এবারের বিশ্বকাপ স্পিনার ও শিশিরভেজা সন্ধ্যার
বিশ্বকাপের জন্য দল ঘোষণা করার সময়ই তিন স্বাগতিক দেশ কিছু ব্যাপারে অন্য ১১ প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে এগিয়ে গেছে। নিজেদের মাঠের চরিত্র বিচার করে এই তিন দেশই ১৫ জনের বিশ্বকাপ স্কোয়াড নির্বাচন করেছে স্পিনারদের প্রাধান্য দিয়ে। পাশাপাশি পুরো দল নির্বাচনে এমন খেলোয়াড়দের তারা প্রাধান্য দিয়েছে, যাঁরা ব্যাট হাতে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি কয়েক ওভার স্পিন দিয়েও দলকে সাহায্য করতে পারেন।
১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে গ্রুপ পর্যায়ের খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হলেও বিশ্বকাপের মূল লড়াইটা শুরু হবে মার্চ মাসে। উপমহাদেশে মার্চ মাসের আবহাওয়ার সঙ্গে ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের অনেক পার্থক্য। এ সময় আবহাওয়া হয়ে ওঠে বেশ গরম। সাধারণত মার্চ মাসকে উপমহাদেশের ক্রিকেট মৌসুমের একেবারে অন্তিম সময় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই সময়টিতে স্পিন একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হিসেবে বিবেচিত হতে বাধ্য। মার্চের গরমে দিনে ম্যাচগুলোতে উইকেট হয়ে উঠবে শুষ্ক ও শক্ত। বলার অপেক্ষা রাখে না, দলগুলো এ সময় স্পিন দিয়েই দলগুলো প্রতিপক্ষের মারকুটে ব্যাটসম্যানদের ঘায়েল করতে সচেষ্ট হবে। একদিনের ক্রিকেট যেহেতু ব্যাটসম্যানদেরই খেলা, তাই স্পিন যে এ সময় ম্যাচগুলোর ফল নির্ধারণী অনুষঙ্গ হয়ে উঠবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
তবে, এবারের বিশ্বকাপের ৪৯টি ম্যাচের মধ্যে মাত্র ১২টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে পুরোটাই দিনের আলোয়। বাকি ম্যাচগুলো সবই দিন-রাতের। ম্যাচের শুরুটা সূর্যের আলোতে হলেও ফল নির্ধারণী অংশটা অনুষ্ঠিত হবে রাতের বেলা—ফ্লাড লাইটের কৃত্রিম আলোয়। তাই এ সময় শিশির হয়ে উঠবে মাথাব্যথার বড় একটি কারণ। উপমহাদেশে দিনের আলোয় অনুষ্ঠিত খেলাগুলোতে যেখানে স্পিনাররা রাজত্ব করেন, ফ্লাড লাইটের আলোয় শিশিরের কারণে বল ভিজে যাওয়ায় তাঁরাই হয়ে ওঠেন কোনো দলের ম্যাচ হারার সবচেয়ে বড় কারণ।
গত বছরের ঠিক এ সময়ই ঢাকায় ভারত, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশকে নিয়ে অনুষ্ঠিত একটি ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজের কথা এখানে বলে নেওয়া ভালো। সেই সিরিজের সাতটি ম্যাচেই পরে ব্যাটিং করা দল জয় পেয়েছে। এবারের বিশ্বকাপেও দিবা-রাত্রির ম্যাচগুলোর সময় আবহাওয়া যদি একই রকমের আচরণ করে, তাহলে এ কথা জোর দিয়ে বলাই যায়, ম্যাচগুলোতে টস হয়ে উঠবে মহা গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার। টস-জয়ী দল অবশ্যই চাইবে আগে সূর্যের আলোর সুবিধা নিয়ে স্পিন দিয়ে প্রতিপক্ষকে কম রানে বেঁধে ফেলতে; আর পরে ফ্লাড লাইটের আলোয় শিশিরের কারণে প্রতিপক্ষের স্পিনারদের বিব্রতকর অবস্থার সুযোগে খেলায় বাজিমাত করা।
এমন পরিস্থিতিতে একাদশে বৈচিত্র্য থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খেলার প্রথমার্ধে ফিল্ডিং করলে আপনার দলে প্রয়োজন ভালো কয়েকজন স্পিনার—যাঁরা প্রতিপক্ষকে বেঁধে রাখতে পারবেন সহনীয় রানের মধ্যে। ফ্লাড লাইটের আলোয় ফিল্ডিং করলে শিশিরের কারণে আপনার দলে থাকতে হবে কয়েকজন ভালো মিডিয়াম পেসার, যাঁরা সুইং দিয়ে প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের ঘায়েল করতে পারবেন।
এবারের বিশ্বকাপে কোন দলের কী সম্ভাবনা, সেটা নিয়ে আলোচনায় গেলে আমি প্রথমেই বলব বাংলাদেশের কথা। কয়েক দিন আগেও যে দলটি ক্রিকেট বিশ্বের হাসির খোরাক ছিল, তারা এখন অনেক পরিণত। বিশ্বকাপের গ্রুপ ‘বি’ থেকে কোয়ার্টার ফাইনালের দৌড়ে আমি ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে বাংলাদেশকেই এগিয়ে রাখব। এর কারণ, তাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স ও দলে বিশ্বমানের কয়েকজন স্পিনারের উপস্থিতি। এই দলের কম্বিনেশনটাই এমন যে তারা ইচ্ছা করলে ৫০ ওভারের ইনিংসে ৪০ ওভারই স্পিনারদের কাজে লাগাতে পারবে।
ভারতীয় দলে এমন কয়েকজন ব্যাটসম্যান রয়েছেন, যাঁরা প্রয়োজনে স্পিনও করতে পারেন। সেই সঙ্গে দলটিতে হরভজন সিংয়ের নেতৃত্বে বিশ্বমানের স্পিন আক্রমণ তো রয়েছেই। এই দলে পার্টটাইম স্পিনার হিসেবে বীরেন্দর শেবাগ ও যুবরাজ সিং এমন মানের স্পিনার, যাঁরা কিনা ইংল্যান্ডের অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্পিনারদের চেয়েও যোজন যোজন ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। তবে অবশ্যই ইংলিশ স্পিনারদের সেই তালিকায় আমি গ্রায়েম সোয়ানের মতো স্পিনারকে রাখব না।
ভারত বিশ্বকাপ জয়ের জন্য চমত্কার একটি দল। তবে এই দলটির সবচেয়ে বড় দুর্বলতা অতিরিক্ত প্রত্যাশার চাপ। ৯৭টি আন্তর্জাতিক শতক হাঁকিয়ে এবারের বিশ্বকাপটি খেলতে আসবেন শচীন টেন্ডুলকার। অনেকে বলছেন, এটাই তাঁর শেষ বিশ্বকাপ। তাই শেষ বিশ্বকাপটি তিনি স্মরণীয় করে রাখতে চাইবেন ভারতের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জয়ে অগ্রণী ভূমিকা রেখে।অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড দলের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিতে পারে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের ইনজুরি। অস্ট্রেলিয়ার রিকি পন্টিং, মাইক হাসি ও ইংল্যান্ডে স্টুয়ার্ট ব্রড, গ্রায়েম সোয়ানের ইনজুরি বিশ্বকাপে ভালোই প্রভাব ফেলতে পারে।শচীন টেন্ডুলকারের মতোই আরেক গ্রেট মুত্তিয়া মুরালিধরন এবারই খেলবেন তাঁর শেষ বিশ্বকাপ। শ্রীলঙ্কা দলটির এবারের বিশ্বকাপে সম্ভাবনা রয়েছে ইতিহাসের সেরা এই অফস্পিনারকে ঘিরেই। দলটির সবচেয়ে বড় সুবিধা, এই দলটির কোনো ইনজুরি-সমস্যা নেই। আর গোটা দলটাই মুখিয়ে রয়েছে মুরালিকে যথাযোগ্য বিদায় সম্ভাষণ জানাতে। বিশ্বকাপ জয়ই হতে পারে, মুত্তিয়া মুরালিধরনকে দেওয়া সবচেয়ে বড় বিদায় উপহার।
নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তান দলকে গতানুগতিকই মনে হয়েছে। এই দুটো দলে সাফল্য ক্ষুধিত খেলোয়াড়ের অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে।আর দক্ষিণ আফ্রিকা দলটি ভালো হলেও এই দলের সবচেয়ে বড় শত্রু অতীত ইতিহাস। অতীতের জুজু কাটিয়ে উঠতে পারলে এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম দাবিদার হয়ে উঠতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা।
১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে গ্রুপ পর্যায়ের খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হলেও বিশ্বকাপের মূল লড়াইটা শুরু হবে মার্চ মাসে। উপমহাদেশে মার্চ মাসের আবহাওয়ার সঙ্গে ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের অনেক পার্থক্য। এ সময় আবহাওয়া হয়ে ওঠে বেশ গরম। সাধারণত মার্চ মাসকে উপমহাদেশের ক্রিকেট মৌসুমের একেবারে অন্তিম সময় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই সময়টিতে স্পিন একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হিসেবে বিবেচিত হতে বাধ্য। মার্চের গরমে দিনে ম্যাচগুলোতে উইকেট হয়ে উঠবে শুষ্ক ও শক্ত। বলার অপেক্ষা রাখে না, দলগুলো এ সময় স্পিন দিয়েই দলগুলো প্রতিপক্ষের মারকুটে ব্যাটসম্যানদের ঘায়েল করতে সচেষ্ট হবে। একদিনের ক্রিকেট যেহেতু ব্যাটসম্যানদেরই খেলা, তাই স্পিন যে এ সময় ম্যাচগুলোর ফল নির্ধারণী অনুষঙ্গ হয়ে উঠবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
তবে, এবারের বিশ্বকাপের ৪৯টি ম্যাচের মধ্যে মাত্র ১২টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে পুরোটাই দিনের আলোয়। বাকি ম্যাচগুলো সবই দিন-রাতের। ম্যাচের শুরুটা সূর্যের আলোতে হলেও ফল নির্ধারণী অংশটা অনুষ্ঠিত হবে রাতের বেলা—ফ্লাড লাইটের কৃত্রিম আলোয়। তাই এ সময় শিশির হয়ে উঠবে মাথাব্যথার বড় একটি কারণ। উপমহাদেশে দিনের আলোয় অনুষ্ঠিত খেলাগুলোতে যেখানে স্পিনাররা রাজত্ব করেন, ফ্লাড লাইটের আলোয় শিশিরের কারণে বল ভিজে যাওয়ায় তাঁরাই হয়ে ওঠেন কোনো দলের ম্যাচ হারার সবচেয়ে বড় কারণ।
গত বছরের ঠিক এ সময়ই ঢাকায় ভারত, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশকে নিয়ে অনুষ্ঠিত একটি ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজের কথা এখানে বলে নেওয়া ভালো। সেই সিরিজের সাতটি ম্যাচেই পরে ব্যাটিং করা দল জয় পেয়েছে। এবারের বিশ্বকাপেও দিবা-রাত্রির ম্যাচগুলোর সময় আবহাওয়া যদি একই রকমের আচরণ করে, তাহলে এ কথা জোর দিয়ে বলাই যায়, ম্যাচগুলোতে টস হয়ে উঠবে মহা গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার। টস-জয়ী দল অবশ্যই চাইবে আগে সূর্যের আলোর সুবিধা নিয়ে স্পিন দিয়ে প্রতিপক্ষকে কম রানে বেঁধে ফেলতে; আর পরে ফ্লাড লাইটের আলোয় শিশিরের কারণে প্রতিপক্ষের স্পিনারদের বিব্রতকর অবস্থার সুযোগে খেলায় বাজিমাত করা।
এমন পরিস্থিতিতে একাদশে বৈচিত্র্য থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খেলার প্রথমার্ধে ফিল্ডিং করলে আপনার দলে প্রয়োজন ভালো কয়েকজন স্পিনার—যাঁরা প্রতিপক্ষকে বেঁধে রাখতে পারবেন সহনীয় রানের মধ্যে। ফ্লাড লাইটের আলোয় ফিল্ডিং করলে শিশিরের কারণে আপনার দলে থাকতে হবে কয়েকজন ভালো মিডিয়াম পেসার, যাঁরা সুইং দিয়ে প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের ঘায়েল করতে পারবেন।
এবারের বিশ্বকাপে কোন দলের কী সম্ভাবনা, সেটা নিয়ে আলোচনায় গেলে আমি প্রথমেই বলব বাংলাদেশের কথা। কয়েক দিন আগেও যে দলটি ক্রিকেট বিশ্বের হাসির খোরাক ছিল, তারা এখন অনেক পরিণত। বিশ্বকাপের গ্রুপ ‘বি’ থেকে কোয়ার্টার ফাইনালের দৌড়ে আমি ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে বাংলাদেশকেই এগিয়ে রাখব। এর কারণ, তাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স ও দলে বিশ্বমানের কয়েকজন স্পিনারের উপস্থিতি। এই দলের কম্বিনেশনটাই এমন যে তারা ইচ্ছা করলে ৫০ ওভারের ইনিংসে ৪০ ওভারই স্পিনারদের কাজে লাগাতে পারবে।
ভারতীয় দলে এমন কয়েকজন ব্যাটসম্যান রয়েছেন, যাঁরা প্রয়োজনে স্পিনও করতে পারেন। সেই সঙ্গে দলটিতে হরভজন সিংয়ের নেতৃত্বে বিশ্বমানের স্পিন আক্রমণ তো রয়েছেই। এই দলে পার্টটাইম স্পিনার হিসেবে বীরেন্দর শেবাগ ও যুবরাজ সিং এমন মানের স্পিনার, যাঁরা কিনা ইংল্যান্ডের অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্পিনারদের চেয়েও যোজন যোজন ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। তবে অবশ্যই ইংলিশ স্পিনারদের সেই তালিকায় আমি গ্রায়েম সোয়ানের মতো স্পিনারকে রাখব না।
ভারত বিশ্বকাপ জয়ের জন্য চমত্কার একটি দল। তবে এই দলটির সবচেয়ে বড় দুর্বলতা অতিরিক্ত প্রত্যাশার চাপ। ৯৭টি আন্তর্জাতিক শতক হাঁকিয়ে এবারের বিশ্বকাপটি খেলতে আসবেন শচীন টেন্ডুলকার। অনেকে বলছেন, এটাই তাঁর শেষ বিশ্বকাপ। তাই শেষ বিশ্বকাপটি তিনি স্মরণীয় করে রাখতে চাইবেন ভারতের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জয়ে অগ্রণী ভূমিকা রেখে।অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড দলের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিতে পারে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের ইনজুরি। অস্ট্রেলিয়ার রিকি পন্টিং, মাইক হাসি ও ইংল্যান্ডে স্টুয়ার্ট ব্রড, গ্রায়েম সোয়ানের ইনজুরি বিশ্বকাপে ভালোই প্রভাব ফেলতে পারে।শচীন টেন্ডুলকারের মতোই আরেক গ্রেট মুত্তিয়া মুরালিধরন এবারই খেলবেন তাঁর শেষ বিশ্বকাপ। শ্রীলঙ্কা দলটির এবারের বিশ্বকাপে সম্ভাবনা রয়েছে ইতিহাসের সেরা এই অফস্পিনারকে ঘিরেই। দলটির সবচেয়ে বড় সুবিধা, এই দলটির কোনো ইনজুরি-সমস্যা নেই। আর গোটা দলটাই মুখিয়ে রয়েছে মুরালিকে যথাযোগ্য বিদায় সম্ভাষণ জানাতে। বিশ্বকাপ জয়ই হতে পারে, মুত্তিয়া মুরালিধরনকে দেওয়া সবচেয়ে বড় বিদায় উপহার।
নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তান দলকে গতানুগতিকই মনে হয়েছে। এই দুটো দলে সাফল্য ক্ষুধিত খেলোয়াড়ের অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে।আর দক্ষিণ আফ্রিকা দলটি ভালো হলেও এই দলের সবচেয়ে বড় শত্রু অতীত ইতিহাস। অতীতের জুজু কাটিয়ে উঠতে পারলে এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম দাবিদার হয়ে উঠতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা।
No comments