একটি অবৈতনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্ন by আব্দুল কাইয়ুম
গত বছরের নভেম্বরের শেষ। হেমন্তের সকাল।শীত আসি আসি করছে। আমরা কয়েকজন এসেছি গ্রামের বঞ্চিত-অবহেলিত মেয়েদের একটি স্কুল দেখতে।খুলনা শহর থেকে সামান্য দূরে, রূপসা উপজেলার ডোমরা গ্রামের ভেতরে একটি পাকা একতলা ভবনে কয়েকটি ক্লাসঘর।চারপাশে সবুজ গাছপালা। ক্লাস চলছে।এরই মধ্যে একটি মেয়েকে কয়েকজন ধরাধরি করে বাইরে নিয়ে এসেছে। সহপাঠীরা ব্যস্ত হয়ে তার চোখেমুখে পানি ছিটিয়ে দিচ্ছে।সে ক্লাসের ভেতরে হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে যাচ্ছিল। আমি এগিয়ে যাই। একটু পরে সে চোখ মেলে তাকায়। অবসন্নতায় সে নুইয়ে পড়েছে।স্পষ্টতই পুষ্টিহীনতায় ভুগছে।
আসলে বাসায় মোটামুটি খেয়েপরে চলার সংগতি তাদের নেই। স্কুলে একবেলা খাবারই তার ভরসা। কিন্তু তাতে কি চলে? অসুখবিসুখ লেগেই আছে।বেশ দুর্বল।তার পরও সে স্কুলে রোজ আসে। পড়াশোনা তার খুব ভালো লাগে। স্কুলের পরিবেশ ভালো। বাবা আরেক বিয়ে করে চলে গেছেন। মা হাড়ভাঙা খাটুনি করে সামান্য রোজগার করেন। তাতেই চলে তাদের মা-মেয়ের কষ্টের সংসার।
এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি হলো কমরেড রতন সেন কলেজিয়েট গার্লস স্কুল। এটা যে গ্রামের সুবিধাবঞ্চিত মেয়েদের একটি বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, তা ধীরে ধীরে দেশে-বিদেশে বিদ্যোৎসাহী মানুষজন জানতে শুরু করেছে। কমরেড রতন সেন ছিলেন আজীবন বিপ্লবী। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। তিনি সারা দেশের, বিশেষভাবে খুলনার সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধাভক্তি অর্জন করেছিলেন। কিছু সমাজবিরোধী লোক তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করে। পরে রতন সেনের শুভানুধ্যায়ীরা তাঁর ভিটেজমিতে গড়ে তোলেন মেয়েদের স্কুল।
স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এস এম লিয়াকত হোসেন আমাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। স্কুলের দায়িত্ব তাঁর কাছে নিজের ব্যবসার চেয়েও বড়। গত বছরের শেষ দিকে তিনি স্কুল পরিচালনার কাজ করছিলেন। এ সময় মলিন কাপড় পরা গ্রামের এক নারী এসে স্কুলে ভর্তির তারিখ জানতে চাইলেন। স্বামী পরিত্যক্তা ওই নারী ফসলি জমিতে কাজ করতেন। মজুরি পেতেন মাত্র দেড় শ টাকা। তাতে কষ্টেসৃষ্টে মা-মেয়ের সংসার চলে যেত। কিন্তু ফসল তোলার পর মাঠে কাজ নেই। তিনি শহরে বাসাবাড়ির কাজ নিয়ে চলে যাবেন। মেয়েকে নানির কাছে রেখে যেতে চান। এ সময় যদি স্কুলে ভর্তি হতে পারে, তাহলে তাঁর মেয়ের পড়াশোনার ব্যবস্থা তো হবেই, উপরন্তু দুপুরে পেটভরে খাওয়ার নিশ্চয়তাও থাকবে। এ জন্যই তিনি মেয়েকে স্কুলে পড়াতে ব্যাকুল হয়ে উঠেছেন। মেয়েটি এবার ক্লাস সিক্সে ভর্তি হতে পেরেছে। এর চেয়ে বড় খুশির খবর আর কী হতে পারে!
স্কুলের এক ছাত্রী টুম্পা রানী। ক্লাস নাইনে পড়ে। ছোট বোন পড়ে সিক্সে। স্বামী পরিত্যক্তা মা খুব কষ্টে ছিলেন। গত বছর ক্যানসারে মারা গেলেন।দুই বোন তাদের জেঠার কাছে থাকে। স্কুল থেকে তাদের কিছু আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়, যেন তারা স্কুল থেকে ঝরে না পড়ে।আরেক ছাত্রী তাফুরা খাতুন। ক্লাস নাইনে বিজ্ঞানের ছাত্রী। তার মা শহরে গুঁড়া হলুদের একটি মিলে চাকরি করে দুই পয়সা আয় করেন।স্কুলে যদি মেয়ের এক বেলা খাবারের ব্যবস্থা না হতো, তাহলে হয়তো তার এই শিশু বয়সেই মজুর খাটতে হতো মায়ের মতোই।
এ রকম কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে দেখলাম, ওরা নিজেদের গরিব বলে মনে করে না। তাদের ঘরে
ঘরে দারিদ্র্য, কিন্তু ওরা দরিদ্র নয়। কারণ, স্কুল তাদের মর্যাদার আসনে দাঁড় করিয়েছে। শিক্ষার আলোকবর্তিকা তাদের হাতে। তাদের মেধাসম্পদের প্রাচুর্যের নিচে চাপা পড়ে গেছে আর্থিক দারিদ্র্যের যাতনা। এখন তারা অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী।
শিক্ষকেরা দিনে স্কুলে পড়ান আর রাতে নিজেরা দায়িত্ব ভাগাভাগি করে বিভিন্ন গ্রামে ছাত্রীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজখবর নেন হোমওয়ার্ক করতে তাদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে কি না। টর্চলাইট নিয়ে তাঁরা গ্রামের পথে বেরিয়ে পড়েন। যাদের বাসায় বিদ্যুৎ নেই, স্কুল থেকে তাদের হারিকেন ও কেরোসিনের খরচ দেওয়া হয়। বাসায় বিদ্যুৎ থাকলে দেওয়া হয় চার্জলাইট, যেন লোডশেডিংয়ে পড়াশোনা আটকে না যায়।
টিফিনের সময় লাইন ধরে সবাই থালায় খাবার নিয়ে ক্লাসে বসে খায়। ডালভাত-শাকসবজি। সপ্তাহে একদিন মাছ। স্কুলের জমি ও পুকুর থেকেই আসে টিফিনের খাবারের শাকসবজি ও মাছ। ছাত্রীরা বাগানে নিজেদের জন্য কাজ করে।
জেলা প্রশাসন বছরে একদিন সার্কিট হাউস থেকে রান্না করে এনে স্কুলের ছাত্রীদের এক বেলা খাওয়ার ব্যবস্থা করে। প্রত্যেকের জন্য প্লেট ভরা পোলাও, দুই টুকরা মাংস, একটি ডিম ও দুটি আলু। জেলা প্রশাসক নিজে এসে সবাইকে খাইয়ে যান। এ ছাড়া, বছরের বিভিন্ন সময় স্কুলের শুভানুধ্যায়ীরা তাঁদের পারিবারিক উদ্যোগে বিশেষ খাওয়ার আয়োজন করে থাকেন।
সরকারি উপবৃত্তির ব্যবস্থা রয়েছে। এর বাইরেও রয়েছে এককালীন বৃত্তি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা শুভানুধ্যায়ীরা এসব বৃত্তির ব্যবস্থা করেন। তা ছাড়া, ইউনিসেফ, ওয়ার্ল্ডভিশন, রোটারি ক্লাব থেকে ছিটেফোঁটা সহায়তা আসে। প্রবাসী শুভানুধ্যায়ীদের সাড়াও মাঝেমধ্যে পাওয়া যায়।
বিদ্যালয়টির সামনে এখন বিরাট পরীক্ষা।আগামী বছর, অর্থাৎ ২০১৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে একাদশ শ্রেণি চালুর উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ জন্য ভবনটি দোতলা করতে হবে।দরকার অন্তত ৫০ লাখ টাকা।এত টাকা যে নেই।
আমার চোখের সামনে স্বপ্নের মতো ভেসে উঠছে একটি দৃশ্য। ভাবছি, এত উদ্যমী শুভানুধ্যায়ীরা যখন রয়েছেন, তাহলে হয়তো একদিন এখানে গড়ে উঠবে একটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়।একান্তভাবে গ্রামের সুবিধাবঞ্চিত মেয়েদের জন্য সেটি হবে বাংলাদেশের প্রথম একটি অবৈতনিক বিশ্ববিদ্যালয়।
এ জন্য দরকার অনেক মানুষের সাহায্য-সহযোগিতা।কেউ সহায়তা দিতে চাইলে সরাসরি ব্যাংকে যোগাযোগ করতে পারেন: অ্যাকাউন্ট নেম: কমরেড রতন সেন কলেজিয়েট গার্লস স্কুল, অ্যাকাউন্ট নং: ০০১২১০০০১৬৮১৯, সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেড, খুলনা শাখা, বাংলাদেশ, সুইফট কোড, SEBDBDDHKLN
আব্দুল কাইয়ুম: সাংবাদিক |
আসলে বাসায় মোটামুটি খেয়েপরে চলার সংগতি তাদের নেই। স্কুলে একবেলা খাবারই তার ভরসা। কিন্তু তাতে কি চলে? অসুখবিসুখ লেগেই আছে।বেশ দুর্বল।তার পরও সে স্কুলে রোজ আসে। পড়াশোনা তার খুব ভালো লাগে। স্কুলের পরিবেশ ভালো। বাবা আরেক বিয়ে করে চলে গেছেন। মা হাড়ভাঙা খাটুনি করে সামান্য রোজগার করেন। তাতেই চলে তাদের মা-মেয়ের কষ্টের সংসার।
এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি হলো কমরেড রতন সেন কলেজিয়েট গার্লস স্কুল। এটা যে গ্রামের সুবিধাবঞ্চিত মেয়েদের একটি বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, তা ধীরে ধীরে দেশে-বিদেশে বিদ্যোৎসাহী মানুষজন জানতে শুরু করেছে। কমরেড রতন সেন ছিলেন আজীবন বিপ্লবী। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। তিনি সারা দেশের, বিশেষভাবে খুলনার সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধাভক্তি অর্জন করেছিলেন। কিছু সমাজবিরোধী লোক তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করে। পরে রতন সেনের শুভানুধ্যায়ীরা তাঁর ভিটেজমিতে গড়ে তোলেন মেয়েদের স্কুল।
স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এস এম লিয়াকত হোসেন আমাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। স্কুলের দায়িত্ব তাঁর কাছে নিজের ব্যবসার চেয়েও বড়। গত বছরের শেষ দিকে তিনি স্কুল পরিচালনার কাজ করছিলেন। এ সময় মলিন কাপড় পরা গ্রামের এক নারী এসে স্কুলে ভর্তির তারিখ জানতে চাইলেন। স্বামী পরিত্যক্তা ওই নারী ফসলি জমিতে কাজ করতেন। মজুরি পেতেন মাত্র দেড় শ টাকা। তাতে কষ্টেসৃষ্টে মা-মেয়ের সংসার চলে যেত। কিন্তু ফসল তোলার পর মাঠে কাজ নেই। তিনি শহরে বাসাবাড়ির কাজ নিয়ে চলে যাবেন। মেয়েকে নানির কাছে রেখে যেতে চান। এ সময় যদি স্কুলে ভর্তি হতে পারে, তাহলে তাঁর মেয়ের পড়াশোনার ব্যবস্থা তো হবেই, উপরন্তু দুপুরে পেটভরে খাওয়ার নিশ্চয়তাও থাকবে। এ জন্যই তিনি মেয়েকে স্কুলে পড়াতে ব্যাকুল হয়ে উঠেছেন। মেয়েটি এবার ক্লাস সিক্সে ভর্তি হতে পেরেছে। এর চেয়ে বড় খুশির খবর আর কী হতে পারে!
স্কুলের এক ছাত্রী টুম্পা রানী। ক্লাস নাইনে পড়ে। ছোট বোন পড়ে সিক্সে। স্বামী পরিত্যক্তা মা খুব কষ্টে ছিলেন। গত বছর ক্যানসারে মারা গেলেন।দুই বোন তাদের জেঠার কাছে থাকে। স্কুল থেকে তাদের কিছু আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়, যেন তারা স্কুল থেকে ঝরে না পড়ে।আরেক ছাত্রী তাফুরা খাতুন। ক্লাস নাইনে বিজ্ঞানের ছাত্রী। তার মা শহরে গুঁড়া হলুদের একটি মিলে চাকরি করে দুই পয়সা আয় করেন।স্কুলে যদি মেয়ের এক বেলা খাবারের ব্যবস্থা না হতো, তাহলে হয়তো তার এই শিশু বয়সেই মজুর খাটতে হতো মায়ের মতোই।
এ রকম কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে দেখলাম, ওরা নিজেদের গরিব বলে মনে করে না। তাদের ঘরে
ঘরে দারিদ্র্য, কিন্তু ওরা দরিদ্র নয়। কারণ, স্কুল তাদের মর্যাদার আসনে দাঁড় করিয়েছে। শিক্ষার আলোকবর্তিকা তাদের হাতে। তাদের মেধাসম্পদের প্রাচুর্যের নিচে চাপা পড়ে গেছে আর্থিক দারিদ্র্যের যাতনা। এখন তারা অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী।
শিক্ষকেরা দিনে স্কুলে পড়ান আর রাতে নিজেরা দায়িত্ব ভাগাভাগি করে বিভিন্ন গ্রামে ছাত্রীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজখবর নেন হোমওয়ার্ক করতে তাদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে কি না। টর্চলাইট নিয়ে তাঁরা গ্রামের পথে বেরিয়ে পড়েন। যাদের বাসায় বিদ্যুৎ নেই, স্কুল থেকে তাদের হারিকেন ও কেরোসিনের খরচ দেওয়া হয়। বাসায় বিদ্যুৎ থাকলে দেওয়া হয় চার্জলাইট, যেন লোডশেডিংয়ে পড়াশোনা আটকে না যায়।
টিফিনের সময় লাইন ধরে সবাই থালায় খাবার নিয়ে ক্লাসে বসে খায়। ডালভাত-শাকসবজি। সপ্তাহে একদিন মাছ। স্কুলের জমি ও পুকুর থেকেই আসে টিফিনের খাবারের শাকসবজি ও মাছ। ছাত্রীরা বাগানে নিজেদের জন্য কাজ করে।
জেলা প্রশাসন বছরে একদিন সার্কিট হাউস থেকে রান্না করে এনে স্কুলের ছাত্রীদের এক বেলা খাওয়ার ব্যবস্থা করে। প্রত্যেকের জন্য প্লেট ভরা পোলাও, দুই টুকরা মাংস, একটি ডিম ও দুটি আলু। জেলা প্রশাসক নিজে এসে সবাইকে খাইয়ে যান। এ ছাড়া, বছরের বিভিন্ন সময় স্কুলের শুভানুধ্যায়ীরা তাঁদের পারিবারিক উদ্যোগে বিশেষ খাওয়ার আয়োজন করে থাকেন।
সরকারি উপবৃত্তির ব্যবস্থা রয়েছে। এর বাইরেও রয়েছে এককালীন বৃত্তি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা শুভানুধ্যায়ীরা এসব বৃত্তির ব্যবস্থা করেন। তা ছাড়া, ইউনিসেফ, ওয়ার্ল্ডভিশন, রোটারি ক্লাব থেকে ছিটেফোঁটা সহায়তা আসে। প্রবাসী শুভানুধ্যায়ীদের সাড়াও মাঝেমধ্যে পাওয়া যায়।
বিদ্যালয়টির সামনে এখন বিরাট পরীক্ষা।আগামী বছর, অর্থাৎ ২০১৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে একাদশ শ্রেণি চালুর উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ জন্য ভবনটি দোতলা করতে হবে।দরকার অন্তত ৫০ লাখ টাকা।এত টাকা যে নেই।
আমার চোখের সামনে স্বপ্নের মতো ভেসে উঠছে একটি দৃশ্য। ভাবছি, এত উদ্যমী শুভানুধ্যায়ীরা যখন রয়েছেন, তাহলে হয়তো একদিন এখানে গড়ে উঠবে একটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়।একান্তভাবে গ্রামের সুবিধাবঞ্চিত মেয়েদের জন্য সেটি হবে বাংলাদেশের প্রথম একটি অবৈতনিক বিশ্ববিদ্যালয়।
এ জন্য দরকার অনেক মানুষের সাহায্য-সহযোগিতা।কেউ সহায়তা দিতে চাইলে সরাসরি ব্যাংকে যোগাযোগ করতে পারেন: অ্যাকাউন্ট নেম: কমরেড রতন সেন কলেজিয়েট গার্লস স্কুল, অ্যাকাউন্ট নং: ০০১২১০০০১৬৮১৯, সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেড, খুলনা শাখা, বাংলাদেশ, সুইফট কোড, SEBDBDDHKLN
আব্দুল কাইয়ুম: সাংবাদিক |
No comments