রোহিঙ্গাদের দুর্ভোগের শেষ নেই
সেনাবাহিনী
ও তাদের দোসরদের নৃশংস নির্যাতনের শিকার হয়ে স্রোতের মতো বাংলাদেশে প্রবেশ
করতে থাকে মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা। এক বছর হতে চলেছে তারা এভাবে বাংলাদেশে
প্রবেশ করেছে। কিন্তু তাদের দুর্ভোগের শেষ হয়নি। এমন কি মিয়ানমারও তাদেরকে
গ্রহণ করতে এখন পর্যন্ত আন্তরিকতা দেখায়নি। উল্টো রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন
বিলম্ব হওয়ার জন্য সে দেশের নেত্রী অং সান সুচি দায় চাপিয়েছেন বাংলাদেশের
ওপর। মিয়ানমার থেকে দলে দলে পালিয়ে আসার পর বাংলাদেশে গাদাগাদি করে অবস্থান
করছেন এসব রোহিঙ্গা। সেখানে দেখা দিয়েছে নানা সামাজিক সমস্যা। গত বছর ২৫শে
আগস্ট আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি (আরসা) মিয়ানমারের নিরাপত্তা
রক্ষাকারীদের ওপর হামলা চালায়। এতে কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষী নিহত হন। এর পরই
রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংস নির্যাতন শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী ও তার দোসররা।
তারা নির্বিচারে গণধর্ষণ করে বালিকা, যুবতী ও নারীদের। গুলি করে হত্যা করে
অসংখ্য মানুষকে। আগুন ধরিয়ে নিশ্চিহ্ন করে দেয় গ্রামের পর গ্রাম। এরপর সেসব
গ্রামের ওপর তারা নির্মাণ করে সেনাবাহিনীর অবকাঠামো। এসব বিষয় প্রামাণ্য
আকারে উপস্থাপন করেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা।
রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমারের ওপর আছে আন্তর্জাতিক চাপ। তবে জাতিসংঘে এ
বিষয়ে উত্থাপিত একটি প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে চীন ও রাশিয়া। ফলে
মিয়ানমারের ওপর জাতিসংঘের চাপ প্রয়োগের বিষয়টি ঠুনকো বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এখনো মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা আসার প্রবণতা রয়েছে। প্রায় দুই মাস
আগে স্বামী, দুই বছরের একটি ছেলে ও তিন মাস বয়সী একটি বাচ্চাকে সঙ্গে নিয়ে
বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন হামিদা বেগম। পালিয়ে আসার আগে তার স্বামী ঠিকমতো
ঘুমাতে পারেননি। কারণ, সারাক্ষণই তার মধ্যে গ্রেপ্তার হওয়ার ভয় কাজ করতো।
১৮ বছর বয়সী হামিদা বলেন, রাত হলে তার স্বামী কোনো গাছের মগডালে উঠে যেতেন।
সারা রাত সেখানেই বসে থাকতেন। প্রচণ্ড বৃষ্টি হলেও সেখানে বসে থাকতেন।
তিনি এখন বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ শরণার্থী শিবিরের একপাশে অবস্থান নিয়েছেন।
মিয়ানমার বারবার বলছে, তারা রোহিঙ্গাদের গ্রহণ করতে প্রস্তুত। কিন্তু এখনো হামিদা ও তার পরিবারের মতো অনেক মানুষ পালিয়ে আসায় মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সমস্যা সমাধানে অগ্রগতিতে ঘাটতির বিষয়টিকেই ফুটিয়ে তোলে। রোহিঙ্গাদের এই দলে দলে দেশ ত্যাগ সেখানকার গণতান্ত্রিক পালাবদলে একটি উত্তেজনাকর অবস্থার সৃষ্টি করে এবং বিশ্বের কাছে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অং সান সুচির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়। মিয়ানমারে নিয়োজিত জাতিসংঘের সাবেক কূটনীতিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক রিচার্ড হরসি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট বিশ্বের কাছে মিয়ানমারের ভাবমূর্তি ভয়াবহভাবে ক্ষতি করেছে। সেনাবাহিনী বা নিরাপত্তারক্ষাকারীদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা প্রত্যাখ্যান করেছে অং সান সুচির সরকার। তারা ফেরত যাওয়া রোহিঙ্গাদের গ্রহণ করতে রাখাইনে নির্মাণ করেছে ট্রানজিট ক্যাম্প। এ বছরের শুরু থেকে আগস্ট পর্যন্ত প্রায় ১৩ হাজার রোহিঙ্গা এসেছে বাংলাদেশে। এতে পরিষ্কার বোঝা যায়, এক বছর আগে যে সংকট শুরু হয়েছিল তা দ্বিতীয় বছরে প্রবেশ করেছে এবং এ সংকট সমাধান বহু দূরের বিষয়। নতুন আসা প্রায় অর্ধডজন শরণার্থী বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা বলেছেন, পুড়িয়ে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া বাড়িঘর ও ফাঁকা গ্রামগুলোতে টিকে থাকার লড়াই করছিলেন তারা। কিন্তু নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা তাদের গ্রেপ্তার করে হয়রানি করতে পারে এমন আতঙ্কে সব ছেড়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন তারা। আরো বলেছেন, তাদের এক রকম গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল। অনাহারে মারা যাওয়ার অবস্থায় তাদের ঠেলে দেয়া হয়েছিল। তাদের কোনো কাজে, মার্কেটে, পুকুরে মাছ ধরতে যেতে দেয়া হতো না। মসজিদে যেতে পারতেন না নামাজ আদায় করতে। মিয়ানমার বলেছে, তারা সংকটে উস্কানি দেয়নি। উল্টো সেনাবাহিনী সন্ত্রাসবিরোধী একটি অপারেশন চালিয়েছে।
মিয়ানমার বারবার বলছে, তারা রোহিঙ্গাদের গ্রহণ করতে প্রস্তুত। কিন্তু এখনো হামিদা ও তার পরিবারের মতো অনেক মানুষ পালিয়ে আসায় মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সমস্যা সমাধানে অগ্রগতিতে ঘাটতির বিষয়টিকেই ফুটিয়ে তোলে। রোহিঙ্গাদের এই দলে দলে দেশ ত্যাগ সেখানকার গণতান্ত্রিক পালাবদলে একটি উত্তেজনাকর অবস্থার সৃষ্টি করে এবং বিশ্বের কাছে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অং সান সুচির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়। মিয়ানমারে নিয়োজিত জাতিসংঘের সাবেক কূটনীতিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক রিচার্ড হরসি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট বিশ্বের কাছে মিয়ানমারের ভাবমূর্তি ভয়াবহভাবে ক্ষতি করেছে। সেনাবাহিনী বা নিরাপত্তারক্ষাকারীদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা প্রত্যাখ্যান করেছে অং সান সুচির সরকার। তারা ফেরত যাওয়া রোহিঙ্গাদের গ্রহণ করতে রাখাইনে নির্মাণ করেছে ট্রানজিট ক্যাম্প। এ বছরের শুরু থেকে আগস্ট পর্যন্ত প্রায় ১৩ হাজার রোহিঙ্গা এসেছে বাংলাদেশে। এতে পরিষ্কার বোঝা যায়, এক বছর আগে যে সংকট শুরু হয়েছিল তা দ্বিতীয় বছরে প্রবেশ করেছে এবং এ সংকট সমাধান বহু দূরের বিষয়। নতুন আসা প্রায় অর্ধডজন শরণার্থী বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা বলেছেন, পুড়িয়ে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া বাড়িঘর ও ফাঁকা গ্রামগুলোতে টিকে থাকার লড়াই করছিলেন তারা। কিন্তু নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা তাদের গ্রেপ্তার করে হয়রানি করতে পারে এমন আতঙ্কে সব ছেড়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন তারা। আরো বলেছেন, তাদের এক রকম গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল। অনাহারে মারা যাওয়ার অবস্থায় তাদের ঠেলে দেয়া হয়েছিল। তাদের কোনো কাজে, মার্কেটে, পুকুরে মাছ ধরতে যেতে দেয়া হতো না। মসজিদে যেতে পারতেন না নামাজ আদায় করতে। মিয়ানমার বলেছে, তারা সংকটে উস্কানি দেয়নি। উল্টো সেনাবাহিনী সন্ত্রাসবিরোধী একটি অপারেশন চালিয়েছে।
No comments