পাকিস্তানে গণতন্ত্রের জয়
পাকিস্তানে সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ আবার প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন। দেশটিতে গত শনিবারের সাধারণ নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে বিজয়ী হয়েছে তাঁর দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ বা পিএমএল (এন)। তবে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় মধ্য ডানপন্থী দলটিকে সরকার গঠনের জন্য জোট গড়তে হতে পারে।
পাকিস্তানের ৬৬ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে ক্ষমতার পালাবদল হতে যাচ্ছে। একে দেশটির গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জয় হিসেবে বিবেচনা করছেন বিশ্লেষকেরা।
পাকিস্তানে জাতীয় পরিষদের আসনসংখ্যা ৩৪২। এর মধ্যে ২৭২টি আসনে সরাসরি নির্বাচন হয়। বাকি ৭০টির মধ্যে ৬০টি নারীদের এবং ১০টি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত। কাজেই সরকার গঠনের জন্য সরাসরি ভোট হওয়া ২৭২টির মধ্যে ১৩৭টি আসন পেতে হবে।
গতকাল রাত দেড়টা পর্যন্ত বেসরকারিভাবে মোট ২৬৬টি আসনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে নওয়াজের পিএমএল (এন) পেয়েছে ১৩৩টি আসন। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে সদ্য ক্ষমতা ছেড়ে যাওয়া পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। পিপিপি পেয়েছে ৩৩টি আসন। ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পেয়েছে ২৭টি আসন। ৭৩টি আসনে জয়ী হয়েছে স্বতন্ত্র ও অন্য দলের প্রার্থীরা। আর ৬টি আসনে ফলাফল ঘোষণা বাকি আছে।
প্রধান বিরোধী দল পিপিপি না পিটিআই—কে হবে, তা নির্ভর করছে অবশিষ্ট আসনের ফলাফলের ওপর।
পাকিস্তানের সাড়ে ছয় দশকের ইতিহাসে যখনই সেনাবাহিনীর হাত থেকে ক্ষমতা কোনো রাজনৈতিক দলের হাতে এসেছে, তখন তা গেছে পিপিপি অথবা পিএমএলের (এন) কাছে। এ দুটি দলই নিয়ন্ত্রণ করে এসেছে দেশটির রাজনীতি। এবার সেখানে পিটিআই নামের আরেকটি দলের আবির্ভাব ঘটল। দলটি শেষ পর্যন্ত প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা পেলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না।
আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত দুবারের প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো ও সদ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টো নির্বাচনে পিপিপির নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি দলের চেয়ারম্যান।
এদিকে, সরকার গঠনের লক্ষ্যে গতকালই অন্যান্য দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন নওয়াজ শরিফ। দলের শীর্ষ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী শরতাজ আজিজ জানান, কয়েকজন স্বতন্ত্র সাংসদের সঙ্গে কথা বলেছেন নওয়াজ। এ ছাড়া, মন্ত্রিপরিষদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদ নিয়ে আলোচনা করেছেন তিনি।
জিয়ো টেলিভিশনের খবরে জানানো হয়, জমিয়ত উলামা-আল-ইসলামের প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমান ফোন করে নওয়াজ শরিফকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে সরকার গঠন নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
টেলিভিশনটির খবরে আরও বলা হয়, নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, নওয়াজ সরকার গঠন করলে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও জোরদার হবে।
সর্বশেষ পিপিপি সরকারের আগ পর্যন্ত পাকিস্তানে কোনো সরকারই ক্ষমতার পূর্ণ মেয়াদ শেষ করতে পারেনি। অর্থাৎ কখনোই শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হয়নি। সেদিক দিয়ে এবারের নির্বাচন ছিল ঐতিহাসিক। দেশটির ক্ষমতায় বারবার হস্তক্ষেপ করেছে সেনাবাহিনী। ১৯৪৭ সালে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীনতা লাভের পর পাকিস্তানে সামরিক অভ্যুত্থান হয়েছে তিনবার। দেশ শাসন করেছেন চারজন স্বৈরশাসক।
সর্বশেষ সামরিক অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটে ১৯৯৯ সালে। রক্তপাতহীন ওই অভ্যুত্থানে নওয়াজ শরিফের নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতায় বসেন তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল পারভেজ মোশাররফ। নওয়াজকে নির্বাসনে পাঠানো হয় সৌদি আরবে। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে দুই মেয়াদে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি—১৯৯০ সালের ৬ নভেম্বর থেকে ১৯৯৩ সালের ১৮ জুলাই এবং ১৯৯৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯৯৯ সালের ১২ অক্টোবর পর্যন্ত। নির্বাসন থেকে ২০০৭ সালে দেশে ফিরে পরের বছর অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে অংশ নেন নওয়াজ। ওই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে পিপিপি।
শনিবার মধ্যরাতেই নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করেন নওয়াজ শরিফ। পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক হাসান আসকারি বলেন, তাঁকে (শরিফ) সন্ত্রাসবাদ ও অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান করতে হবে। দ্রুত যদি তা করতে পারেন, বেশ ভালো। আর না পারলে তাঁকে সংকট ও সমালোচনার মুখে পড়তে হবে।
ইমরানের বার্তা: নির্বাচনী প্রচারণার সময় পড়ে গিয়ে আহত হওয়ার পর থেকে হাসপাতালে আছেন ইমরান খান। গতকাল কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, এ নির্বাচন দেশের নবীন গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করবে। তবে তাঁর দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নির্বাচনে কারচুপির বিষয়ে তাঁরা তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করছেন।
ভিডিও বার্তায় ইমরান বলেন, ‘আমরা এখন গণতন্ত্রের পথে অগ্রসর হচ্ছি। নির্বাচনে ব্যাপক হারে ভোট দেওয়ার জন্য আমি দেশবাসীকে অভিনন্দন জানাই। দেশের তরুণ সমাজ আমার পক্ষে ছিল। এটাই আমার বিজয়।’
জোট সরকার হচ্ছে: সরকার গঠনের জন্য নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না নওয়াজের দল। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য তাদের জোট গঠন করতে হবে। তবে নওয়াজকে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দল পিপিপি বা পিটিআইয়ের ওপর নির্ভর করার প্রয়োজন পড়বে না। বরং দু-চারটি করে আসন পাওয়া ছোটখাটো অন্য দলগুলোর কয়েকটি বা বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে নিয়ে আসতে পারলেই তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় যেতে পারবেন তিনি। তা খুব কঠিন হবে বলে মনে করছেন না বিশ্লেষকেরা। তবে পাকিস্তানের উত্তাল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জোট টিকিয়ে রাখা কঠিন এবং এতে সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে সংশয় থেকেই যাবে। কেননা, দেশটির সাড়ে ছয় দশকের বেশি সময়ের ইতিহাসে সর্বশেষ পিপিপি সরকার ছাড়া কোনো সরকারই ক্ষমতার মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেনি।
প্রাদেশিক নির্বাচন: জাতীয় পরিষদের পাশাপাশি শনিবার চারটি প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনেও ভোট দিয়েছে সেখানকার জনগণ। এগুলো হলো খাইবার পাখতুনখাওয়া, পাঞ্জাব, সিন্ধু ও বেলুচিস্তান।
এর মধ্যে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের খাইবার পাখতুনখাওয়ায় বিজয়ের পথে রয়েছে ইমরানের দল। রাজনৈতিকভাবে চরম অস্থিতিশীল এবং জঙ্গিবাদে জর্জরিত ওই অঞ্চল তালেবানের ঘাঁটি অভিযোগ তুলে সেখানে দীর্ঘদিন ধরে ড্রোন (চালকবিহীন বিমান) হামলা চালিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। নির্বাচনী প্রচারণায় ইমরান প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তাঁর দল ক্ষমতায় গেলে ড্রোন হামলা বন্ধের ব্যবস্থা করা হবে। আর সিন্ধু প্রদেশে বিজয়ের পথে রয়েছে পিপিপি। সিন্ধু ভুট্টো পরিবারের পৈতৃক স্থান। সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ পাঞ্জাবে সরকার গঠন করতে পারে নওয়াজ শরিফের পিএমএল (এন)। পাঞ্জাব নওয়াজের নিজের প্রদেশ। বেলুচিস্তানের ফলাফল এখনো স্পষ্ট নয়। বিশ্লেষকদের মতে, সেখানে জোট সরকার গঠনের সম্ভাবনা বেশি। এএফপি, বিবিসি ও ডন।
পাকিস্তানের ৬৬ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে ক্ষমতার পালাবদল হতে যাচ্ছে। একে দেশটির গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জয় হিসেবে বিবেচনা করছেন বিশ্লেষকেরা।
পাকিস্তানে জাতীয় পরিষদের আসনসংখ্যা ৩৪২। এর মধ্যে ২৭২টি আসনে সরাসরি নির্বাচন হয়। বাকি ৭০টির মধ্যে ৬০টি নারীদের এবং ১০টি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত। কাজেই সরকার গঠনের জন্য সরাসরি ভোট হওয়া ২৭২টির মধ্যে ১৩৭টি আসন পেতে হবে।
গতকাল রাত দেড়টা পর্যন্ত বেসরকারিভাবে মোট ২৬৬টি আসনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে নওয়াজের পিএমএল (এন) পেয়েছে ১৩৩টি আসন। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে সদ্য ক্ষমতা ছেড়ে যাওয়া পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। পিপিপি পেয়েছে ৩৩টি আসন। ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পেয়েছে ২৭টি আসন। ৭৩টি আসনে জয়ী হয়েছে স্বতন্ত্র ও অন্য দলের প্রার্থীরা। আর ৬টি আসনে ফলাফল ঘোষণা বাকি আছে।
প্রধান বিরোধী দল পিপিপি না পিটিআই—কে হবে, তা নির্ভর করছে অবশিষ্ট আসনের ফলাফলের ওপর।
পাকিস্তানের সাড়ে ছয় দশকের ইতিহাসে যখনই সেনাবাহিনীর হাত থেকে ক্ষমতা কোনো রাজনৈতিক দলের হাতে এসেছে, তখন তা গেছে পিপিপি অথবা পিএমএলের (এন) কাছে। এ দুটি দলই নিয়ন্ত্রণ করে এসেছে দেশটির রাজনীতি। এবার সেখানে পিটিআই নামের আরেকটি দলের আবির্ভাব ঘটল। দলটি শেষ পর্যন্ত প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা পেলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না।
আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত দুবারের প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো ও সদ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টো নির্বাচনে পিপিপির নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি দলের চেয়ারম্যান।
এদিকে, সরকার গঠনের লক্ষ্যে গতকালই অন্যান্য দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন নওয়াজ শরিফ। দলের শীর্ষ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী শরতাজ আজিজ জানান, কয়েকজন স্বতন্ত্র সাংসদের সঙ্গে কথা বলেছেন নওয়াজ। এ ছাড়া, মন্ত্রিপরিষদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদ নিয়ে আলোচনা করেছেন তিনি।
জিয়ো টেলিভিশনের খবরে জানানো হয়, জমিয়ত উলামা-আল-ইসলামের প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমান ফোন করে নওয়াজ শরিফকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে সরকার গঠন নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
টেলিভিশনটির খবরে আরও বলা হয়, নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, নওয়াজ সরকার গঠন করলে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও জোরদার হবে।
সর্বশেষ পিপিপি সরকারের আগ পর্যন্ত পাকিস্তানে কোনো সরকারই ক্ষমতার পূর্ণ মেয়াদ শেষ করতে পারেনি। অর্থাৎ কখনোই শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হয়নি। সেদিক দিয়ে এবারের নির্বাচন ছিল ঐতিহাসিক। দেশটির ক্ষমতায় বারবার হস্তক্ষেপ করেছে সেনাবাহিনী। ১৯৪৭ সালে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীনতা লাভের পর পাকিস্তানে সামরিক অভ্যুত্থান হয়েছে তিনবার। দেশ শাসন করেছেন চারজন স্বৈরশাসক।
সর্বশেষ সামরিক অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটে ১৯৯৯ সালে। রক্তপাতহীন ওই অভ্যুত্থানে নওয়াজ শরিফের নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতায় বসেন তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল পারভেজ মোশাররফ। নওয়াজকে নির্বাসনে পাঠানো হয় সৌদি আরবে। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে দুই মেয়াদে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি—১৯৯০ সালের ৬ নভেম্বর থেকে ১৯৯৩ সালের ১৮ জুলাই এবং ১৯৯৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯৯৯ সালের ১২ অক্টোবর পর্যন্ত। নির্বাসন থেকে ২০০৭ সালে দেশে ফিরে পরের বছর অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে অংশ নেন নওয়াজ। ওই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে পিপিপি।
শনিবার মধ্যরাতেই নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করেন নওয়াজ শরিফ। পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক হাসান আসকারি বলেন, তাঁকে (শরিফ) সন্ত্রাসবাদ ও অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান করতে হবে। দ্রুত যদি তা করতে পারেন, বেশ ভালো। আর না পারলে তাঁকে সংকট ও সমালোচনার মুখে পড়তে হবে।
ইমরানের বার্তা: নির্বাচনী প্রচারণার সময় পড়ে গিয়ে আহত হওয়ার পর থেকে হাসপাতালে আছেন ইমরান খান। গতকাল কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, এ নির্বাচন দেশের নবীন গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করবে। তবে তাঁর দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নির্বাচনে কারচুপির বিষয়ে তাঁরা তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করছেন।
ভিডিও বার্তায় ইমরান বলেন, ‘আমরা এখন গণতন্ত্রের পথে অগ্রসর হচ্ছি। নির্বাচনে ব্যাপক হারে ভোট দেওয়ার জন্য আমি দেশবাসীকে অভিনন্দন জানাই। দেশের তরুণ সমাজ আমার পক্ষে ছিল। এটাই আমার বিজয়।’
জোট সরকার হচ্ছে: সরকার গঠনের জন্য নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না নওয়াজের দল। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য তাদের জোট গঠন করতে হবে। তবে নওয়াজকে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দল পিপিপি বা পিটিআইয়ের ওপর নির্ভর করার প্রয়োজন পড়বে না। বরং দু-চারটি করে আসন পাওয়া ছোটখাটো অন্য দলগুলোর কয়েকটি বা বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে নিয়ে আসতে পারলেই তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় যেতে পারবেন তিনি। তা খুব কঠিন হবে বলে মনে করছেন না বিশ্লেষকেরা। তবে পাকিস্তানের উত্তাল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জোট টিকিয়ে রাখা কঠিন এবং এতে সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে সংশয় থেকেই যাবে। কেননা, দেশটির সাড়ে ছয় দশকের বেশি সময়ের ইতিহাসে সর্বশেষ পিপিপি সরকার ছাড়া কোনো সরকারই ক্ষমতার মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেনি।
প্রাদেশিক নির্বাচন: জাতীয় পরিষদের পাশাপাশি শনিবার চারটি প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনেও ভোট দিয়েছে সেখানকার জনগণ। এগুলো হলো খাইবার পাখতুনখাওয়া, পাঞ্জাব, সিন্ধু ও বেলুচিস্তান।
এর মধ্যে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের খাইবার পাখতুনখাওয়ায় বিজয়ের পথে রয়েছে ইমরানের দল। রাজনৈতিকভাবে চরম অস্থিতিশীল এবং জঙ্গিবাদে জর্জরিত ওই অঞ্চল তালেবানের ঘাঁটি অভিযোগ তুলে সেখানে দীর্ঘদিন ধরে ড্রোন (চালকবিহীন বিমান) হামলা চালিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। নির্বাচনী প্রচারণায় ইমরান প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তাঁর দল ক্ষমতায় গেলে ড্রোন হামলা বন্ধের ব্যবস্থা করা হবে। আর সিন্ধু প্রদেশে বিজয়ের পথে রয়েছে পিপিপি। সিন্ধু ভুট্টো পরিবারের পৈতৃক স্থান। সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ পাঞ্জাবে সরকার গঠন করতে পারে নওয়াজ শরিফের পিএমএল (এন)। পাঞ্জাব নওয়াজের নিজের প্রদেশ। বেলুচিস্তানের ফলাফল এখনো স্পষ্ট নয়। বিশ্লেষকদের মতে, সেখানে জোট সরকার গঠনের সম্ভাবনা বেশি। এএফপি, বিবিসি ও ডন।
No comments