ন্যাশনাল হেরাল্ড নিয়ে বিপাকে পড়তে পারেন সোনিয়া–রাহুল
স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু প্রতিষ্ঠিত সংবাদপত্র ন্যাশনাল হেরাল্ড নিয়ে নতুন বিপত্তিতে পড়তে যাচ্ছেন কংগ্রেসপ্রধান সোনিয়া গান্ধী ও তঁার ছেলে রাহুল গান্ধী। ভারতের নতুন বাজেটে আয়কর আইনে একটি সংশোধনী প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ওই প্রস্তাব পাস হলে বিপত্তিতে পড়বেন তাঁরা। খবর টিএনএনের। আয়কর আইনের ওই সংশোধনীতে বলা হয়, কোনো দাতব্য ট্রাস্টের আয় বা সম্পত্তি থেকে যদি ওই ট্রাস্টের ট্রাস্টি বা এ ধরনের কেউ ব্যক্তিগত লাভ নেওয়ার জন্য আবেদন করেন—এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ নিশ্চিত হলে ওই ট্রাস্টের নিবন্ধন বাতিল করা যাবে। ট্রাস্টের নিবন্ধন বাতিল করার ক্ষমতা সরকারের সংশ্লিষ্ট ওই বিভাগের কর্মকর্তাদের দেওয়ারও প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি বছরের ১ অক্টোবর থেকে সংশোধিত আইন কার্যকর করার প্রস্তাব তোলা হয়েছে। ন্যাশনাল হেরাল্ডকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে সোনিয়া ও রাহুলসহ কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় ছয়জন নেতাকে জালিয়াতি ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে আগামী ৭ আগস্ট আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ দিল্লির মহানগর হাকিম গোমতী মানোচা সম্প্রতি এই নির্দেশ দেন৷ ক্ষমতাসীন দল বিজেপির নেতা সুব্রামানিয়ান স্বামী কংগ্রেসনেত্রী সোনিয়া ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে ন্যাশনাল হেরাল্ড গোষ্ঠীর সম্পত্তি হাতানো ও তছরুপের অভিযোগ আনেন৷ সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই নির্দেশ দেন৷ ১৯৩৮ সালে জওহরলাল নেহরু এই সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠা করেন৷ ২০০৮ সালে তা বন্ধ হয়ে যায়৷ স্বামীর অভিযোগ, হেরাল্ড গোষ্ঠীর সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় দুই হাজার কোটি রুপি৷ সোনিয়া-রাহুলেরা তা হাতিয়ে নিতে উদ্যোগী৷ এ জন্য রাহুল ইয়ং ইন্ডিয়া নামে একটি সংস্থা তৈরি করেন৷ মাত্র ৫০ লাখ টাকায় তাঁরা হেরাল্ডের সম্পত্তি নিতে চান৷
দিল্লির হেরাল্ড হাউসের একটা বড় অংশ তাঁরা ভারত সরকারের পাসপোর্ট ডিভিশনকে ভাড়া দিয়েছেন, যা কিনা আইনত তাঁরা পারেন না৷ স্বামীর আরও অভিযোগ, হেরাল্ড গোষ্ঠীকে কংগ্রেস ৯০ কোটি রুপির শর্ত ছাড়া ধার দিয়েছিল, যা কিনা কোনো রাজনৈতিক দল আইনত করতে পারে না৷ স্বামী এসব অভিযোগ প্রথম করেছিলেন ২০১২ সালে৷ সে সময় রাহুল একটি চিঠিতে অভিযোগগুলো অসত্য, ভিত্তিহীন ও সম্মানহানিকর বলে উল্লেখ করেছিলেন৷ তিনি মামলার হুমকিও দিয়েছিলেন৷ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে তখন বলা হয়েছিল, ন্যাশনাল হেরাল্ড পত্রিকা পুনরুজ্জীবনে দল সুদহীন ধার দিয়েছিল৷ তাতে বাণিজ্যিক কোনো স্বার্থ ছিল না৷ এবার স্বামী মামলা করে দেওয়ায় কংগ্রেস নেতৃত্বকে তার জবাব দিতে হবে৷ রাহুলের বিরুদ্ধে সমন জারি: ভারতের মহারাষ্ট্রের ভিওয়াদির একটি আদালত কংগ্রেসের সহসভাপতি রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন। চলতি বছরের শুরুতে লোকসভা নির্বাচন চলাকালে একটি নির্বাচনী প্রচারণায় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) বিরুদ্ধে রাহুলের মন্তব্যের কারণে অভিযোগের ভিত্তিতে এই সমন জারি করা হয়েছে। খবর এনডিটিভি। গত ১৮ মার্চ আরএসএস কর্মী রাজেস কান্তে রাহুলের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আদালত সমন জারি করেন। এর আগে ৬ মার্চ একটি নির্বাচনী প্রচারণায় রাহুল গান্ধী সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ১৯৪৮ সালে মহাত্মা গান্ধী হত্যায় আরএসএসের ভূমিকা ছিল। আরএসএস যে মহাত্মা গান্ধী হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল, তা সরদার প্যাটেলের লেখায় উল্লেখ আছে। রাহুলের বিরুদ্ধে আরএসএস কর্মী রাজেস কান্তের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভিবান্দির আদালত পুলিশের প্রতিবেদন চান। ওই প্রতিবেদন পড়ার পর আদালত রাহুলকে আগামী ৭ অক্টোবর আদালতে হাজির থাকতে সমন জারি করেন।
No comments