মোদি সরকার ও বহির্বিশ্ব
এমন নয় যে বুথ-ফেরত সমীক্ষা একেবারে অক্ষরে অক্ষরে মিলে যায়। এমনও নয় যে বুথ-ফেরত সমীক্ষায় যে ফল উঠে এল, কার্যত দেখা গেল ফল হলো ঠিক উল্টো। এ দেশের ক্রমেই সাবালক হয়ে ওঠা নির্বাচনী সমীক্ষা সম্ভবত এই দুয়ের মাঝামাঝি কিছু একটা। তাই প্রতিটি সমীক্ষার শেষে একটা ফুটনোটে ভুলভ্রান্তির পরিমাণ দেওয়া থাকে। জনপ্রিয় ধারণায় তা কখনো ৫ থেকে ১০ শতাংশের কম-বেশি হয় না। দীর্ঘ এক মাস ধরে নয় দফার নির্বাচনের পর দেশের ছয়টি সংস্থা বুথ-ফেরত সমীক্ষার ফল সোমবার সন্ধ্যায় প্রকাশ করল। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আপত্তি মেনে ভোট চলাকালীন পর্যায়ক্রমে এই সমীক্ষা প্রকাশের ওপর ভারতের নির্বাচন কমিশন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। ঠিকই করেছে। কেননা, তা না করলে নির্বাচন প্রভাবিত হতে পারত। ছয় সংস্থার সবাই বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএকে জয়ী বলে দেখিয়েছে। এদের মধ্যে এনডিএকে সবচেয়ে কম আসন দিয়েছে যে সংস্থা, তারা ২৫৭-এর বেশি ওঠেনি। সবচেয়ে বেশি দিয়েছে যারা তারা ৩৪০ পর্যন্ত উঠেছে। এই সংস্থা আবার শুধু বিজেপিকেই ২৯১ আসন দিয়েছে, যা সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ২৭২-এর চেয়ে ১৯টি বেশি। ছয়টির মধ্যে পাঁচটি সংস্থার হিসাবে দেখা যাচ্ছে, বিজেপি যাদের সঙ্গে জোট বেঁধে ভোটে লড়ল, সেই শরিকদের সাহায্য নিয়েই তারা সরকার গড়তে পারছে। অন্য বন্ধুদের খোঁজ করতে হচ্ছে না।
এই সমীক্ষা অনুযায়ী কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএর অবস্থা খুবই করুণ। তাদের পাওনা ৭০ থেকে ১৩৫-এর মধ্যে। এই বুথ-ফেরত সমীক্ষা কতটা নির্ভরযোগ্য, সে নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ থাকলেও নরেন্দ্র মোদি যে ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন, সে বিষয়ে বিশেষ সন্দেহ এখন আর কেউ প্রকাশ করছেন না। আট মাস আগে প্রধানমন্ত্রিত্বের দাবিদার হয়ে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ৪০০-এর বেশি জনসভা করেছেন, তিন লাখ কিলোমিটার দূরত্ব এই সময়ে নির্বাচনী প্রচারে অতিক্রম করেছেন এবং সাড়ে চার হাজার জনপদে গিয়েছেন। প্রচারে অভিনবত্বও এনেছেন ‘চায় পে চর্চা’ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। এই প্রথম নির্বাচনকে তিনি সম্পূর্ণভাবে ব্যক্তিকেন্দ্রিক করে তুলেছেন, যা অতীতে কখনো হয়নি। গোটা নির্বাচনে একদিকে ছিলেন মোদি, বাকিরা অন্যদিকে। ‘ভোটের হাওয়া’য় সেই উপলব্ধিতেই লিখেছিলাম, এবারের ভোটে লড়াই ‘মোদি বনাম অবশিষ্ট ভারতের’। মার্কেটিংয়ের পরিভাষায় বলা যায়, নরেন্দ্র মোদি প্রোডাক্টটি বিজেপি ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ খুব ভালোভাবে বিক্রি করতে পেরেছে। এবং সেখানেও মোদি সাবলীলভাবে নিজেকে দল ও সংঘের ঊর্ধ্বে স্থাপন করতে পেরেছেন। বুথ-ফেরত সমীক্ষার মূল নির্যাস সত্য হলে স্বাভাবিক প্রশ্ন জাগতেই পারে, কেন মোদিকে দেশের অধিকাংশ মানুষ পছন্দ করলেন? এই প্রশ্নেরও বহু ব্যাখ্যা আছে। একটা সম্ভাব্য বড় কারণ, সারা দেশের কাছে
No comments