আশায় বুক বাঁধি by মোহিব্বুল মোক্তাদীর তানিম
মঙ্গলবার কক্সবাজারবাসীর জন্য আশার ও অনেক কিছু অর্জনের দিন। প্রধানমন্ত্রী তার ব্যস্ততম কক্সবাজার সফর করছেন।
দুই বছরের মধ্যে তৃতীয় বারের মতো একই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কক্সবাজার সফর করছেন তিনি।
গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর এক অনাকাঙ্ক্ষিত সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত বৌদ্ধ মন্দিরগুলোর সংস্কার পরবর্তী নির্মাণের উদ্বোধনের পাশাপাশি অনেক উন্নয়নমূলক কাজের অগ্রযাত্রাও তিনি নিশ্চিত করবেন এ সফরে।
সম্ভাবনাময়ী উপকূলীয় এ জেলার সরল ও জীবন সংগ্রামী মানুষের আতিথেয়তায় ধন্য হওয়ার পাশাপাশি আজ লক্ষাধিক প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অনেক মৌন আকাঙ্ক্ষা কিংবা রাষ্ট্রের কাছে প্রত্যাশার আহ্বানে আচ্ছাদিত থাকবেন জনপ্রিয় এই নেত্রী।
বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী উখিয়া-টেকনাফ সংসদীয় আসনের জনসভায় বিশাল জনগণের সামনে প্রধানমন্ত্রী যখন আজ মূল্যবান বক্তব্য দেবেন, তখন রাজনৈতিক বক্তব্য ছাড়িয়ে হয়তো অনেক স্বপ্নের কথাও থাকবে।
থাকতে পারে, আসন্ন নির্বাচনী সংকট থেকে উত্তরণের নতুন কোন ফর্মুলা কিংবা গাইড লাইন। তবে সবকিছু ছাড়িয়ে, একজন আজন্ম কক্সবাজারবাসী হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বশীল এই সফরকে অভিনন্দিত করার পাশাপাশি আমার হৃদয়ে কিছু আশার বিচ্ছুরণ দানা বাঁধে।
খুব সম্ভবত, এসব আশাচ্ছটা আমাদের সবার প্রাণের দাবি। মূল প্রসঙ্গে ফিরে আসি।
কে না জানেন, সারাদেশে তারুণ্যের জাগরণকে আজ প্রশ্নবিদ্ধ করে দিয়েছে মরণ নেশা ইয়াবা। আর এই ইয়াবার মূল প্রবেশদ্বার টেকনাফ সীমান্ত। বিগত কয়েক বছরে মিডিয়া কেন্দ্রিক তথ্য থেকে আমরা জানি এই ইয়াবা পাচারের পেছনে প্রভাবশালীদেরও যোগসাজশ থাকে।
ভয়ংকর এই নেশার বিন্যাসকে ধ্বংস করার নিমিত্তে যদি প্রধানমন্ত্রী আজ কোন ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেন, তাহলে তা অনাগত সমাজের জন্য একটি বিশাল দিক নির্দেশনা হয়ে থাকবে।
বর্তমান সরকারকে আমরা কৃষিবান্ধব সরকার হিসেবেই জানি। বিগত বাজেটে কৃষি ঋণকে উৎসাহিত করা হয়েছে। রামু উপজেলার অনেক প্রান্তিক কৃষক বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানির উচ্চ সুদের ঋণ চক্রের ফাঁদে আটকা পড়ে বাধ্য হচ্ছে তামাক চাষ করতে। নিষিদ্ধ এ তামাক চাষ শুধু জমির উর্বরতাই নষ্ট করছে না, পরিবেশ বিপর্যয়ের নিয়ামকগুলোকেও শক্তিশালী করছে। গত কয়েক বছরের টানা বন্যায় ক্ষতিকর প্রভাবের বিস্তৃতির একটি কারণ এ তামাক চাষ।
স্থানীয়ভাবে এ চাষকে নির্মূল করা অনেক কঠিন। যদি প্রশাসনের উচ্চ মহল কোন নতুন গাইড লাইন প্রণয়ন করে, যাতে কোম্পানিগুলো এ উর্বর জমিগুলো তামাক চাষের জন্য ব্যবহার না করে।
শুধু কক্সবাজারবাসী নয়, পুরো দেশের জন্যই বিষফোঁড়া হয়ে উঠেছে রোহিঙ্গা সমস্যা। অভ্যন্তরীণ নয়, আন্তর্জাতিক রাজনীতির অংশ এটি। পুশ ইন– পুশ ব্যাকে নির্যাতিত আজ বিশ্ব মানবতা। এই অঞ্চলে অপরাধ প্রবণতা মাত্রাতিরিক্ত থাকার অন্যতম কারণ এই সমস্যা।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ‘ক্যারিশম্যাটিক’ কোন আহ্বান কিংবা ঘোষণার দিকে আজ অনেকেই চেয়ে থাকবে।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ২০০৮ এর যোগাযোগ ও ভৌত অবকাঠামোতে (১৫ অনুচ্ছেদ) উল্লেখ আছে, পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রসমূহের সঙ্গে রেল ও সড়ক ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে।
ভারতের সঙ্গে যা ইতোমধ্যে স্থাপিত হয়েছে এবং নেপালের সঙ্গেও স্থাপিত হচ্ছে।
কিন্তু এশিয়ান হাইওয়েতে কানেক্ট হওয়ার মাধ্যমে কক্সবাজার–মিয়ানমার সড়ক পথ হয়ে চীন, থাইল্যান্ডের সঙ্গে যোগাযোগের যে বাণিজ্যিক সম্ভাবনার স্বপ্ন আমাদের হাতছানি দিচ্ছিল তা অনেকটাই শিথিল হয়ে গেছে।
ঐতিহাসিক শাহ সুজা সড়কের সংস্কার কাজ ত্বরাণ্বিত করার মাধ্যমে এ সড়কটিকে মিয়ানমার প্রবেশের গেটওয়ে হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। ষোড়শ শতাব্দীতে মুঘল সম্রাট শাহজাহানের ছেলে বাংলার সুবেদার শাহ সুজা এ সড়ক নির্মাণ করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে
ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপদে আশ্রয়স্থলে যাওয়ার জন্য এ সড়ক ব্যবহৃত হত।
প্রায় ৪৩ কি.মি. দীর্ঘ এ সড়কের প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্ত জনপদের বাণিজ্যিক প্রসারকে আন্তর্জাতিকীকরণের সম্ভাবনার কৌশলী উদ্যোগের বাস্তবায়নের দিকে চেয়ে থাকবে অনেকেই।
২০১২ সালের ১৪ মার্চ মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্র সীমানা সংক্রান্ত রায়ের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট সীমানার ওপর আমাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যেটিকে আমরা সমুদ্র বিজয় হিসেবে উদযাপন করেছি।
বিভিন্ন সময় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের মাধ্যমে আমরা আশ্বস্ত হয়েছি ২০১৪ সালে ভারতের সঙ্গে সীমানা নিষ্পত্তির রায় ও আমাদের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে। সম্প্রতি নৌবাহিনীর এক অনুষ্ঠানে সাবমেরিন ক্রয়ের ঘোষণাসহ সমুদ্র নিয়ন্ত্রণের অনেক সম্ভাবনার কথা শুনিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
লক্ষণীয় যে, বিশ্বের পরাক্রমশালী দেশগুলো বঙ্গোপসাগরের উপর তাদের দীর্ঘদিনের মনযোগ বাড়িয়েছে। সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্র বন্দরের দাবিকে বাস্তবায়নের জন্য সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার পর্যায়গুলোকে উপস্থাপন করা যেতে পারে।
আমাদের সমুদ্র সীমানায় বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর অসম আধিপত্যবাদ যেন না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি রামুবাসী অপেক্ষায় থাকবেন রামু কলেজ ও শতবছরের পুরনো খিজারি স্কুলের সরকারিকরণের ঘোষণা শোনার প্রত্যাশায়। ভিত্তিপ্রস্তরের আনুষ্ঠানিকতা পেরুনোর পরও রেল লাইনের প্রণিধানযোগ্য কোন অগ্রগতি এখনো হয়নি। রামু ফায়ার ব্রিগেডের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হওয়ার পর এর অগ্রযাত্রা তরাণ্বিত হবে এমনটা আশা করতেই পারি।
স্টেডিয়াম, বিমানবন্দর সংস্কার, মেরিন ড্রাইভ পুনঃনির্মাণ, কক্সবাজার শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ, ইদ্গাউকে ঊপজেলা ঘোষণা সহ শত দাবির ফর্দ প্রধানমন্ত্রীর দফতরে জেলা প্রশাসন মারফত পৌঁছেছে। এসব প্রত্যাশার প্রতিফলন দেখার আশায় আমরা সবাই।
তৎকালীন চার দলীয় জোটের শেষ সময়ে সাবমেরিন ল্যান্ডিং স্টেশন উদ্বোধনের জন্য কক্সবাজার সফর করেছিলেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
স্থানীয় সংসদ সদস্য তখন অনরেকর্ড প্রধানমন্ত্রীর কাছে কক্সবাজারে একটি হাইটেক আইটি জোন কিংবা আইটি পার্ক করার দাবি তুলেছিলেন। পুরনো অথচ সম্ভাবনাময়ী, স্বপ্নীল এ দাবিটি এখনো বহাল আছে, মেলেনি কোন আশ্বাস।
উচ্চ ব্যান্ডউইথের সহজলভ্যতাকে নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের কাজ করার পরিবেশ করে দেওয়ার জন্য কক্সবাজারের চেয়ে উত্তম কোন জায়গা আর কোথায় হতে পারে?।
শুধু সফটওয়্যার শিল্পই নয়, আমাদের স্বপ্নবাজ হৃদয় আশা করে এ জেলাতেই একসময় নকিয়া, অ্যাপল, মাইক্রোসফট, এইচপি’র মতো প্রতিষ্ঠান তাদের গবেষণার কার্যক্রম পরিচালনা করবে। দেশি অনেক প্রযুক্তির প্রতিষ্ঠান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের সঙ্গে।
সরকারের সর্বোচ্চ মহলের কিছু পরিকল্পনাই পারে আমাদের এসব স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটাতে। আপাতত আশায় বুক বাঁধা ছাড়া কিই বা করার আছে?
মোহিব্বুল মোক্তাদীর তানিম: প্রযুক্তিবিদ, mmtanim@gmail.com
গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর এক অনাকাঙ্ক্ষিত সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত বৌদ্ধ মন্দিরগুলোর সংস্কার পরবর্তী নির্মাণের উদ্বোধনের পাশাপাশি অনেক উন্নয়নমূলক কাজের অগ্রযাত্রাও তিনি নিশ্চিত করবেন এ সফরে।
সম্ভাবনাময়ী উপকূলীয় এ জেলার সরল ও জীবন সংগ্রামী মানুষের আতিথেয়তায় ধন্য হওয়ার পাশাপাশি আজ লক্ষাধিক প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অনেক মৌন আকাঙ্ক্ষা কিংবা রাষ্ট্রের কাছে প্রত্যাশার আহ্বানে আচ্ছাদিত থাকবেন জনপ্রিয় এই নেত্রী।
বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী উখিয়া-টেকনাফ সংসদীয় আসনের জনসভায় বিশাল জনগণের সামনে প্রধানমন্ত্রী যখন আজ মূল্যবান বক্তব্য দেবেন, তখন রাজনৈতিক বক্তব্য ছাড়িয়ে হয়তো অনেক স্বপ্নের কথাও থাকবে।
থাকতে পারে, আসন্ন নির্বাচনী সংকট থেকে উত্তরণের নতুন কোন ফর্মুলা কিংবা গাইড লাইন। তবে সবকিছু ছাড়িয়ে, একজন আজন্ম কক্সবাজারবাসী হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বশীল এই সফরকে অভিনন্দিত করার পাশাপাশি আমার হৃদয়ে কিছু আশার বিচ্ছুরণ দানা বাঁধে।
খুব সম্ভবত, এসব আশাচ্ছটা আমাদের সবার প্রাণের দাবি। মূল প্রসঙ্গে ফিরে আসি।
কে না জানেন, সারাদেশে তারুণ্যের জাগরণকে আজ প্রশ্নবিদ্ধ করে দিয়েছে মরণ নেশা ইয়াবা। আর এই ইয়াবার মূল প্রবেশদ্বার টেকনাফ সীমান্ত। বিগত কয়েক বছরে মিডিয়া কেন্দ্রিক তথ্য থেকে আমরা জানি এই ইয়াবা পাচারের পেছনে প্রভাবশালীদেরও যোগসাজশ থাকে।
ভয়ংকর এই নেশার বিন্যাসকে ধ্বংস করার নিমিত্তে যদি প্রধানমন্ত্রী আজ কোন ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেন, তাহলে তা অনাগত সমাজের জন্য একটি বিশাল দিক নির্দেশনা হয়ে থাকবে।
বর্তমান সরকারকে আমরা কৃষিবান্ধব সরকার হিসেবেই জানি। বিগত বাজেটে কৃষি ঋণকে উৎসাহিত করা হয়েছে। রামু উপজেলার অনেক প্রান্তিক কৃষক বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানির উচ্চ সুদের ঋণ চক্রের ফাঁদে আটকা পড়ে বাধ্য হচ্ছে তামাক চাষ করতে। নিষিদ্ধ এ তামাক চাষ শুধু জমির উর্বরতাই নষ্ট করছে না, পরিবেশ বিপর্যয়ের নিয়ামকগুলোকেও শক্তিশালী করছে। গত কয়েক বছরের টানা বন্যায় ক্ষতিকর প্রভাবের বিস্তৃতির একটি কারণ এ তামাক চাষ।
স্থানীয়ভাবে এ চাষকে নির্মূল করা অনেক কঠিন। যদি প্রশাসনের উচ্চ মহল কোন নতুন গাইড লাইন প্রণয়ন করে, যাতে কোম্পানিগুলো এ উর্বর জমিগুলো তামাক চাষের জন্য ব্যবহার না করে।
শুধু কক্সবাজারবাসী নয়, পুরো দেশের জন্যই বিষফোঁড়া হয়ে উঠেছে রোহিঙ্গা সমস্যা। অভ্যন্তরীণ নয়, আন্তর্জাতিক রাজনীতির অংশ এটি। পুশ ইন– পুশ ব্যাকে নির্যাতিত আজ বিশ্ব মানবতা। এই অঞ্চলে অপরাধ প্রবণতা মাত্রাতিরিক্ত থাকার অন্যতম কারণ এই সমস্যা।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ‘ক্যারিশম্যাটিক’ কোন আহ্বান কিংবা ঘোষণার দিকে আজ অনেকেই চেয়ে থাকবে।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ২০০৮ এর যোগাযোগ ও ভৌত অবকাঠামোতে (১৫ অনুচ্ছেদ) উল্লেখ আছে, পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রসমূহের সঙ্গে রেল ও সড়ক ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে।
ভারতের সঙ্গে যা ইতোমধ্যে স্থাপিত হয়েছে এবং নেপালের সঙ্গেও স্থাপিত হচ্ছে।
কিন্তু এশিয়ান হাইওয়েতে কানেক্ট হওয়ার মাধ্যমে কক্সবাজার–মিয়ানমার সড়ক পথ হয়ে চীন, থাইল্যান্ডের সঙ্গে যোগাযোগের যে বাণিজ্যিক সম্ভাবনার স্বপ্ন আমাদের হাতছানি দিচ্ছিল তা অনেকটাই শিথিল হয়ে গেছে।
ঐতিহাসিক শাহ সুজা সড়কের সংস্কার কাজ ত্বরাণ্বিত করার মাধ্যমে এ সড়কটিকে মিয়ানমার প্রবেশের গেটওয়ে হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। ষোড়শ শতাব্দীতে মুঘল সম্রাট শাহজাহানের ছেলে বাংলার সুবেদার শাহ সুজা এ সড়ক নির্মাণ করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে
ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপদে আশ্রয়স্থলে যাওয়ার জন্য এ সড়ক ব্যবহৃত হত।
প্রায় ৪৩ কি.মি. দীর্ঘ এ সড়কের প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্ত জনপদের বাণিজ্যিক প্রসারকে আন্তর্জাতিকীকরণের সম্ভাবনার কৌশলী উদ্যোগের বাস্তবায়নের দিকে চেয়ে থাকবে অনেকেই।
২০১২ সালের ১৪ মার্চ মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্র সীমানা সংক্রান্ত রায়ের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট সীমানার ওপর আমাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যেটিকে আমরা সমুদ্র বিজয় হিসেবে উদযাপন করেছি।
বিভিন্ন সময় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের মাধ্যমে আমরা আশ্বস্ত হয়েছি ২০১৪ সালে ভারতের সঙ্গে সীমানা নিষ্পত্তির রায় ও আমাদের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে। সম্প্রতি নৌবাহিনীর এক অনুষ্ঠানে সাবমেরিন ক্রয়ের ঘোষণাসহ সমুদ্র নিয়ন্ত্রণের অনেক সম্ভাবনার কথা শুনিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
লক্ষণীয় যে, বিশ্বের পরাক্রমশালী দেশগুলো বঙ্গোপসাগরের উপর তাদের দীর্ঘদিনের মনযোগ বাড়িয়েছে। সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্র বন্দরের দাবিকে বাস্তবায়নের জন্য সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার পর্যায়গুলোকে উপস্থাপন করা যেতে পারে।
আমাদের সমুদ্র সীমানায় বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর অসম আধিপত্যবাদ যেন না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি রামুবাসী অপেক্ষায় থাকবেন রামু কলেজ ও শতবছরের পুরনো খিজারি স্কুলের সরকারিকরণের ঘোষণা শোনার প্রত্যাশায়। ভিত্তিপ্রস্তরের আনুষ্ঠানিকতা পেরুনোর পরও রেল লাইনের প্রণিধানযোগ্য কোন অগ্রগতি এখনো হয়নি। রামু ফায়ার ব্রিগেডের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হওয়ার পর এর অগ্রযাত্রা তরাণ্বিত হবে এমনটা আশা করতেই পারি।
স্টেডিয়াম, বিমানবন্দর সংস্কার, মেরিন ড্রাইভ পুনঃনির্মাণ, কক্সবাজার শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ, ইদ্গাউকে ঊপজেলা ঘোষণা সহ শত দাবির ফর্দ প্রধানমন্ত্রীর দফতরে জেলা প্রশাসন মারফত পৌঁছেছে। এসব প্রত্যাশার প্রতিফলন দেখার আশায় আমরা সবাই।
তৎকালীন চার দলীয় জোটের শেষ সময়ে সাবমেরিন ল্যান্ডিং স্টেশন উদ্বোধনের জন্য কক্সবাজার সফর করেছিলেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
স্থানীয় সংসদ সদস্য তখন অনরেকর্ড প্রধানমন্ত্রীর কাছে কক্সবাজারে একটি হাইটেক আইটি জোন কিংবা আইটি পার্ক করার দাবি তুলেছিলেন। পুরনো অথচ সম্ভাবনাময়ী, স্বপ্নীল এ দাবিটি এখনো বহাল আছে, মেলেনি কোন আশ্বাস।
উচ্চ ব্যান্ডউইথের সহজলভ্যতাকে নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের কাজ করার পরিবেশ করে দেওয়ার জন্য কক্সবাজারের চেয়ে উত্তম কোন জায়গা আর কোথায় হতে পারে?।
শুধু সফটওয়্যার শিল্পই নয়, আমাদের স্বপ্নবাজ হৃদয় আশা করে এ জেলাতেই একসময় নকিয়া, অ্যাপল, মাইক্রোসফট, এইচপি’র মতো প্রতিষ্ঠান তাদের গবেষণার কার্যক্রম পরিচালনা করবে। দেশি অনেক প্রযুক্তির প্রতিষ্ঠান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের সঙ্গে।
সরকারের সর্বোচ্চ মহলের কিছু পরিকল্পনাই পারে আমাদের এসব স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটাতে। আপাতত আশায় বুক বাঁধা ছাড়া কিই বা করার আছে?
মোহিব্বুল মোক্তাদীর তানিম: প্রযুক্তিবিদ, mmtanim@gmail.com
No comments