প্রেসবক্সেই যত ক্রিকেট উত্তেজনা by তারেক মাহমুদ
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে ম্যাচেই প্রিয় দল রাজস্থান রয়্যালসের পতাকা ওড়াল গ্রায়েম |
এহেলুলি সিবান্দা তাহলে ভুল বলেছিলেন! সিরিজ শুরুর আগে জিম্বাবুয়ের এই সাংবাদিকই বলেছিলেন, ক্রিকেট নাকি বুলাওয়ের মানুষের রক্তে। খেলা হলেই দর্শকে উপচে পড়ে মাঠ। কিসের কী? ধারণক্ষমতা ৯ হাজার হলেও কাল সারা স্টেডিয়ামে শ-তিনেক দর্শক ছিল কি না সন্দেহ। সরকারি ছুটি থাকায় প্রথম দুটি ওয়ানডে মাঠে কিছু দর্শক টানলেও বুলাওয়ের মানুষের কাছে এই সিরিজ যেন কালই মরে গেছে।
হতে পারে এই দর্শক-খরা জিম্বাবুয়ে দলের ব্যর্থতার কারণে। পয়সা খরচ করে মাঠে গিয়ে নিজেদের দলের পরাজয় তো বাংলাদেশের মানুষও দেখতে চায় না। অ্যান্ড্রু এই ধারণার পুরো বিপরীত। হারারেতে পরিবহন ব্যবসা আছে ভদ্রলোকের। সেই ব্যবসা ফেলে গত তিন দিন পড়ে আছেন বুলাওয়েতে। শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরের মাটোপস ন্যাশনাল পার্ক রিসোর্টে উঠেছেন সপরিবারে। ছেলে গ্রায়েমের খেলা দেখার আবদার যখন মেটাতেই হবে, রথ দেখা কলা বেচা দুটোই হোক। খেলার দিন খেলা দেখা, খেলা না থাকলে সাফারিতে ঘোরা।
গ্রায়েমের বয়স মাত্র ৮-৯ বছর হলে কী হবে, এই ছেলে নাকি মাকে নিয়ে ডারবান গিয়ে গত আইপিএলের খেলাও দেখে এসেছে! রাজস্থান রয়্যালস তার প্রিয় দল। মাথায় নীল রঙের পাগড়ি আর হাতে রাজস্থান রয়্যালসের পতাকাও সেটাও বলছিল। ‘ক্রিকেট ক্রেজি’ গ্রায়েমকে আটকানোর সাধ্য তো তাই হলোই না অ্যান্ড্রুর, সঙ্গে নিয়ে আসতে হলো গ্রায়েমের বন্ধু ডগলাসকেও। কুইন্স স্পোর্টস ক্লাব মাঠে দ্বিতীয় ওয়ানডেটা দেখার পর দুজনে তাদের প্রিয় খেলোয়াড়ও বদলে ফেলেছে এর মধ্যে। গ্রায়েম স্মিথ থেকে সরে এসে গ্রায়েমের প্রিয় এখন সাকিব। ডগলাসও মহেন্দ্র সিং ধোনিকে ভুলে সাকিবের নামই বলল বারবার।
কাল কুইন্স স্পোর্ট ক্লাবের গ্যালারিতে যে কজন দর্শক ছিল তাদের মধ্যে গ্রায়েম-ডগলাসদের বয়সীরাই বেশি। সে রকমই একজন স্কুলছাত্র জিরায়ি। তার প্রিয় খেলোয়াড় নাকি ‘মাশরাফুল’ (আসলে আশরাফুল)! ভুলটা ধরিয়ে দেওয়ার পর একটু লজ্জা পেলেও জিরায়ির মনে পড়ে গেল, মাশরাফি তো এই সিরিজে খেলছেই না। বাংলাদেশের মতো স্কুলপড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের জন্য এখানেও আছে বিনা পয়সায় খেলা দেখার সুযোগ। তরুণ প্রজন্মকে আরও বেশি করে মাঠে টেনে আনার উদ্যোগ।
জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের জন্য কাজটা যে কত জরুরি সেটা ভুমি ময়ো খুব ভালো বোঝেন। অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেলের পাঁচ সদস্যের বিদায়ী নির্বাচক কমিটিতে (এই সিরিজের পরই আর দায়িত্বে থাকছেন না তাঁরা) আছেন তিনি। নির্বাচক কমিটিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকেই ভুমির মনে হচ্ছে, জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটে এর চেয়ে কঠিন কাজ আর হয় না, ‘এটা ঠিক যে জিম্বাবুয়েতে এখন আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেটার নেই বললেই চলে। একজন ব্যাটসম্যান বড় ইনিংস খেললেও আরেকজন যে একটা মাঝারি মানের ইনিংস খেলে দিয়ে আসবে, সে রকম কেউ নেই। সবচেয়ে বড় সমস্যা, এখানে একই মানের অনেক ক্রিকেটার। সবাই মাঝারি মানের, কিন্তু কাকে বাদ দিয়ে আমরা কাকে নেব?’ তবে ভুমি আশাবাদী নতুনদের নিয়ে, গ্রায়েম-জিরায়ির মতো বয়সীরা শুধু মাঠেই আসছে না, ক্রিকেটটা খেলছেও, ‘আমাদের ক্রিকেট একাডেমি থেকে অনেক নতুন প্রতিভা উঠে আসছে। ভবিষ্যতের তারকা হয়তো সেখান থেকেই খুঁজে পাবে জিম্বাবুয়ে।’
কুইন্স স্পোর্টস ক্লাবের প্রেসবক্সের কথা আগেই বলেছি। ইন্টারনেট সমস্যার সমাধান হয়েছে মনে করে সকালে যে আশার আলো দেখেছিলাম, লাঞ্চের আগেই সেটা মরীচিকার মতো কোথায় হারিয়ে গেল! রিপোর্ট লিখছি আর ভাবছি লেখার পর সেটা কীভাবে পাঠব। আর ‘বাজার পরিস্থিতি’র অবস্থাও আগের মতোই। মানে সেই চিত্কার-চেঁচামেচি, হই-হল্লা। টেলর-মাসাকাদজার ১৪২ রানের জুটি সেই চেঁচামেচি কাল বাড়িয়ে দিল। হাততালি, ‘গ্রেট শট’, ‘গুড রান’, ‘কাম অন জিম্বাবুয়ে’ ফিফটির পর থেকেই মাসাকাদজার সেঞ্চুরি হয়ে যাচ্ছে বলে ঘোষণা। মাসাকাদজার সেঞ্চুরির পর তো পারলে একজন প্রেসবক্সের কাচ ভেঙেই ঝাঁপিয়ে পড়ে মাঠে—এটা প্রেসবক্স না গ্যালারি!
তা-ও ভালো, এহেলেলুর কথার সঙ্গে বাস্তবের কিছুটা মিল খুঁজে পাওয়া গেল। গ্যালারিতে উত্তাপ নাই থাকতে পারে, প্রেসবক্সটা তো জমজমাট! তা সেখানে কাজ করা যতই কষ্টের হোক।
হতে পারে এই দর্শক-খরা জিম্বাবুয়ে দলের ব্যর্থতার কারণে। পয়সা খরচ করে মাঠে গিয়ে নিজেদের দলের পরাজয় তো বাংলাদেশের মানুষও দেখতে চায় না। অ্যান্ড্রু এই ধারণার পুরো বিপরীত। হারারেতে পরিবহন ব্যবসা আছে ভদ্রলোকের। সেই ব্যবসা ফেলে গত তিন দিন পড়ে আছেন বুলাওয়েতে। শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরের মাটোপস ন্যাশনাল পার্ক রিসোর্টে উঠেছেন সপরিবারে। ছেলে গ্রায়েমের খেলা দেখার আবদার যখন মেটাতেই হবে, রথ দেখা কলা বেচা দুটোই হোক। খেলার দিন খেলা দেখা, খেলা না থাকলে সাফারিতে ঘোরা।
গ্রায়েমের বয়স মাত্র ৮-৯ বছর হলে কী হবে, এই ছেলে নাকি মাকে নিয়ে ডারবান গিয়ে গত আইপিএলের খেলাও দেখে এসেছে! রাজস্থান রয়্যালস তার প্রিয় দল। মাথায় নীল রঙের পাগড়ি আর হাতে রাজস্থান রয়্যালসের পতাকাও সেটাও বলছিল। ‘ক্রিকেট ক্রেজি’ গ্রায়েমকে আটকানোর সাধ্য তো তাই হলোই না অ্যান্ড্রুর, সঙ্গে নিয়ে আসতে হলো গ্রায়েমের বন্ধু ডগলাসকেও। কুইন্স স্পোর্টস ক্লাব মাঠে দ্বিতীয় ওয়ানডেটা দেখার পর দুজনে তাদের প্রিয় খেলোয়াড়ও বদলে ফেলেছে এর মধ্যে। গ্রায়েম স্মিথ থেকে সরে এসে গ্রায়েমের প্রিয় এখন সাকিব। ডগলাসও মহেন্দ্র সিং ধোনিকে ভুলে সাকিবের নামই বলল বারবার।
কাল কুইন্স স্পোর্ট ক্লাবের গ্যালারিতে যে কজন দর্শক ছিল তাদের মধ্যে গ্রায়েম-ডগলাসদের বয়সীরাই বেশি। সে রকমই একজন স্কুলছাত্র জিরায়ি। তার প্রিয় খেলোয়াড় নাকি ‘মাশরাফুল’ (আসলে আশরাফুল)! ভুলটা ধরিয়ে দেওয়ার পর একটু লজ্জা পেলেও জিরায়ির মনে পড়ে গেল, মাশরাফি তো এই সিরিজে খেলছেই না। বাংলাদেশের মতো স্কুলপড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের জন্য এখানেও আছে বিনা পয়সায় খেলা দেখার সুযোগ। তরুণ প্রজন্মকে আরও বেশি করে মাঠে টেনে আনার উদ্যোগ।
জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের জন্য কাজটা যে কত জরুরি সেটা ভুমি ময়ো খুব ভালো বোঝেন। অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেলের পাঁচ সদস্যের বিদায়ী নির্বাচক কমিটিতে (এই সিরিজের পরই আর দায়িত্বে থাকছেন না তাঁরা) আছেন তিনি। নির্বাচক কমিটিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকেই ভুমির মনে হচ্ছে, জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটে এর চেয়ে কঠিন কাজ আর হয় না, ‘এটা ঠিক যে জিম্বাবুয়েতে এখন আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেটার নেই বললেই চলে। একজন ব্যাটসম্যান বড় ইনিংস খেললেও আরেকজন যে একটা মাঝারি মানের ইনিংস খেলে দিয়ে আসবে, সে রকম কেউ নেই। সবচেয়ে বড় সমস্যা, এখানে একই মানের অনেক ক্রিকেটার। সবাই মাঝারি মানের, কিন্তু কাকে বাদ দিয়ে আমরা কাকে নেব?’ তবে ভুমি আশাবাদী নতুনদের নিয়ে, গ্রায়েম-জিরায়ির মতো বয়সীরা শুধু মাঠেই আসছে না, ক্রিকেটটা খেলছেও, ‘আমাদের ক্রিকেট একাডেমি থেকে অনেক নতুন প্রতিভা উঠে আসছে। ভবিষ্যতের তারকা হয়তো সেখান থেকেই খুঁজে পাবে জিম্বাবুয়ে।’
কুইন্স স্পোর্টস ক্লাবের প্রেসবক্সের কথা আগেই বলেছি। ইন্টারনেট সমস্যার সমাধান হয়েছে মনে করে সকালে যে আশার আলো দেখেছিলাম, লাঞ্চের আগেই সেটা মরীচিকার মতো কোথায় হারিয়ে গেল! রিপোর্ট লিখছি আর ভাবছি লেখার পর সেটা কীভাবে পাঠব। আর ‘বাজার পরিস্থিতি’র অবস্থাও আগের মতোই। মানে সেই চিত্কার-চেঁচামেচি, হই-হল্লা। টেলর-মাসাকাদজার ১৪২ রানের জুটি সেই চেঁচামেচি কাল বাড়িয়ে দিল। হাততালি, ‘গ্রেট শট’, ‘গুড রান’, ‘কাম অন জিম্বাবুয়ে’ ফিফটির পর থেকেই মাসাকাদজার সেঞ্চুরি হয়ে যাচ্ছে বলে ঘোষণা। মাসাকাদজার সেঞ্চুরির পর তো পারলে একজন প্রেসবক্সের কাচ ভেঙেই ঝাঁপিয়ে পড়ে মাঠে—এটা প্রেসবক্স না গ্যালারি!
তা-ও ভালো, এহেলেলুর কথার সঙ্গে বাস্তবের কিছুটা মিল খুঁজে পাওয়া গেল। গ্যালারিতে উত্তাপ নাই থাকতে পারে, প্রেসবক্সটা তো জমজমাট! তা সেখানে কাজ করা যতই কষ্টের হোক।
No comments