবেলা খাবার জুটতো। অনেক সময় গরিব মায়েদের কাছ থেকে কোনো উপহার তো নিতামই না বরং তাকে উল্টো সাহায্য করতাম। তবে সবক্ষেত্রেই যে সফল হয়েছি এমনটা নয়। তিনি বলেন, এখনকার মায়েরা তো সন্তান গর্ভে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঠিক করে রাখে সিজারে বাচ্চা জন্ম দিবে। পুরনো দিনের মানুষ হলেও আমি আধুনিকায়নের বিপক্ষে না। তবে কথায় কথায় মায়েদের সিজারের বিষয়টি আমি ভালো চোখে দেখি না। কারণ গত কয়েক বছর আগে একটি এনজিওর পক্ষ থেকে আমাদের ধাত্রী বিদ্যার ওপর একটি ট্রেনিংয়ে জেনেছি সিজার পরবর্তী একজন মায়ের কি কি সমস্যা হয়। যেটা একসময় পরবর্তী সন্তান জন্মদানে মায়ের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে হয়। এখন আর আগের মতো আমাদের কদর নেই। আগের মতো আর ডাক আসে না। ।
এমনই আরেকজন দাই মা কাঞ্চনীর মা কালী। থাকেন ভাষানটেক বস্তিতে। সবার কাছে কালী খালা নামেই পরিচিত। হালকা পাতলা ফুরফুরে শরীর নিয়ে বস্তির এ গলি থেকে ও গলি ছুটে চলাই তার কাজ। বস্তির কার ছেলে নতুন বিয়ে করেছে, কার মেয়ের বিয়ে হয়েছে তাদের কেউ পোয়াতি কিনা এসবই তার নেশার বস্তু। কালী খালা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘এখন বস্তির মানুষও কথায় কথায় সিজার শিখে গেছে। কি সিজার আইলো দেশে। কালী খালা বলেন, কাঞ্চনীর জন্মের পর ওর বাপ মারা গেলে দ্বিতীয় স্বামীর সুখও আমার কপালে সয়নি। কাঞ্চনীরা মোট ৪ ভাই বোন। এই কাজ করেই ওদের বড় করেছি। বিয়ে দিয়েছি।
বছর দশ-বারো আগে গ্রামের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশনের ভিটামাটি হারিয়ে ছেলেমেয়ে নিয়ে ভাষানটেক বস্তিতে উঠি। আজ থেকে একযুগ আগেও এই এলাকায় শিয়াল কুকুর দৌড়াতো। তখন মাটিকাটা, বালুঘাট, মিরপুর কালসি এলকায় দাই মা’র কাজ করেছি। বস্তির অনেক ছেলে মেয়েরই জন্ম আমার হাতে। এমন ঘটনাও আছে মা-মেয়ে দুজনেরই বাচ্চা হয়েছে আমার হাতে। একটা সময় আমাদের অনেক কদর ছিল। এখন আর আগের মতো ডাকে না। তিনি বলেন, এটাতো একধরনের সেবা। আমরা মানুষের সেবা করে থাকি। কিন্তু আমাদের কথা কেউ ভাবে না। সরকারের পক্ষ থেকেও আমরা কোনো সাহায্য পাই না। মাঝে মধ্যে কিছু এনজিও এসে টুকিটাকি প্রশিক্ষণ দেয়। সঙ্গে সামান্য কিছু টাকা। কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে একসময় হারিয়ে যাবে ধাত্রী পেশা। এমনিতেই এখন দাই মা প্রচলন উঠে গেছে সমাজ থেকে। গ্রামেগঞ্জে এখনো দাই মারা সামলাচ্ছেন। কিন্তু সংখ্যায় একেবারে কম। বিভিন্নভাবে তাদের প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে। কিন্তু সমাজ যে বদলে গেছে। এখনকার মেয়েরা দাই মা’র চেয়ে হাসপাতালেই বেশি আগ্রহী। তাই তো ব্যথা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দৌড়ায় হাসপাতালে। ডাক্তারের কাছে। একটু ধৈর্য ধরার ক্ষমতাও নেই তাদের।
তারা অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দিয়েই দায় সারেন। কখনোই দাই মা হতে পারেন না। হতে চানও না। রাজধানীর নিম্ন মধ্যবিত্তদের বাসস্থানের এলাকাগুলোতে এখনো দুয়েকজন দাই মা’র দেখা মেলে। তারা অন্তঃসত্ত্বা মায়ের খবর পেলেই ছুটে যান। নিজ থেকেই উপদেশ দেন। পুরো দশ মাস দেখাশুনা করেন। তার হাতেই জন্ম নেয় সন্তান। বিনিময়ে একটি শাড়ি কাপড়, কিছু টাকা পান।
এতেই তারা খুশি। এমনই একজন মিরপুর ভাষানটেকের হালিমা। এ পর্যন্ত তার হাতে জন্ম নিয়েছে শতাধিক সন্তান। কীভাবে দাই মা হয়ে উঠলেন হালিমা? নিজ মুখেই জানান তার কথা। বলেন, মাত্র ১৩ বছর বয়সে একই এলাকার হাসেম হাওলাদারের সঙ্গে বিয়ে হয় আমার। মা মারা যাওয়ার পর সৎ মায়ের অত্যাচার থেকে বাঁচাতে অল্প বয়সেই বিয়ে দেন বাবা। কিন্তু দুঃখ তার পিছু ছাড়েনি। প্রথম সন্তান হানিফার জন্মের সময় প্রসব বেদনা উঠলে কাউকে কাছে পাননি তিনি। অনেক কষ্টে নিজে নিজেই সন্তানের জন্ম দেন হালিমা। এভাবেই তার দাই জীবনের গল্পের শুরু। সুখেই চলছিল তার সংসার। এরই মধ্যে কয়েক বছরের মাথায় স্বামীও মারা যান। হালিমার বাড়ি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জে।
হালিমা বলেন, এই দু’হাতে কতো সন্তানের যে জন্ম দিয়েছি তার কোনো হিসাব নেই। নিজ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের পাশাপাশি আশেপাশের উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে আমার ডাক আসতো। অঙ্গুল গুনে হিসাব করে বলেন, এ পর্যন্ত ১শ’ সন্তানের উপরে জন্ম দানের সাক্ষী হয়েছি আমি। তিনি বলেন, এসব কাজে সময়-অসময় নেই। রাত তিনটা চারটায় দূর-দূরান্তে যেতে হতো। তবে বেশির ভাগ প্রসবই হতো রাতের বেলা। এতে আমি মোটেই বিরক্ত হতাম না। বরং কোনো জটিলতা ছাড়া স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের পর মা ও পরিবারের সদস্যদের আনন্দ দেখে খুশি হয়েছি।
তারা এখন অনেকেই অনেক ভালো অবস্থানে আছেন। এর মধ্যে আছে- ব্যাংকার, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী। অনেকেই আবার কপাল দোষে ভ্যান চালায়। অন্যের খেতে খামারে দিনমজুরের কাজ করে। আবার অনেকেই হয়তো জানে না যে, তাদের জন্মের সাক্ষী আমি। আমার হাতেই তাদের জন্ম। তবে কেউ কেউ তাদের মায়ের কাছে জন্মের গল্প শুনে ঈদ, কোরবানি বা বিয়েতে দাওয়াত করে। নতুন কাপড় দেয়। টাকা দেয়। আজ থেকে ২০/২৫ বছর আগে গ্রামে ওভাবে সিজারের প্রচলন ছিল না। তখন দাই’রা ছিল একমাত্র ভরসা। বাচ্চা কনসিভ থেকে শুরু করে জন্মগ্রহণের আগ পর্যন্ত সপ্তাহ অন্তর কয়েক বার বাড়ি বাড়ি গিয়ে মায়ের স্বাস্থ্যের খবর নিতেন হালিমা। বিভিন্ন পরামর্শ দেয়ার কাজও তিনি করতেন। তখন হাসপাতাল কিংবা ডাক্তার এত ছিল না। যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল খুবই খারাপ। যারা মোটামুটি সচ্ছল ছিল তারা বড় নৌকা বা ট্রলার ভাড়া করে শেষ মুহূর্তে গর্ভবতী মাকে বরিশাল নিয়ে যেতেন। তখন সকাল সাড়ে ৬টা আর বিকাল ৪টা এই দুই বেলা আমাদের ঘাট থেকে বরিশালে লঞ্চ যেত। একসময় মেয়েকে নিয়ে জীবন বাঁচাতে ঢাকায় পাড়ি জমান। মেয়ে বড় হয়। বিয়ে হয়। তার ঘরেও আসে ঘর আলো করে পুত্র সন্তান। নাম রাখা হয় নীরু। এই নীরুর পরিচয়েই এখন পরিচিত ভাষানটেক এলাকায়। কারো প্রসব বেদনা উঠলেই ডাক পড়ে নীরুর দাদির। হালিমাও পরম মমতায় দাই মা’র কাজ করেন। হালিমা বলেন, আমি মনে করি এটি একটি সেবামূলক কাজ।
গ্রামে যখন দাই মা’র কাজ করেছি তখন, বিনিময়ে একটি নতুন কাপড়, একটি সাবান, ২০ বা ৫০ টাকা আর একবেলা খাবার জুটতো। অনেক সময় গরিব মায়েদের কাছ থেকে কোনো উপহার তো নিতামই না বরং তাকে উল্টো সাহায্য করতাম। তবে সবক্ষেত্রেই যে সফল হয়েছি এমনটা নয়। তিনি বলেন, এখনকার মায়েরা তো সন্তান গর্ভে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঠিক করে রাখে সিজারে বাচ্চা জন্ম দিবে। পুরনো দিনের মানুষ হলেও আমি আধুনিকায়নের বিপক্ষে না। তবে কথায় কথায় মায়েদের সিজারের বিষয়টি আমি ভালো চোখে দেখি না। কারণ গত কয়েক বছর আগে একটি এনজিওর পক্ষ থেকে আমাদের ধাত্রী বিদ্যার ওপর একটি ট্রেনিংয়ে জেনেছি সিজার পরবর্তী একজন মায়ের কি কি সমস্যা হয়। যেটা একসময় পরবর্তী সন্তান জন্মদানে মায়ের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে হয়। এখন আর আগের মতো আমাদের কদর নেই। আগের মতো আর ডাক আসে না। ।
এমনই আরেকজন দাই মা কাঞ্চনীর মা কালী। থাকেন ভাষানটেক বস্তিতে। সবার কাছে কালী খালা নামেই পরিচিত। হালকা পাতলা ফুরফুরে শরীর নিয়ে বস্তির এ গলি থেকে ও গলি ছুটে চলাই তার কাজ। বস্তির কার ছেলে নতুন বিয়ে করেছে, কার মেয়ের বিয়ে হয়েছে তাদের কেউ পোয়াতি কিনা এসবই তার নেশার বস্তু। কালী খালা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘এখন বস্তির মানুষও কথায় কথায় সিজার শিখে গেছে। কি সিজার আইলো দেশে। কালী খালা বলেন, কাঞ্চনীর জন্মের পর ওর বাপ মারা গেলে দ্বিতীয় স্বামীর সুখও আমার কপালে সয়নি। কাঞ্চনীরা মোট ৪ ভাই বোন। এই কাজ করেই ওদের বড় করেছি। বিয়ে দিয়েছি।
বছর দশ-বারো আগে গ্রামের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশনের ভিটামাটি হারিয়ে ছেলেমেয়ে নিয়ে ভাষানটেক বস্তিতে উঠি। আজ থেকে একযুগ আগেও এই এলাকায় শিয়াল কুকুর দৌড়াতো। তখন মাটিকাটা, বালুঘাট, মিরপুর কালসি এলকায় দাই মা’র কাজ করেছি। বস্তির অনেক ছেলে মেয়েরই জন্ম আমার হাতে। এমন ঘটনাও আছে মা-মেয়ে দুজনেরই বাচ্চা হয়েছে আমার হাতে। একটা সময় আমাদের অনেক কদর ছিল। এখন আর আগের মতো ডাকে না। তিনি বলেন, এটাতো একধরনের সেবা। আমরা মানুষের সেবা করে থাকি। কিন্তু আমাদের কথা কেউ ভাবে না। সরকারের পক্ষ থেকেও আমরা কোনো সাহায্য পাই না। মাঝে মধ্যে কিছু এনজিও এসে টুকিটাকি প্রশিক্ষণ দেয়। সঙ্গে সামান্য কিছু টাকা। কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে একসময় হারিয়ে যাবে ধাত্রী পেশা। এমনিতেই এখন দাই মা প্রচলন উঠে গেছে সমাজ থেকে। গ্রামেগঞ্জে এখনো দাই মারা সামলাচ্ছেন। কিন্তু সংখ্যায় একেবারে কম। বিভিন্নভাবে তাদের প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে। কিন্তু সমাজ যে বদলে গেছে। এখনকার মেয়েরা দাই মা’র চেয়ে হাসপাতালেই বেশি আগ্রহী। তাই তো ব্যথা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দৌড়ায় হাসপাতালে। ডাক্তারের কাছে। একটু ধৈর্য ধরার ক্ষমতাও নেই তাদের।
No comments