সিরিয়া হামলা নিয়ে প্রতিবেশীদের ভাবনা
রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অজুহাত তুলে সিরিয়া হামলা চালাতে নিঃসঙ্গ যুক্তরাষ্ট্র অনঢ় অবস্থানের কথা প্রকাশ করেছে। ওবামা তার ছক কষে ফেলেছেন। এখন কংগ্রেসে অনুমোদনের অপেক্ষার পালা। গ্রীষ্মকালীন অবকাশ শেষে ৯ সেপ্টেম্বর কংগ্রেসে যোগ দিতে যাচ্ছেন সিনেটররা। এদিকে, ফ্রান্সেও অনুরূপ একটি বিল বুধবার পার্লামেন্টে বিশেষ অধিবেশনে পাস করাতে প্রস্তাব দেবেন প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোয়া ওলান্দ। বিদেশী হস্তক্ষেপ নিয়ে সিরিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলো কি চিন্তা-ভাবনা করছে? এ ব্যাপারে তাদের প্রতিক্রিয়াই বা কেমন? সিএনএন-র বিশেষ প্রতিবেদনে সিরিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোর সার্বিক অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনটি নিুরূপ-
লেবানন : সিরিয়ায় সম্ভাব্য হামলা বিবেচনায় লেবাননের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। লেবানন সরকার মনে করছে রাজধানী বৈরুত থেকে দামেস্ক’র দূরত্ব মাত্র ৭০ কিলোমিটার হওয়ায় সিরিয়ায় যে কোনো হামলায় দামেস্কের সঙ্গে সঙ্গে বৈরুত-এ অস্থিতিশীলতা ছড়িয়ে পড়বে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, সিরিয়ার মতো বড় দেশের পাশে লেবাননের মতো আয়তনে ক্ষুদ্র প্রতিবেশী সিরিয়ার ওপর যে কোনো হামলার সরাসরি প্রভাব পড়বে। এদিকে, লেবাননের ডেমোক্রেটিক দলের নেতা তালাল আরসালান বলেন, দামেস্কের উপকণ্ঠে বাশার সরকার রাসায়নিক অস্ত্র হামলা চালিয়েছে এ মিথ্যাচার যুক্তরাষ্ট্রের ইরাক হামলার চালানোর মিথ্যাচারেরই বহিঃপ্রকাশ।
ইসরাইল : ইসরাইল সরকার মনে করে, সিরিয়ায় হামলা হলে সিরিয়াও পাল্টা রাসায়নিক অস্ত্র হামলা চালাতে পারে। তাই, আগাম সতর্কতা হিসেবে দেশটির শহরগুলোতে রাসায়নিক গ্যাসরোধী মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে। এদিকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বার্তাসংস্থা সিএনএন-কে বলেন, যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে ইসরাইল প্রস্তুত। তেলআবিব আক্রান্ত হলে আমি দামেস্ক-এ হামলা চালাব।
জর্ডান : সিরিয়ার সীমান্ত থেকে মাত্র এক ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থান জর্ডানের। এমনকি, সিরিয়ার সব ক্ষেপণাস্ত্রের হুমকির মুখে জর্ডানের সবকটি গুরুত্বপূর্ণ শহর। তার ওপর জর্ডানের রাজা কিং আবদুল্লাহ পশ্চিমা-বিশ্বের ঘনিষ্ঠ মিত্র। আরব নেতাদের মধ্যে কিং আবদুল্লাহই সর্বপ্রথম বাশারকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। বিশ্লেষকরা মনে করেন, জর্ডানের বাশার বিরোধীদের সমর্থন দেয়ায় সিরিয়া জর্ডানে হামলা চালাতে পারে। কারণ জর্ডানের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ সুন্নী এবং তারা সিরিয়ার বিদ্রোহীদের প্রতি সহানুভূতিশীল।
এটা এখন প্রমাণিত সত্য যে, সৌদি আরব জর্ডানের মাধ্যমে সিরিয়ার বিদ্রোহীদের অস্ত্র সরবরাহ করে থাকে। তবে জর্দান বার বার বলছে তারা সিরিয়া যুদ্ধে জড়াতে চায় না। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। গত সপ্তাহে সিরিয়ায় হামলা বিষয় নিয়ে বিশ্বের যুদ্ধবাজ দেশগুলোর নেতারা এই জর্ডানেই মিলিত হয়েছিলেন। তবে দেশটির সরকার বলছে তারা প্রতিবেশী দেশে পশ্চিমা হামলার ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হবে না। এ বিষয়ে সরকারের মুখপাত্র মোহাম্মদ মোমেনি বলেন, ‘আমাদের অবস্থান স্পষ্ট। আমরা কেবল আমাদের দেশের স্বার্থ নিয়ে চিন্তিত। অন্য দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে আমরা নাক গলাতে চাই না।’
ইরাক : আগস্ট মাসের শেষ দিকে গত পাঁচ দিনে কমপক্ষে ৩০ হাজার সিরীয় শরণার্থী ইরাকে আশ্রয় নিয়েছে। সম্ভাব্য মার্কিন হামলাকে কেন্দ্র করে ইরাকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা জারি করা হয়েছে। সিরিয়ায় মার্কিন হামলার বিরোধিতা করছে ইরাক। তাদের আশংকা এই হামলার ফলে প্রেসিডেন্ট আসাদের বিরুদ্ধে লড়াইরত সুন্নী বিদ্রোহীরা বাগদাদ সরকারকে টার্গেট করবে। বাগদাদের শিয়া প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে সুন্নী বিক্ষোভ মোকাবেলা করছেন। এদিকে প্রধানমন্ত্রী নুরি আল মালিকি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘সিরিয়া পরিস্থিতিতে ইরাক ও এ অঞ্চলে হুমকি সৃষ্টি হয়েছে।’ এ অবস্থায় সব ইরাকি জনগণকে জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকার পরামর্শ দেন তিনি।
সৌদি আরব : মধ্যপ্রাচ্যের সুন্নী অধ্যুষিত দেশ সৌদি আরব সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট আসাদের বিরুদ্ধে লড়াইরত বিদ্রোহীদের প্রধান সমর্থক। আর এ কারণে তারা সিরিয়ায় মার্কিন হামলারও অন্যতম সমর্থক। তবে সৌদি সরকার এখন অবদি সিরিয়ায় সামরিক অভিযানে প্রকাশ্যে সমর্থন দেয়নি। সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী সউদ আল ফয়সাল জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি সিরীয় জনগণের দায়িত্ব গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ বিদ্রোহীদের সমর্থন করে এবং তারা আসাদ সরকারের পতন চায়। তবে তাদের ধারণা মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা সিরীয় জনগণের দুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি করবে।
মিসর : সমস্যায় আবর্তিত মিসর সিরিয়ায় সামরিক হামলার বিরুদ্ধে। দেশটির তামারুদ আন্দোলনের মুখপাত্র মাহমুদ বদর বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র একটি সাম্রাজ্যবাদী দেশ। এর আগে তারা ইরাক ধ্বংস করেছে। এখন সিরিয়াকে ধ্বংস করতে চাইছে। তারা মিসরের আভ্যন্তরীণ বিষয়েও নাক গলাচ্ছে।’ অন্য মুখপাত্র হাসান শাহিন সুয়েজ খাল বন্ধ করে দেয়ার দাবি করেন। মিসরে এই তামারুদ আন্দোলনকরীরা প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল।
ইয়েমেন : সিরিয়ায় মার্কিন হামলা নিয়ে ইয়েমেনে আতংক বিরাজ করছে। প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের প্রতি তাদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া থাকলেও দেশটিতে এমন একজন মানুষও খুঁজে পাওয়া যাবে যে হামলাকে সমর্থন করে। ইয়েমেনের হাক পার্টির নেতা আহমদ বাহরি সিএনএনকে বলেন, ‘ আরবরা যুক্তরাষ্ট্রকে আর বিশ্বাস করে না। কেননা তারা অনবরত আরব দেশগুলোর বিরুদ্ধে হামলা চালাচ্ছে। দুঃখের বিষয় কিছু আরব নেতা জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে পশ্চিমাদের পক্ষে কাজ করছে।’
লেবানন : সিরিয়ায় সম্ভাব্য হামলা বিবেচনায় লেবাননের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। লেবানন সরকার মনে করছে রাজধানী বৈরুত থেকে দামেস্ক’র দূরত্ব মাত্র ৭০ কিলোমিটার হওয়ায় সিরিয়ায় যে কোনো হামলায় দামেস্কের সঙ্গে সঙ্গে বৈরুত-এ অস্থিতিশীলতা ছড়িয়ে পড়বে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, সিরিয়ার মতো বড় দেশের পাশে লেবাননের মতো আয়তনে ক্ষুদ্র প্রতিবেশী সিরিয়ার ওপর যে কোনো হামলার সরাসরি প্রভাব পড়বে। এদিকে, লেবাননের ডেমোক্রেটিক দলের নেতা তালাল আরসালান বলেন, দামেস্কের উপকণ্ঠে বাশার সরকার রাসায়নিক অস্ত্র হামলা চালিয়েছে এ মিথ্যাচার যুক্তরাষ্ট্রের ইরাক হামলার চালানোর মিথ্যাচারেরই বহিঃপ্রকাশ।
ইসরাইল : ইসরাইল সরকার মনে করে, সিরিয়ায় হামলা হলে সিরিয়াও পাল্টা রাসায়নিক অস্ত্র হামলা চালাতে পারে। তাই, আগাম সতর্কতা হিসেবে দেশটির শহরগুলোতে রাসায়নিক গ্যাসরোধী মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে। এদিকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বার্তাসংস্থা সিএনএন-কে বলেন, যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে ইসরাইল প্রস্তুত। তেলআবিব আক্রান্ত হলে আমি দামেস্ক-এ হামলা চালাব।
জর্ডান : সিরিয়ার সীমান্ত থেকে মাত্র এক ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থান জর্ডানের। এমনকি, সিরিয়ার সব ক্ষেপণাস্ত্রের হুমকির মুখে জর্ডানের সবকটি গুরুত্বপূর্ণ শহর। তার ওপর জর্ডানের রাজা কিং আবদুল্লাহ পশ্চিমা-বিশ্বের ঘনিষ্ঠ মিত্র। আরব নেতাদের মধ্যে কিং আবদুল্লাহই সর্বপ্রথম বাশারকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। বিশ্লেষকরা মনে করেন, জর্ডানের বাশার বিরোধীদের সমর্থন দেয়ায় সিরিয়া জর্ডানে হামলা চালাতে পারে। কারণ জর্ডানের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ সুন্নী এবং তারা সিরিয়ার বিদ্রোহীদের প্রতি সহানুভূতিশীল।
এটা এখন প্রমাণিত সত্য যে, সৌদি আরব জর্ডানের মাধ্যমে সিরিয়ার বিদ্রোহীদের অস্ত্র সরবরাহ করে থাকে। তবে জর্দান বার বার বলছে তারা সিরিয়া যুদ্ধে জড়াতে চায় না। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। গত সপ্তাহে সিরিয়ায় হামলা বিষয় নিয়ে বিশ্বের যুদ্ধবাজ দেশগুলোর নেতারা এই জর্ডানেই মিলিত হয়েছিলেন। তবে দেশটির সরকার বলছে তারা প্রতিবেশী দেশে পশ্চিমা হামলার ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হবে না। এ বিষয়ে সরকারের মুখপাত্র মোহাম্মদ মোমেনি বলেন, ‘আমাদের অবস্থান স্পষ্ট। আমরা কেবল আমাদের দেশের স্বার্থ নিয়ে চিন্তিত। অন্য দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে আমরা নাক গলাতে চাই না।’
ইরাক : আগস্ট মাসের শেষ দিকে গত পাঁচ দিনে কমপক্ষে ৩০ হাজার সিরীয় শরণার্থী ইরাকে আশ্রয় নিয়েছে। সম্ভাব্য মার্কিন হামলাকে কেন্দ্র করে ইরাকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা জারি করা হয়েছে। সিরিয়ায় মার্কিন হামলার বিরোধিতা করছে ইরাক। তাদের আশংকা এই হামলার ফলে প্রেসিডেন্ট আসাদের বিরুদ্ধে লড়াইরত সুন্নী বিদ্রোহীরা বাগদাদ সরকারকে টার্গেট করবে। বাগদাদের শিয়া প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে সুন্নী বিক্ষোভ মোকাবেলা করছেন। এদিকে প্রধানমন্ত্রী নুরি আল মালিকি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘সিরিয়া পরিস্থিতিতে ইরাক ও এ অঞ্চলে হুমকি সৃষ্টি হয়েছে।’ এ অবস্থায় সব ইরাকি জনগণকে জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকার পরামর্শ দেন তিনি।
সৌদি আরব : মধ্যপ্রাচ্যের সুন্নী অধ্যুষিত দেশ সৌদি আরব সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট আসাদের বিরুদ্ধে লড়াইরত বিদ্রোহীদের প্রধান সমর্থক। আর এ কারণে তারা সিরিয়ায় মার্কিন হামলারও অন্যতম সমর্থক। তবে সৌদি সরকার এখন অবদি সিরিয়ায় সামরিক অভিযানে প্রকাশ্যে সমর্থন দেয়নি। সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী সউদ আল ফয়সাল জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি সিরীয় জনগণের দায়িত্ব গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ বিদ্রোহীদের সমর্থন করে এবং তারা আসাদ সরকারের পতন চায়। তবে তাদের ধারণা মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা সিরীয় জনগণের দুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি করবে।
মিসর : সমস্যায় আবর্তিত মিসর সিরিয়ায় সামরিক হামলার বিরুদ্ধে। দেশটির তামারুদ আন্দোলনের মুখপাত্র মাহমুদ বদর বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র একটি সাম্রাজ্যবাদী দেশ। এর আগে তারা ইরাক ধ্বংস করেছে। এখন সিরিয়াকে ধ্বংস করতে চাইছে। তারা মিসরের আভ্যন্তরীণ বিষয়েও নাক গলাচ্ছে।’ অন্য মুখপাত্র হাসান শাহিন সুয়েজ খাল বন্ধ করে দেয়ার দাবি করেন। মিসরে এই তামারুদ আন্দোলনকরীরা প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল।
ইয়েমেন : সিরিয়ায় মার্কিন হামলা নিয়ে ইয়েমেনে আতংক বিরাজ করছে। প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের প্রতি তাদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া থাকলেও দেশটিতে এমন একজন মানুষও খুঁজে পাওয়া যাবে যে হামলাকে সমর্থন করে। ইয়েমেনের হাক পার্টির নেতা আহমদ বাহরি সিএনএনকে বলেন, ‘ আরবরা যুক্তরাষ্ট্রকে আর বিশ্বাস করে না। কেননা তারা অনবরত আরব দেশগুলোর বিরুদ্ধে হামলা চালাচ্ছে। দুঃখের বিষয় কিছু আরব নেতা জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে পশ্চিমাদের পক্ষে কাজ করছে।’
No comments