বিপদের নাম গ্যাস সিলিন্ডার
গ্যাস সিলিন্ডার ত্রুটিপূর্ণ মানেই ঝুঁকিপূর্ণ। এ রকম ত্রুটিপূর্ণ দুটি গ্যাস সিলিন্ডারের ঘষা থেকে বিস্ফোরণ ঘটেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) বগুড়ার গুদামে। সৌভাগ্যজনকভাবে দুর্ঘটনায় জীবন ক্ষয় না হলেও ৩০০ সিলিন্ডার বিস্ফোরিত ও তিনটি ট্রাক পুড়ে গেছে। এ ঘটনাকে গাড়িতে ও বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডারের ঝুঁকি বিষয়ে হুঁশিয়ার হওয়ার সতর্কসংকেত হিসেবে নিতে হবে। প্রথম আলোর সোমবারের আরেকটি প্রতিবেদন জানাচ্ছে, বিপিসির নিয়ন্ত্রণাধীন পদ্মা ও মেঘনা কোম্পানির সরবরাহ করা ৮০ শতাংশ সিলিন্ডারই ব্যবহারের অনুপযোগী। বিপিসি জেনেশুনে এমন মৃত্যুফাঁদ কী চিন্তায় সরবরাহ করছে? তা ছাড়া গ্যাস সিলিন্ডারগুলোর মেয়াদ ও ত্রুটির ব্যাপারে সচেতনতারও অভাব আছে। প্রায়ই গাড়িতে বা বাসায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে মানুষ হতাহতও হচ্ছে। শনিবারের বগুড়ার ঘটনায় দেখা যায়, খোদ সিলেটেই গ্যাস সিলিন্ডারজাত হওয়ার সময় ত্রুটি ছিল। তাই বগুড়ার ডিপোতে ট্রাকে করে আসা ওই সিলিন্ডারগুলোর কোনো কোনোটি থেকে গ্যাস নির্গত হচ্ছিল।
এ রকম দুটি সিলিন্ডারের ঘষা থেকে তৈরি হওয়া আগুনের ফুলকি সৃষ্টি করে প্রথম বিস্ফোরণের। এরপর একে একে শত শত সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়। এ রকম বিপজ্জনক সিলিন্ডার থেকে বিস্ফোরণ কি দুর্ঘটনা, নাকি সচেতন অবহেলার ফল? ত্রুটিপূর্ণ সিলিন্ডার গাড়িতে রাখলে তা চলন্ত বোমার মতো, বাড়িতে থাকলে নিজেই তা গণবিধ্বংসী অস্ত্র। ফলে সিলিন্ডারের মেয়াদ পর্যবেক্ষণ, মেয়াদোত্তীর্ণ সিলিন্ডার বদল ও ত্রুটিযুক্ত সিলিন্ডার বাতিলের পদক্ষেপ নিতে বিলম্ব করার সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে একটি শক্ত আইনি কাঠামো গড়ে তোলা জরুরি। সরকার যখন রান্নার কাজে এলপিজি গ্যাসের বিস্তার বাড়াতে চাইছে, তখন এটি আরও বেশি প্রাসঙ্গিক। আমরা মনে করি জরুরিভাবে সারা দেশে ত্রুটিপূর্ণ ও মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস সিলিন্ডারগুলো চিহ্নিত করা দরকার। এ জন্য ভোক্তাদের যেমন সচেতন করতে হবে, তেমনি সরকারিভাবে সিলিন্ডার টেস্ট ও বদলে নেওয়ার সেবা চালু করতে হবে।
No comments