‘ভিক্ষা করে যৌতুকের টাকা সংগ্রহ’ by তুহিন ওয়াদুদ
ধর্মের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, সামাজিকতার সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ, এমনকি আইনবিরোধী হওয়া সত্ত্বেও বহাল রয়েছে যৌতুকের প্রথা। যৌতুকের ধরন উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত কিংবা বিত্তহীনের এক নয়। কেউ আছেন শ্বশুরের কাছ থেকে স্ত্রীর নামে জমি-ফ্ল্যাট কিনে নেন, কেউ কেউ মেয়েপক্ষের কাছ থেকে দামি ফার্নিচার গ্রহণ করেন, কেউ কেউ প্রচুর অলংকার দিতে বাধ্য করেন, আবার কেউ কেউ সরাসরি অর্থই গ্রহণ করেন। অনেকের ক্ষেত্রে মেয়েপক্ষকে সারা জীবন ধরে যৌতুক দিতে হয়। কখনো কখনো মেয়ের বাবা-মা জমি-অলংকার-গৃহপালিত পশু বিক্রি করে সংগ্রহ করেন যৌতুকের টাকা। মীরবাগ এলাকার শফিকুল ইসলাম নামের একজন জানালেন, ‘কেউ কেউ ভিক্ষা করে যৌতুকের টাকা সংগ্রহ করেন।’ যৌতুকের দাবিতে স্বামীর অত্যাচারের বিবরণ আমরা প্রায় প্রতিদিনই কমবেশি গণমাধ্যমে জানতে পারি। কখনো কথা দিয়ে, কখনো হাত দিয়ে, কখনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে নির্যাতন করা হয়। কখনো শরীরে আগুন দেওয়ার খবর পাওয়া যায়। যে মেয়ের বিয়ের পর স্বামী যৌতুক দাবি করেন এবং সেই মেয়ে বাবাকে যৌতুকের কথা বলতে না পেরে স্বামীর নির্যাতন সহ্য করেন, তাঁর মানসিক অবস্থা কীরূপ, শাসকগোষ্ঠী কখনো বোঝার চেষ্টা করেছে? সমাজের কাছে নারী কি এতটা অসহায় হয়েই থাকবে? যৌতুক দেওয়া-নেওয়ার জন্য শাস্তির কোনো খবর পাওয়া যায় না। আর সে কারণে আইন থাকা সত্ত্বেও যৌতুক প্রথা উৎসাহিত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় পড়াকালীন আমাদের শিক্ষাবর্ষেরই এক মেয়ে প্রেম করে বিয়ে করেন তাঁর এক বন্ধুকে। কিছুদিন পরই খবরে দেখলাম যৌতুক দিতে সম্মত হয়নি বলে স্বামীর অবর্ণনীয় অত্যাচারে খুন হয়েছেন তিনি। যৌতুক দিতে পারেনি, কিংবা দেয়নি এই কারণে কত মেয়ের সংসার ভেঙেছে তার ইয়ত্তা নেই। কত নারী যে মুখ বুজে অত্যাচার সহ্য করেন, শরীরে ক্ষতচিহ্ন নিয়ে জীবন যাপন করেন, তারও সংখ্যা অগণিত।
অনেক সময় মেয়ের স্বামীকে সন্তুষ্ট করার জন্য মেয়ের বাবার জীবন বিপন্ন হয়ে ওঠে। তবু দাঁতে দাঁত চেপে বাবা-মা মেয়ের মুখে হাসিই দেখতে চান। যেমনটি দেখতে চান রিকশাওয়ালা হাশেম আলী। হেমন্তের হালকা কুয়াশায় ঢাকা রংপুর। রাত তখন সাড়ে দশটা। রাস্তায় মানুষের সংখ্যাও অনেক কম। এত রাতে কেন পঞ্চাশোর্ধ্ব হাশেম আলী রিকশা চালান, আলাপচারিতায় বের হলো তার কারণ। কয়েক দিন আগে মেয়ের বিয়েতে যৌতুক দিতে হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। এই ৭০ হাজার টাকার সিংহভাগই তিনি ঋণ নিয়েছেন বেসরকারি সংস্থা থেকে। মেয়ের বিয়ের পর থেকে দিনে এবং রাতে রিকশা চালাতে হয়। আগে শুধু দিনে রিকশা চালাতেন। যত রাতই হোক, কিস্তির টাকা না হওয়া পর্যন্ত রিকশা তাঁকে চালাতে হবে। এখন আর তিন বেলা ঠিকমতো খাওয়ারও উপায় নেই। হাশেম আলীর এসব কথায় যখন আমি রাষ্ট্রের ব্যর্থতার কথা ভাবছিলাম, তখন তিনি বাবার সুরে বললেন, ‘তাও যদি বেটিটা সুখোত থাকে।’
আইনের প্রয়োগ হতে থাকলে যৌতুক দেওয়া-নেওয়া হবে গোপনে। অনেক সময় কনেপক্ষ, বরপক্ষ উভয়ই যৌতুকের কথা স্বীকারই করেন না। আইনের প্রয়োগ শুরু হলে, হয়তো আরও স্বীকার করতে চাইবেন না। কনেপক্ষ যৌতুকের বিষয়ে অভিযোগ না করলেও এলাকাবাসী কিংবা সরকারের লোকও যদি খুঁজে পায় তাহলে সেটাকে আইনের আওতায় আনতে হবে সম্প্রতি নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলায় গিয়েছিলাম আরডিআরএসের একটি অনুষ্ঠানে। সেখানকার অফিসে রান্নার কাজে নিয়োজিত রাশেদা খাতুনের সঙ্গে কথা হলো। তাঁর স্বামী বেঁচে নেই। দুই মেয়ে। এক মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। যৌতুক দিতে হয়েছে ৬০ হাজার টাকা। তাঁকে বললাম, যৌতুক ছাড়াই বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ কথায় আমাকে অজ্ঞ ধরে নিয়ে বললেন, ‘কী যে কন, ডিমেন্ড (যৌতুক) ছাড়া বেটিক কাঁইয়ো নেবে?’ রংপুরের সাতমাথা এলাকার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘টাকা ছাড়া গরিবের বেটিক কেউ বিয়া কইরবার চায় না।’
সরকার চাইলেই যৌতুক বন্ধ করা সম্ভব। ১৯৮০ সালে যৌতুক নিরোধ আইন হয়েছে। শিশু ও নারী নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) হয়েছে, এ আইনেও যৌতুকের বিরুদ্ধে শাস্তির কথা বলা হয়েছে। যৌতুক নিরোধ আইন অনুযায়ী, যৌতুক গ্রহণ করা এবং যৌতুক প্রদান করা উভয় অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ এক বছরের জেল এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, ক্ষেত্রবিশেষে উভয়টিও কার্যকর হতে পারে। কিন্তু আইনের প্রয়োগ না থাকার কারণে, অনেকেই জানেন না যে যৌতুকবিরোধী কোনো আইন আছে। কয়েক দিন আগে লালমনিরহাটে ধরলা নদীর পারে একটি চায়ের দোকানে যৌতুক নিয়ে এক বৃদ্ধের সঙ্গে কথা বলছিলাম। যৌতুক যে একটি অপরাধ, সেটাই তিনি জানেন না। আমি যখন আইনের কথা বললাম, তখন তিনি বিশ্বাসই করতে চাইলেন না। বরং তিনি খানিকটা চ্যালেঞ্জের সুরেই বললেন, ‘আইন থাকলে বিচার হইল হয়। আর আইন থাকলে হামরা জাননোং (জানতাম) হয়।’
আইনের প্রয়োগ হতে থাকলে যৌতুক দেওয়া-নেওয়া হবে গোপনে। অনেক সময় কনেপক্ষ, বরপক্ষ উভয়ই যৌতুকের কথা স্বীকারই করেন না। আইনের প্রয়োগ শুরু হলে, হয়তো আরও স্বীকার করতে চাইবেন না। কনেপক্ষ যৌতুকের বিষয়ে অভিযোগ না করলেও এলাকাবাসী কিংবা সরকারের লোকও যদি খুঁজে পায় তাহলে সেটাকে আইনের আওতায় আনতে হবে।
কয়েক বছর আগে একটি বেসরকারি সংস্থা ‘জীবিকা’র উদ্যোগে কুড়িগ্রামের চর শিতাই ঝাড়ে যৌতুক না দেওয়ার পক্ষে সামাজিক আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসকসহ অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তির অংশগ্রহণ ছিল এ উদ্যোগে। ওয়ার্ল্ড ভিউ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন এ উদ্যোগ নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি তৈরি করেছিল। সেটি বিবিসিতে প্রচারও হয়েছিল। প্রায় তিন বছর সেখানে যৌতুক দেওয়া-নেওয়া বন্ধ ছিল। সংস্থাটির কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর আবার যৌতুক চালু হয়। উদ্যোক্তাদের একজন মানিক চৌধুরী যৌতুক বন্ধের প্রসঙ্গে বলেন, ‘মানুষের সংঘবদ্ধ উদ্যোগ কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।’ বর্তমানে নিম্নবিত্ত পরিবারে, বিশেষত রংপুর অঞ্চলে প্রায় শতভাগ বিয়েতে যৌতুক দেওয়া-নেওয়ার প্রচলন আছে।
একটি সময় ছিল যখন ছেলেরা নয়, মেয়ের বাবা পণ গ্রহণ করতেন। সে সময়ে সমাজে যোগ্য বর পাওয়া যেত না। নরেন্দ্রনাথ মিত্রের বিখ্যাত ‘রস’ গল্পের নায়ক মোতালেফ অনেক কষ্টে পণের টাকা সংগ্রহ করে পণ দিয়ে মাজু খাতুনকে বিয়ে করেন। এরূপ অসংখ্য দৃষ্টান্ত রয়েছে।
সনাতন ধর্মানুসারীরা সতীদাহ প্রথাকে ধর্মের অংশ মনে করত। ১৮২৯ সালে আইন করে সেই সতীদাহ প্রথা বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। আইনের যথাযথ প্রয়োগ থাকলে যৌতুকও বন্ধ করা সম্ভব। সেই সঙ্গে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে, মেয়েদের শিক্ষিত ও স্বাবলম্বী হতে হবে।
তুহিন ওয়াদুদ: শিক্ষক, বাংলা বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।
wadudutuhin@gmail.com
বিশ্ববিদ্যালয় পড়াকালীন আমাদের শিক্ষাবর্ষেরই এক মেয়ে প্রেম করে বিয়ে করেন তাঁর এক বন্ধুকে। কিছুদিন পরই খবরে দেখলাম যৌতুক দিতে সম্মত হয়নি বলে স্বামীর অবর্ণনীয় অত্যাচারে খুন হয়েছেন তিনি। যৌতুক দিতে পারেনি, কিংবা দেয়নি এই কারণে কত মেয়ের সংসার ভেঙেছে তার ইয়ত্তা নেই। কত নারী যে মুখ বুজে অত্যাচার সহ্য করেন, শরীরে ক্ষতচিহ্ন নিয়ে জীবন যাপন করেন, তারও সংখ্যা অগণিত।
অনেক সময় মেয়ের স্বামীকে সন্তুষ্ট করার জন্য মেয়ের বাবার জীবন বিপন্ন হয়ে ওঠে। তবু দাঁতে দাঁত চেপে বাবা-মা মেয়ের মুখে হাসিই দেখতে চান। যেমনটি দেখতে চান রিকশাওয়ালা হাশেম আলী। হেমন্তের হালকা কুয়াশায় ঢাকা রংপুর। রাত তখন সাড়ে দশটা। রাস্তায় মানুষের সংখ্যাও অনেক কম। এত রাতে কেন পঞ্চাশোর্ধ্ব হাশেম আলী রিকশা চালান, আলাপচারিতায় বের হলো তার কারণ। কয়েক দিন আগে মেয়ের বিয়েতে যৌতুক দিতে হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। এই ৭০ হাজার টাকার সিংহভাগই তিনি ঋণ নিয়েছেন বেসরকারি সংস্থা থেকে। মেয়ের বিয়ের পর থেকে দিনে এবং রাতে রিকশা চালাতে হয়। আগে শুধু দিনে রিকশা চালাতেন। যত রাতই হোক, কিস্তির টাকা না হওয়া পর্যন্ত রিকশা তাঁকে চালাতে হবে। এখন আর তিন বেলা ঠিকমতো খাওয়ারও উপায় নেই। হাশেম আলীর এসব কথায় যখন আমি রাষ্ট্রের ব্যর্থতার কথা ভাবছিলাম, তখন তিনি বাবার সুরে বললেন, ‘তাও যদি বেটিটা সুখোত থাকে।’
আইনের প্রয়োগ হতে থাকলে যৌতুক দেওয়া-নেওয়া হবে গোপনে। অনেক সময় কনেপক্ষ, বরপক্ষ উভয়ই যৌতুকের কথা স্বীকারই করেন না। আইনের প্রয়োগ শুরু হলে, হয়তো আরও স্বীকার করতে চাইবেন না। কনেপক্ষ যৌতুকের বিষয়ে অভিযোগ না করলেও এলাকাবাসী কিংবা সরকারের লোকও যদি খুঁজে পায় তাহলে সেটাকে আইনের আওতায় আনতে হবে সম্প্রতি নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলায় গিয়েছিলাম আরডিআরএসের একটি অনুষ্ঠানে। সেখানকার অফিসে রান্নার কাজে নিয়োজিত রাশেদা খাতুনের সঙ্গে কথা হলো। তাঁর স্বামী বেঁচে নেই। দুই মেয়ে। এক মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। যৌতুক দিতে হয়েছে ৬০ হাজার টাকা। তাঁকে বললাম, যৌতুক ছাড়াই বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ কথায় আমাকে অজ্ঞ ধরে নিয়ে বললেন, ‘কী যে কন, ডিমেন্ড (যৌতুক) ছাড়া বেটিক কাঁইয়ো নেবে?’ রংপুরের সাতমাথা এলাকার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘টাকা ছাড়া গরিবের বেটিক কেউ বিয়া কইরবার চায় না।’
সরকার চাইলেই যৌতুক বন্ধ করা সম্ভব। ১৯৮০ সালে যৌতুক নিরোধ আইন হয়েছে। শিশু ও নারী নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) হয়েছে, এ আইনেও যৌতুকের বিরুদ্ধে শাস্তির কথা বলা হয়েছে। যৌতুক নিরোধ আইন অনুযায়ী, যৌতুক গ্রহণ করা এবং যৌতুক প্রদান করা উভয় অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ এক বছরের জেল এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, ক্ষেত্রবিশেষে উভয়টিও কার্যকর হতে পারে। কিন্তু আইনের প্রয়োগ না থাকার কারণে, অনেকেই জানেন না যে যৌতুকবিরোধী কোনো আইন আছে। কয়েক দিন আগে লালমনিরহাটে ধরলা নদীর পারে একটি চায়ের দোকানে যৌতুক নিয়ে এক বৃদ্ধের সঙ্গে কথা বলছিলাম। যৌতুক যে একটি অপরাধ, সেটাই তিনি জানেন না। আমি যখন আইনের কথা বললাম, তখন তিনি বিশ্বাসই করতে চাইলেন না। বরং তিনি খানিকটা চ্যালেঞ্জের সুরেই বললেন, ‘আইন থাকলে বিচার হইল হয়। আর আইন থাকলে হামরা জাননোং (জানতাম) হয়।’
আইনের প্রয়োগ হতে থাকলে যৌতুক দেওয়া-নেওয়া হবে গোপনে। অনেক সময় কনেপক্ষ, বরপক্ষ উভয়ই যৌতুকের কথা স্বীকারই করেন না। আইনের প্রয়োগ শুরু হলে, হয়তো আরও স্বীকার করতে চাইবেন না। কনেপক্ষ যৌতুকের বিষয়ে অভিযোগ না করলেও এলাকাবাসী কিংবা সরকারের লোকও যদি খুঁজে পায় তাহলে সেটাকে আইনের আওতায় আনতে হবে।
কয়েক বছর আগে একটি বেসরকারি সংস্থা ‘জীবিকা’র উদ্যোগে কুড়িগ্রামের চর শিতাই ঝাড়ে যৌতুক না দেওয়ার পক্ষে সামাজিক আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসকসহ অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তির অংশগ্রহণ ছিল এ উদ্যোগে। ওয়ার্ল্ড ভিউ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন এ উদ্যোগ নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি তৈরি করেছিল। সেটি বিবিসিতে প্রচারও হয়েছিল। প্রায় তিন বছর সেখানে যৌতুক দেওয়া-নেওয়া বন্ধ ছিল। সংস্থাটির কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর আবার যৌতুক চালু হয়। উদ্যোক্তাদের একজন মানিক চৌধুরী যৌতুক বন্ধের প্রসঙ্গে বলেন, ‘মানুষের সংঘবদ্ধ উদ্যোগ কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।’ বর্তমানে নিম্নবিত্ত পরিবারে, বিশেষত রংপুর অঞ্চলে প্রায় শতভাগ বিয়েতে যৌতুক দেওয়া-নেওয়ার প্রচলন আছে।
একটি সময় ছিল যখন ছেলেরা নয়, মেয়ের বাবা পণ গ্রহণ করতেন। সে সময়ে সমাজে যোগ্য বর পাওয়া যেত না। নরেন্দ্রনাথ মিত্রের বিখ্যাত ‘রস’ গল্পের নায়ক মোতালেফ অনেক কষ্টে পণের টাকা সংগ্রহ করে পণ দিয়ে মাজু খাতুনকে বিয়ে করেন। এরূপ অসংখ্য দৃষ্টান্ত রয়েছে।
সনাতন ধর্মানুসারীরা সতীদাহ প্রথাকে ধর্মের অংশ মনে করত। ১৮২৯ সালে আইন করে সেই সতীদাহ প্রথা বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। আইনের যথাযথ প্রয়োগ থাকলে যৌতুকও বন্ধ করা সম্ভব। সেই সঙ্গে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে, মেয়েদের শিক্ষিত ও স্বাবলম্বী হতে হবে।
তুহিন ওয়াদুদ: শিক্ষক, বাংলা বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।
wadudutuhin@gmail.com
No comments