গুজবের মনস্তত্ত্ব ও সমাজতত্ত্ব
গুজব এক অতি অদ্ভুত মজাদার, মুখরোচক ও শ্রুতিমধুর জিনিস। তবে গুজবের
দার্শনিক, মনস্তাত্ত্বিক ও সামাজিক তাৎপর্যও রয়েছে। গুজবের দার্শনিক ও
মনস্তাত্ত্বিক বিষয়গুলো সম্পর্কে যদি কেউ জানতে চান, তাঁকে আমি অনুরোধ করব
দুটি বই পড়তে। একটি গর্ডন অলপোর্ট এবং লিও পোস্টম্যানের দ্য সাইকোলজি অব
রিউমার (নিউইয়র্ক ১৯৪৭) এবং অন্যটি মুলেন গোয়েথাল্স ও জর্জ গোয়েথাল্স
সম্পাদিত থিওরিজ অব গ্রুপবিহেভিয়ার (স্প্রিংগার-ফার্লাক, ১৯৪৭)। এই বই
দুটি থেকে যা জানতে পেরেছি তা হলো গুজবের জন্য ডিএনএ দায়ী। গুজবপসারিকে
দোষ দিয়ে লাভ নেই, দোষ যদি দিতেই হয় তাহলে তাঁর ডিএনএকেই দিতে হয়। যেসব
জাতির গুজবে পরম আস্থা এবং গুজবে অভ্যস্ত, তাদের জিন বা বংশগতির নিয়ন্ত্রক
উপাদান খুঁজে দেখতে হবে কোন্ প্রজাতি থেকে তাদের উৎপত্তি। কোনো জাতির যৌথ
আচরণ নিয়ে গবেষণা করতে হলে তার চরিত্রের আদি নিয়ন্ত্রক উপাদানের সন্ধান
করা প্রয়োজন। পৃথিবীর সব জনগোষ্ঠী একই বৈশিষ্ট্য পায়নি। যেমন মার্কিনরা
যদি বানরের বৈশিষ্ট্য বেশি পেয়ে থাকে, তো ব্রিটিশরা পেয়েছে গরিলার
স্বভাব। হয়তো ফরাসিরা শিম্পাঞ্জির স্বভাবের উত্তরাধিকারী। ওসব বইতে নেই,
তবে অনুমান করি, বাঙালি পেয়েছে উল্লুকের স্বভাব। বাঙালির জীবকোষের সংকেত
বিশ্লেষণ করলে, তার ডিএনএ পরীক্ষা করলে দেখা যাবে তার পূর্বপুরুষ ছিল খাঁটি
উল্লুক। কোনো জাতির সব মানুষই কিছু অভিন্ন বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হয়। কলাম
লেখক ও কেরানি, ব্যবসায়ী, পুলিশ ও পোশাকমালিক, রাজনীতিক ও রঙের মিস্ত্রি,
সাংবাদিক ও সাংসদ, আমলা ও আমের আড়তদার—সবার মধ্যে বাইরে যত পার্থক্যই
থাকুক, কোনো একটি মৌলিক জায়গায় তারা সবাই এক। তাদের চিন্তা-চেতনা,
স্বভাব-চরিত্র ও ধর্মে-কর্মে একটি অভিন্ন বৈশিষ্ট্য থাকেই। কোনো জাতির
সবচেয়ে মেধাবী মানুষটি এবং সবচেয়ে নির্বোধের মধ্যেও একটি মিল থাকে। গুজব
নিয়ে যাঁরা গবেষণা করেছেন তাঁরা প্রথমেই জনগোষ্ঠীর সমাজতত্ত্ব ও
মনস্তত্ত্ব নিয়ে কাজ করেন। কোনো কোনো সমাজের মানুষের গুজব তৈরি করে এবং
গুজব প্রচার করে অপার আনন্দ। গুজব উপভোগ করার আনন্দ আরও বেশি। যে সমাজে
সাধুসন্ত ও পীর-ফকিরের প্রাধান্য, সেখানে গুজব যে অতি সহজেই বিশ্বাসযোগ্য
হয়ে উঠবে, তাতে সন্দেহ কি? মওলানা ভাসানী নৌকা না পেলে যমুনা নদীর ওপর
দিয়ে হেঁটে এপার থেকে ওপার যেতে পারতেন—এ কথা বিশ্বাস করার মতো মানুষ
বাংলার মাটিতে বিরল নয়। শেরেবাংলা ফজলুল হক একবারে ৮০টি ফজলি আম খেতে
পারতেন—এ কথা উচ্চারিত হয়েছে উচ্চশিক্ষিত বাঙালির মুখ থেকেই। ৮০টি ফজলি
আমের ওজন ৬০ কেজির কম নয়। যেহেতু তিনি বাংলার সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বড়
নেতা, সুতরাং দেড় মণ আম ধারণ করার মতো পাকস্থলী তাঁর না থেকেই পারে না।
তবে অতিরঞ্জন আর গুজব জ্ঞাতি ভাই হলেও ঠিক একই জিনিস নয়। অতিরঞ্জনের কোনো
উদ্দেশ্য নাও থাকতে পারে, কিন্তু গুজব উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তা ছাড়া গুজব
সৃষ্টির একটি পটভূমি থাকে। যে সমাজে সত্য অনুপস্থিত এবং মিথ্যার প্রাধান্য,
অথবা সত্য গোপন করার প্রবণতা খুব বেশি, সেখানে সাধারণ মানুষের গুজবই ভরসা।
শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে পুলিশ-র্যাব-বিজিবির অপারেশনে মধ্যরাতের
অন্ধকারে কতজন নিহত হয়েছেন, তার সঠিক সংখ্যা সরকারের দিক থেকে জানানো
হয়নি। হেফাজতের দিক থেকেও নামধামসহ তালিকা সরবরাহ করা হয়নি। সুতরাং এক
ধাক্কায় সংখ্যাটা আড়াই হাজারে পৌঁছে দেওয়া কঠিন ব্যাপার ছিল না। এবং তা
অনেকের পক্ষে বিশ্বাস করা দোষেরও নয়। গুজব তৈরি হওয়ার প্রেক্ষাপটটি তৈরি
করা ছিল। ঘটনাটি দিনদুপুরে হলে গুজব রচয়িতারা সংখ্যাটা অত দূর পর্যন্ত
নিতে পারতেন না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর
বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদপত্রে বলা হয়েছে, সেদিন অপারেশনে এক লাখ
৫৫ হাজার রাউন্ড গোলাবারুদ খরচ হয়েছে। ‘অবরোধের দিন দুপুর থেকে পরদিন ভোর
পর্যন্ত প্রায় ৮০ হাজার টিয়ার শেল, ৬০ হাজার রাবার বুলেট, ১৫ হাজার
শটগানের গুলি এবং ১২ হাজার সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহূত হয়। এর বাইরে পিস্তল
এবং রিভলবার জাতীয় ক্ষুদ্র অস্ত্রের গুলি খরচ হয়েছে মাত্র সাড়ে ৩০০
রাউন্ড। ...অবৈধ জমায়েতকে ভয় দেখাতে এবং তাদের মনোবল ভেঙে দিতে মূলত এই
অপারেশনে হ্যান্ড গ্রেনেড এবং রাবার বুলেটের ব্যবহার ছিল সবচেয়ে বেশি। রাত
২টা ৩১ মিনিটে মূল অপারেশন শুরু হলেও রাত ১০টার পর থেকেই মূলত আইনশৃঙ্খলা
বাহিনীর সদস্যরা তিন দিক থেকে ধীরে ধীরে শাপলা চত্বরের দিকে এগুতে থাকে।
পুলিশের পক্ষ থেকে ওই অভিযানের নাম দেওয়া হয় “অপারেশন সিকিউরড শাপলা”।
র্যাবের সাংকেতিক নাম ছিল “অপারেশন ফ্লাশ আউট”। অন্যদিকে, বর্ডার গার্ড
বাংলাদেশ (বিজিবি) ওই অপারেশনের নাম দেয় “অপারেশন ক্যাপচার শাপলা”।’
[যুগান্তর, ১২ মে] যে অভিযানে সাত হাজার ৫৮৮ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী
বাহিনীর সদস্য অংশ নেন এবং দেড় লাখের বেশি গোলাবারুদ ব্যবহূত হয়, সেখানে
নিহতের ও আহতের সংখ্যা নিয়ে গুজব তৈরি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। বরং গুজব
প্রচারিত না হলেই ধারণা করা যেত যে বাঙালি তার সৃষ্টিশীল প্রতিভা
হারিয়েছে। তার কল্পনাশক্তিতে দেখা দিয়েছে সাংঘাতিক ঘাটতি। আমার সঙ্গে তিন
পক্ষের আত্মনিয়োজিত মুখপাত্ররা একমত হবেন না, তা সত্ত্বেও বলব, শাপলা
চত্বর নাটকে একই সঙ্গে ভুল করেছে তিন পক্ষ: হেফাজত, মহাজোট সরকার এবং
বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোট। ওই চত্বর থেকে সবচেয়ে সুবিধা নিতে
চেয়েছিল যারা, সেই জামায়াতে ইসলামীর লাভও হয়নি লোকসানও হয়নি। তিন
পক্ষের ভুলের যোগফল শাপলা চত্বর নাটক। সেই ভুলের মাশুল হেফাজত, আওয়ামী লীগ
এবং বিএনপিকে আলাদা আলাদাভাবে দিতে হবে ভবিষ্যতে বহুদিন। পরাজয়ের পরিণতি
তিন পক্ষকেই ভোগ করতে হবে। হেফাজতের নেতারা সেদিন যে বোকামি ও
গোঁয়ার্তুমির পরিচয় দিয়েছেন, তেমনটি দেড় হাজার বছরের মুসলমানদের
ইতিহাসে দু-তিনবারের বেশি হতে দেখা যায়নি। যে গোত্রের নিজের মুরোদ মাপার
যোগ্যতা নেই এবং নিজের ভুল বোঝার ক্ষমতা নেই, তাদের বিপর্যয় বিধাতাও রোধ
করতে পারেন না। সমাজে আলেমদের শ্রদ্ধার চোখে দেখা হয়। সেই জিনিসটি তাঁরা
স্রেফ নিজেদের হঠকারিতার কারণে খোয়ালেন। হেফাজতি অবরোধ ও মহাসমাবেশের দুই
দিন আগে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পাদক ও গণমাধ্যমের
প্রতিনিধিদের কাছে যে বক্তব্য দেন, তা ছিল যুক্তিপূর্ণ ও সমঝোতামূলক। সে
বক্তব্যের হেফাজত নেতারা মূল্য দিলেন না। তাঁর মূল্যায়ন করলেন না। বরং
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পরদিন তা প্রত্যাখ্যান করে তাঁরা বক্তব্য দেন। সে
বক্তব্য ছিল সম্পূর্ণ অবিবেচনাপ্রসূত ও হঠকারী। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে
মর্যাদা দিলে এই অঘটন ঘটত না। তাতে হেফাজতও বাঁচত, সরকারও বাঁচত এবং
বাঁচতেন তাঁরা, যাঁরা ওই চত্বরে প্রাণ দিয়েছেন। বিএনপির নেতৃত্বের মেধা
প্রচুর, কিন্তু তাঁদের স্মৃতিশক্তি খুব কম। তাঁরা জলিল সাহেবের
‘ট্রাম্পকার্ড’ নাটক থেকে শিক্ষা নেননি। তাঁরা হেফাজত থেকে অতি
বোকামিপূর্ণভাবে ফায়দা নিতে চেয়েছিলেন। ওভাবে ফায়দা নিতে চাওয়াটা একটি
গণতান্ত্রিক সংগঠনের নেতৃত্বের চরম দেউলিয়াত্বের প্রকাশ। সে জন্য
তাৎক্ষণিক খেসারতটা দিতে হলো তাকেই। রাষ্ট্রে যে যা-ই করুক, ব্যবস্থাপকের
দায়িত্ব সরকারের। আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী জোটের নেতারা সুবুদ্ধি ও
দূরদর্শিতার পরিচয় দেননি। তা দিলে সংঘাত হতো না। প্রাণহানি ঘটত না।
শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হতো সমাবেশ এবং বিএনপিও একটি নীরব শিক্ষা পেত। মাওলানা
শফী সাহেবকে মঞ্চে ভূমিকা পালন করতে দেওয়া উচিত ছিল। দল থেকে ছয়টা
পর্যন্ত সময় বেঁধে না দিয়ে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে
রাত আটটা-নয়টা পর্যন্ত একটি সময় বেঁধে দিতে পারতেন। সে আদেশ অমান্য করলে
রাত অতটা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সরানোর অভিযান শুরু করবে, তা
টেলিভিশনে ঘোষণা করা যেত। দেশবাসীর কাছে সরকার স্বচ্ছ থাকত। সেদিন আমি
বিকেল চারটা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত আওয়ামী লীগপন্থী একটি টিভি
চ্যানেলের সামনে বসা ছিলাম। এ যুগে কোনো কিছু খুব বেশি গোপন করা সম্ভব নয়।
সন্ধ্যার আগে দেখলাম, বিজয়নগর ও নয়াপল্টন এলাকায় জিয়া, খালেদা ও
তারেকের ছবিসংবলিত ডিজিটাল ব্যানারগুলো স্তূপ করে পোড়ানো হচ্ছে।
প্লাস্টিকে ও কাঠের ফ্রেমে দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন। যারা আগুন দিচ্ছে,
তারা অনেকেই দীর্ঘ কুর্তা পরা ও মাথায় তাদের টুপি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী
বাহিনীর লোকেরা কাছেই দাঁড়িয়ে তা উপভোগ করছেন। ওসব আগুনের খেলা যে
হেফাজতের লোকরা করছে—তা আওয়ামী লীগের অবিচল ভোটদাতাও বিশ্বাস করবেন না। সব
দোষ হেফাজতের লোকের ঘাড়ে চাপানো হবে মারাত্মক ভুল। নীতিনির্ধারকেরা আর যে
ভুলটি করেছেন তা হলো, হেফাজতকারীদের কান ধরে ও হাত উঁচু করে তাড়ানো। ওই
সমাবেশে যাঁরা এসেছিলেন জেহাদি জোশ নিয়ে তাঁরাই শুধু হেফাজতের সমর্থক নন।
সারা দেশে ঘরে ঘরে বসে ছিলেন আরও বেশি হেফাজত-সমর্থক মানুষ। এখন টেলিভিশন
প্রত্যন্ত গ্রামেও আছে। বড় বড় গাছ পাঁচ মিনিটে কাটা যায় না। হেফাজতিরা
আর যা-ই আনুক, নিশ্চয়ই করাত নিয়ে আসেনি। তাই বলেছি, বাঙালির গত ১০০ বছরের
ইতিহাসে একটি ঘটনা থেকে সব পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হলো। গুজব তৈরি হয় সামাজিক ও
পারিপার্শ্বিক কারণে। শাপলা চত্বরে মানুষ মারা গেছে বলে মৃতের সংখ্যা
নিয়ে গুজববাজেরা গুজব রটাচ্ছে। অন্যদিকে গুজবের কারণেও বাংলাদেশে মানুষ
মারা যায় কুড়ি কুড়ি। আজ বাংলার মানুষ চরম বিশ্বাসী। যে যা শোনে তা-ই
বিশ্বাস করে। যদি কোনো সূত্র থেকে রটিয়ে দেওয়া হয় যে মঙ্গল গ্রহ থেকে
ভালুকের মতো দেখতে বিয়াল্লিশটি প্রাণী গত অমাবস্যার রাতে ভাওয়াল গড়ে
নেমে এসেছিল। এসেই শালবনের গাছের মধ্যে মিশে যায়। মানুষ তা বিশ্বাস করবে।
প্রশ্ন করবে না, কালো প্রাণীগুলো এল অমাবস্যার অন্ধকারে, কেমন করে তা দেখা
গেল? একটুও ভিন্নমত দিয়ে কোনো টক শো থেকে যে সন্দেহ পোষণ করা হবে, গুনে
দেখা যেহেতু অন্ধকারে সম্ভব হয়নি, তাই ৪২টি নাও হতে পারে, ৩২টি হওয়া
সম্ভব, তাও নয়। জাতির চিন্তাশক্তি ও বিচার-বিবেচনা আজ এই পর্যায়ে এসেছে।
এক রাজাকারের মৃত্যুদণ্ড হওয়ার পরেই তাঁর মুখ দেখা গেল চাঁদে। ৭০টি বছর
চাঁদমামা ওই মুখ তার বুকে ধারণ করল না। তার বুকজুড়ে দেখা গেল ওই মুখ,
যেদিন তার ফাঁসির হুকুম হলো। অর্থাৎ চাঁদও দুঃখে কাতর! ওই গুজব (অথবা অতি
খাঁটি সত্য) যারা প্রচার করেছে, তাদের প্রতিভার প্রশংসা করি। কী মোক্ষম
অস্ত্র! এক গুজবে ফাঁসির আগেই ৮০ জন শহীদ। কিন্তু কয়েকটি দিন ওই গুজবকে
কেন্দ্র করে (অবশ্য নিন্দা করেই) টক শোতে যে তুমুল বিতর্ক হয়, তা স্কুল
ছাত্রছাত্রীদের বিতর্ক প্রতিযোগিতাগুলোকে হার মানায়। কোনো দরকার ছিল কি ওই
প্রসঙ্গে অত কথা বলার? যে সমাজে উঁচু চিন্তা ও গঠনমূলক কাজের মূল্য নেই,
যেখানে সত্যকে মিথ্যা দিয়ে আড়াল করার উপকারিতা অশেষ, যেখানে গুজব খুবই
ফলপ্রসূ এবং গুজববাজেরা অতি সফল; সেখানে সত্য নয়, গুজবই গুরুত্ব পাবে।
যে-সমাজে গুজব ও মিথ্যা প্রাধান্য পায় সে-সমাজের মুখ অন্ধকারের দিকে—আলোর
দিকে নয়। সবার আগে দরকার সমাজ পরিবর্তনের সাধনা করা। পশ্চাৎপদ চিন্তা ও
প্রতিক্রিয়াশীলতা প্রতিহত করার শ্রেষ্ঠ উপায় যুক্তিবাদিতা ও প্রগতিশীল
ধ্যানধারণার প্রসার ঘটানো। যারা পেছনে পড়ে রয়েছে অজ্ঞতার অন্ধকারে, তাদের
স্নেহ-মমতা দিয়ে একটু সামনে নিয়ে আসা। আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে,
মানুষকে কান ধরে ওঠবস করিয়ে সমাজকে একচুলও প্রগতির দিকে নেওয়া সম্ভব নয়।সৈয়দ আবুল মকসুুদ: গবেষক, প্রাবন্ধিক ও কলামলেখক।
No comments