সাবেক ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজি আটক
মামলার তদন্তে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টার অভিযোগে ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজিকে গতকাল মঙ্গলবার আটক করা হয়েছে। কোনো সাবেক প্রেসিডেন্টকে এভাবে আটকের ঘটনা দেশটিতে এটাই প্রথম। খবর এএফপি, রয়টার্স ও বিবিসির। খবরে বলা হয়, গতকাল সকাল আটটার দিকে একটি কালো গাড়িতে চড়ে নাতেরির থানায় যান সারকোজি। তদন্ত কর্মকর্তারা তাঁকে প্রাথমিকভাবে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত আটকে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন। এই মেয়াদ এক দিন বাড়তে পারে। তারপর তাঁকে আদালতে হাজির করতে হবে। সেখানে তাঁকে অভিযুক্ত করা হবে, নাকি ছেড়ে দেওয়া হবে—আদালত সিদ্ধান্ত নেবেন। সাবেক এই প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে থাকা একটি মামলার গোপন তথ্য বের করে আনার চেষ্টার অভিযোগে আগের দিন তাঁর এক আইনজীবী এবং দুজন হাকিমকে জিম্মায় নেওয়া হয়েছে। তাঁদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
২০০৭ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ছিলেন সারকোজি। ২০১৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পরিকল্পনা করছিলেন তিনি। এই মামলায় অভিযুক্ত হলে তাঁর সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সরকারের মুখপাত্র স্টিফেন লি ফল জানান, সারকোজির মামলা নিয়ে আদালতের ওপর কোনো রাজনৈতিক চাপ নেই। তিনি বলেন, আর দশজনের মতো সারকোজিও ন্যায়বিচার পাবেন। তদন্ত কর্মকর্তারা সন্দেহ করছেন, সারকোজি হাকিমদের কোনো একজনের কাছ থেকে মামলার তদন্ত সম্পর্কে তথ্য জানার চেষ্টা করেছিলেন। এর বিনিময়ে ওই বিচারককে মোনাকোতে আদালতে উচ্চপদে নিয়োগ দেওয়ার আশ্বাস দেন। সারকোজির বিরুদ্ধে আরেকটি অভিযোগ খতিয়ে দেখছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। ২০০৭ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাঁর জয়ী হওয়ার পেছনে লিবিয়ার নেতা মোয়াম্মার গাদ্দাফির একটি বড় আর্থিক ভূমিকা ছিল। তিনি সারকোজিকে পাঁচ কোটি ইউরো দিয়েছিলেন। এ ছাড়া ফ্রান্সের সবচেয়ে ধনী নারী ল’অরিয়েলের মালিক লিলিয়ান বেতোঁকুর কাছ থেকেও নগদ অর্থসহায়তা পান। তবে তিনি এই আর্থিক সুবিধার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যয় হওয়া এক কোটি ইউরো পরিমাণ অর্থ তিনি দলীয় খরচ হিসেবে দেখান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁর দল ইউএমপির এক নেতা গত মাসে পদত্যাগ করেন। এসব অভিযোগ ছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি কেলেঙ্কারির অভিযোগের তদন্ত চলছে।
No comments