দেশের অস্থিরতায় কলকাতায় বাংলাদেশি পর্যটকরা দুশ্চিন্তায়
শুক্রবার অনেক পর্যটকই জানান, দেশের পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে তা শুধু তাদের পরিবারের নিরাপত্তাই নয়, ভারত-বাংলাদেশের পারস্পরিক যাতায়াতকেও প্রভাবিত করতে পারে। এ নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। শুক্রবার ভোরে পরিবারের এক সদস্যের চিকিৎসার জন্য কলকাতায় পৌঁছেছেন মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, কয়েক দিন ধরেই ঢাকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত। আর নতুন করে সহিংসতা শুরু হওয়াটা ভীষণ চিন্তার।
অনেক পর্যটককে ট্রাভেল এজেন্টদের সঙ্গে ফেরার টিকিট এগিয়ে আনা বা পুনঃনির্ধারণ নিয়ে আলোচনা করতে দেখা গেছে। আবার কেউ কেউ হোটেলের সামনে বা চায়ের দোকানে ছোট ছোট দলে জড়ো হয়ে দেশের খবর নিয়ে আলোচনা করছেন এবং নিয়মিত পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
বাংলাদেশ থেকে আসা আরেক পর্যটক সুমন মণ্ডল বলেন, আমি প্রার্থনা করছি আগামী দু’এক দিনের মধ্যে পরিস্থিতি শান্ত হোক। প্রায় ১৫ মাস ধরে চলা দীর্ঘ মন্দার পর অক্টোবর থেকে বাংলাদেশি পর্যটকের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করে। জুলাই মাসে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক চাপ ভ্রমণ কার্যক্রমকে মারাত্মকভাবে কমিয়ে দেয়। ফলে ‘মিনি বাংলাদেশ’-এর ব্যবসায়ীরা অস্তিত্ব সংকটে পড়েন। হোটেল, গেস্টহাউস, মানি এক্সচেঞ্জ কাউন্টার ও পরিবহন ব্যবসায়ীরা কেবল সম্প্রতি আবার কিছুটা স্বস্তি পেতে শুরু করেছিলেন। এর বড় কারণ ছিল চিকিৎসা পর্যটনের পুনরুদ্ধার।
শিশুসহ পরিবার নিয়ে ভ্রমণকারীদের ক্ষেত্রে এই অনিশ্চয়তা আরও বেশি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। খুলনার বাসিন্দা আমিন ইসলাম স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে কলকাতায় গিয়েছেন। তিনি বলেন, নিরাপত্তাই এখন তাদের সবচেয়ে বড় চিন্তা। নতুন করে সহিংসতা শুরু হওয়ায় ব্যবসায়ীরা এবং হোটেল মালিকরাও আশঙ্কা করছেন, সদ্য শুরু হওয়া এই নাজুক ব্যবসায়িক পুনরুদ্ধার আবারও ব্যাহত হতে পারে। অনেকের মতে, বুকিং বাতিল বা আগেভাগে ফিরে যাওয়া সরাসরি সেই ব্যবসায় প্রভাব ফেলবে, যা ব্যাপকভাবে বাংলাদেশি পর্যটকদের ওপর নির্ভরশীল।
কলিন স্ট্রিটের একটি গেস্টহাউসের একজন মালিক বলেন, আমরা আমাদের অতিথিদের আশ্বস্ত করছি যে কলকাতায় তারা সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং এখানে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। তবে দেশের অনিশ্চিত পরিস্থিতি স্বাভাবিকভাবেই তাদের পরিকল্পনা ও আমাদের ব্যবসার ওপর প্রভাব ফেলছে।

No comments