রাজনৈতিক বিক্ষোভ, নাকি নাশকতা?
কয়েক দিন ধরে সীতাকুণ্ডে যে সহিংসতা চলছে, তাকে কোনোভাবেই প্রতিবাদ-প্রতিরোধ বলা যায় না। জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা নিয়মিতভাবে মহাসড়ক অচল করে যানবাহন ভাঙছেন-পোড়াচ্ছেন। ঘরবাড়িতে হামলা ও আগুন দেওয়া চলছে। তাঁদের এসব কর্মকাণ্ড জনপদটিকে ত্রাসিত করে রেখেছে। হরতাল ও হরতালহীন দিবসের মধ্যে পার্থক্য থাকছে না সীতাকুণ্ডে। হরতালের সময় যেভাবে মহাসড়ক বন্ধ করে যানবাহন ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়, হরতালহীন দিনেও তার পুনরাবৃত্তি হয়। সর্বশেষ, সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড থানার জামায়াতের সাধারণ সম্পাদকের লাশ পাওয়ার সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা আবার মহাসড়ক অবরোধ ও ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ শুরু করেন। তাঁরা বাড়বকুণ্ড ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের সভাপতির বাড়িতে আগুন দেন। এভাবে ভাঙচুর, সড়ক অবরোধ, বাড়িঘরে আগুন মোটেই রাজনৈতিক আচরণ নয়। এগুলো স্পষ্টতই নাশকতা। কয়েক দিন আগে জামায়াতের স্থানীয় শাখার সাধারণ সম্পাদক খালিদ বিন মাসুদ অপহূত হন।
গত বুধবার তাঁর গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া গেলে দলের বিক্ষুব্ধ কর্মীরা এলাকায় নরক নামিয়ে আনেন। তাঁরা পুলিশ-বিজিবি-র্যাবের সঙ্গেও সংঘর্ষ লিপ্ত হন। এসব থেকে মনে হয়, সংগঠনটি আর আইনি সীমার মধ্যে থেকে কাজ করছে না। বল প্রয়োগ করে মহাসড়ক অবরোধ করে লাখো যাত্রীকে দুর্ভোগে ফেলা কিংবা বাড়ি পুড়িয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা কি কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি? জামায়াতের নিহত নেতাকে কারা সাদাপোশাকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে হত্যা করেছে, তা পুলিশকে তদন্ত করে বের করতে হবে। তদন্তে গাফিলতি থাকলে তার প্রতিকার চাওয়ার আইনি ব্যবস্থা আছে। তাই বলে জনজীবন অচল করা, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করার অধিকার কারও নেই। প্রতিবাদের নামে এই জবরদস্তি বন্ধ করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকেও বল প্রয়োগ করে শৃঙ্খলা রক্ষায় আরও সতর্ক ও কৌশলী হতে হবে। আইনের ব্যবহার পক্ষপাতমূলকভাবে হওয়া যেমন যাবে না, তেমনি প্রকৃত নাশকতাকারীদের ধরতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগে ফেলা যাবে না। এতে করে অশান্তি সৃষ্টিকারীরাই লাভবান হবে।
No comments