শোলমারী সেতু-এক যুগেও চালু হলো না কেন?
ত্রুটিপূর্ণ পরিকল্পনা, প্রশাসনের সনাতনী ঢিলেমি রোগ ও দুর্নীতির কারণে খুলনার বটিয়াঘাটার শোলমারী নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া যায়নি। অথচ সেতুটি নির্মাণের জন্য ১৯৯৯ সালে উদ্যোগ গ্রহণের পর দীর্ঘ এক যুগ পেরিয়ে গেছে।
ত্রুটিপূর্ণ পরিকল্পনার কারণে সেতু নির্মাণের মাঝপথেই ঠিকাদার পরিবর্তন পর্যন্ত করতে হয়েছে। এর সঙ্গে আছে চিরাচরিত দুর্নীতির রাহুগ্রাস। কালক্ষেপণের কারণে আর দশটি প্রকল্পের মতো এই সেতু প্রকল্পেও ব্যয় বেড়েছে। ফলে বাড়তি ব্যয় বরাদ্দের জন্য আবার আবেদন জানাতে হয়েছে। নতুন মঞ্জুরি পেতে বাড়তি সময় লাগায় সেতু নির্মাণের সময় ক্রমে লম্বা হচ্ছে। এর ফলে দক্ষিণাঞ্চলসহ সুন্দরবনের সঙ্গে দেশের অন্যান্য অংশের যোগাযোগ উন্নত করার সদিচ্ছা অধরাই থেকে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে সমকালের লোকালয় পৃষ্ঠায় গত মঙ্গলবার প্রকাশিত 'কবে উদ্বোধন হবে শোলমারী সেতু' শিরোনামের রিপোর্টটিতে সেতুটির দৈর্ঘ্য ২৫৯.৬৮ মিটার হলেও এটির নির্মাণ কাজ শেষ হতে দীর্ঘ সময় লাগার কারণ হিসেবে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে ঠিকাদারদের কারচুপি তথা দুর্নীতিকেও দায়ী করা হয়েছে। এ জন্য ইতিপূর্বে একজন নির্বাহী প্রকৌশলী ও একজন কর্মকর্তাকে সাসপেন্ড পর্যন্ত করা হয়েছে। তারপরও এ সেতুটির ভাগ্যের চাকা দ্রুত ঘোরেনি। তবে সেতুটি উন্মুক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় চূড়ান্ত কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে বলে খুলনার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পত্রিকাকে আশ্বস্ত করতে চেষ্টা করেছেন। তিনি এটি উন্মুক্ত করে দেওয়ার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। অর্থাৎ যারা জনপ্রতিনিধি, তারা সক্রিয় হলেই কেবল সেতুটি যানবাহন চলাচলের জন্য দ্রুত খুলে দেওয়া সম্ভব হতে পারে। কিন্তু ওই এলাকার সংসদ সদস্যরা কেন এতদিন এ ব্যাপারে উপযুক্ত ও সক্রিয় ভূমিকা পালন করেননি বা পালন করতে পারেননি, এটিই চরম বিস্ময়ের। আমরা সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি শোলমারী সেতুটির শেষ পর্যায়ের প্রয়োজনীয় নির্মাণ কাজ শেষ করা এবং সংযোগ সড়ক মানসম্পন্ন করার মাধ্যমে অবিলম্বে এটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার আহ্বান জানাই। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের এ ব্যাপারে সক্রিয়তা কাম্য। সেতুর ওপর দিয়ে যাওয়া বৈদ্যুতিক লাইন যেন বাস-ট্রাক চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করে, সেটিও নিশ্চিত করা উচিত।
No comments