বহুত্ববাদী ভারতে চরমপন্থার বিস্তার by কুলদীপ নায়ার
ভারতে সম্প্রতি একটি বিপজ্জনক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সেখানকার গোঁড়ারা ক্রমেই চরমপন্থার দিকে ঝুঁকছেন, সমাজেও এই চরমপন্থার গ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া শাহের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার আর কোনো কারণ নেই। কেন্দ্রে বিজেপির জয়ের পর তিনি সমাজে মেরুকরণ ঘটানোর কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি এও নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন, যাতে বিজেপি আরএসএস বা মহারাষ্ট্রের চরমপন্থী শিবসেনার সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ না করে।
গেল পবিত্র রমজান মাসে শিবসেনার এক সাংসদ একজন মুসলিমকে জোর করে রোজা ভাঙতে বাধ্য করেছেন। আরও খারাপ ব্যাপার হচ্ছে, সেই সাংসদ ও অন্যরা এর ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। শিবসেনার বেশ কয়েকজন সাংসদ এ ঘটনার নিন্দা তো করেনইনি, উপরন্তু তাঁরা বলেছেন, মহাসদনে যে খাবার সরবরাহ করা হয়, তার মান যে ভালো নয়, সেটা বোঝাতেই এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। শিবসেনার সেই সাংসদ দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তবে রোজার সময় অনেক মুসলিম ধর্ষণের মতো জঘন্য কাজ করেন, এর সঙ্গে ওই ঘটনার সাদৃশ্য টানার কোনো দরকার ছিল না দলটির। মোদি সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেষ পর্যন্ত এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে ভারতের সংবিধান অনুসারে ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু মোদি তো হিন্দুত্ববাদের রাজনীতিই করেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়ই গুজরাটে ২০০২ সালে মুসলিমবিরোধী দাঙ্গায় বহু মুসলিম মারা যান।
অমিত শাহ মোদির একজন সহযাত্রী। বিজেপির সভাপতি হয়েছেন অমিত শাহ। এটা হচ্ছে আনুগত্যের পুরস্কার। অমিত শাহ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিশ্বস্ত লোক। কিন্তু অন্যদের সঙ্গে তাঁর পার্থক্য হচ্ছে, নিজ প্রভু নরেন্দ্র মোদির ওপর তাঁর অগাধ আস্থা রয়েছে। ভারতের বৃহৎ রাজ্য উত্তর প্রদেশে মেরুকরণ ঘটানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। তিনি এতে সফলও হয়েছেন, এবারের লোকসভা নির্বাচনে উত্তর প্রদেশে বিজেপি ৮০টি আসনের মধ্যে ৭১টি আসন পেয়েছে।
মোদি এখন তাঁর ওপর আরও বড় দায়িত্ব অর্পণ করেছেন, উত্তর প্রদেশের পর তাঁকে এবার দেশজুড়ে হিন্দুত্ববাদ ছড়িয়ে দিতে হবে। তাঁর এই নিয়োগের মধ্য দিয়ে একটি ব্যাপার স্পষ্ট হয়ে গেছে: ভারতের সমাজে চরমপন্থার যে প্রতিকূল স্রোত ছিল, সেটা ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে। তিনি এখন প্রকাশ্যেই মোদি ও আরএসএসকে একই কাতারে আনার চেষ্টা করছেন। যেমন, আরএসএসের কট্টর সদস্য কাপতান সিং সোলাঙ্কিকে হরিয়ানার গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতে বোঝা যায়, বিজেপি এখন আরএসএসের দাবার ঘুঁটিতে পরিণত হতে মুখিয়ে আছে।
আরএসএসের প্রধান মোহন ভাগওয়াত বলেছেন, সংঘ পরিবার রাজনীতিতে নামবে। এর মাধ্যমে একটি ব্যাপার পরিষ্কার হয়ে যায়, সংঘ পরিবার এখন আরএসএসের অঙ্গুলিহেলনে পরিচালিত হচ্ছে। আরএসএস ভারতের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সরদার প্যাটেলের কাছে মুচলেকা দিয়েছিল, তারা কখনো রাজনীতিতে অংশ নেবে না। এর মাধ্যমে তারা কি সে ওয়াদার বরখেলাপ করল না? বিজেপি ও আরএসএসের মধ্যে কোনো তফাত আর থাকছে না, তারা একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ।
হিন্দুত্ববাদের বিস্তারকল্পে মোদি এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ না নিলেও তাঁর আমলে আরএসএসের ভিত্তি আরও জোরালো হচ্ছে। ব্যাপারটা এ পর্যায়ে চলে গেছে যে বিজেপির একজন সদস্য ভারতের সেরা টেনিস খেলোয়াড় সানিয়া মির্জাকে পাকিস্তানি হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। ভারতের মুসলমানদের নিরন্তর রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনের পরীক্ষা দিতে হয়। সানিয়ার স্বামী একজন পাকিস্তানি, সেটা সবাই জানে। তাঁর জাতীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় স্বাভাবিকভাবেই তিনি আহত হয়েছেন।
হরিয়ানাতেও হিন্দুত্ববাদের অনুরূপ ব্যাপার দেখা যাচ্ছে, সেখানকার একটি পৃথক শিরোমণি গুরুদুয়ারা পারবন্ধক কমিটি (এসজিপিসি) প্রদেশের সকল গুরুদুয়ারা ও সেগুলোর প্রার্থনা পরিচালনা করবে। আরএসএস শিখদের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বলেই মনে করে, যদিও শিখেরা এ ধারণার বিরোধী। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী পারকাশ সিং বাদল জোরালো প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে বলেছেন, পাঞ্জাবের শিখরা শিখধর্ম পালনে কোনো ব্যত্যয় সহ্য করবে না।
আশঙ্কার ব্যাপার হচ্ছে, বিজেপিতে উদারনৈতিক মানুষের সংখ্যা ক্রমেই কমে আসছে। এই চক্রে এখন আরএসএসের নেতৃত্বের কোনো বিকল্প নেই। হয়তো বিজেপি ও আরএসএসের মধ্যকার দূরত্বের কোনো বাস্তবতা নেই। আসলে আরএসএসের কৌশল হচ্ছে, ভারতের মানুষ একগুঁয়ে আরএসএসের চেয়ে উদার বিজেপিকে শ্রেয় মনে করে, এই ধারণায় চিড় ধরানো।
সৌভাগ্যবশত মোদি বুঝতে পেরেছেন, প্রতিবেশী দুই রাষ্ট্রের সঙ্গেই তাঁর ভালো সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। তাঁর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের রাষ্ট্রপ্রধানদের আমন্ত্রণ জানানোর ঘটনায় সে ইঙ্গিতই পাওয়া যায়। মোদি ভারতের প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখলে দেশটির বহুত্ববাদী সংস্কৃতি আরও পোক্ত হবে। এ গুণের কারণেই ভারত এই উপমহাদেশে একটি উদারনৈতিক পরিবেশ বজায় রাখতে পেরেছে।
আমি আশা করি, নয়াদিল্লি হিন্দু তালেবানদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে। এরা ক্রমেই শক্তিশালী হয়ে উঠছে। উদারনৈতিক মুসলমানদের তালেবান ও মৌলবাদের বিরোধিতায় আত্মসন্তুষ্টির খপ্পরে পড়া চলবে না, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ উভয় দেশের ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য।এই মৌলবাদীদের লক্ষ্য হচ্ছে, ইসলাম ধর্মের সকল প্রকার উদারপন্থা রুদ্ধ করা। তারা এটাও জানে যে তা সম্ভব নয়।
আর নির্বাচনের সময় তারা বহুত্ববাদের সমর্থক প্রার্থীদের হটিয়ে দিতে চায়। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের শাসকদের বাস্তববাদী মনে হচ্ছে।তাঁরা হয়তো এমন কিছু করবেন না, যাতে তাঁদের দেশের অমুসলিম ভোটাররা দেশত্যাগে বাধ্য হন।
ইংরেজি থেকে অনুবাদ: প্রতীক বর্ধন
কুলদীপ নায়ার: ভারতের সাংবাদিক |
গেল পবিত্র রমজান মাসে শিবসেনার এক সাংসদ একজন মুসলিমকে জোর করে রোজা ভাঙতে বাধ্য করেছেন। আরও খারাপ ব্যাপার হচ্ছে, সেই সাংসদ ও অন্যরা এর ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। শিবসেনার বেশ কয়েকজন সাংসদ এ ঘটনার নিন্দা তো করেনইনি, উপরন্তু তাঁরা বলেছেন, মহাসদনে যে খাবার সরবরাহ করা হয়, তার মান যে ভালো নয়, সেটা বোঝাতেই এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। শিবসেনার সেই সাংসদ দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তবে রোজার সময় অনেক মুসলিম ধর্ষণের মতো জঘন্য কাজ করেন, এর সঙ্গে ওই ঘটনার সাদৃশ্য টানার কোনো দরকার ছিল না দলটির। মোদি সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেষ পর্যন্ত এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে ভারতের সংবিধান অনুসারে ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু মোদি তো হিন্দুত্ববাদের রাজনীতিই করেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়ই গুজরাটে ২০০২ সালে মুসলিমবিরোধী দাঙ্গায় বহু মুসলিম মারা যান।
অমিত শাহ মোদির একজন সহযাত্রী। বিজেপির সভাপতি হয়েছেন অমিত শাহ। এটা হচ্ছে আনুগত্যের পুরস্কার। অমিত শাহ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিশ্বস্ত লোক। কিন্তু অন্যদের সঙ্গে তাঁর পার্থক্য হচ্ছে, নিজ প্রভু নরেন্দ্র মোদির ওপর তাঁর অগাধ আস্থা রয়েছে। ভারতের বৃহৎ রাজ্য উত্তর প্রদেশে মেরুকরণ ঘটানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। তিনি এতে সফলও হয়েছেন, এবারের লোকসভা নির্বাচনে উত্তর প্রদেশে বিজেপি ৮০টি আসনের মধ্যে ৭১টি আসন পেয়েছে।
মোদি এখন তাঁর ওপর আরও বড় দায়িত্ব অর্পণ করেছেন, উত্তর প্রদেশের পর তাঁকে এবার দেশজুড়ে হিন্দুত্ববাদ ছড়িয়ে দিতে হবে। তাঁর এই নিয়োগের মধ্য দিয়ে একটি ব্যাপার স্পষ্ট হয়ে গেছে: ভারতের সমাজে চরমপন্থার যে প্রতিকূল স্রোত ছিল, সেটা ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে। তিনি এখন প্রকাশ্যেই মোদি ও আরএসএসকে একই কাতারে আনার চেষ্টা করছেন। যেমন, আরএসএসের কট্টর সদস্য কাপতান সিং সোলাঙ্কিকে হরিয়ানার গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতে বোঝা যায়, বিজেপি এখন আরএসএসের দাবার ঘুঁটিতে পরিণত হতে মুখিয়ে আছে।
আরএসএসের প্রধান মোহন ভাগওয়াত বলেছেন, সংঘ পরিবার রাজনীতিতে নামবে। এর মাধ্যমে একটি ব্যাপার পরিষ্কার হয়ে যায়, সংঘ পরিবার এখন আরএসএসের অঙ্গুলিহেলনে পরিচালিত হচ্ছে। আরএসএস ভারতের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সরদার প্যাটেলের কাছে মুচলেকা দিয়েছিল, তারা কখনো রাজনীতিতে অংশ নেবে না। এর মাধ্যমে তারা কি সে ওয়াদার বরখেলাপ করল না? বিজেপি ও আরএসএসের মধ্যে কোনো তফাত আর থাকছে না, তারা একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ।
হিন্দুত্ববাদের বিস্তারকল্পে মোদি এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ না নিলেও তাঁর আমলে আরএসএসের ভিত্তি আরও জোরালো হচ্ছে। ব্যাপারটা এ পর্যায়ে চলে গেছে যে বিজেপির একজন সদস্য ভারতের সেরা টেনিস খেলোয়াড় সানিয়া মির্জাকে পাকিস্তানি হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। ভারতের মুসলমানদের নিরন্তর রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনের পরীক্ষা দিতে হয়। সানিয়ার স্বামী একজন পাকিস্তানি, সেটা সবাই জানে। তাঁর জাতীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় স্বাভাবিকভাবেই তিনি আহত হয়েছেন।
হরিয়ানাতেও হিন্দুত্ববাদের অনুরূপ ব্যাপার দেখা যাচ্ছে, সেখানকার একটি পৃথক শিরোমণি গুরুদুয়ারা পারবন্ধক কমিটি (এসজিপিসি) প্রদেশের সকল গুরুদুয়ারা ও সেগুলোর প্রার্থনা পরিচালনা করবে। আরএসএস শিখদের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বলেই মনে করে, যদিও শিখেরা এ ধারণার বিরোধী। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী পারকাশ সিং বাদল জোরালো প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে বলেছেন, পাঞ্জাবের শিখরা শিখধর্ম পালনে কোনো ব্যত্যয় সহ্য করবে না।
আশঙ্কার ব্যাপার হচ্ছে, বিজেপিতে উদারনৈতিক মানুষের সংখ্যা ক্রমেই কমে আসছে। এই চক্রে এখন আরএসএসের নেতৃত্বের কোনো বিকল্প নেই। হয়তো বিজেপি ও আরএসএসের মধ্যকার দূরত্বের কোনো বাস্তবতা নেই। আসলে আরএসএসের কৌশল হচ্ছে, ভারতের মানুষ একগুঁয়ে আরএসএসের চেয়ে উদার বিজেপিকে শ্রেয় মনে করে, এই ধারণায় চিড় ধরানো।
সৌভাগ্যবশত মোদি বুঝতে পেরেছেন, প্রতিবেশী দুই রাষ্ট্রের সঙ্গেই তাঁর ভালো সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। তাঁর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের রাষ্ট্রপ্রধানদের আমন্ত্রণ জানানোর ঘটনায় সে ইঙ্গিতই পাওয়া যায়। মোদি ভারতের প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখলে দেশটির বহুত্ববাদী সংস্কৃতি আরও পোক্ত হবে। এ গুণের কারণেই ভারত এই উপমহাদেশে একটি উদারনৈতিক পরিবেশ বজায় রাখতে পেরেছে।
আমি আশা করি, নয়াদিল্লি হিন্দু তালেবানদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে। এরা ক্রমেই শক্তিশালী হয়ে উঠছে। উদারনৈতিক মুসলমানদের তালেবান ও মৌলবাদের বিরোধিতায় আত্মসন্তুষ্টির খপ্পরে পড়া চলবে না, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ উভয় দেশের ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য।এই মৌলবাদীদের লক্ষ্য হচ্ছে, ইসলাম ধর্মের সকল প্রকার উদারপন্থা রুদ্ধ করা। তারা এটাও জানে যে তা সম্ভব নয়।
আর নির্বাচনের সময় তারা বহুত্ববাদের সমর্থক প্রার্থীদের হটিয়ে দিতে চায়। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের শাসকদের বাস্তববাদী মনে হচ্ছে।তাঁরা হয়তো এমন কিছু করবেন না, যাতে তাঁদের দেশের অমুসলিম ভোটাররা দেশত্যাগে বাধ্য হন।
ইংরেজি থেকে অনুবাদ: প্রতীক বর্ধন
কুলদীপ নায়ার: ভারতের সাংবাদিক |
No comments