বিশ্ব নেতৃত্বের আদর্শ জেসিন্দা আরডেন by অনিম আরাফাত
বিশ্বের
সবথেকে কম বয়সী নারী প্রধানমন্ত্রী নিউজিল্যান্ডের জেসিন্দা আরডেন।
মতাদর্শিকভাবে নিজেকে সোশ্যাল ডেমোক্রেট দাবি করা এই নেতা মাত্র ৩৮ বছর
বয়সেই তিনি নিজ দল ও দেশের মধ্যে হয়ে উঠেছেন সবথেকে জনপ্রিয় ব্যক্তি।
সামপ্রতিক সময়ে বিরোধী দলের কাছ থেকেও কুড়িয়েছেন ব্যাপক প্রশংসা। কিন্তু
তিনি সমগ্র বিশ্বে আলোচিত ও প্রশংসিত হয়েছেন গত সপ্তাহে ক্রাইস্টচার্চে
সন্ত্রাসী হামলার পর। নিউজিল্যান্ডের মতো শান্তিপূর্ণ ও পৃথিবীর অন্যতম
নিরাপদ রাষ্ট্রে যখন বন্দুকধারীর গুলিতে ৫০ জন নিরীহ মানুষ নিহত হলো তারপর
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যে ভূমিকা জেসিন্দা আরডেন রেখেছেন তা সকল
রাষ্ট্রপ্রধানের জন্য অনুকরণীয়। হামলার শিকার শরণার্থী মুসলিমদের পাশে গিয়ে
দাঁড়িয়েছেন তিনি, জরিয়ে ধরে সান্ত্বনা দিয়েছেন। স্পষ্ট করে এই হামলাকে
সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড আখ্যা দিয়েছেন। সঙ্গে নিশ্চিত করেছেন নিউজিল্যান্ড
বৈচিত্র্যতায় বিশ্বাসী, অভিবাসীরা সেদেশে নিজেদেরই মানুষ।
হামলার এক সপ্তাহের মধ্যে কোনো ধরনের কড়া বাক্য উচ্চারণ ছাড়াই সে এই ঘৃণার বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে দিয়েছেন। দেশটির অস্ত্র আইন পরিবর্তন করার ঘোষণা দিয়েছেন যা এখন বাস্তবায়নের পথে। মুসলিমদেরকে আরো কাছে টেনে নিয়েছেন। তাদের জুমার নামাজ সরাসরি সমপ্রচার করা হয়েছে নিউজিল্যান্ডের টিভি চ্যানেলগুলোতে। নিউজিল্যান্ডের হাজার হাজার অধিবাসীকে উদ্বুদ্ধ করেছেন শরণার্থীদের পাশে দাঁড়াতে। স্থাপন করেছেন অনন্য এক নজির। নিউজিল্যান্ডের একদম প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠে এসেছেন জেসিন্দা আরডেন। ১৯৮০ সালের ২৬শে শুলাই নিউজিল্যান্ডের হ্যামিল্টনে জন্মগ্রহণ করেছেন মহান এই নেতা। তার বাবা ছিলেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা ও তার মা একটি স্কুলের খাবার পরিবেশনের দায়িত্বে ছিলেন। জেসিন্দা মরিন্সভিল্লে কলেজে পড়াশুনা করেছেন। ২০০১ সালে তিনি ওয়াইকাটো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হেলেন ক্লার্কের অফিসে গবেষণা কাজে নিয়োজিত হন। এছাড়া তিনি বৃটেনে প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করেছেন। রাজনীতির সঙ্গে এভাবেই যুক্ত হন তিনি। তবে তার ফুপি ম্যারি আরডেন লেবার পার্টির সঙ্গে সংযুক্ত থাকায় কিশোরী বয়সেই রাজনীতির সঙ্গে পরিচিত হয়ে উঠেন তিনি।
২০০৮ সালে সমাজতান্ত্রিক তরুণদের আন্তর্জাতিক সংগঠনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন জেসিন্দা আরডেন। সে বছরই তিনি প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের বাম ঘরানার দল লেবার পার্টির একজন এমপি নির্বাচিত হন। এর ঠিক দশ বছরের মধ্যেই তিনি নিজেকে লেবার পার্টির সবথেকে যোগ্য নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন। ২০১৭ সালের ১লা মার্চ তিনি লেবার পার্টির ডেপুটি প্রধান নির্বাচিত হন। ওই বছরের ১লা আগস্ট তিনি লেবার পার্টির প্রধান নেতা নির্বাচিত হন। সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে তিনি জোট গঠনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে সক্ষম হন। এখানে উল্লেখ্য যে, জেসিন্দা আরডেন পার্টির প্রধান হওয়ার আগে আন্ড্রু লিটল ছিলেন এ পদের অধিকারী। তার সময়ে লেবার পার্টির জনপ্রিয়তায় ব্যাপক ধস নামে ফলে তাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। দলের কঠিন সময়ে এর হাল ধরে তাকে পুনরায় জনপ্রিয় করে তোলেন জেসিন্দা আরডেন। রাজনৈতিক নানা সমীকরণ মিলিয়ে ২০১৭ সালের ২৬শে অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন আরডেন। ক্ষমতায় বসেই তিনি ঘোষণা দেন, তার সরকার হবে শক্তিশালী ও সংবেদনশীল। ক্ষমতায় বসার কিছুদিন পরেই গর্ভবতী হন জেসিন্দা আরডেন। জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছেন উপস্থাপক ক্লার্ক গেফোর্ডকে। তবে এজন্য তিনি দায়িত্বে গাফিলতি দেননি। গর্ভবতী অবস্থায়ই তিনি ইউরোপ সফর করেছেন, রাষ্ট্র নায়কের দায়িত্বও পালন করেছেন সফলভাবে। শেষদিনে মাত্র ৬ সপ্তাহের মাতৃত্বকালীন ছুটি নিয়েছেন আরডেন। ২০১৮ সালে ‘ফোর্বসের পাওয়ার উইমেনের’ তালিকায় জায়গা করে নেন তিনি। আছেন টাইম ম্যাগাজিনে সবচেয়ে প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির তালিকাতেও। জেসিন্দা আরডেন সমকামী বিবাহের সমর্থক। সমকামীদের অধিকারের পক্ষে কথা বলেছেন তিনি। জলবায়ু পরিবর্তন, শিশু দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। নিজ দেশে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একট সহানুভূতিশীল সরকার। ক্রাইস্টচার্চে হামলার পর তিনি যেভাবে ছুটে গিয়েছেন তাতে আমরা এর প্রমাণ পেয়েছি। একজন প্রকৃত রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে যা যা করা দরকার তেমন করেই তিনি সকল মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। আর এভাবেই নিজেকে বিশ্ব নেতৃত্বের আদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন জেসিন্দা আরডেন।
হামলার এক সপ্তাহের মধ্যে কোনো ধরনের কড়া বাক্য উচ্চারণ ছাড়াই সে এই ঘৃণার বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে দিয়েছেন। দেশটির অস্ত্র আইন পরিবর্তন করার ঘোষণা দিয়েছেন যা এখন বাস্তবায়নের পথে। মুসলিমদেরকে আরো কাছে টেনে নিয়েছেন। তাদের জুমার নামাজ সরাসরি সমপ্রচার করা হয়েছে নিউজিল্যান্ডের টিভি চ্যানেলগুলোতে। নিউজিল্যান্ডের হাজার হাজার অধিবাসীকে উদ্বুদ্ধ করেছেন শরণার্থীদের পাশে দাঁড়াতে। স্থাপন করেছেন অনন্য এক নজির। নিউজিল্যান্ডের একদম প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠে এসেছেন জেসিন্দা আরডেন। ১৯৮০ সালের ২৬শে শুলাই নিউজিল্যান্ডের হ্যামিল্টনে জন্মগ্রহণ করেছেন মহান এই নেতা। তার বাবা ছিলেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা ও তার মা একটি স্কুলের খাবার পরিবেশনের দায়িত্বে ছিলেন। জেসিন্দা মরিন্সভিল্লে কলেজে পড়াশুনা করেছেন। ২০০১ সালে তিনি ওয়াইকাটো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হেলেন ক্লার্কের অফিসে গবেষণা কাজে নিয়োজিত হন। এছাড়া তিনি বৃটেনে প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করেছেন। রাজনীতির সঙ্গে এভাবেই যুক্ত হন তিনি। তবে তার ফুপি ম্যারি আরডেন লেবার পার্টির সঙ্গে সংযুক্ত থাকায় কিশোরী বয়সেই রাজনীতির সঙ্গে পরিচিত হয়ে উঠেন তিনি।
২০০৮ সালে সমাজতান্ত্রিক তরুণদের আন্তর্জাতিক সংগঠনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন জেসিন্দা আরডেন। সে বছরই তিনি প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের বাম ঘরানার দল লেবার পার্টির একজন এমপি নির্বাচিত হন। এর ঠিক দশ বছরের মধ্যেই তিনি নিজেকে লেবার পার্টির সবথেকে যোগ্য নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন। ২০১৭ সালের ১লা মার্চ তিনি লেবার পার্টির ডেপুটি প্রধান নির্বাচিত হন। ওই বছরের ১লা আগস্ট তিনি লেবার পার্টির প্রধান নেতা নির্বাচিত হন। সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে তিনি জোট গঠনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে সক্ষম হন। এখানে উল্লেখ্য যে, জেসিন্দা আরডেন পার্টির প্রধান হওয়ার আগে আন্ড্রু লিটল ছিলেন এ পদের অধিকারী। তার সময়ে লেবার পার্টির জনপ্রিয়তায় ব্যাপক ধস নামে ফলে তাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। দলের কঠিন সময়ে এর হাল ধরে তাকে পুনরায় জনপ্রিয় করে তোলেন জেসিন্দা আরডেন। রাজনৈতিক নানা সমীকরণ মিলিয়ে ২০১৭ সালের ২৬শে অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন আরডেন। ক্ষমতায় বসেই তিনি ঘোষণা দেন, তার সরকার হবে শক্তিশালী ও সংবেদনশীল। ক্ষমতায় বসার কিছুদিন পরেই গর্ভবতী হন জেসিন্দা আরডেন। জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছেন উপস্থাপক ক্লার্ক গেফোর্ডকে। তবে এজন্য তিনি দায়িত্বে গাফিলতি দেননি। গর্ভবতী অবস্থায়ই তিনি ইউরোপ সফর করেছেন, রাষ্ট্র নায়কের দায়িত্বও পালন করেছেন সফলভাবে। শেষদিনে মাত্র ৬ সপ্তাহের মাতৃত্বকালীন ছুটি নিয়েছেন আরডেন। ২০১৮ সালে ‘ফোর্বসের পাওয়ার উইমেনের’ তালিকায় জায়গা করে নেন তিনি। আছেন টাইম ম্যাগাজিনে সবচেয়ে প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির তালিকাতেও। জেসিন্দা আরডেন সমকামী বিবাহের সমর্থক। সমকামীদের অধিকারের পক্ষে কথা বলেছেন তিনি। জলবায়ু পরিবর্তন, শিশু দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। নিজ দেশে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একট সহানুভূতিশীল সরকার। ক্রাইস্টচার্চে হামলার পর তিনি যেভাবে ছুটে গিয়েছেন তাতে আমরা এর প্রমাণ পেয়েছি। একজন প্রকৃত রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে যা যা করা দরকার তেমন করেই তিনি সকল মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। আর এভাবেই নিজেকে বিশ্ব নেতৃত্বের আদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন জেসিন্দা আরডেন।
No comments